ইউরোপীয় পার্লামেন্ট নির্বাচনে অতি-দক্ষিণপন্থিদের কাছে হারের পরই মাক্রোঁ আগাম নির্বাচনের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন।
বিজ্ঞাপন
মাক্রোঁ জানিয়েছেন, ৩০ জুন ফ্রান্সে পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের ভোট হবে। দ্বিতীয় পর্বের ভোট হবে ৭ জুলাই।
ইইউ পার্লামেন্ট নির্বাচনের এক্সিট পোল অনুযায়ী মাক্রোঁর ইইউ-পন্থি জোট ১৫ শতাংশ ভোট পেয়েছে। ল্য পেনের ন্যাশনাল র্যালি পেয়েছে ৩০ শতাংশ ভোট।
মাক্রোঁ যা বললেন
জাতির প্রতি ভাষণে মাক্রোঁ বলেছেন, ''আমাদের পার্লামেন্ট নির্বাচনে আপনারা যাতে পছন্দ অনুসারে ভোট দিতে পারেন, তাই আমি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি ভেঙে দিলাম।''
মাক্রোঁ বলেছেন, ''যারা ইইউ-র পক্ষে তাদের কাছে ইউ পার্লামেন্টের ফলাফলকে ভালো ফল বলা যায় না। আমাদের মহাদেশে অতি-দক্ষিণপন্থিরা সব জায়গায় এগোচ্ছে। এই অবস্থায় আমি স্পষ্টীকরণ চাই। আমি আপনাদের বার্তা পেয়েছি, আপনাদের উদ্বেগ দেখছি, আমি তার জবাবও দিতে চাই।''
মাক্রোঁ জানিয়েছেন, ''এই সিদ্ধান্ত খুবই গুরুতর ও কঠিন ছিল। কিন্তু সবচেয়ে বড় কথা, আমি আপনাদের উপর বিশ্বাস রেখেছি। আমি এমন ভান করতে পারি না যে, কিছুই হয়নি।''
কোন দেশের নির্বাচনে কত ব্যয়?
যুক্তরাষ্ট্রের ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ১৪.৪ বিলিয়ন ডলার খরচ হয়েছিল৷ এটিই এখন পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল নির্বাচন৷
ছবি: Steffi Loos/Getty Images
ভারত
২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচন ভারতের ইতিহাসের সবচেয়ে ব্যয়বহুল নির্বাচন ছিল৷ নতুন দিল্লির সেন্টার ফর মিডিয়া স্টাডিজ বলছে, ঐ নির্বাচনে প্রায় আট বিলিয়ন ডলার খরচ হয়েছে৷ রাজনীতিবিদেরা বিজ্ঞাপন, ব়্যালি, উপহার খাতে অনেক অর্থ খরচ করেছেন বলে জানিয়েছে সংস্থাটি৷
ছবি: Reuters/A. Dave
যুক্তরাষ্ট্র
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক সংস্থা ‘সেন্টার ফর রেসপনসিভ পলিটিক্স’ বা সিআরপির (বর্তমান ওপেনসিক্রেটস নামে পরিচিত) হিসেব বলছে, ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ১৪.৪ বিলিয়ন ডলার খরচ হয়েছে৷ ২০১৬ সালে ব্যয় হয়েছিল প্রায় আট বিলিয়ন ডলার৷
ছবি: Jerry Mennenga/ZUMAPRESS.com/picture-alliance
ব্রাজিল
ল্যাটিন অ্যামেরিকার সবচেয়ে বড় দেশ ব্রাজিলে ২০২২ সালের নির্বাচনে প্রার্থীরা ২.৪ বিলিয়ন ডলার খরচ করেছিলেন৷
ছবি: Leandro Chemalle/TheNews2/IMAGO
যুক্তরাজ্য
২০১৯ সালের নির্বাচনের আগে প্রচারণার সময়কাল ছিল এক মাসের কিছু বেশি৷ নির্বাচনের আগে প্রার্থীদের ব্যয়ের বিষয়ে কঠোর সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছিল৷ সে কারণে দেশটির নির্বাচন কমিশনের হিসেবে ২০১৯ সালের নির্বাচনে প্রার্থী, রাজনৈতিক দল ও অন্যান্য রাজনৈতিক গোষ্ঠীগুলো মাত্র ৬৮ মিলিয়ন ডলার খরচ করেছিলেন৷ যুক্তরাষ্ট্রের সিআরপি বলছে, ২০২২ সালে মিসৌরি রাজ্যে সেনেট নির্বাচনে খরচ হয়েছিল ৬৫ মিলিয়ন ডলার৷
ছবি: Getty Images/AFP/T. Akmen
ফ্রান্স
দেশটিতেও খরচের বিষয়ে কঠোর নীতিমালা রয়েছে৷ ২০২২ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ১২ জন প্রার্থী ৮৮ মিলিয়ন ডলার খরচ করেছিলেন বলে দেশটির সরকার জানিয়েছে৷ এর মধ্যে প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ সবচেয়ে বেশি ১৬.৭ মিলিয়ন ইউরো খরচ করেছিলেন৷
ছবি: Eric Gaillard/REUTERS
জার্মানি
২০১৭ সালের সংসদ নির্বাচনে দলগুলো ১০৯.৬ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছিল বলে কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান কার্যালয় জানিয়েছে৷ ২০২১ সালের সবশেষ অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে সেটি বেড়ে ১১৬ মিলিয়ন ডলার হতে পারে বলে জানিয়েছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়৷
ছবি: Stefan Zeitz/imago images
6 ছবি1 | 6
তিনি দেশবাসীর কাছে অনুরোধ করেন, তারা যেন বিপুল সংখ্যায় ভোট দেয়। ফ্রান্সের একটা স্পষ্ট জনাদেশ দরকার।
ন্যাশনাল র্যালির প্রতিক্রিয়া
ন্যাশনাল র্যালির নেতা ল্য পেন মাক্রোঁর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, ''ফ্রান্সের মানুষ যদি আমাদের উপর ভরসা রাখেন, তাহলে আমরা দায়িত্ব নেয়ার জন্য প্রস্তুত।''
ন্যাশনাল র্যালির নেতা ও ইউরোপীয়. পার্লামেন্ট নির্বাচনে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রার্থী জর্ডন বারদিলা বলেছেন, ''মাক্রোঁর নেতৃত্ব এখন দুর্বল হয়ে গেছে। ফ্রান্সের পার্লামেন্টে তার সংখ্যাগরিষ্ঠতা ছিল না। ইউরোপীয় পার্লামেন্টেও তার শক্তি কমে গেলো।''
ফ্রান্সের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হবে ২০২৭ সালে।