উরি সন্ত্রাসী কাণ্ডের জেরে ভারতের ‘সার্জিকাল স্ট্রাইক'-এর পর, পাকিস্তানের দিক থেকে পালটা হামলার আশংকা রয়েছে৷ আর তাই সীমান্তের নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে দ্বিতীয়বার শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠক ডাকেন প্রধানমন্ত্রী মোদী৷
বিজ্ঞাপন
শুধু তাই নয়, পাকিস্তানের সীমান্ত সংলগ্ন গ্রামগুলি থেকে লোকজনদের সরিয়ে আনা হয়েছে৷ সীমান্তে বাড়ানো হয় টহলদারি৷ সক্রিয় রাখা হয়েছে সামরিক ব্যবস্থাপনা এবং সাজসরঞ্জামও৷ এভাবেই প্রধানমন্ত্রী মোদীর পাকিস্তান নীতি সফল হচ্ছে৷ আর তাতে তাঁর রাজনৈতিক জনপ্রিয়তার পারদ এখন ঊর্ধমুখী৷ কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সামরিক– এই ত্রিফলা নীতিতে পাকিস্তানকে কোণঠাসা করতে সক্ষম হয়েছে মোদী, এমনটাই মনে করছে দেশের মানুষজন৷ এমনকি বিরোধী দলগুলির কাছ থেকেও বাহাবা পেয়েছেন মোদী৷ বলা বাহুল্য, এই সাফল্য ধরে রাখতে পারলে মোদীর রাজনৈতিক ভাগ্য খুলে যাবে৷ যেসব সমালোচক হামেশাই মোদীকে এই বলে বিদ্ধ করতেন যে, মোদী যত গর্জে, তত বর্ষে না৷ তাঁদের মুখ বন্ধ হয়ে যাবে৷ শুধু কি তাই? উত্তর প্রদেশ ও পাঞ্জাবের আসন্ন নির্বাচনে এবং ২০১৯ সালে সাধারণ নির্বাচনে এর ছাপ পড়তে পারে, এমনটা ধারণা করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা৷ পরিস্থিতি যাতে বিগড়ে না যায়, তারজন্য এই প্রথম মোদীর তরফে শুধু পাকিস্তানকেই নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকারের কাছে এই ধরনের সেনা অভিযানের যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করা হয়েছে যাতে কোনো ভুল বার্তা না যায়৷
ওদিকে পাকিস্তানকে স্পষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, জম্মু-কাশ্মীরে সংঘর্ষ-বিরতি রেখা অতিক্রম করে ভারতীয় সেনার সার্জিকাল স্ট্রাইকের মাধ্যমে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী নয়, জঙ্গি ঘাঁটিগুলি ধ্বংস করাই ছিল এর লক্ষ্য৷ এই ধরনের অভিযান আর হবে না বলেই আশা করছে ভারত৷ প্রশ্ন হলো, কেন এই স্পষ্টকথা? পাকিস্তান যাতে পাল্টা অভিযান থেকে বিরত থাকে? পাকিস্তানের দিক থেকেও কিন্তু ভারতীয় সেনার এই অভিযানকে মনগড়া আখ্যা দিয়ে বলা হয়েছে যে, এই ধরনের কোনো সার্জিকাল স্ট্রাইক ভারতের দিক থেকে হয়নি৷ যেটা হয়েছে সংঘর্ষ-বিরতি রেখার ওপার থেকে ভারতীয় সেনাবাহিনীর গোলাগুলি বর্ষণে দু'জন পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়েছে, ধরা পড়েছে আর একজন ভারতীয় সেনা৷ এর মানে কি এই যে, পালটা সামরিক তত্পরতা থেকে পাকিস্তান নিজেকে বিরত রাখতে চাইছে? নাকি পালটা জবাব দেবার জন্য সময় নিতে চাইছে পাকিস্তান?
