ট্রাম্প প্রশাসনের সমালোচক বলে পরিচিত একাধিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্যে পার্সেল বোমা পাঠানো হয়েছে৷ ট্রাম্প এই ঘটনার নিন্দা করে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন৷
বিজ্ঞাপন
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বেশ কয়েকজন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্যে পার্সেল বোমা পাঠানো হয়েছে৷ সৌভাগ্যবশত তার মধ্যে কোনোটি বিস্ফোরণ ঘটায়নি৷ এফবিআইসহ একাধিক মার্কিন নিরাপত্তা সংস্থা এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে৷ আরো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে এমন বোমা পাঠানো হয়েছে কিনা, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷
প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও বিল ক্লিন্টন, তাঁদের স্ত্রী যথাক্রমে মিশেল ওবামা ও হিলারি ক্লিন্টন, ওবামার আমলের বিচারমন্ত্রী এরিক হোল্ডার, প্রাক্তন সিআইএ প্রধান জন ব্রেনান, ডেমোক্র্যাটিক দলের সমর্থক কোটিপতি জর্জ সোরোস ছাড়াও সংবাদ পরিবেশনকারী সংস্থা সিএনএন-কে উদ্দেশ্য করে এই সব পার্সেল পাঠানো হয়েছিল৷ ক্যালিফোর্নিয়ার সংসদ সদস্য ম্যাক্সিন ওয়াটার্সকে উদ্দেশ্য করে দু-দুটি পার্সেল বোমা পাঠানো হয়েছিল৷ ওবামার ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে উদ্দেশ্য করেও সম্ভবত এমন পার্সেল পাঠানো হয়েছে৷ পুলিশ সেটি শনাক্ত করার চেষ্টা করছে৷ প্রত্যেকটি পার্সেলের প্রেরক হিসেবে ফ্লোরিডায় ডেমোক্র্যাটিক দলের সংসদ সদস্য ডেবি ওয়াসারমান শুলৎসের নাম লেখা ছিল৷ সোমবার থেকে বুধবার এই পার্সেলগুলি শনাক্ত করা হয়েছে৷ নিউ ইয়র্ক শহরের এক পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এখনো পর্যন্ত শনাক্ত হওয়া বিস্ফোরকগুলি সম্ভবত পাইপ বোমা ছিল৷
পার্সেল বোমার লক্ষ্যবস্তু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কড়া সমালোচক হিসেবে পরিচিত৷ ট্রাম্প নিজেও তাঁদের বিরুদ্ধে একাধিকবার তাঁর রোষ উগরে দিয়েছেন৷ সংসদ নির্বাচনের ঠিক আগে এমন ঘটনা বাড়তি তাৎপর্য পাচ্ছে৷ ফলে বিরোধী ডেমোক্র্যাটিক দলের একাধিক নেতা এই ঘটনার নৈতিক দায়িত্ব খোদ ট্রাম্পের উপর চাপাচ্ছেন৷ বিরোধীদের প্রতি প্রেসিডেন্টের চড়া সুর ও চরম বিদ্বেষের কারণেই এমন বিষাক্ত পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে বলে তাঁদের অভিযোগ৷ এমনকি সাংবাদিকের উপর হামলার ঘটনারও প্রশংসা করেছেন ট্রাম্প৷
ট্রাম্প নিজে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন৷ তাঁর মতে, অ্যামেরিকায় রাজনৈতিক সহিংসতার কোনো স্থান নেই৷ সামগ্রিকভাবে গণতন্ত্রের উপর এমন হামলার মুখে তিনি সব শিবিরের উদ্দেশ্যে ঐক্যের ডাক দিয়েছেন৷ ট্রাম্প ঘটনার বিস্তারিত তদন্তের ঘোষণা করেছেন৷ তিনি এমন পরিবেশের জন্য সংবাদ মাধ্যমকে দায়ী করেন৷ তাঁর মতে, লাগাতার বিদ্বেষ এবং নেতিবাচক ও ভুল অভিযোগের ভিত্তিতে হামলা চালিয়ে ও প্রতিবেদন প্রকাশ করে সংবাদ মাধ্যম এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে৷
সিএনএন-এর প্রধান জেফ সাকার এক বিবৃতিতে মার্কিন প্রশাসনের সমালোচনা করেছেন৷ তাঁর মতে, সংবাদ মাধ্যমের উপর লাগাতার হামলার গুরুত্ব সম্পর্কে হোয়াইট হাউস একেবারেই সচেতন নয়৷ প্রেসিডেন্ট ও প্রেস সেক্রেটারিকে নিজেদের কথার গুরুত্ব বুঝতে হবে বলে তিনি মনে করেন৷ এখনো পর্যন্ত সেই লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না৷
এসবি/এসিবি (রয়টার্স, এএফপি)
বারাক ওবামার জীবনের কিছু অন্তরঙ্গ মুহূর্ত
হোয়াইট হাউসে বারাক ওবামার কার্যকাল শেষ৷ এখন চলছে্ ট্রাম্প রাজত্ব৷ তাঁর সময়ের বিভিন্ন অন্তরঙ্গ মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দি করেছেন তাঁর ফটোগ্রাফার পিট সুজা৷
ছবি: picture alliance/dpa/Pete Souza
সব সময়ে স্পটলাইটে
