টেবিল টেনিসে পিংপং বল যেমন একবার নেটের ওপারে যায়, আবার ফিরে আসে এপারে, তাঁদের অবস্থাও অনেকটা তেমনই৷ পাকিস্তান জানিয়েছে, একমাসের মধ্যে ফিরে যেতে হবে আফগান শরণার্থীদের৷ কিন্তু কী বলছেন সেই আফগানরা?
বিজ্ঞাপন
খুব বেশিদিন আগের কথা নয়, সিরিয়া থেকে তখন দলে দলে শরণার্থী পালিয়ে আসছেন ইউরোপের বিভিন্ন দেশে৷ প্রাণের ভয়ে৷ প্রাণ হাতে নিয়ে৷ ইউরোপের এক শিবিরে আশ্রয় নেওয়া তেমনই এক শরণার্থীকে সাংবাদিক প্রশ্ন করেছিলেন, ‘‘এখানে থেকে যেতে চান? দেশের চেয়ে অনেক বেশি সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যাবে তো এখানে?'' উত্তরে সেই শরণার্থী বলেছিলেন, প্রাণ সংশয় না হলে কেউ পালাতেন না৷ এখনো তাঁরা দেশেই ফিরতে চান৷ সুযোগ-সুবিধার প্রলোভন তাঁকে আটকে রাখতে পারবে না, নিজের মাটির সোঁদা গন্ধের বাতাস তাঁকে একদিন ফিরিয়ে দেবেই ‘নিজের দেশ'৷
এমনই তো বলছিলেন তানভির মোকাম্মেলের সাম্প্রতিকতম তথ্যচিত্রের চরিত্রেরা! পশ্চিমবঙ্গের প্রত্যন্ত প্রান্তের কলোনিতে বসে বলিরেখায় ভরে যাওয়া মুখ নিয়ে যখন এক বৃদ্ধা স্বপ্ন দেখতে থাকেন যে, একদিন না একদিন তাঁর ‘দেশ' ফিরে পাবেনই!
যেসব ‘মুসলিম’ দেশ শরণার্থীদের সহায়তা করছে, করছে না
সিরিয়ার শরণার্থীদের ঢল নেমেছে ইউরোপে৷ পরিস্থিতি মোকাবিলায় হিমশিম খাচ্ছে ইউরোপের কয়েকটি দেশ৷ এরই মধ্যে, ‘মুসলিম’ দেশগুলোর মধ্যে কারা শরণার্থীদের সহায়তা করছে, কারা করছে না তা নিয়েও চলছে বিতর্ক৷
ছবি: Getty Images//W. McNamee
সাহায্য করছে প্রতিবেশী ‘মুসলিম’ দেশগুলো
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর-এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, সিরিয়ার প্রতিবেশী মুসলিম অধ্যুষিত দেশগুলো চার মিলিয়নের বেশি সিরীয় শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে৷ সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরুর পর থেকেই এসব দেশে আশ্রয় নিতে শুরু করে সিরীয়রা৷
ছবি: Reuters/A. Konstantinidis
তুরস্কে সবচেয়ে বেশি শরণার্থী
সিরিয়ার প্রতিবেশী দেশ তুরস্কে সবচেয়ে বেশি সিরীয় শরণার্থী অবস্থান করছে৷ ইউএনএইচসিআর-এর হিসেব অনুযায়ী, চলতি বছরের ২৫ আগস্ট পর্যন্ত তুরস্কে নিবন্ধিত সিরিয়ার শরণার্থীর সংখ্যা প্রায় দুই মিলিয়ন৷
ছবি: Getty Images/C. Court
এগারো লাখের বেশি লেবাননে
সিরিয়ার আরেক প্রতিবেশী দেশ লেবাননে অবস্থান করছে এগারো লাখের বেশি শরণার্থী৷ তবে চলতি বছরের মে মাস থেকে দেশটিতে আর নতুন শরণার্থীদের নিবন্ধন করা হচ্ছে না৷
ছবি: Getty Images/AFP/J. Eid
জর্ডানের অনেক ক্যাম্পে সিরীয় শরণার্থী
সিরিয়ার প্রতিবেশী দেশ জর্ডানে রয়েছেন ছয় লাখের বেশি সিরীয় শরণার্থী৷ দেশটির বিভিন্ন ক্যাম্পে তাদের রাখা হয়েছে৷ ইউএনএইচসিআর-এর দেয়া তথ্য অনুযায়ী, সেখানে শরণার্থীদের কোনো জট এই মুহূর্তে নেই৷
ছবি: Guy Degen
যুদ্ধবিধ্বস্ত ইরাকে সিরীয় শরণার্থী!
