মাছ ছাড়া বাঙালিদের পক্ষে বেঁচে থাকাই কঠিন৷ কিন্তু চাহিদা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মাছের জোগান নিয়ে সমস্যা দেখা দিচ্ছে৷ জার্মান গবেষকরা অ্যাকোয়াকালচারে টেকসই পদ্ধতিতে মাছ প্রতিপালনের মাধ্যমে নতুন দিশা দেখাচ্ছেন৷
বিজ্ঞাপন
গোটা বিশ্বে মানুষ প্রতি বছর প্রায় ১০ কোটি টন মাছ খায়৷ কিন্তু মাত্রাতিরিক্ত মাছ ধরার ফলে সমুদ্রে মাছ কমে আসছে৷ এমনকি কিছু প্রজাতি লোপ পেতে বসেছে৷ উত্তর সাগরও এর ব্যতিক্রম নয়৷
কৃত্রিম ব্রিডিং বা প্রতিপালনের মাধ্যমে সেই ঘাটতি পূরণ করার চেষ্টা চলছে৷ তবে প্রতিপালনের কোন প্রক্রিয়া সবচেয়ে সফল হচ্ছে, তা এখনো স্পষ্ট নয়৷ জার্মানির উত্তরে এক গবেষণা কেন্দ্রে এ সংক্রান্ত সব প্রশ্নের উত্তর খোঁজা হচ্ছে৷
বিজ্ঞানীরা সেখানে মিষ্টি ও লবণাক্ত পানির মাছের প্রতিপালন ঘটাচ্ছেন৷ সেই জ্ঞানের ভিত্তিতে তাঁরা মাছ চাষের সঙ্গে যুক্ত শিল্পশাখাকে পরামর্শ দিয়ে থাকেন৷ উল্লেখ্য, আজ খাদ্য হিসেবে সব মাছের প্রায় অর্ধেকই আসে অ্যাকোয়াকালচার থেকে৷ তাই এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় জ্ঞানের চাহিদাও বাড়ছে৷ কৃষিবিজ্ঞানী প্রো. কার্স্টেন শুলৎস বলেন, ‘‘গোটা বিশ্বে বেড়ে চলা জনসংখ্যার কারণে মাছের চাহিদাও বাড়বে বলে আমরা ধরে নিতে পারি৷ শুধু মাছ ধরে সেই চাহিদা মেটানো যাবে না৷ এর জন্য অ্যাকোয়াকালচারে উৎপাদন আরও বাড়াতে হবে৷ এভাবে আমরা মাছের জোগানের গ্যারেন্টি দিতে পারি৷’’
মাছেরও আছে অনুভূতি
গোল্ড ফিশ মেমোরি বলে একটা কথা আছে৷ কারো ক্ষণস্থায়ী স্মৃতির তুলনা দিতে ব্যবহার হয় এই মাছের স্মৃতিকে৷ কিন্তু মাছের যে নানা রকমের অনুভূতিও আছে, সেটা কি জানেন? না জানলে জেনে নিন৷
ছবি: picture-alliance/blickwinkel
অনুভব করতে পারে মাছ
একসময় মাছকে মনে করা হতো অনুভূতিহীন প্রাণী৷ কিন্তু ধীরে ধীরে বিজ্ঞানীরা জানতে পারছেন যে, মাছেরও আছে নিজেদের সামাজিক জীবন৷ তারা শোক প্রকাশ করে, একসাথে শিকারে যায় এমনকি বিভিন্ন অদ্ভুত রকমের যৌন সম্পর্কেও জড়ায়৷ মাছের এই অজানা জীবন দেখতে হলে যেতে হবে সাগরের গভীরে৷
ছবি: Fotografie Dos Winkel, www.dos-bertie-winkel.com & www.seafirst.nl
মাছেরও আছে দেহরক্ষী!