বারাক ওবামা সম্ভবত বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ‘ফটোগ্রাফড’ মানুষ৷ তবে পিট সুজার মতো তাঁর এত কাছাকাছি যাবার সৌভাগ্য খুব কম মানুষেরই আছে৷ ওবামা-দম্পতির মানবিক ও অন্তরঙ্গ মুহূর্তগুলিও ধরে রাখার সুযোগ পেয়েছেন তিনি৷ যেমন ২০১২ সালে অলিম্পিক প্রতিযোগিতায় অ্যামেরিকা ও ব্রাজিলের বাস্কেটবল ম্যাচের সময় তোলা এই ছবিটি৷
ছবি: picture alliance/dpa/Pete Souza
পরাশক্তি ও অতিমানব
বারাক ওবামার অনবদ্য রসবোধ পিট সুজার ক্যামেরায় বার বার ধরা পড়েছে৷ যেমন এখানে ৩ বছরের এক ‘স্পাইডারম্যান’-এর অদৃশ্য জালে আটকে পড়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট৷ সুজা অবশ্য কোনো একটি ছবিকে সবচেয়ে প্রিয় বলতে পারেন না৷ ওবামা নিজে এই ছবিটিকে ২০১৫ সালের ফেভারিট হিসেবে বেছে নিয়েছেন৷
ছবি: picture alliance/dpa/Pete Souza
সমানে-সমানে সংলাপ
এই ছবিটি গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছিল৷ বারাক ও মিশেল ওবামার সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য প্রিন্স জর্জ ১৫ মিনিট বেশি জেগে থাকার অনুমতি পেয়েছিল৷ বাথরোব পরে সে দিব্যি ওবামা-দম্পতির সঙ্গে হাত মেলালো৷ তাঁর সুবিধার জন্য ওবামা হাঁটু মুড়ে বসে পড়েছিলেন৷ প্রিন্স উইলিয়াম ও তাঁর স্ত্রী কেট ওবামা দম্পতিকে নৈশভোজে আমন্ত্রণ করেছিলেন৷
ছবি: picture alliance/ZUMA Press/Pete Souza
প্রেসিডেন্ট হতে কেমন লাগে?
দুনিয়ার সবচেয়ে ক্ষমতাধর মানুষ হওয়া সত্ত্বেও ওবামা ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকতে চান না – অন্তত অ্যামেরিকার সেই সব শিশুদের জন্য, যারা ওভাল অফিসে তাঁর সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পায়৷ যেমন জেকব ফিলাডেলফিয়া৷ ওবামা মানুষের সঙ্গে কত সহজে মিশতে পারেন, এই ছবি তারই এক দৃষ্টান্ত৷
ছবি: picture alliance/dpa/Pete Souza
‘কুল’ প্রেসিডেন্ট
এই ‘কুল’ বা স্বতঃস্ফূর্ত স্মার্ট ভাবমূর্তি বজায় রাখতে ওবামা বেশ পছন্দ করেন৷ যেমন ২০১২ সালে নির্বাচনি প্রচারের সময়ে ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে তোলা এই ছবিতে তাঁকে বেশ খোশমেজাজে দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: picture alliance/dpa/Pete Souza
কী খবর ভাই?
অন্য কোনো ছবিতে সামাজিক বৈষম্য সম্পর্কে ওবামার মনোভাবের এত স্পষ্ট পরিচয় পাওয়া যায় না৷ শুনলে নির্বাচনি বুলি মনে হলেও পিট সুজার তোলা এই ছবি সেই বার্তা তুলে ধরছে৷
ছবি: White House/Pete Souza
ঐতিহাসিক মুহূর্ত যখন ক্যামেরাবন্দি
হোয়াইট হাউসের প্রেস অফিস সুন্দর ছবির ক্ষমতা সম্পর্কে অত্যন্ত সচেতন৷ জামাইকার রাজধানী কিংস্টন থেকে দেশে ফেরার আগে ‘এয়ার ফোর্স ওয়ান’ বিমানে ওঠার সময়ে আকাশে শোভা পাচ্ছিল সুন্দর রামধনু৷ ২০০৮ সালেই সুজা সেনেটর ওবামার উত্থান সম্পর্কে এক ছবির সংগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন৷
ছবি: picture alliance/dpa/Pete Souza
স্বাভাবিক যে কোনো পরিবারের মতো
রিসেপশন, নৈশভোজের আমন্ত্রণ অথবা রাষ্ট্রীয় সফর – মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও ফার্স্ট লেডির উপর থেকে নজর কখনোই সরে যায় না৷ কিন্তু সেই সব হইহট্টগোলের বাইরে তাঁরা যে কোনো স্বাভাবিক পরিবারের মতোই আচরণ করেন৷ যেমন ফুটবল খেলা দেখতে দেখতে সন্ধ্যায় টিভির সামনে বসে নৈশভোজ সেরে নেওয়ার এই দৃশ্য দেখিয়ে দিচ্ছে৷
ছবি: Getty Images/White House/P. Souza
শিশুসুলভ মন
সারাদিন ধরে বিশ্ব রাজনীতি সম্পর্কে সিদ্ধান্তের পটভূমি হলেও ছুটির পর হোয়াইট হাউস খেলার মাঠ হয়ে যায়৷ বারাক ওবামা পারিবারিক কুকুর ‘বো’-কে নিয়ে খেলায় মেতে ওঠেন৷
ছবি: White House/Pete Souza
তোমার-আমার মতো
এই ছবিটিও ওবামার পছন্দের ভাবমূর্তি তুলে ধরে৷ এমন এক মানুষ, যিনি ক্ষমতার শীর্ষে উঠেও নিজের স্বাভাবিক সত্তা হারাননি৷ কয়েকজন সেক্রেটারি ও কংগ্রেসের কর্মীর সঙ্গে তিনি দিব্যি বাস্কেটবল খেলায় মেতে উঠেছেন৷ কিন্তু প্রেসিডেন্টকে হারানোর সাহস কার মনে আছে!