কাশ্মীরে বহুদিনের সংঘাত, বহুদিনের ক্ষত
স্বাধীনতার পর থেকেই ভারত ও পাকিস্তানের সম্পর্কে যেন গলার ফাঁস হয়ে রয়েছে কাশ্মীর৷ তাই কাশ্মীর সংক্রান্ত ঘটনাবলী আজ নিজেরাই ইতিহাস৷
ছবি: Getty Images/AFP/R. Bhat
১৯৪৭
বলা হয় দেশবিভাগের পর পাকিস্তান থেকে আগত উপজাতিক যোদ্ধারা কাশ্মীর আক্রমণ করে৷ তখন কাশ্মীরের মহারাজা ভারতের সাথে সংযোজনের চুক্তি করেন, যা থেকে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়৷
ছবি: dapd
১৯৪৮
ভারত জাতিসংঘে কাশ্মীর প্রসঙ্গ উত্থাপন করলে পর, ৪৭ ক্রমিক সংখ্যক প্রস্তাবটি গৃহীত হয়৷ ঐ প্রস্তাব অনুযায়ী গোটা কাশ্মীরে গণভোট অনুষ্ঠিত হবার কথা রয়েছে৷
ছবি: Keystone/Getty Images
১৯৪৮
কিন্তু পাকিস্তান প্রস্তাব অনুযায়ী, কাশ্মীর থেকে সৈন্যাপসারণ করতে অস্বীকার করে৷ অতঃপর কাশ্মীরকে দু’ভাগে ভাগ করা হয়৷
ছবি: Getty Images
১৯৫১
ভারতীয় কাশ্মীরে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ও ভারতের সঙ্গে সংযোজনকে সমর্থন করা হয়৷ অতঃপর ভারত বলে, আর গণভোট অনুষ্ঠানের কোনো প্রয়োজন নেই৷ জাতিসংঘ ও পাকিস্তানের মতে, গণভোট অনুষ্ঠিত হওয়া আবশ্যক৷
ছবি: picture-alliance/dpa/F. Khan
১৯৫৩
কাশ্মীরের ‘প্রধানমন্ত্রী’ শেখ আব্দুল্লাহ গণভোটের সমর্থক ছিলেন ও ভারতের সঙ্গে সংযোজনকে বিলম্বিত করার চেষ্টা করেন৷ ফলে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ জম্মু-কাশ্মীরের নতুন সরকার ভারতের সঙ্গে কাশ্মীরের সংযোজনকে পাকা করেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/F. Khan
১৯৬২-৬৩
১৯৬২ সালের যুদ্ধে চীন আকসাই দখল করে৷ তার আগের বছর পাকিস্তান কাশ্মীরের ট্রান্স কারাকোরাম ট্র্যাক্ট এলাকাটি চীনকে প্রদান করে৷
ছবি: Getty Images
১৯৬৫
কাশ্মীরকে কেন্দ্র করে আবার ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ হয়৷ কিন্তু যুদ্ধশেষে উভয় দেশের সেনা তাদের পুরোনো অবস্থানে ফিরে যায়৷
ছবি: picture-alliance/dpa/J. Singh
১৯৭১-৭২
আবার ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ৷ যুদ্ধে পাকিস্তানের পরাজয়ের পর সিমলা চুক্তি সম্পাদিত হয় ১৯৭২ সালে৷ যুদ্ধবিরতি রেখাকে লাইন অফ কন্ট্রোল বা নিয়ন্ত্রণ রেখায় পরিণত করা হয় ও আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে বিবাদ সমাধান সম্পর্কে ঐকমত্য অর্জিত হয়৷
ছবি: AP
১৯৮৪
ভারত সিয়াচেন হিমবাহ নিজ নিয়ন্ত্রণে আনার পর পাকিস্তান তা একাধিকবার দখল করার চেষ্টা করেছে, কিন্তু সফল হতে পারেনি৷
ছবি: AP
১৯৮৭
জম্মু-কাশ্মীরে বিতর্কিত নির্বাচনের পর রাজ্যে বিচ্ছিন্নতাবাদী স্বাধীনতা আন্দোলন শুরু হয়৷ ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে উগ্রপন্থাকে উসকানি দেওয়ার অভিযোগ করে, কিন্তু পাকিস্তান সে দোষারোপ চিরকাল অস্বীকার করে এসেছে৷
ছবি: AP
১৯৯০
গওকাদল সেতুর কাছে ভারতীয় সিআরপি রক্ষীবাহিনী কাশ্মীরি বিক্ষোভকারীদের উপর গুলি চালালে পর শতাধিক আন্দোলনকারী নিহত হন৷ প্রায় সমস্ত হিন্দু কাশ্মীর উপত্যকা ছেড়ে চলে যান৷ জম্মু-কাশ্মীরে সেনাবাহিনীকে আফসা বা আর্মড ফোর্সেস স্পেশাল পাওয়ার্স অ্যাক্ট অনুযায়ী বিশেষ ক্ষমতা প্রদান করা হয়৷
ছবি: AFP/Getty Images/Tauseef Mustafa
১৯৯৯