মাছেরাও একে অপরকে রক্ষা করে৷ব়্যাবিট ফিশ বা খরগোশ মাছরা দুপুরে একসাথে খেতেও যায়৷ একজন যখন গভীর জলে প্রবালপ্রাচীরে জন্মানো শেওলা খেতে ব্যস্ত, অন্যজনের চোখ তখন শিকারিদের সন্ধানে৷ এভাবে ভাগাভাগি করেই খাবার খায় খরগোশ মাছ৷ এতদিন শুধু উচ্চবুদ্ধির প্রাণীদের মধ্যেই এমন সামাজিকতা দেখা যেতো৷
ছবি: gemeinfrei
ভয়ে জড়োসড়ো
অনেকদিন ধরে মনে করা হতো মাছেরা ভয় পায় না৷ কারণ, ভয় পাওয়ার জন্য মস্তিষ্কের যে অংশ দায়ী, তা মাছের নেই৷ কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, মাছেরাও ভয় পায়৷ শুধু তাই না, ব্যথা এবং চাপ অনুভব করার ক্ষমতাও আছে মাছের৷ এ নিয়ে অবশ্য বিজ্ঞানীদের মধ্যে বেশ বিতর্কও চলছে৷ মৎসকল্যাণ কর্মীরা মাছ শিকার বিষয়ে নতুন করে ভাবার কথাও বলছেন৷
ছবি: picture-alliance/blickwinkel/H. Goethel
বাসা ভাগাভাগি
আড্ডা তো আমাদের খুবই পছন্দ৷ ছুটির দিনে বন্ধুদের বাসায় নিয়ে এসে গল্প করতে কার না ভালো লাগে৷ ক্লাউন ফিশ বা সং মাছ অবশ্য আড্ডা দেয় কিনা জানা যায়নি৷ তবে তাদের বাসায় কিন্তু বন্ধুবান্ধবের অভাব হয় না৷ বিষাক্ত এক ধরনের জলজ ফুলগাছে বাসা বানায় এই মাছ, যা শিকারিদের দূরে রাখে৷ প্রায়ই এক মাছের বাসায় কয়েকদিন বেড়াতে আসে অন্য কোনো এক মাছ৷
ছবি: Fotografie Dos Winkel, www.dos-bertie-winkel.com & www.seafirst.nl
শিকারি বন্ধু
গ্রাউপার মাছ দেখতেই কেমন বদখত৷ তার মধ্যে আবার মোরে ঈলের সাথে জুটি বেঁধে শিকারে গেলে অন্যদের তো ভয়েই পালানোর কথা৷ গবেষকরা বলছেন, গ্রাউপার মাছ শিকারে যাওয়ার সময় মাথা ঝাঁকায়৷ ঈল সে ইশারা বুঝতে পেরে অন্য মাছের বাসায় ঢুকে পড়ে৷ দুর্ভাগা মাছ হয় বাসার ভেতরেই ঈলের খাবারে পরিণত হয়, নাহলে পালাতে গিয়ে ঢুকে পরে বাইরে হাঁ করে থাকা গ্রাউপারের মুখে৷
ছবি: picture-alliance/blickwinkel/H. Schmidbauer
5 ছবি1 | 5
গবেষকরা জানতে চান, কোন পরিবেশে মাছেরা সবচেয়ে ভালোভাবে বেড়ে ওঠে৷ পানির অবস্থাই বা কেমন থাকা উচিত এবং মাছেদের ঠিক কতটা জায়গার প্রয়োজন রয়েছে? বিজ্ঞানীরা মাছেদের ওজন ও আকার-আয়তন মাপেন৷ মনে রাখতে হবে, স্ট্রেস বা মানসিক চাপের মধ্যে থাকলে মাছেদের বৃদ্ধি ও বংশবৃদ্ধির ক্ষমতা কমে যায়৷
মাছেদের খাদ্যও অন্যতম জরুরি বিষয়৷ সেই খাদ্যের কতটা শিরা ও ধমনি পর্যন্ত পৌঁছয়? এখনো পর্যন্ত অনেক অ্যাকোয়াকালচারে খাদ্য হিসেবে মাছে ও মাছের তেল খাওয়ানো হয়৷ ফলে দেখা যায়, যত মাছ খাওয়ানো হচ্ছে শেষ পর্যন্ত প্রতিপালনের মাধ্যমে তত মাছ উৎপাদন হচ্ছে না৷ গবেষকরা এই সমস্যার সমাধান খুঁজছেন৷ প্রো. শুলৎস বলেন, ‘‘আমরা নতুন ধরনের খাদ্য ও সাপ্লিমেন্ট নিয়ে গবেষণা করছি৷ মূল্যবান ও সীমিত সম্পদ হিসেবে খাবারের মধ্যে মাছ ও মাছের তেলের অংশ কমানোর চেষ্টা করছি৷ এর বিকল্প সৃষ্টি ও কাজে লাগানোর ক্ষেত্রে আমরা যথেষ্ট অগ্রসর হয়েছি৷’’
