পাতানো ম্যাচের তদন্তে অভিযোগ
১৩ আগস্ট ২০১৩আইসিসি এবং বিসিবি এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে সোমবার ঢাকায় পাতানো ম্যাচ নিয়ে তাদের তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ করে৷ তদন্তে তারা বিপিএল-এর গত ২রা ফেব্রুয়ারি ঢাকা-চট্টগ্রাম, ১১ই ফেব্রুয়ারি ঢাকা-খুলনা এবং ১২ ফেব্রুয়ারি ঢাকা-বরিশাল-এই ৩ ম্যাচে পাতানো খেলার প্রমাণ পেয়েছে৷ সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, অভিযুক্ত ৯ জনকেই তাঁদের অপরাধের কথা লিখিতভাবে জানানো হয়েছে৷ তাঁদের মধ্যে ৭ জন সরাসরি স্পট ফিক্সিং এবং ২ জন আচরণবিধি ভঙ্গ করেছেন৷
আইসিসির প্রধান নির্বাহী ডেভিড রিচার্ডসন এবং বিসিবির সভাপতি নাজমুল হাসান সংবাদ সম্মেলনে জানান, আইসিসির দুর্নীতি বিরোধী ইউনিট আকসু এই তদন্ত করে পাতানো খেলার ব্যাপারে পুরোপুরি নিশ্চিত হয়েছে৷ অভিযুক্তদের একজন মোহাম্মদ আশরাফুল আকসুর কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন৷
কয়েকদিনের মধ্যেই ৩ সদস্যের একটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হবে৷ অভিযুক্ত ৯ জন ১৪ দিনের মধ্যে ট্রাইব্যুনালের কাছে দোষ স্বীকার করতে পারেন৷ অথবা অভিযোগ অস্বীকার করে তাদের বক্তব্য তুলে ধরতে পারবেন বলে জানানো হয়েছে৷ তাদের কী শাস্তি হবে, সে সিদ্ধান্ত নেবে ট্রাইব্যুনাল৷ তবে যারা সরাসরি ম্যাচ পাতানোর সঙ্গে জড়িত, তাঁদের ৫ বছর থেকে আজীবনের জন্য ক্রিকেট থেকে বহিষ্কারের বিধান আছে৷ আর যাঁরা আচরণবিধি ভঙ্গ করেছেন, তাঁরা ৫ বছরের জন্য বহিষ্কার হতে পারেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান হয়৷
যৌথ সংবাদ সম্মেলনে অভিযুক্ত ৯ জনের নাম প্রকাশ করা হয়নি৷ তবে ৯ জনকে দেয়া চিঠি এবং নানা সূত্র থেকে তাঁদের নাম জানা গেছে৷ এই পাতানো খেলার সঙ্গে যে ঢাকা গ্লাডিয়েটরস জড়িত, তা প্রকাশ করা হয়েছে৷
অভিযুক্ত ৯ জন হলেন: ক্রিকেটার মোহাম্মদ রফিক, মোহাম্মদ আশরাফুল, মোশররফ রুবেল, মাহবুব আলম রনি, সম্য সরকার, মিঠুন আলি, সানোয়ার হোসেন এবং ঢাকা গ্লাডিয়েটরস-এর দুই কর্মকর্তা শিহাব চৌধুরী এবং সেলিম চৌধুরী৷
মোহাম্মদ আশরাফুল চিঠি পাওয়ার কথা স্বীকার করেন৷ তিনি জানান, তাঁকে ট্রাইবুন্যালের কাছে ১৪ দিনের মধ্যে দোষ স্বীকার বা আত্মপক্ষ সমর্থন করতে বলা হয়েছে৷ তবে তিনি গত মে মাসে আকসুর কাছে আগেই দোষ স্বীকার করেন এবং সংবাদ মাধ্যমেও জাতির কাছে ক্ষমা চান৷ ৪ঠা জুন তাঁকে ক্রিকেট থেকে সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ করে বিসিবি৷
বিসিবি-র প্রধান নির্বাচক এবং সাবেক ক্রিকেটার আকরাম খান ডয়চে ভেলেকে বলেন, তিনি চান যাঁরা এই পাতানো ম্যাচের সঙ্গে জড়িত তাঁদের শাস্তি হোক৷ কারণ তাঁরা ক্রিকেটকে কলঙ্কিত করেছেন৷
বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক রকিবুল ইসলাম ডয়চে ভেলেকে বলেন, এই তদন্ত রিপোর্ট বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন মঙ্গল বয়ে আনবে৷ কারণ শুরুতেই পাতানো ম্যাচের হোতাদের চিহ্নিত করা গেছে৷ এতে বাংলাদেশের ক্রিকেট কলঙ্কমুক্ত হয়ে সামনে আরো এগিয়ে যাবে৷ তিনি আরও বলেন, অভিযুক্তদের শাস্তি হলে ভবিষ্যতে আর কেউ এ ধরনের কাজ করতে সাহস পাবেন না৷