1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পাতাল দুনিয়ায় ‘মেট্রো ফটোগ্রাফার’

রোব্যার্ট রিশটার/এসি৫ জুলাই ২০১৪

শুধুমাত্র মেট্রো স্টেশনের ছবি তোলাটা যদি কারো পেশা নয়, নেশা হয়? অথচ সেই ছবিগুলো ইন্টারনেটে উঠলে হাজার হাজার মানুষ তা ফলো করেন৷ এটাকে কি একটা বিশেষ ধরনের ফটোগ্রাফি বলা চলতে পারে?

স্টকহোমের এই রাডুসেট স্টেশনটি ‘গুহা মেট্রো স্টেশন' নামেই পরিচিতছবি: 2012 Alexander Dragunov

এ ধরনের একজন আলোকচিত্রশিল্পীকে ‘মেট্রো ফটোগ্রাফার' বলায় কোনো দোষ নেই৷ সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমের মেট্রো স্টেশনগুলো দেখলে মনে হবে যেন বড় বড় গুহা৷ আলেক্সান্ডার দ্রাগুনভ-এর কাছে এ ধরনের মেট্রো স্টেশন যেন একটা কল্পলোক৷ যে শহরেই তিনি যান, তিনি মেট্রো স্টেশনগুলোর ছবি তোলেন৷ গত ছ'বছর ধরে তিনি স্টকহোমে বাস করছেন৷ দ্রাগুনভ বলেন, ‘‘মেট্রো স্টেশনে গিয়ে নিঃসঙ্গতা উপলব্ধি করা যায়; নিজের গলার আওয়াজ আর তার প্রতিধ্বনি উপভোগ করা যায়৷কোনো জায়গার অনুভূতিটাই আমার কাছে আসল৷ আবার স্টেশনটা ফাঁকা থাকলে ছবি তোলাও সহজ৷ কেউ তোমাকে জ্বালাতন করবে না৷ নিজের মর্জি মতো কাজ করতে পারবে৷ যে কোনো অ্যাঙ্গল থেকে ছবি তুলতে পারবে৷''

মিস্টার অ্যান্ড মিস আন্ডারগ্রাউন্ড

স্টকহোমে সন্ধ্যা নেমেছে, শহরের অধিকাংশ বাসিন্দা বাড়ি চলে গেছেন৷ ঠিক তখন ৩৫-বছর-বয়সি দ্রাগুনভ বেরোন ছবি তুলতে, যদিও তিনি অর্থোপার্জন করেন প্রোগ্রামার হিসেবে৷ ফটোগ্রাফি তাঁর নেশা৷

ছবি: 2012 Alexander Dragunov

কিন্তু তাঁর তোলা এই সব মেট্রো স্টেশনের ছবি যখন ইন্টারনেটে প্রকাশিত হয়, তখন তারা এতো ক্লিক পায়, যেন তারা কোনো পেশাদারি ফটোগ্রাফারের কাজ৷ এ কাজে আবার দ্রাগুনভ একা নন: ইনস্টাগ্রাম কিংবা ফ্লিকার-এ তাঁর অনেক সমব্যথী অনুরূপভাবে ছবি আপলোড করে থাকেন৷ যেমন লন্ডনের ‘মিসআন্ডারগ্রাউন্ড'

লন্ডন আন্ডারগ্রাউন্ডের সুড়ঙ্গ ও চলন্ত সিঁড়ির যে সব ছবি ‘মিসআন্ডারগ্রাউন্ড' পোস্ট করেন, সেগুলো ‘ফলো' করেন প্রায় ৩৫ হাজার মানুষ৷ ছবিগুলো তোলা হয় স্মার্টফোন দিয়ে৷ ইনস্টাগ্রাম-এ মিউনিখ আন্ডারগ্রাউন্ডেরও ছবি পাওয়া যাবে; শহরের মেট্রো স্টেশনগুলো ছবির মোটিফ হিসেবে খুবই জনপ্রিয়৷

আদতে দ্রাগুনভের জন্ম রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গে৷ রাজধানী মস্কোর মেট্রো স্টেশনগুলো তো প্রায় কিংবদন্তির সমান: সেগুলোর ছবি তোলার জন্য ফটোগ্রাফাররা আসেন বিশ্বের নানা দেশ থেকে৷ সুইডেনের রাজধানীর ‘পাতালপুরী', হয়তো খানিকটা দ্রাগুনভের কল্যাণেই, ক্রমেই আরো জনপ্রিয় হয়ে উঠছে৷

ছবি: 2012 Alexander Dragunov

মেট্রো স্টেশন যেন একটা গুহা

রাডুসেট স্টেশন৷ ‘গুহা মেট্রো স্টেশন' বলে পরিচিত এই স্টেশনগুলি দ্রাগুনভের বিশেষভাবে পছন্দ৷ এখানে গ্রানাইট পাথরকে কংক্রিট দিয়ে মুড়ে একটা গুহার রূপ দেওয়া হয়েছে৷ তথাকথিত ব্লু লাইনের এই গুহা মেট্রো স্টেশনগুলি সত্তরের দশকে তৈরি হয়৷ সর্বাঙ্গসুন্দর ছবির জন্য মেট্রো স্টেশনটি পুরোপুরি জনশূন্য হওয়া চাই৷ রাত্রে সেটা ঘটার সুযোগ সবচেয়ে বেশি৷ তবুও দ্রাগুনভ-কে ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করতে হয়৷

স্টকহোমের অধিকাংশ মেট্রো স্টেশন আধুনিক ভাস্কর্য, চিত্রকলা কিংবা ইনস্টলেশন দিয়ে সাজানো৷ স্টকহোমের মেট্রোকে বিশ্বের দীর্ঘতম আর্ট গ্যালারি বলে বর্ণনা করা হয়েছে৷ দ্রাগুনভের ছবিতেও এই মেট্রো আর্ট স্থান পায়, কিন্তু গুরুত্ব পায় না – গুরুত্ব পায় রেখা ও আলোর ভারসাম্য৷ দ্রাগুনভের ছবিগুলোকে অ্যামেচার ফটোগ্রাফি বললে ভুল করা হবে৷ তাঁর সেরা ছবিগুলির সঙ্কলন ছাপা হয়েছে৷ সে জন্য তিনি বিভিন্ন মেট্রো স্টেশনে বারংবার মাটির তলায় নেমেছেন ও ছবি তুলেছেন৷ দ্রাগুনভ বলেন, ‘‘ছবি তোলা শিখতে অনেকদিন সময় লেগেছে৷ বহুবার ক্যামেরা বদল করেছি, লেন্স বদল করেছি৷ শেষমেষ উপলব্ধি করলাম, ভালো ছবি তুলতে হলে যতদূর সম্ভব ওয়াইড অ্যাঙ্গল লেন্স ব্যবহার করা প্রয়োজন৷''

ছবি: 2012 Alexander Dragunov

স্টকহোমের মেট্রোয় ছবি তোলার কাজ শেষ করেছেন আলেক্সান্ডার দ্রাগুনভ৷ এবার তিনি চান মিউনিখ এবং লন্ডনের আন্ডারগ্রাউন্ডে ছবি তুলতে৷ মেট্রোর মজাই হল তাই: কোনো দু'টো শহরের মেট্রো এক নয়৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