বিজ্ঞানীরা মাছের বদলে উদ্ভিদ পিষে তৈরি গোলা কাজে লাগাচ্ছেন৷ টার্বট মাছের তা পছন্দ হয়েছে বলে মনে হচ্ছে৷ তবে মাছের বদলে উদ্ভিদ খাওয়ালে সেই খাদ্যকেও সমান পুষ্টিকর করে তোলা একটা বড় চ্যালেঞ্জ৷
সমকামিতা যে প্রাকৃতিক, তার প্রমাণ এই প্রাণীরা
প্রাণীজগতে সমকামী যুগল একেবারে স্বাভাবিক একটা ব্যাপার৷ গবেষণায় দেখা গেছে পোকামাকড়, মাছ, পাখি এবং স্তন্যপায়ী প্রাণীদের মধ্যে প্রায় ১৫০০ প্রজাতিতে সমকামিতা রয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/Mary Evans Picture Library
লম্বা গলার জিরাফ
জিরাফদের সমলিঙ্গের মধ্যে ভালোবাসার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি দেখা যায়৷ এমনকি গবেষকরা বলছেন, জিরাফদের মধ্যে শতকরা ৯০ ভাগই সমলিঙ্গের সঙ্গীর সঙ্গে যৌনকর্মে লিপ্ত হয়৷
ছবি: imago/Nature Picture Library
বোতলনাক ডলফিন
এই প্রজাতির স্ত্রী ও পুরুষ দুই ধরনের ডলফিনের মধ্যেই সমকামিতা দেখা যায়৷ মুখ এবং নাক দিয়ে স্পর্শ করে সঙ্গীকে আদর করে তারা৷ পুরুষ ডলফিনরা সাধারণত উভকামী৷
ছবি: picture-alliance/Mary Evans Picture Library
সিংহের আনুগত্য
পশু রাজ সিংহের মধ্যেও সমকামিতা খুবই সাধারণ একটা ব্যাপার৷ দুই থেকে চারটি পুরুষ সিংহ একটি জোট গঠন করে, যাতে সিংহীরা তাদের কাছে আসতে না পারে৷ অন্য জোট থেকে বাঁচতে একে অপরের উপর ভীষণ নির্ভরশীল তারা৷
ছবি: ARTIS/R. van Weeren
বাইসন
পুরুষ বাইসনদের মধ্যে সমকামিতা খুবই সাধারণ একটা ব্যাপার৷ কেননা স্ত্রী বাইসনদের সঙ্গে বছরে একমাত্র একবার মিলন হয় তাদের৷ তাই প্রজনন মৌসুমে পুরুষ বাইসনরা একে অপরের সঙ্গে দিনে বহুবার মিলিত হয়৷
ছবি: imago/Nature Picture Library
বানরদের ‘ওয়ান নাইট স্ট্যান্ড’
ম্যাকাক প্রজাতির নারী ও পুরুষ বানর – উভয়ের মধ্যে এই প্রবণতা রয়েছে৷ যেখানে পুরুষরা মাত্র একরাতের জন্য সমলিঙ্গের সঙ্গে মিলিত হয়, সেখানে স্ত্রী বানররা নিজেদের মধ্যে শক্তিশালী বন্ধন গড়ে তোলে এবং একে অপরের সঙ্গে থেকে যায়৷
ছবি: picture alliance/robertharding
অ্যালবাট্রসদের বন্ধন
হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের লেসন অ্যালবাট্রসরা তাদের সমকামী বন্ধনের জন্য ভীষণভাবে পরিচিত৷ এরা এতটাই বন্ধনে জড়িয়ে যায় যে পুরো জীবন একসাথে কাটিয়ে দেয়, যেন মনে হবে একটি সন্তান সহ স্বামী-স্ত্রীর সুখি পরিবার৷
ছবি: imago/Mint Images
যৌন-বিকারগ্রস্ত বনোবো
পিগমি শিম্পাঞ্জী বা বনোবোকে বলা হয় মানবজাতির সবচেয়ে সাদৃশ্যপূর্ণ প্রাণী৷ তারা খুব অল্প সময়ের ব্যবধানে মিলিত হতে থাকে, এমনকি সমলিঙ্গের সঙ্গে৷ নিজেদের আনন্দের জন্যই এটা করে তারা৷ তবে এটা ঠিক তারা এটাকে নিজেদের মধ্যে বন্ধন দৃঢ় করা এবং দুশ্চিন্তা দূর করার উপায় হিসেবেও মনে করে৷ স্ত্রীদের মধ্যে এই প্রবণতা বেশি৷
