পানির মাছ পানিতে, আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র আওয়ামী লীগে
হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
২৫ জানুয়ারি ২০২৪
এবার সংসদে বিরোধী দলের ভূমিকায় কি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের দেখা যেতে পারে? সেই হিসেবে তারা সংরক্ষিত নারী আসনেও নিজেদের ‘হিস্যা' চাইতে পারেন?
বিজ্ঞাপন
দলীয় আনুগত্য, সাংবিধানিক অধিকার এবং ‘পানির মাছ পানিতেই স্বচ্ছন্দ'- এই তিন কারণে সেই সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছেন তারা৷
আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যরা আওয়ামী লীগের সঙ্গেই থাকতে চান৷ তারা চান আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলে অন্তর্ভুক্ত হতে৷ রবিবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর দাওয়াতে তাদের এই ‘মনের কথা: তুলে ধরবেন তারা৷
সংরক্ষিত নারী আসনের ব্যাপারে তারা প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তই মেনে নেবেন বলে ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন৷
৬২ জন স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যের মধ্যে দুই-একজন এই চিন্তার বাইরে আছেন৷ তারা অবশ্য আওয়ামী লীগ দলীয় রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নন৷ এরকম সংসদ সদস্য আছেন তিন জন৷ তারা হলেন হলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসনের সৈয়দ এ কে এম একরামুজ্জামান সুখন৷ তিনি বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ছিলেন৷ নির্বাচনে অংশ নেয়ায় তাকে বহিস্কার করা হয়৷ সিলেট-৫ আসনের মাওলানা মোহাম্মদ হুছামুদ্দিন চৌধুরী ফুলতলি৷ তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন৷ আর লতিফ সিদ্দিকী আওয়ামী লীগ থেকে বহিস্কৃত৷ তিনি টাঙ্গাইল-৪ আসনে বিজয়ী হয়েছেন৷
সিলেট-৫ আসনের নির্দলীয় স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মাওলানা মোহাম্মদ হুছামুদ্দিন চৌধুরী ফুলতলি বলেন, ‘‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দাওয়াত দিয়েছেন, অবশই যাবো৷ তার কথা শুনবো তিনি কী বলেন৷ আমার দিক থেকে কোনো কথা বলার নেই৷ তবে আমি তো আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে জড়িত না৷ তাই স্বতন্ত্রই থাকতে চাই৷ স্বতন্ত্র থাকাই ভালো মনে করছি৷”
স্বতন্ত্রদের কোটায় সংরক্ষিত নারী আসন নিয়ে কোনো চিন্তা আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলে, ‘‘এটা নিয়ে আমাদের স্বতন্ত্রদের মধ্যে কোনো আলোচনা হয়নি ৷ আর প্রকৃত অর্থে স্বতন্ত্র তো মাত্র তিন জন৷ আমরা কী পাবো? বাকি সবাই তো আওয়ামী লীগ৷”
যাদের জয়-পরাজয়ে অনেক চমক
সাতবারের সংসদ সদস্যের পরাজয়, প্রতিমন্ত্রীকে বিরাট ব্যবধানে নতুন প্রার্থীর হারিয়ে দেয়া, নৌকা পেয়েও ১৪ দলের হেভিওয়েটদের জিততে না পারা- এমন বেশ কিছু চমক ছিল এবারের নির্বাচনের ফলাফলে৷ বিস্তারিত ছবিঘরে....