যুদ্ধবিধ্বস্ত ইরাকেও সিরিয়ার প্রায় আড়াই লাখ শরণার্থী অবস্থান করছেন৷ পূর্ব আফ্রিকাতেও আশ্রয় নিয়েছে চব্বিশ হাজারের মতো শরণার্থী৷ এবার চলুন জানা যাক সিরিয়ার শরণার্থীদের আশ্রয় দিচ্ছে না, এমন কয়েকটি ‘মুসলিম’ দেশের নাম৷
ছবি: picture alliance/abaca
সিরীয়দের পাশে নেই সৌদি আরব
মুসলমানদের তীর্থস্থান যেদেশে, সেই সৌদি আরব সিরীয় শরণার্থীদের কোনো সহায়তা করছে না৷ বরং সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের বিরোধীদের আর্থিক সহায়তা করছে দেশটি৷ চলতি বছর আঠারো মিলিয়নের বেশি মার্কিন ডলার তাদের দিয়েছে সৌদি আরব৷
ছবি: AFP/Getty Images/F. Nureldine
সমালোচনায় পারস্য উপসাগরীয় দেশগুলো
সৌদি আরব এবং অন্যান্য পারস্য উপসাগরীয় দেশগুলো সিরীয় শরণার্থীদের সহায়তা না করায় ব্যাপক সমালোচনার মুখেও পড়ছে৷ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের সমালোচনায় মুখর তাদের দেশের মানুষরাও৷ তবে এতে সেসব দেশের নীতিতে কোনো পরিবর্তন এখনো আসেনি৷
ছবি: Getty Images//W. McNamee
7 ছবি1 | 7
পৃথিবীর কোণে কোণে ছড়িয়ে থাকা শরণার্থীরা আসলে শেষপর্যন্ত একই ভাষায় কথা বলেন৷ দেশের স্বপ্ন, দেশ ছাড়ার যন্ত্রণা তাঁদের জীবনভর কুড়ে কুড়ে খায়৷ পাকিস্তান ছাড়ার নির্দেশ জারি হওয়ার পর সে দেশে বসবাসকারী আফগান শরণার্থী জামিল খান আজিজি তাই বলে ফেলেন এমন এক সংলাপ, বহু বছর আগে ঠিক যে সংলাপ ঋত্বিক ঘটক লিখেছিলেন দেশভাগ নিয়ে তৈরি ছবিতে-- ‘কেউ কথা রাখেনি৷' কেউ কথা রাখে না, জেনে ফেলেছেন ২৫ বছরের আজিজি৷ বলেছেন, দেশে তিনিও ফিরতে চান৷ ফিরতে চান নিজের বাড়িতে৷ ছোটবেলার মাঠে৷ কিন্তু সবই তো ধ্বংস হয়ে গেছে! সরকার কি ফিরিয়ে দিতে পারবে সেইসব? ফেরাবে না৷ সরকার কথাই দেয় কেবল, আসলে কিছুই ফেরায় না৷ পাকিস্তানকেই তাই ক্রমশ নিজের দেশ ভাবতে শুরু করেছেন আজিজি৷ অন্তত চেষ্টা করছেন৷ পাকিস্তান সরকারের নয়া নির্দেশের পর এখন যদি একমাসের মধ্যে আফগানিস্তানে ফিরে যেতে হয় তাঁদের, তাহলে নিজদেশে পরবাসীর মতো জীবন কাটাতে হবে৷ হয়ত আক্রমণের শিকার হতে হবে বারংবার৷
এত কথার একটাই কারণ৷ সম্প্রতি পাকিস্তান সরকার জানিয়েছে, একমাসের মধ্যে সমস্ত আফগান শরণার্থীকে ফিরে যেতে হবে নিজের দেশে৷ পাকিস্তান শরণার্থীদের খরচ আর বহন করতে পারছে না৷ পাশাপাশি, কূটনৈতিক ক্ষেত্রেও নানা সমস্যা শুরু হয়েছে৷
পাকিস্তান অবশ্য এমন নির্দেশ এই প্রথম জারি করেনি৷ এর আগেও বেশ কয়েকবার আফগান নাগরিকদের দেশে ফিরে যেতে বলা হয়েছিল৷ তবে তা ধোপে টেকেনি৷ পাকিস্তানে কয়েকলক্ষ আফগান শরণার্থীর বাস৷ পাকিস্তানে অবস্থিত জাতিসংঘের মানবাধিকর সংগঠনের হিসাব অনুযায়ী, শুধু গত বছরেই ৩ লক্ষ ৬০ হাজার আফগান শরণার্থী এসেছে পাকিস্তানে৷ জাতিসংঘের বক্তব্য, গত কয়েক বছর ধরে আফগান নাগরিকদের দেশে ফেরানোর নানাবিধ চেষ্টা চালাচ্ছে তারা৷ তবে পাকিস্তান সরকারের নয়া নীতি সেই কার্যপ্রক্রিয়াকেও সমস্যায় ফেলবে বলে তাদের আশঙ্কা৷
শরণার্থী সংকটের একেক দিন
ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে আফ্রিকার শরণার্থীদের আসা এখনও বন্ধ হয়নি৷ কিন্তু তুরস্ক হয়ে তথাকথিত ‘বলকান রুট’ ধরে প্রধানত সিরিয়া, ইরাক ও আফগানিস্তানের হাজার হাজার শরণার্থী আসছেন পশ্চিম ইউরোপের দিকে৷
ছবি: Reuters/O. Orsal
১৩ই জুলাই: কাঁটাতারের বেড়া
এদিন সার্বিয়ার সঙ্গে সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া তৈরি করা শুরু করে হাঙ্গেরি৷ ছবিতে দেখা যাচ্ছে মোরাহালোম গ্রামের দৃশ্য৷ দু’টি দেশের মধ্যে প্রায় ১৭৫ কিলোমিটার সীমান্ত জুড়ে এই চার মিটার উঁচু বেড়া ইউরোপ অভিমুখী উদ্বাস্তুদের স্রোতের ধারাই পাল্টে দেয়৷
ছবি: Getty Images/AFP/C. Segeswaria
২৫শে আগস্ট: খোলা দরওয়াজা
এদিন জার্মানি ঘোষণা করে যে, সিরীয় উদ্বাস্তুরা জার্মানিতে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করতে পারবেন, তা তারা ইউরোপীয় ইউনিয়নের যে দেশেই প্রথম পা দিন না কেন৷ ছবিতে জার্মান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী টোমাস ডেমেজিয়ের ফ্রিডলান্ড শরণার্থী আবাসে শরণার্থীদের সঙ্গে কথা বলছেন৷
ছবি: Reuters/R. Orlowski
২রা সেপ্টেম্বর: একটি শিশুর মৃত্যু
তিন বছরের কিশোর আইলান কুর্দি-র লাশ সমুদ্রসৈকত থেকে কুড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছেন এক আধাসামরিক পুলিশকর্মী৷ ঘটনাটি ঘটে তুরস্কের বোদ্রুম সৈকতাবাসের অদূরে৷ এই একটি ছবি সারা বিশ্বকে সচকিত, বিমূঢ়, শোকাগ্রস্ত করে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/DHA
১২ই সেপ্টেম্বর: অকুল স্রোত
এই একটি দিনে মোট ৪,৩৩০ জন শরণার্থী হাঙ্গেরিতে প্রবেশ করেন, যা কিনা একটা রেকর্ড৷ ড্রোন থেকে তোলা ছবিটিতে সার্বিয়া আর হাঙ্গেরির মধ্যে হর্গস সীমান্তকেন্দ্রে আটকে পড়া শরণার্থীদের দেখা যাচ্ছে৷ পরে হাঙ্গেরীয় পুলিশ সার্বিয়া সীমান্তে রশকে-র কাছে সৃষ্ট একটি ব্যারিকেড থেকে শরণার্থীদের হটানোর জন্য কাঁদানে গ্যাস ও জলের কামান ব্যবহার করে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/I. Ruzsa
১৩ই সেপ্টেম্বর: হাওয়া ঘুরছে
নীতি পরিবর্তন করে জার্মানি এ দিন অস্ট্রিয়ার সঙ্গে সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ চালু করার কথা ঘোষণা করে৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্যান্য দেশও পরে আবার সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ চালু করে৷ ছবিতে জার্মান পুলিশ ফ্রাইলাসিং সীমান্ত পারাপার কেন্দ্রের কাছে একটি ভ্যান থেকে দু’জন কিশোরকে আটক করছে – এদের সম্ভবত মানুষ পাচারকারীরা জার্মানিতে এনেছে৷
ছবি: picture alliance/Pressefoto Ulmer/A. Schaad
১৫ই সেপ্টেম্বর: হাঙ্গেরি-র কড়া নীতি
এদিন হাঙ্গেরি ঘোষণা করে যে, এবার থেকে বেআইনি সীমান্ত পারাপারের জন্য তিন বছরের কারাদণ্ড হবে; সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়ার ক্ষতি করলে পাঁচ বছর৷ কাঁটাতারের বেড়ার সঙ্গে এই হুমকি যুক্ত হওয়াতে উদ্বাস্তুর স্রোত ধায় ক্রোয়েশিয়ার দিকে৷ ছবিতে দেখা যাচ্ছে ক্রোয়েশিয়ার তোভারনিক রেলওয়ে স্টেশনের একটি দৃশ্য৷
ছবি: Getty Images/J. J. Mitchell
১৮ই সেপ্টেম্বর: পথের শেষ কোথায়?