ছবি: picture-alliance/F. Lanting
প্রতি ৫টির মধ্যে একটি রাজহাঁস সমকামী
অনেক পাখিদের মতো রাজহাঁসরাও একগামী এবং বছরের পর বছর ধরে তারা এক সঙ্গীর সঙ্গে কাটিয়ে দেয়৷ এদের মধ্যে অনেকেই সঙ্গী হিসেবে সমলিঙ্গের হাঁসকে বেছে নেয়৷ শতকরা ২০ ভাগ রাজহাঁস সমকামী এবং তারা প্রায়ই পরিবার গঠন করে৷
ছবি: picture-alliance/blickwinkel/P. Frischknecht
সিন্ধুঘোটক
পুরুষ সিন্ধুঘোটক চার বছর বয়সের আগে যৌনসক্ষমতা লাভ করে না৷ এর আগ পর্যন্ত তাদের প্রায় সবাই সমকামী থাকে৷ যখন তাদের চার বছর হয় তখন হয় তারা উভগামী হয়, না হলে কেবল প্রজনন মৌসুমে স্ত্রী সিন্ধুঘোটকদের সঙ্গে মিলিত হয়৷
ছবি: imago/Nature in Stock
ভেড়াদের পছন্দ
গবেষণায় দেখা গেছে, একটি পুরুষ ভেড়ার পালের ৮ ভাগ ভেড়াই সঙ্গী হিসেবে পুরুষদের পছন্দ করে, এমনকি প্রজননের সময়ও৷
ছবি: Getty Images/M. cardy
10 ছবি1 | 10
গবেষকরা রেপসিড ও সয়াবিন দিয়ে মাছের খাদ্য তৈরি করছেন৷ এই উদ্ভিদের মধ্যে যথেষ্ট প্রোটিন রয়েছে, যা মাছের বিকল্প হতে পারে৷ খাদ্য অথবা বায়োডিজেল উৎপাদনের সময় বর্জ্য হিসেবে এই উপকরণ পাওয়া যায়৷ সেটিকে নতুন করে এভাবে কাজে লাগানো হচ্ছে৷
বিজ্ঞানীরা মাছের জন্য খাদ্যের মিশ্রণের উন্নতি ঘটিয়ে চলেছেন৷ কারণ একমাত্র সুস্থ মাছই ভালো আয়ের গ্যারেন্টি হতে পারে৷ প্রো. কার্স্টেন শুলৎস বলেন, ‘‘বিস্ময়কর ঘটনা হলো, নিরামিষ উপকরণ ব্যবহার করলে মাছের স্বাস্থ্য সাধারণত খারাপ হয় না৷ উদ্ভিদভিত্তিক প্রোটিনের কারণে মাছের মধ্যে কোনোরকম অস্বস্তি লক্ষ্য করা যায় না৷ এই খাবার খেলে মাছের ভালো বৃদ্ধি হয়, ভালো হজম হয়৷ স্বাদেও তারা কোনো তফাত পায় না৷ তাই আমরা কোনো বিবেকদংশন ছাড়াই এই মাছ ক্রেতাদের হাতে তুলে দিতে পারি৷’’
মাছের সুস্বাস্থ্যের জন্য পরিষ্কার পানিও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ৷ জীবাণুর হাত ধরে জলাধারে দ্রুত রোগ ছড়িয়ে পড়তে পারে৷ গবেষকরা তাই নিয়মিত পানির তাপমাত্রা ও উপাদান পরীক্ষা করেন৷
অ্যাকোয়েরিয়ামে টেকসই মাছ প্রতিপালন সফল হচ্ছে৷ এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, বড় শহর থেকে শুরু করে শুষ্ক এলাকায়ও এভাবে মাছ চাষ করা সম্ভব৷
শরীরের পোড়া ক্ষত সারাতে তেলাপিয়ার চামড়া
ব্রাজিলে রোগীর শরীরের পুড়ে যাওয়া ক্ষত সারাতে চিকিৎসকরা তেলাপিয়া মাছের ত্বকের কার্যকারিতা পরীক্ষা করে দেখছেন৷ এখন পর্যন্ত সাফল্য পাওয়ার কথাই জানাচ্ছেন তাঁরা৷
ছবি: Reuters/P.Whitaker
ওষুধের প্রয়োজন নেই
ব্রাজিলের গবেষকরা বলছেন, পোড়া ক্ষতের চিকিৎসায় তেলাপিয়া মাছের ত্বক ব্যবহার করে সাধারণ উপায়ে চিকিৎসার চেয়ে কম সময়ে সুফল পাওয়া গেছে৷ এই চিকিৎসায় বাড়তি কোনো ওষুধেরও প্রয়োজন হয় না৷
ছবি: Reuters/P.Whitaker
