পানি থেকে মাইক্রোপ্লাস্টিক দূর করার জেল
২৭ জুন ২০২৫
পরিবেশবান্ধব এই জেল কার্বন এবং সিলিকা দিয়ে তৈরি৷ জেলটি মাইক্রোপ্লাস্টিককে জমাটবদ্ধ করে, যা তাদের দৃশ্যমান করে তোলে৷
জেলটি উদ্ভাবন করেছে জার্মানির ভাসা ৩.০ কোম্পানি৷ এর প্রতিষ্ঠাতা কাটরিন শুয়েন বলেন, ‘‘আমাদের হাইব্রিড সিলিকা জেল একটি জাদুর আঠার মতো, যা মাইক্রোপ্লাস্টিক কণাগুলোকে একত্রিত করে৷ তারপর সেগুলো পৃষ্ঠে ভেসে ওঠে, যেখান থেকে আমরা তাদের সহজেই সরিয়ে ফেলতে পারি৷ এটা অনেক ছোট কণাকে মাত্র কয়েকটি গুচ্ছে পরিণত করে৷’’
সাধারণত প্রসাধনী, পোশাক এবং শিল্প বর্জ্য পানির মাধ্যমে মাইক্রোপ্লাস্টিক পানি শোধনাগারে ঢোকে৷
শিল্প কারখানা থেকে সবচেয়ে বেশি মাইক্রোপ্লাস্টিক নির্গত হয়৷ কিছু অংশ আসে মানুষের ঘর-বাড়ি থেকে৷ গবেষণা দল দক্ষিণ-পশ্চিম জার্মানির একটি বর্জ্য পানি শোধনাগারে নিয়মিত তথ্য সংগ্রহ করে৷ বিশুদ্ধ পানিকে স্রোতধারার সঙ্গে মিশ্রিত করার পর আবারও পরীক্ষা করা হয়৷
কাটরিন জানান, ‘‘দুই বছরের গবেষণার পর আমরা পানি থেকে ৮৫-৯০ শতাংশ মাইক্রোপ্লাস্টিক অপসারণ করতে সক্ষম হয়েছি৷ এই ধরণের ফলাফল সত্যিই সন্তোষজনক৷''
বিজ্ঞানীরা তাদের গবেষণাগারে পানির নমুনায় ফ্লুরোসেন্ট মার্কার যুক্ত করেন৷ এগুলো তখনই সক্রিয় হয় যখন একটি নির্দিষ্ট তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলো নমুনার উপর ফেলা হয়৷ এভাবে মাইক্রোপ্লাস্টিকের উপস্থিত কতটা, তা জানা যায়৷ নমুনাটি যত বেশি জ্বলে, তাতে তত বেশি মাইক্রোপ্লাস্টিক আছে বলে ধরে নেওয়া হয়৷
নিজের উদ্ভাবন অন্যদের কাছে ছড়িয়ে দিতে কাটরিন বছর কয়েক আগে একটি অলাভজনক স্টার্ট-আপ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন৷ এর মাধ্যমে তিনি পানি শোধনাগারসহ বিভিন্ন কোম্পানিকে পরামর্শ দেন৷
একটি অংশীদার কোম্পানি যন্ত্রপাতি বিক্রি করে৷ জেলটিও অনেক জায়গায় পাওয়া যায়৷
কাটরিন বলেন, ‘‘কোম্পানিগুলো যন্ত্রপাতি কিনে নিজেরাই প্ল্যান্ট তৈরি করতে পারে৷ কারণ, প্রক্রিয়াটা খুবই সহজ, প্রযুক্তিটিও জটিল নয়- একটা সাধারণ চুল্লি যার ভেতরে স্টারার থাকে, আর বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা৷ প্রক্রিয়া শুরুর জন্য এসবই যথেষ্ট৷''
পানি শোধনাগারসহ বিভিন্ন কোম্পানি, যার মধ্যে কিছু বিদেশি কোম্পানিও আছে, সিস্টেমটি ব্যবহারের জন্য কাটরিনের সঙ্গে যোগাযোগ করছে৷
মাইক্রোপ্লাস্টিক অপসারণ করার পর তা পরিষ্কার করে আবার ব্যবহার করা যেতে পারে৷ একটি চক্রাকার অর্থনীতি, যা কোম্পানিগুলোর কাছে সিস্টেমটি আরও আকর্ষণীয় করে তোলে৷
ইউলিয়া মিলকে/জেডএইচ