ছবি: Prodip Sagor
হারলেন ‘বঙ্গবীর’
টাঙ্গাইল-৮ আসন থেকে নির্বাচনে লড়াই করেছেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী৷ গামছা প্রতীক নিয়ে ৬৭ হাজার ৫০১ ভোট পেয়েছেন এই বীর মুক্তিযোদ্ধা৷ কিন্তু নৌকা প্রতীকে অনুপম শাহজাহান পেয়েছেন ৯৬ হাজার ৪০১ ভোট৷
ছবি: Shamim Mamun
আবার সংসদে ‘বহিষ্কৃত’ লতিফ
কাদের সিদ্দিকী না জিতলেও সংসদ সদস্য হয়েছেন তার বহুল আলোচিত ভাই, আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত নেতা আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী৷ তিনি ট্রাক প্রতীকে ৭০ হাজার ৯৪০ ভোট পেয়েছেন৷ প্রায় ১৭ হাজার ভোটে হারিয়েছেন নৌকার মোজহারুল ইসলাম তালুকদারকে৷
ছবি: Shamim Mamun
বিমান প্রতিমন্ত্রীকে মাটিতে নামালেন ব্যারিস্টার সুমন
যুবলীগ থেকে হয়েছেন বহিষ্কৃত, আবেদন করেও পাননি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন৷ সেই ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন হারিয়ে দিয়েছেন সরকারের বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রীকে৷ তা-ও প্রায় এক লাখ ভোটের ব্যবধানে৷ হবিগঞ্জ-৪ আসনে স্বতন্ত্র লড়ে প্রায় এক লাখ ৭০ হাজার ভোট পেয়েছেন সুমন৷ অন্যদিকে নৌকার মো, মাহবুব আলী পেয়েছেন সাড়ে ৬৯ হাজার ভোট৷
ছবি: Prodip Sagor
নৌকা পেয়েও ডুবলেন ইনু
কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভেড়ামারা) আসনে ১৪ দলীয় জোটের হয়ে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেছেন জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু৷ কিন্তু হেরে গেছেন আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী কামারুল আরেফিনের কাছে৷ ট্রাক প্রতীক নিয়ে বিজয়ী প্রার্থী পেয়েছেন এক লাখ ১৫ হাজার ৭৯৯ ভোট, অন্যদিকে ইনু পেয়েছেন ৯২ হাজার ৪৪৫ ভোট৷
ছবি: DW
তীরে ভিড়তে পারেননি বাদশাও
১৪ দলের প্রার্থী হয়ে তিনবার রাজশাহী-২ আসনে সংসদ সদস্য হয়েছেন ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা ফজলে হোসেন বাদশা৷ ৩১ হাজার ৪৬০ ভোট পেয়ে তিনি হেরেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. শফিকুর রহমানের কাছে৷ ৫৫ হাজার ভোট পেয়েছেন নগর আওয়ামী লীগের এই সহ-সভাপতি৷
ছবি: Rubel Mahfuz
ব্যবসায়ী আজাদে ধরাশায়ী নৌকা
ফরিদপুর–৩ আসনে নৌকার প্রার্থীর সাথে নির্বাচনি প্রচার থেকে উত্তেজনা চলছিল স্বতন্ত্র প্রার্থী এ কে আজাদের৷ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে এই ব্যবসায়ী নেতা লড়েছেন ঈগল প্রতীক নিয়ে৷ ৬৯ হাজার নয় ভোটের ব্যবধানে তিনি আওয়ামী লীগ নেতা শামীম হককে হারিয়েছেন৷ এক লাখ ৩৪ হাজার ৯৮ ভোট পড়েছে তার পকেটে৷
ছবি: T.K Himel
সহকারীর কাছে মঞ্জুর হার
১৯৮৬ সাল থেকে সাতবার জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিয়ে কখনো হারেননি জাতীয় পার্টি-জেপির চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু৷ অষ্টমবারের মতো সংসদ সদস্য হওয়ার পথে হোঁচট খেলেন নিজের সাবেক এপিএসের কাছে৷ স্বতন্ত্রপ্রার্থী মো: মহিউদ্দীন মহারাজ পেয়েছেন ৯৯ হাজার ২৬৮ ভোট৷ অন্যদিকে আনোয়ার হোসেন পেয়েছেন ৭০ হাজার ৬৮১৷
ছবি: bdnews24
ঈগলের কাছে হারলেন গোলাপ
এবারের নির্বাচনে অন্যতম আলোচিত আসন ছিল মাদারীপুর-৩৷ এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য আবদুস সোবহান ওরফে গোলাপকে বড় ব্যবধানে পরাজিত করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহমিনা বেগম৷ ঈগল প্রতীক নিয়ে তিনি পেয়েছেন ৯৬ হাজার ৬৩৩ ভোট৷ অন্যদিকে সোবহান পেয়েছেন ৬১ হাজার ৯৭১ ভোট৷ এই আসনে নির্বাচনি প্রচারে একজনের মৃত্যু হয়েছিল৷
