পোল্যান্ডের কার্পেথিয়ান পর্বতমালার ঢালে বাড়ি তৈরি করেছেন স্থপতি রবার্ট কনিয়াচনি৷ বাড়ির নকশাতেও রয়েছে ভিন্নতা৷ ফলে ২০১৭ সালের সবচেয়ে সেরা ব্যক্তিগত বাড়ি নির্বাচিত হয়েছে এটি৷
বিজ্ঞাপন
বাড়িটিতে ছাদ দুটি৷ একটি উপরে, অন্যটি নীচের দিকে৷ বাইরের দিকটা বেশ সাধারণ৷ স্থপতি কনিয়াচনির এই বাড়িকে পোল্যান্ডের অন্যতম আধুনিক বাড়ির স্বীকৃতি দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা৷
খুব অল্প আসবাব আর হালকা রং শান্তির এক আবহ সৃষ্টি করেছে৷ বড় জানালা বাড়ির একটি অন্যতম উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য৷ রুচিশীল এই ফায়ারপ্লেস বাড়িকে গরম আর আরামদায়ক রাখে৷ রবার্ট কনিয়াচনির কাছে নকশা বড় বিষয় নয়৷ তিনি বলেন, ‘‘ঘরের ভেতরটা শান্ত আর সাধারণ হওয়া উচিত বলে আমি মনে করি৷ এই বাড়ির দুই পাশের দৃশ্য বেশ সুন্দর৷ প্রতিদিনই তা পাল্টায়৷ আজ যেমন কুয়াশা৷ মনে হচ্ছে, যেন স্বর্গে আছি৷''
পাহাড়ের ঢালে অন্যরকম বাড়ি
04:01
একটি রিমোট কন্ট্রোল দিয়ে বাড়ির প্রধান দরজা খোলে৷ পরে নৌকায় ওঠার মতো জেটিতে করে ভেতরে ঢোকা যায়৷ মনে হয়, যেন পাহাড়ের ঢালে একটি নৌকা কিছুক্ষণের জন্য থেমেছে৷ বাড়ির একপাশের দেয়াল প্রয়োজনে খোলা যায়৷ এভাবে প্রকৃতির আলো ঘরের ভেতরে ঢোকানো যায়৷ কনিয়াচনি বলেন, ‘‘আমি যদি এখানে একটা বাগান কিংবা টেরাস বানাতাম, তাহলে তার চারদিকে বেড়া দিতাম৷ তা দেখতে অদ্ভুত লাগত, অপ্রয়োজনীয় মনে হতো৷ আমি এমনভাবে বাড়িটি বানিয়েছি, যেন মনে হয়, পুরো পাহাড়টাই আমার৷ বাড়িটা যেন পাহাড়ের মধ্যে ভাসছে৷ এখানে কোনো সীমানা নেই৷''
এই বাড়ির আয়তন প্রায় ১৪০ বর্গমিটার, এবং এটি এমনভাবে বানানো হয়েছে যেন পাহাড় থেকে আসা পানি এর নীচ দিয়ে চলে যেতে পারে৷
বাড়ির নীচে কোনো ফাউন্ডেশন নেই৷ তিনটি পিলারের উপর দাঁড়িয়ে আছে এটি৷ নীচটা এমনভাবে বানানো যে, পিলারগুলো দেখা যায় না৷ কনিয়াচনি এখানে বসবাস শুরুর পর ‘আর্ক' শব্দের তাঁর কাছে যেন অন্য আরেক মানে হয়ে উঠেছে৷
কনিয়াচনি জানান, ