1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পাগড়ি–রাজনীতি

শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা
১২ অক্টোবর ২০২০

কলকাতায় এক শিখ দেহরক্ষীর পাগড়ি খোলা নিয়ে যে রাজনীতি চলছে, তার বিরুদ্ধে শহরের শিখ সঙ্গত। তবে সাধারণ শিখরা পশ্চিমবঙ্গে এমন একটা ঘটনা ঘটে যাওয়ায় ব্যথিত৷

Indien Kolkata
ছবি: Sudipta Bhoumik/DW

 এবং বাঙালিদের সম্প্রীতির সম্পর্কের কথা।

কলকাতায় বিজেপির নবান্ন অভিযানের দিন এক যুব নেতার শিখ দেহরক্ষী সঙ্গে অস্ত্র রাখায় পুলিশ তাকে পেটায়। তার পাগড়ি খুলে যায়। অভিযোগ, বলবিন্দর সিং নামে ওই দেহরক্ষী বারবার পুলিশকে বলা সত্ত্বেও তাঁকে খুলে যাওয়া পাগড়ি ফের বেঁধে রাখার সময় দেওয়া হয়নি। এই ঘটনার ছবি এবং ভিডিও ছড়িয়ে পড়তেই ব্যাপক চাঞ্চল্য দেখা দেয় শিখ সমাজে। টুইট করে নিজের ক্ষোভের কথা জানান প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার হরভজন সিং এবং দেশের আরো অনেক বিশিষ্টজন। বিজেপি সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনার সমালোচনা করে। শিরোমনি অকালি দলের নেতা, দিল্লির বিধায়ক এবং দিল্লি শিখ গুরুদ্বার প্রবন্ধক কমিটির সভাপতি মনজিন্দর সিং সির্‌সা টুইট করে বাংলায় একজন শিখের এই হেনস্থার বিরুদ্ধে আন্দোলনের ডাক দেন। পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের কাছে প্রতিবাদপত্রও জমা দেন তিনি।

কিন্তু কলকাতার বড়বাজারের শিখ সঙ্গতের পক্ষ থেকে মনজিন্দার সিং সির্‌সাকে লেখা এক খোলা চিঠিতে সরাসরি আপত্তি তোলা হয়েছে যে, বিষয়টি নিয়ে যেন জল ঘোলা না করা হয়। চিঠিতে বলা হয়েছে, পুলিশের হাতে বলবিন্দর সিংয়ের হেনস্থা প্রত্যাশিত নয় একটাই কারণে। পশ্চিমবঙ্গে বাঙালিদের সঙ্গে শিখ সমাজের বহুদিনের সুসম্পর্ক। কাজেই ঘটনার তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির কাছে আর্জি জানিয়েছে শিখ সঙ্গত। যদিও চিঠিতে এ-ও উল্লেখ করা হয়েছে যে, বলবিন্দর যেহেতু সাধারণ পোশাকে ছিলেন, দেহরক্ষীর উপযুক্ত উর্দি পরে ছিলেন না, সেই কারণেও পুলিশ তার হাতে আগ্নেয়াস্ত্র দেখে এমন আচরণ করে থাকতে পারে। কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে ফেসবুক পোস্টে এবং টুইটে জানানো হয়েছিল যে, পাগড়ি খুলে যাওয়ার ঘটনা নেহাতই দুর্ঘটনাবশত। শিখেদের সঙ্গেবাংলার সম্পর্ক দীর্ঘ সম্প্রীতির। কাজেই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হেনস্থার ঘটনা এটা নয়।

‘পাগড়ি খুলে যাওয়া শিখ সম্প্রদায়ের মানসিকতাকে অবশ্যই আঘাত করে’

This browser does not support the audio element.

তবে কলকাতার শিখ সমাজ ঘটনাটির কারণে দুঃখিত। মাথার পাগড়ির সম্মান যেহেতু তাদের কাছে সর্বোচ্চ গুরুত্ব পায়, ধ্বস্তাধস্তি করতে গিয়ে পাগড়ি খুলে যাওয়ার ব্যাখ্যাটা অস্বাভাবিক বলেই মনে হচ্ছে তাদের। ঠিক তা-ই বললেন কলকাতার বাসিন্দা তারবিন্দার সিং। তিনি ,মনে করছেন, ঘটনাটা নিয়ে বিতর্ক ছড়ানোর পিছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে কিন্তু এটাও ঠিক, ‘‌‘‌পাগড়ি খুলে যাওয়া শিখ সম্প্রদায়ের মানসিকতাকে অবশ্যই আঘাত করে।'' তিনি আরো বলেন, ‘‘সেনাবাহিনীর শিখেরা পাঁচ মিটার দীর্ঘ কাপড় দিয়ে যেভাবে তাদের পাগড়ি বাঁধেন, সেটা যদি আপনি দেখেন;‌ এবং যার পাগড়ি খুলে গেছে, তিনি একজন প্রাক্তন সেনাকর্মী, উনি কিন্তু অত আলগাভাবে পাগড়ি বাঁধবেন না যে, একটু দৌড়াতে গেলেই খুলে পড়ে যাবে। এটা আমার মনে হয় না সম্ভব। '‌'‌

তারবিন্দার নিজে পাগড়ি না বাঁধলেও তার বাবা এখনও পাগড়ি বাঁধেন। যে বাড়িতে ওঁরা থাকেন, সেখানে আরো অনেক শিখ পরিবার থাকে, যাদের বয়স্করা নিয়মিত পাগড়ি বাঁধেন। তারবিন্দার জানাচ্ছেন, ওঁদের সবার একটাই কথা- যে পাগড়ি পরে শিখরা যুদ্ধ করে, সে পাগড়ি হঠাৎ খুলে যায় কী করে?‌ তবে শিখরা এই সম্মানহানির ঘটনায় যত না ক্রুদ্ধ, তার থেকে বেশি ব্যথিত যে, তাঁদের প্রিয় পশ্চিমবঙ্গে এমন একটা ঘটনা ঘটে গেল। 

 

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