ছবি: Pradyut Kumar
তৃণমূল বিএনপি মহাসচিবের জামানতও গেল
তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার শুধু হারেননি, জামানতও হারিয়েছেন৷ নারায়ণগঞ্জ-১ আসন থেকে লড়াই করে মাত্র তিন হাজার ১৯০ ভোট পেয়েছেন তিনি৷ অন্যদিকে এই আসনের জয়ী প্রার্থী আওয়ামী লীগের গোলাম দস্তগীর গাজী পেয়েছেন এক লাখ ৫৬ হাজার ৪৮৩ ভোট৷ মোট প্রদত্ত ভোটের অন্তত সাড়ে ১২ শতাংশ ভোট না পেলে প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়৷ সেই হিসাবে জামানত বাঁচাতে তৈমুরের প্রয়োজন ছিল অন্তত ২৬ হাজার ৫৭৮ ভোট৷
ছবি: Youtube/Independent Television
জামানত হারালেন শমসের মবিনও
তৃণমূল বিএনপির চেয়ারপার্সন শমসের মবিন চৌধুরীর পরিণতিও হয়েছে দলের মহাসচিবের মতো৷ সিলেট-৬ আসনে মাত্র ১০ হাজার ৯৩৬ ভোট পেয়েছেন তিনি ৷ ভোট পড়েছে এক লাখ ১৬ হাজার ৭০২টি। জামানত বাঁচাতে তার প্রয়োজন ছিল অন্তত ১৪ হাজার ৫৮৭ ভোট৷ এই আসনে বিজয়ী নৌকার নুরুল ইসলাম নাহিদ পেয়েছেন ৫৭ হাজার ৭৭৮ ভোট৷
ছবি: DW
এমপিকে হারালেন কল্যাণ পার্টির ইব্রাহিম
রাজনীতিতে, টেলিভিশনের টক শোতে বরাবরই সরব কণ্ঠ হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম৷ কক্সবাজার-১ আসন থেকে হাতঘড়ি প্রতীক নিয়ে তিনি পেয়েছেন ৮১ হাজার ৯৫৫ ভোট৷ তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী, বর্তমান এমপি জাফর আলম পেয়েছেন ৫২ হাজার ৯৮৬ ভোট।
ছবি: DW
আলোচিত শাহজাহান ওমরের বড় জয়
নির্বাচনের আগে বিএনপি নেতা শাহজাহান ওমরের জেল থেকে ছাড়া পাওয়া, আওয়ামী লীগের প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে যোগ দেয়া চমক তৈরি করে রাজনৈতিক অঙ্গনে৷ নির্বাচনে ৯৫ হাজার ৪৭৮ ভোট পেয়েছেন আলোচিত এই নেতা৷ তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কের পার্টির আবু বকর সিদ্দিক পেয়েছেন মাত্র ১ হাজার ৬২৪ ভোট৷
ছবি: Dulal Saha
12 ছবি1 | 12
‘আমরাআওয়ামীলীগ’
টাঙ্গাইল-৫ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য ছানোয়ার হোসেন৷ তিনি একাদশ সংসদে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হলেও এবার মনোনয়ন না পেয়ে ‘স্বতন্ত্র' হিসেবে নির্বাচন করে জয়ী হন৷ তার কথা, "আমাদের কোথায় রাখবেন সে সিদ্ধান্ত প্রধানমন্ত্রী দেবেন৷ আমরা তো আওয়ামী লীগের পদে আছি৷ মনোনয়ন পাইনি, কিন্তু তার অনুমতি নিয়েই স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছি৷ এখন আমরা সবাই দলেই ফিরতে চাই৷ আমরা আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলে থাকতে চাই৷”
তিনি বলেন, "নির্বাচনকে সফল করতে ও ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে প্রধানমন্ত্রী যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাতে আমরা সহযোগিতা করেছি৷ তার রাজনৈতিক চিন্তা অসাধারণ৷ তিনিই আমাদের আস্থার জায়গা৷”
তিনি জানান, আওয়ামী লীগের যারা স্বতন্ত্র হিসেবে পাস করেছেন তারা সবাই আওয়ামী লীগেই থাককে চান, কারো ভিন্ন চিন্তা আছে বলে তার জানা নেই৷
বরিশাল-৪ আসনে স্বতন্ত্র হিসেবে বিজয়ী আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা পংকজ নাথ বলেন, "আমরা তো আওয়ামী লীগের অনুমোদিত স্বতন্ত্র৷ আমি নিজে চাই আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হিসেবে থাকতে৷ আমার মতো আর সবাইও তাই চায়৷ ৬২ জনের মধ্যে স্বতন্ত্র তো আসলে তিন জন৷ বাকি সবাই তো আওয়ামী লীগ৷ এখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যা ভালো মনে করেন আমরা সেভাবেই কাজ করবো৷
কে সরকারি কে বিরোধী?