কাশ্মীর ভ্যালিতে গোটা নব্বই-এর দশক ধরে অশান্তি চলে৷ ১৯৯৯ সালে আবার ভারত-পাকিস্তানের লড়াই হয়, এবার কারগিলে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
২০০১-২০০৮
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে আলাপ-আলোচনার যাবতীয় প্রচেষ্টা প্রথমে নতুন দিল্লির সংসদ ভবন ও পরে মুম্বই হামলার ফলে ব্যর্থ হয়৷
ছবি: picture-alliance/Pacific Press/F. Khan
২০১০
ভারতীয় সেনার গুলি লেগে এক বিক্ষোভকারীর মৃত্যুর পর কাশ্মীর ভ্যালি উত্তেজনায় ফেটে পড়ে৷ বিক্ষোভ চলে বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে, প্রাণ হারান অন্তত ১০০ জন৷
ছবি: picture-alliance/Pacific Press/U. Asif
২০১৩
সংসদ ভবনের উপর হামলার মুখ্য অপরাধী আফজল গুরুকে ফাঁসি দেওয়া হয়৷ এর পর যে বিক্ষোভ চলে, তা-তে দু’জন প্রাণ হারায়৷ এই বছরই ভারত আর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীদ্বয় মিলিত হয়ে উত্তেজনা উপশমের কথা বলেন৷
ছবি: Reuters
২০১৪
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ উপস্থিত থাকেন৷ কিন্তু এর পর নতুন দিল্লিতে পাকিস্তানি হাই কমিশনার কাশ্মীরি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে মিলিত হওয়ায় ভারত আলাপ-আলোচনা স্থগিত রাখে৷
ছবি: Reuters
২০১৬
আজাদ কাশ্মীর ভিত্তিক হিজবুল মুজাহিদীন-এর অধিনায়ক বুরহান ওয়ানি-র মৃত্যুর পর কাশ্মীরে স্বাধীনতা সমর্থকরা আবার পথে নেমেছেন৷ এই আন্দোলনে এ পর্যন্ত অন্তত ১০০ জনের মৃত্যু হয়েছে ও বিক্ষোভ অব্যাহত আছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/R.S.Hussain
২০১৯
২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে জম্মু-কাশ্মীরের পুলওয়ামা সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্স (সিআরপিএফ)-এর গাড়িবহরে বোমা হামলার ঘটনা ঘটে৷ এতে ৪২ জওয়ান নিহত হন৷ বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন জৈশ-ই-মোহাম্মদ হামলার দায় স্বীকার করেছে৷ এরপর ২৬ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তান সীমান্তের ভেতরে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ঘাঁটিতে বিমান হামলা চালায় ভারতীয় বিমান বাহিনী৷
ছবি: picture-alliance/ZUMA Wire/P. Kumar Verma
২০১৯
ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ নং ধারা অনুযায়ী, জম্মু ও কাশ্মীরের কাছে কিছু বিশেষ অধিকার ছিল। ৫ আগস্ট স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ৩৭০ ধারাটি অবসানের দাবি তোলেন৷ বিল পাস হয়। একই দিনে তাতে সই করেন ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ৷ ফলে, কাশ্মীরের ‘বিশেষ মর্যাদা' বাতিল হয়। তাছাড়া মোদী সরকারের সিদ্ধান্তের ফলে জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের মর্যাদা হারায়। জম্মু ও কাশ্মীর ও লাদাখ নামে দুইটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠিত হয়।
ছবি: Reuters
19 ছবি1 | 19