উদ্বাস্তুদের তথাকথিত ‘বলকান রুটের’ এটুকু পরিবর্তন ঘটেছে যে, ক্রোয়েশিয়া এবার শরণার্থীদের হাঙ্গেরি সীমান্তে নিয়ে আসছে, যেখান থেকে তাদের অস্ট্রিয়া পাঠানো হচ্ছে৷ ছবিতে হাঙ্গেরি আর ক্রোয়েশিয়ার মধ্যে বেরেমেন্দ সীমান্ত পারাপার কেন্দ্রে একটি হাঙ্গেরীয় বাস উদ্বাস্তুদের নিয়ে যাচ্ছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
১৯শে সেপ্টেম্বর: অস্ট্রিয়া থেকে জার্মানি
ছবিতে উদ্বাস্তুরা অস্ট্রিয়ার সালৎসবুর্গ শহরের মুখ্য রেলওয়ে স্টেশনে জার্মানি অভিমুখী ট্রেনের অপেক্ষায় রয়েছেন৷ ইতিপূর্বে একবার দু’টি দেশের মধ্যে ট্রেনচলাচলও সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল৷
ছবি: picture-alliance/dpa/B. Gindl
২১শে সেপ্টেম্বর: গোড়ায় গলদ
তুরস্কের ইস্তানবুলের কাছে মোটরওয়ে দিয়ে পায়ে হেঁটে গ্রিক সীমান্তে অবস্থিত এদির্নে শহর অভিমুখে চলেছেন শত শত উদ্বাস্তু৷ প্রশ্ন উঠেছে: এই উদ্বাস্তু সংকটে তুরস্কের ভূমিকা কি? যদিও তুরস্ক এ যাবৎ দশ লক্ষ উদ্বাস্তুকে আশ্রয় দিয়েছে৷
ছবি: Reuters/O. Orsal
9 ছবি1 | 9
পাকিস্তান সরকার অবশ্য এবার নীতিপ্রণয়ন করতে বধ্যপরিকর৷ তাদের বক্তব্য, দেশের অভ্যন্তরীন নিরাপত্তার জন্যও এই পদক্ষেপ জরুরি৷
এদিকে দীর্ঘদিন ধরে পাকিস্তানে বসবাসরত আফগানদের বক্তব্য, সে দেশে তাঁরা নিজেদের মতো কাজকর্মও শুরু করেছেন৷ একমাসের মধ্যে দেশ ছাড়তে হলে আর্থিক এবং সামাজিক ক্ষতির মুখোমুখি হতে হবে তাঁদের৷ কেউ কেউ বলেছেন, বহু চেক ২০২১ সালে ভাঙানোর কথা৷ এখন পাকিস্তান ছাড়তে হলে তা আর হবে না৷ এ যেন অনেকটা দ্বিতীয়বার শরণার্থী হওয়ার মতো অবস্থা৷
এদিকে ইউরোপের বিভিন্ন দেশও সিদ্ধান্ত নিয়েছে, প্রাণ সংশয় না থাকলে আফগান শরণার্থীদের দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা করা হবে৷ ফলে চতুর্দিকে আফগান শরণার্থীদের অবস্থা এখন ভয়াবহ৷
বস্তুত, দেশভাগ নিয়ে তৈরি তাঁর উপন্যাসে সাদাত হাসান মান্টো টোবাটেক সিংয়ের কথা লিখেছিলেন৷ ভারত-পাকিস্তানের মধ্যবর্তী কাঁটাতারে নিজের টোবাটেক রাজ্যের স্বপ্ন দেখতে দেখতে যিনি ঝুলে পড়েছিলেন৷ আফগানরা কি জানেন সেই টোবাটেক সিংয়ের কথা? হয়তো জানেন না৷ শুধু জানেন, পৃথিবীর ইতিহাসে শেষপর্যন্ত শরণার্থীদের পরিণতি হয় টোবাটেক সিংদের মতোই৷