55:07
‘পানিরমাছপানিতেইথাকতেচাই’
আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র এমপিরা কয়েকটি কারণে আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের সঙ্গে থাকতে চান৷ প্রথমত, তারা স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য হলেও তাদের মধ্যে মাত্র দুই জনের দলের কোনো পদ নেই৷ বাকিদের সবাই থানা,জেলা বা কেন্দ্রীয় পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ পদে আছেন৷ ওই দুইজন আওয়ামী পরিবারের হলেও দলের পদে নেই৷ তারা হলেন পিরোজপুর-৩ আসনে জয়ী শামীম শাহনেওয়াজ৷ তার ভাই মঠবাড়িয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুর রহমান মনোনয়ন পেয়েছিলেন৷ জাতীয় পার্টিকে আসন ছাড়ায় নৌকা হারান৷ শামীম শাহনেওয়াজ স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে এমপি হয়েছেন৷ আর জাতীয় পার্টির সঙ্গে সমঝোতার কারণে গাইবান্ধা-১ আসনের নৌকার প্রার্থী আফরোজা বারী প্রার্থিতা প্রত্যাহার করায় তার মেয়ে আবদুল্লাহ নাহিদ নিগার স্বতন্ত্র প্রার্থী হন৷ আফরোজা বারী সুন্দরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি৷ নাহিদ নিগারের দলে কোনো পদ নেই৷
যারা পদ আছেন, তারা স্বতন্ত্র এমপি হওয়ার পর দলে তাদের অবস্থান ধরে রাখতে এখন আওয়ামী লীগের এমপি হিসেবে থাকতে চান৷ তা না হলে স্থানীয় রাজনীতিতে তারা কোণঠাসা হয়ে পড়তে পারেন৷ আর আওয়ামী লীগের এমপি হলে বরাদ্দ, এলাকার উন্নয়ন, প্রভাব- এইসব বিষয়ে এগিয়ে থাকবেন৷ এছাড়া সামনে যদি মন্ত্রিসভার আকার বড় হয়, সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান এবং সরকারের বিভিন্ন ব্যাংক, স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে চেয়ারম্যানসহ নানা সুযোগ এখনো অপেক্ষা করছে৷ ‘আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র'রা এসব মিলিয়ে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হিসেবেই থাকতে চান৷
মাদারীপুর-৩ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মোসাম্মাত তাহমিনা বেগমের কথা, "আমি আওয়ামী লীগে ছিলাম, আওয়ামী লীগেই থাকতে চাই৷ এটাই প্রধানমন্ত্রীকে রবিবার বলবো৷ বিশেষ কারণে জনগণের দাবির মুখে স্বতন্ত্র হয়েছি৷ জনগণ আমাকে ভোট দিয়ে এমপি করেছে৷”
তিনি এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, "যদি আওয়ামী লীগে না নেয় তাহলে স্বতন্ত্র থাকবো৷ বিরোধী দলে যাবো না৷ কেউ যেতে চাইলে তারা যাক, আমি যেতে পারি না৷”
এদিকে ঢাকা-৪ আসন থেকে স্বতন্ত্র হিসেবে জেতা আওয়ামী লীগ নেতা ড. আওলাদ হোসেন বলেন, "আমি হলাম আপদমস্তক আওয়ামী লীগ৷ কিসের স্বতন্ত্র? আমি তো আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলে যেতে চাই৷ আমি পানির মাছ পানিতে থাকতে চাই৷ এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিকে তাকিয়ে আছি৷”
বাংলাদেশে ১২ সংসদ: সরকার, বিরোধী ও গণতন্ত্র