তবে যেটাই হোক, মোদী স্বস্তি পাচ্ছেন না৷ কথায় বলে সাবধানের মার নেই৷ এই প্রবাদ বাক্য মেনে সীমান্তের নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা নিয়ে মোদী এই নিয়ে দ্বিতীয়বার শীর্ষ স্তরে জরুরি বৈঠক করেছেন৷ জম্মু-কাশ্মীর ও পাকিস্তান সংলগ্ন সীমান্ত এলাকার ১০ কিলোমিটারের মধ্যে কয়েক'শ গ্রামের প্রায় দু'লাখেরও বেশি লোকজনকে সরিয়ে আনা হয়েছে৷ অন্যদিকে অগ্নিতে ঘৃতাহুতি যেমন হয়, যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্র্যাটিক দলের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিলারি ক্লিন্টনের মতো বিশিষ্টবর্গের আশংকা, জঙ্গিদের হাতে পড়তে পারে পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্র ভাণ্ডার৷ সেক্ষেত্রে উদ্ভব হতে পারে মারাত্মক সংকট৷
প্রশ্ন হলো, ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে দ্বন্দ্ব-সংঘাতের ভরকেন্দ্র যদি কাশ্মীর হয়, তাহলে এত বছরেও তার ফয়সালা অধরা কেন? গ্রহণযোগ্য সমাধান খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না কেন? সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকেই কিছুটা নমনীয় অবস্থান নিতে হবেই৷ চলতি বছরের গত তিন মাস ধরে জম্মু-কাশ্মীরে লাগাতার চলছে অশান্তি, প্রতিবাদ বিক্ষোভ, ধরপাকড়, কারফিউ, গুলি, মানবাধিকার লঙ্ঘন৷ নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে মারা গেছে ৭৬ জন৷ আহত কয়েক'শ৷ গণতান্ত্রিক দেশে নিরস্ত্র মানুষের ওপর নির্বিচারে গুলি বর্ষণ মেনে নেওয়া যায় না৷ অশান্তির জেরে রাজ্যের জনজীবন স্তব্ধ৷ হালের সহিংসতার জেরে বিভিন্ন সরকারি অফিসের প্রায় ২০০-৩০০ কাশ্মীরি পণ্ডিতকে ঘরছাড়া হতে হয়েছে৷ বিক্ষোভকারীদের হাতে ধ্বংস হয়েছে ব্যাপক সরকারি সম্পত্তি৷ তবে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ-এর দক্ষিণ এশিয়ার প্রধান মীনাক্ষি গাঙ্গুলি বলেন, ‘‘পাথর ছোঁড়ার জবাবে গুলি চালনার অধিকার দেয় না৷''
কাশ্মীর সমস্যার সমাধান কি সম্ভব?
ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে সাম্প্রতিক সহিংসতা আবারো এই প্রশ্নকে উস্কে দিয়েছে৷ কি চায় কাশ্মীরের জনগণ? আর ভারত সরকার কি সেখানকার পরিস্থিতি সামাল দিতে পারছে? কাশ্মীরের বর্তমান সংকট নিয়েই এই ছবিঘর৷
ছবি: Getty Images/AFP/T.Mustafa
সংঘর্ষের সূত্রপাত
ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে ৮ জুলাই নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে কথিত সংঘর্ষে স্থানীয় হিজবুল মুজাহিদীন কমান্ডার বুরহান ওয়ানি নিহত হওয়ার পর থেকে পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছে৷ বুরহান নিহত হওয়ার প্রতিবাদে হাজার হাজার ক্ষুব্ধ জনতা সড়কে নেমে নিরাপত্তাবাহিনীর ওপর ইট পাটকেল ছুড়লে পাল্টা গুলি চলে তাদের ওপর৷ সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত ৪০ এরও বেশি নিহত হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/D. Yasin
কারফিউয়ে জনজীবন অচল
কাশ্মীরি নেতাদের বনধের ডাকে সমগ্র কাশ্মীর উপত্যকার জনজীবন স্তব্ধ হয়ে গেছে৷ কারফিউ জারি করেও নিয়ন্ত্রন করা যাচ্ছে না প্রতিবাদকারীদের৷ অন্যদিকে, খাবার ও ওষুধ সংকট দেখা দিয়েছে৷ মোবাইল ও ইন্টারনেট এবং ট্রেন সার্ভিস বন্ধ রয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/F. Khan
আরো সেনা মোতায়েন
সাম্প্রতিক উত্তেজনার কারণে চলতি সপ্তাহে ওই অঞ্চলে বাড়তি ৮শ’ সেনা মোতায়েন করা হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/F. Khan
নিহতদের বেশিরভাগই তরুণ