মানুষের ত্বকের মতো
তেলাপিয়ার ত্বকে মানুষের ত্বকের প্রায় সমপরিমাণ আর্দ্রতা আর কোলাজেন প্রোটিন আছে৷ এছাড়া তেলাপিয়ার ত্বক মানুষের ত্বকের মতোই রোগপ্রতিরোধী বলে জানাচ্ছেন গবেষকরা৷ তাঁদের দাবি, তেলাপিয়ার ত্বক ব্যথা উপশমে সহায়ক৷
ছবি: Reuters/P.Whitaker
প্রচলিত উপকরণের অভাব
পোড়া ক্ষতের চিকিৎসায় সাধারণত শুকরের চামড়া ও মানুষের টিস্যু ব্যবহার করা হয়৷ পশ্চিমা দেশগুলোতে আছে আরও বিকল্প ব্যবস্থা৷ কিন্তু ব্রাজিলের সরকারি হাসপাতালগুলোতে প্রায়ই এসবের অপ্রতুলতা দেখা দেয়৷ ফলে গজ, ব্যান্ডেজ দিয়ে পোড়ার চিকিৎসা করা হয়৷ কিন্তু এতে সমস্যা হচ্ছে, দুই দিন পরপর ব্যান্ডেজ পরিবর্তন করতে হয়, যা অনেক সময় বেদনাদায়ক৷
ছবি: Reuters/P.Whitaker
তেলাপিয়া চিকিৎসায় ব্যথা নেই
ক্ষতের জায়গায় সরাসরি তেলাপিয়ার ত্বক লাগানো হয়৷ তারপর ব্যান্ডেজ দিয়ে সেটি আটকে রাখা হয়৷ কোনো ক্রিমের প্রয়োজন নেই৷ প্রায় ১০ দিন পর ডাক্তাররা সেটি খোলেন৷ এই ক’দিনে তেলাপিয়ার ত্বক শুকিয়ে যাওয়ায় পোড়া ক্ষতের স্থান থেকে সেটি খোলার সময় রোগী ব্যথা পান না৷
ছবি: Reuters/P.Whitaker
জীবাণুমুক্ত করা
মানুষের শরীরে ব্যবহারের আগে তেলাপিয়ার ত্বককে জীবাণুমুক্ত করা হয়৷ বিভিন্ন স্টেরিলাইজিং এজেন্ট ব্যবহার করে এটি করা হয়৷ একবার জীবাণুমুক্ত করার পর দুই বছর পর্যন্ত তেলাপিয়ার ত্বক চিকিৎসা কাজে ব্যবহার করা যায়৷ ছবিতে জীবাণুমুক্ত তেলাপিয়ার ত্বক দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: Reuters/P.Whitaker
পরীক্ষা
ব্রাজিলের উত্তরাঞ্চলের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা এখন পর্যন্ত ৫৬ জন রোগীর উপর এই বিকল্প চিকিৎসা পদ্ধতি প্রয়োগ করেছেন৷
ছবি: Reuters/P.Whitaker
চীনে প্রথম
চীনের গবেষকরা প্রথম পোড়া ক্ষতের চিকিৎসায় তেলাপিয়া মাছের ত্বক ব্যবহার করা যায় কিনা, তা পরীক্ষা করে দেখতে ইঁদুরের উপর সেটি প্রয়োগ করেছেন৷ তবে ব্রাজিলের গবেষকরাই প্রথম মানুষের উপর তেলাপিয়ার ত্বক প্রয়োগ পরীক্ষা করে দেখছেন৷
ছবি: Reuters/P.Whitaker
খরচ ৭৫ শতাংশ কম
গবেষক চিকিৎসকরা বলছেন, ব্রাজিলে বর্তমানে ক্ষতের চিকিৎসায় যে ক্রিম ব্যবহার করা হয় তার পরিবর্তে তেলাপিয়ার ত্বক ব্যবহার করলে চিকিৎসা খরচ কমবে প্রায় ৭৫ শতাংশ৷ কারণ, ব্রাজিলে ব্যাপকভাবে চাষ হওয়া তেলাপিয়া মাছের ত্বক সাধারণত ফেলে দেয়া হয়৷
ছবি: Reuters/P.Whitaker
বাণিজ্যিক ব্যবহার
কম মূল্য ও কম সময়ে আরোগ্য লাভ করা যায় বলে চিকিৎসকরা আশা করছেন এই চিকিৎসা পদ্ধতি বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক হবে৷ এ লক্ষ্যে তাঁরা ব্যবসায়ীদের প্রতি তেলাপিয়ার ত্বক জীবাণুমুক্ত করে চিকিৎসাকাজে ব্যবহারের উপযোগী করে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন৷