কখনো সংসদে নেই বিরোধী দল, কখনো নেই নির্বাচনেই। কখনো নামকাওয়াস্তে বিরোধী দল, কখনো একই দল বিরোধী এবং সরকারের ভূমিকায়। নির্বাচনে নানা ধরনের নাটকীয়তার তথ্য জানুন ছবিঘরে।
ছবি: AFP
১৯৭৩: প্রথম সংসদে ছিল না বিরোধী নেতা
৩০০ আসনের মধ্যে ২৯৩ আসনে জয় পায় আওয়ীমী লীগ। জাসদ একটি, জাতীয় লীগ একটি এবং স্বতন্ত্ররা পান পাঁচটি আসন। ভোট পড়েছিল ৫৪.৯। উল্লেখযোগ্য আসন না থাকায় ছিলেন না কোনো বিরোধী দলীয় নেতা। সেই সময় সাতজন সংসদ সদস্য বিরোধী দল গঠনের দাবি করলেও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তা প্রত্যাখ্যান করেন। আড়াই বছর পর সংসদ ভেঙে দিয়ে চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার প্রবর্তন করা হয়, গঠন করা হয় একক দল বাকশাল।
৫১.৩% ভোটার উপস্থিতিতে নির্বাচনের মাত্র ছয় মাস আগে গঠিত বিএনপি ২০৭ আসন জিতে সরকার গঠন করে। ৫৪ আসন জিতে আওয়ামী লীগ প্রধান বিরোধী দলের অবস্থান নেয়, দলের সভাপতি আসাদুজ্জামান খান হন বিরোধী নেতা। মুসলিম লীগ ২০টি, জাসদ ৮টি এবং অন্যান্য দল পায় ১০টি আসন। ১৯৮১ সালে সেনা কর্মকর্তাদের হাতে জিয়াউর রহমান নিহত হন। ১৯৮২ সালের মার্চের পর দ্বিতীয় সংসদ ভেঙে দেয়া হয়, ক্ষমতা দখল করেন সেনাপ্রধান হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদ।
ছবি: imago/Belga
১৯৮৬: বিএনপির বর্জন, বিরোধী আওয়ামী লীগ
নিজের দল জাতীয় পার্টি গঠন করে তৃতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষণা দেন এরশাদ। ১৯৮৬ সালের নির্বাচনে জাতীয় পার্টি ১৫৩টি, আওয়ামী লীগ ৭৬টি আর জামায়াতে ইসলামী ১০টি আসন পায়৷ বিএনপি এই নির্বাচন বর্জন করেছিল৷ নির্বাচনে ভোট পড়েছিল ৬১.১%। আন্দোলনের মুখে ৭ ডিসেম্বর ১৯৮৭ সালে এই সংসদ বাতিল করেন এরশাদ।
ছবি: imago/Xinhua
১৯৮৮: প্রধান বিরোধীদের বর্জন, সম্মিলিত বিরোধী দল
আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, সিপিবি, ওয়ার্কার্স পার্টিসহ প্রায় সবকয়টি প্রধান বিরোধী দল এরশাদের অধীনে নির্বাচন বয়কট করে। জাতীয় পার্টি পায় ২৫১টি আসন। বেশ কয়েকটি নতুন তৈরি হওয়া দলের হয়ে নির্বাচিত হয়ে আসা সংসদ সদস্যদের নিয়ে তৈরি হয় ১৯ সদস্যের সম্মিলিত বিরোধী দল। কম্বাইন্ড অপজিশন পার্টি-কপ নামের ওই বিরোধী দলের নেতা করা হয় আ স ম আবদুর রবকে। নির্বাচনে ভোটের হার ছিল ৫২.৫%।
ছবি: bdnews24.com
১৯৯১: নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন
ব্যাপক আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করেন এরশাদ। সংবিধানে তখনও ছিল না নিরপেক্ষ সরকারের বিধান। কিন্তু সব দলের সম্মতিতে নির্দলীয় সরকারের অধীনে হয় নির্বাচন। খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি জয় লাভ করে ১৪২ আসনে, আওয়ামী লীগ ৮৮টি আসন পেয়ে সংসদে বিরোধী দলের মর্যাদা পায়, বিরোধীদলীয় নেতা হন শেখ হাসিনা। নির্বাচনে ভোট পড়েছিল ৫৫.৪%। এছাড়া, জাতীয় পার্টি ৩৫ এবং জামায়াতে ইসলামী পেয়েছিল ১৮টি আসন।