সাম্প্রতিক সহিংসতার নিহত ৪৪ জনের মধ্যে বেশিরভাগই বয়সে তরুণ৷ তাদের বয়স ১৬ থেকে ২৬ বছরের মধ্যে৷ আহতদের মধ্যে অনেক শিশু ও নারী রয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/F. Khan
দৃষ্টিশক্তি হারাতে পারে শতাধিক মানুষ
চিকিৎসকদের আশঙ্কা, কারফিউয়ের কারণে প্রয়োজনীয় ওষুধ এবং রক্তের অভাবে আরো অনেকের মৃত্যু হতে পারে৷ প্রায় শতাধিক মানুষের চোখে শটগানের গুলি লেগেছে বলে জানিয়েছেন তারা৷ দ্রুত চিকিৎসা না হলে তারা দৃষ্টিশক্তি হারাতে পারেন৷
ছবি: Reuters/D.Ismail
ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক
কাশ্মীরে চলমান সহিংসতা নিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে পাকিস্তান অভিযোগ করায় দু’পক্ষের সম্পর্ক আবারো উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে৷ পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে ভারত সরকারের অস্বস্তি বেড়েছে৷ ইসলামাবাদে সার্কভুক্ত দেশগুলোর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ যাবেন কি না, তা নিয়েও সংশয় দেখা দিয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Press Information Bureau
চাপে মোদী সরকার
কাশ্মীর পরিস্থিতির কারণে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদী অভ্যন্তরীণ চাপের মুখেও পড়তে পারেন বলে সরকারের একাংশের আশঙ্কা৷ প্রশ্ন উঠতে পারে, মোদীর পাকিস্তান নীতি নিয়েও৷ নরেন্দ্র মোদী সরকারের শুরুটাই হয়েছিল পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতির বার্তা দিয়ে৷ পাঠানকোট হামলার পর পরিস্থিতি বদলে যায়৷ আর কাশ্মীর ইস্যুতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিন্দায় চাপে পড়েছে মোদী সরকার৷
ছবি: DW/J. Akhtar
কাশ্মীর কার ভূখণ্ড?
ভারত ও পাকিস্তান উভয় রাষ্ট্রই কাশ্মীরকে নিজেদের ভূখণ্ড বলে দাবি করে আসছে৷ দীর্ঘ ৬০ বছর ধরে ওই অঞ্চলটি নিয়ে বিবাদে জড়িয়ে আছে পরমাণু শক্তিধর এই দুই রাষ্ট্র৷ এই সময়ের মাঝে দুটি দেশই দুইবার বড় ধরনের যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/J. Singh
যে কারণে সহিংসতা
মুসলিম অধ্যুষিত ওই অঞ্চলের বেশ কয়েকটি বিদ্রোহী গোষ্ঠী কাশ্মীরের স্বাধীনতার লক্ষ্যে অস্ত্র তুলে নেয়৷ এরপর থেকে সেনাবাহিনীর উপস্থিতি এবং সেনাদের সঙ্গে সংঘর্ষে প্রায়ই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে কাশ্মীর পরিস্থিতি৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Tauseef
9 ছবি1 | 9
কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার আলোচনায় উদ্যোগ নিলেও নেপথ্য উসকানিতে তা ভেস্তে যাচ্ছে বারংবার৷ উত্তেজনা প্রশমনের বাতাবরণ সৃষ্টির জন্য জরুরি, অবিলম্বে সামরিকীকরণ কমিয়ে আনা, সেনাবাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আইন রদ করা, উগ্র হিন্দু জাতীয়তাবাদের রাশ টানা, ভারতের অখণ্ডতা বজায় রেখে স্বায়ত্তশাসনের অধিকার দেওয়া৷ কাশ্মীর ইস্যু আজ আর আন্তর্জাতিক ইস্যু নয়৷ সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলির মধ্যে আলোচনাই একমাত্র পথ, যেটা দ্বিপাক্ষিক বা ত্রিপাক্ষিক হতে পারে৷ জাতিসংঘসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ তা মেনেও নিয়েছে৷সন্ত্রাসী হামলার বদলা নিতে মোদীর দ্বিমুখী হাতিয়ার