1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পাঞ্জাবে ফের রক্তাক্ত দিনের আশঙ্কা

অনিল চট্টোপাধ্যায় নতুন দিল্লি
২০ নভেম্বর ২০১৮

ফের রক্তাক্ত পাঞ্জাবের অমৃতসর৷ জঙ্গিরা নিরঙ্কারী সম্প্রদায়ের একটি ধর্মীয় সমাবেশে গুলি ও গ্রেনেড ছুড়লে ঘটনাস্থলেই নিহত হয় তিন জন৷ আহত ২৫ জন৷

Sethusamudram Projekt. Proteste Indien
ছবি: AP

বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, পাঞ্জাব আবার রক্তাক্ত হতে পারে৷ গোয়েন্দাদের ধারণা, রবিবারের এ হামলার নেপথ্যে আছে কাশ্মীরি জঙ্গি এবং খালিস্তানী শিখ জঙ্গি গোষ্ঠী৷ নিরঙ্কারি সম্প্রদায় এবং শিখদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টিই এর আসল লক্ষ্য বলে ধারণা করা হচ্ছে৷

পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং সরেজমিনে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে ঘটনাস্থলে ছুটে যান৷ সেখানে গিয়ে পাকিস্তানের দিকে সন্দেহের আঙ্গুল তুলে বলেন, প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে সন্ত্রাসীরা যে ধরনের গ্রেনেড ব্যবহার করেছে তা তৈরি হয় সাধারণত পাকিস্তানের অর্ডিন্যান্স ফ্যাক্টরিতে৷ কাজেই পাকিস্তানের মদতপুষ্ট কাশ্মিরী জঙ্গি এবং পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর হাত থাকার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না৷ অন্তত এই মূহুর্তে যেসব প্রমাণ পাওয়া গেছে, তাতে এটাই উঠে আসে৷ দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক থেকে বলা হয়, বিস্তারিত তদন্তের দায়িত্ব জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএর হাতে তুলে দেবার জন্য রাজ্য সরকারকে বলা হয়েছে৷ এনআইএর একটি দল এবং অন্যান্য তদন্তকারী দল ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্তের কাজ শুরু করেছে৷

‘পাঞ্জাবে অস্থিরতা সৃষ্টি করাই এর লক্ষ্য, সেটা একটা লজিক্যাল কনক্লুশন’

This browser does not support the audio element.

মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং মনে করেন, ১৯৭৮ সালে মূলস্রোতেরশিখ এবং নিরঙ্কারী সম্প্রদায়ের মধ্যে ধর্মীয় বিষয়েসংঘাতের সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই৷ এটা নিছকই সন্ত্রাসী হামলা৷ নিরঙ্কারী সম্প্রদায় মূলস্রোতের শিখ সম্প্রদায় নয়৷ এটি একটি সর্বধর্ম সমন্বয়কারী অ্যাধ্যাত্মিক সংগঠন৷ সব ধর্মের মানুষই এর সদস্য হতে পারেন৷ কংগ্রেস শাসিত পাঞ্জাবে এই শান্তিকামী সংগঠনের উপর হামলা চালিয়ে জঙ্গিরা ফের হিংসা ও রক্তপাতের সঙ্কেত দিল৷ উল্লেখ্য, ১৯৭৮ সালে উগ্র শিখ নেতা ভিন্দ্রানওয়ালে এবং ফৌজা সিং-এর নেতৃত্বে শিখরা হামলা চালায় নিরঙ্কারীদের উপর৷ নিরঙ্কারী গুরু গুরবচন সিং-এর দেহরক্ষীর হাতে নিহত হন ফৌজা সিং৷ ভিন্দ্রানওয়ালা পালাতে সক্ষম হন৷ এই ঘটনা থেকে শুরু হয় খালিস্তানি বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন এবং তার পরিণতি তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর ‘অপারেশন ব্লু-স্টার', যার ফলে শেষ পর্যন্ত ১৯৮৪ সালে তাঁরই শিখ দেহরক্ষীর গুলিতে প্রাণ দিতে হয় ইন্দিরা গান্ধীকে৷   সেই ক্ষত আজও শুকায়নি৷ তাই পাঞ্জাবে এই গ্রেনেড হামলা হলো ইন্দিরার জন্মদিনের একদিন আগে৷

আজও নিরঙ্কারীদের‘শিখ ধর্মের পথভ্রষ্ট' বলে মনে করেশিখ উগ্রবাদীরা৷ বিশ্লেষকদের মতে, ফের শিখ ও নিরঙ্কারী সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটাতেই অমৃতসরের নিরঙ্কারী ধর্মীয় সমাবেশে এই জঙ্গি হামলা৷ তাঁদের ধারণা, এর পেছনে কলকাঠি নাড়াচ্ছে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই৷ পুলিশ জানায়, নিরঙ্কারী ভবনে প্রার্থনার জন্য সমবেত হয়েছিলেন এই সম্প্রদায়ের কয়েকশ' ভক্ত৷ বেলা ১২টা নাগাদ মোটরবাইকে এসে মুখ ঢাকা দুই ব্যক্তি গ্রেনেড ছোঁড়ে এবং গুলি চালায়৷ ঘটনা বুঝে ওঠার আগেই তারা ঝড়ের বেগে উধাও হয়ে যায়৷ এখনো পর্যন্ত তাদের গ্রেপ্তারের খবর পাওয়া যায়নি৷ তবে ধরার জন্য সব চেকপোস্ট, ফ্লাইওভার এবং আন্তঃজেলা সীমান্তের চেকপোস্টগুলিতে বিশেষ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে৷ সিসিটিভি ফুটেজও চেক করা হচ্ছে৷ বিস্ফোরণের পরই অন্যান্য নিরঙ্কারী ভবনগুলির নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে৷ পাশাপাশি পাঞ্জাব, হরিয়ানা ও দিল্লির নিরঙ্কারী ও শিখ ধর্মস্থানগুলিতেও বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা৷

 

হামলাকারীদের ধরার সূত্র দিতে পারলে ৫০ লখ টাকা পুরস্কার দেবার কথাও ঘোষণা করা হয়েছে৷ নাম গোপন রাখা হবে৷ তারই জেরে পাঞ্জাব পুলিশ সাত জনকে আটক করেছে৷ তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে৷ গোয়েন্দা সূত্রে খবর ছিল, কিছু সন্ত্রাসী পাঞ্জাবে অনুপ্রবেশ করেছে৷

রাষ্ট্রবিজ্ঞানি, অধ্যাপক প্রবীর দে ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘খালিস্তানী যোগসূত্র আছে যেমন বলা যাবে না, নেই তা-ও বলা যাবে না৷ সরকার সন্দেহ করছে, পাঞ্জাবে অস্থিরতা সৃষ্টি করাই এর লক্ষ্য৷ সেটা একটা লজিক্যাল কনক্লুশন৷ দেখা গেছে, পাকিস্তানে সরকার বদলের আগে ও পরে এই ধারা চলে আসছে৷ এতে পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে সুবিধা হয়৷ যেমন, সম্প্রতি কাশ্মীরে পঞ্চায়েত নির্বাচনেও সেটা দেখা গেছে৷ ভারতের গণতান্ত্রিক কাঠামো ধ্বংস করার একটা চেষ্টা সব সময়ই পাকিস্তানের থাকে৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