ছবি: Getty Images/AFP/FARJANA K. GODHULY
১৯৯৬: আবার বর্জন, বিরোধী নেতা বঙ্গবন্ধুর খুনি
এই নির্বাচন বেশি পরিচিত ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন নামেই। অধিকাংশ বিরোধী দল নির্বাচনটি বর্জন করে, ভোটদানের হার ছিল মাত্র ২১%। বিএনপি জিতেছিল ২৭৮ আসনে। ফ্রিডম পার্টির হয়ে একটি আসন জিতেছিলেন বঙ্গবন্ধুর খুনি কর্নেল (অব.) খন্দকার আবদুর রশিদ৷ স্বতন্ত্ররা জয়ী হয়েছিলেন ১০ আসনে। বাকি ১১টির মধ্যে ১০টি আসনের ফলাফল ‘অসমাপ্ত' থাকে ও আদালতের রায়ে একটি আসনের নির্বাচন স্থগিত করা হয়।
ছবি: Getty Images
১৯৯৬: তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রবর্তন
আগের সংসদ টিকেছিল মাত্র ১১ দিন। ব্যাপক আন্দোলনের মুখে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা প্রবর্তন করে ১২ জুন দেয়া হয় সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন। ১৪৬ আসনে জেতে আওয়ামী লীগ, ১১৬ আসন পায় বিএনপি। ৩২ আসন পাওয়া জাতীয় পার্টির সমর্থন নিয়ে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ, বিরোধী দলের নেতা হন খালেদা জিয়া।
ছবি: Anupam Nath/AP/picture alliance
২০০১: জোটের নির্বাচনে বিএনপি
এটি ছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে দ্বিতীয় নির্বাচন। ১৯৯৯ সালেই জাতীয় পার্টি, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী ঐক্যজোটকে সঙ্গে নিয়ে চার দলীয় জোট গঠন করে বিএনপি। এরশাদ জোট ত্যাগ করলেও নাজিউর রহমান মঞ্জু জাতীয় পার্টির একটি অংশ থেকে যায় জোটে। বিএনপি একাই ১৯৩ আসনে জয় পায়, ইসলামী ঐক্যজোট ২টি এবং জামায়াত পায় ১৭ আসন। আওয়ামী লীগ পায় ৬২ আসন। বিএনপির সঙ্গে সরকারে যোগ দিয়েছিল জামায়াত।
সংবিধান সংশোধন করে বিচারপতিদের অবসরের বয়সসীমা বাড়ায় বিএনপি। তত্ত্বাবধায়ক সরকার পরিবর্তনের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে আওয়ামী লীগ। রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করে সেনাবাহিনী, গঠিত হয় সেনাসমর্থিত সরকার। গ্রেপ্তার করা হয় শেখ হাসিনা এবং খালেদা জিয়াকে, অভিযোগ ওঠে এই দুই নেতাকে রাজনীতি থেকে বাদ দেয়ার ষড়যন্ত্র চলছে। মহাজোট গঠন করে আওয়ামী লীগ পায় ২৩০, জাতীয় পার্টি পায় ২৭ আসন। চার দলীয় জোটে বিএনপি পায় ৩০ আসন।
ছবি: picture-alliance/dpa
২০১৪: বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা
বিএনপিসহ অধিকাংশ বিরোধী দল দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন করে। কোনো প্রতিপক্ষ না থাকায় ১৫৩টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা। ফলে নির্বাচনের আগেই সরকার গঠন নিশ্চিত ছিল আওয়ামী লীগের। রওশন এরশাদের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টি পায় ৩৪ আসন। এই সংসদে জাতীয় পার্টি একই সঙ্গে ছিল বিরোধী দল এবং সরকারে। রওশন এরশাদ হন সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা, মন্ত্রিসভায় ছিলেন তার দলেরই তিন জন।
ছবি: picture-alliance/AP Photo
২০১৮: বিএনপির অংশগ্রহণ, ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ
বিএনপি, গণফোরাম, নাগরিক ঐক্য ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সমন্বয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নামে একটি রাজনৈতিক ঐক্য গঠন করা হয়। এরশাদ বারবার মহাজোট ছাড়ার ঘোষণা দিলেও শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সঙ্গেই নির্বাচন করেন। আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও জোটসঙ্গীরা ২৮৮টি আসন পায়। আর বিএনপি এবং ঐক্যফ্রন্ট পায় মাত্র সাতটি। ২০১৯ সালে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বিরোধী নেতা ছিলেন এরশাদ, এরপর তার স্ত্রী রওশন এরশাদ।
২০২৪: ইতিহাসের সর্বোচ্চ স্বতন্ত্র
বাংলাদেশের সংসদ নির্বাচনের ইতিহাসে এত স্বতন্ত্র প্রার্থী কখনো নির্বাচিত হননি। আওয়ামী লীগ জিতেছে ২২২ আসন, স্বতন্ত্ররা ৬২ আসন এবং জাতীয় পার্টি জিতেছে ১১ আসনে। বিএনপিসহ কয়েকটি দলের বর্জন করা নির্বাচনে স্বতন্ত্র হিসাবে লড়াই করে জয়ী হওয়াদের বেশিরভাগই বিভিন্ন পর্যায়ের আওয়ামী লীগ নেতা। দুটি আসনে নির্বাচন স্থগিত হয়েছে। এবারও জাতীয় পার্টিই বিরোধী দল হবে, নাকি স্বতন্ত্ররাই জোট করবেন তা এখনো জানা যায়নি।
ছবি: Press Information Department of Bangladesh
12 ছবি1 | 12
নারীআসনওবিরোধীদল
সংসদে সরাসরি ৩০০ আসনে নির্বাচনের পর এখন ৫০টি সংরক্ষিত নারী আসনে নির্বাচন হবে৷ সংসদ সদস্যদের ভোটে নারী সংসদ সদস্য নির্বাচনের বিধান থাকলেও ওইভাবে ভোটে নির্বাচিত করার নজির নেই৷ সমঝোতার ভিত্তিতেই নারী সংসদ সদস্য কারা কতজন পাবেন তা নির্ধারিত হয় এবং সেইভাবে ৫০টি আসনে ৫০ জনই প্রার্থী হন এবং সবাই পাস করেন৷ সেই হিসাবে ছয় জন সংসদ সদস্যের বিপরীতে একজন নারী সংসদ সদস্য হন৷ সেই হিসেবে স্বতন্ত্ররা ১০ জন নারী সংসদ সদস্য পাবেন৷ কিন্তু এ ব্যাপারে স্বতন্ত্ররা নিজেদের মধ্যে কোনো আলাপ-আলোচনা এখনো করেননি৷ এ ব্যাপারে মাদারীপুর-৩ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মোসা. তাহমিনা বেগম বলেন, "রবিবারে দেখি প্রধানমন্ত্রী কী করেন৷ তিনি যেভাবে সিদ্ধান্ত নেবেন, সেভাবেই হবে৷ আমরা স্বতন্ত্ররা এটা নিয়ে আলোচনা করিনি৷ ”
স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য ড. আওলাদ হোসেন বলেন, "আমাদের যদি আওয়ামী লীগে নিয়ে নেয়, তাহলে তো আর কোনো কথা নেই৷ তখন প্রধানমন্ত্রীই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দেবেন৷ আর আমাদের আলাদা রাখলেও তিনি নিশ্চয়ই একটা দিক নির্দেশনা দেবেন৷ আমরা সেভাবেই কাজ করবো৷”
তবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের হুইপ নজরুল ইসলাম বাবু এমপি বলেন, ‘‘এখন পর্যন্ত যা তথ্য রয়েছে তাতে স্বতন্ত্রদের স্বতন্ত্রই রাখা হতে পারে৷ নারী আসন তারা যে কয়টা পান তাদের সেই কয়টা দেয়া হবে৷ তারা সমঝোতা করে ঠিক করবেন কাদের নারী সংসদ সদস্য বানাবেন৷ আর তারা সঝোতায় আসতে না পারলে নিশ্চয়ই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী একটা দিকনির্দেশনা দেবেন৷” তার কথা, ‘‘রবিবারের বৈঠকে স্বতন্ত্রদের ডাকার কারণ হলো সংসদে তাদের অবস্থান কী হবে, তাদের নারী কোটার সংসদ সদস্য- এসব বিষয়ে আলোচনা করা৷ প্রধানমন্ত্রী তাদের কথা শুনে সব ঠিক করে দেবেন৷” তিনি আরো বলেন, "আমি যা জানি, তা হলো, জাতীয় পার্টিই সংসদে বিরোধী দল হবে৷”
আমরা মনে করি, আমরাই বিরোধী দল: মুজিবুল হক চুন্নু
This browser does not support the audio element.
আর সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার তানজীব উল আলম বলেন, ‘‘এখন একটি আশঙ্কা আছে যে, স্বতন্ত্র ছয় জন এমপি মিলে একজন নারী সংসদ সদস্য ঠিক করলে তা অর্থের বিনিময়েও হতে পারে৷ তাহলে তো সেটা অন্যরকম হয়ে গেল৷ আর সরাসরি ভোটে গেলে তো যাদের সংসদ সদস্য বেশি তারা সব পাবে৷ আমরা মনে হয় সব দিক রক্ষার জন্য প্রধানমন্ত্রী স্বতন্ত্রদের সঙ্গে একটা সমঝোতা করবেন৷ স্বতন্ত্রদের কাছ থেকে ‘পাওয়ার' নিয়ে পরে তিনি তাদের কোটার নারী এমপি ঠিক করে দিতে পারেন৷ কারণ, স্বতন্ত্ররা ছয় জন ছয় জন করে সমঝোতা করে ১০ জন নারী সংসদ সদস্য ঠিক করতে পারবেন বলে মনে হয় না৷”
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, "স্বতন্ত্রদের প্রধানমন্ত্রী চাইলে আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলে নিতে পারেন৷ কারণ, তারা তো সবাই আওয়ামী লীগের পদে আছেন৷ আবার বিরোধী দলেও বসাতে পারেন, স্বতন্ত্রও রাখতে পারেন৷ আইনে কোনো বাধা নেই৷ পুরোটাই এখন প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের বিষয়৷
এদিকে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, "আমরা মনে করি, আমরাই বিরোধী দল৷ কিন্তু সেটা তো স্পিকারের এখতিয়ার৷ তিনি এখনো আমাদের বিরোধী দল হিসেবে স্বীকৃতি দেননি৷ কাউকেই দেননি৷ যদিও আমাদের বিরোধী দল হওয়ার আনঅফিসিয়ালি ইঙ্গিত আছে৷ রবিবারে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে স্বতন্ত্রদের বৈঠকের পর বোঝা যাবে কারা সংসদে বিরোধী দল হবে৷ আসলে এটা প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে৷”
আগামী ৩০ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদের অধিবেশন ডাকা হয়েছে৷ অধিবেশন শুরুর আগেই বিরোধী দল ঠিক হওয়ার কথা৷ আর জাতীয় সংসদ নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফলের সরকারি গেজেট প্রকাশের পর ৯০ দিনের মধ্যে সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে৷ গত ৯ জানুয়ারি নির্বাচনে বিজয়ীদের গেজেট প্রকাশিত হওয়ায় আগামী ৮ এপ্রিলের মধ্যে এ নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে৷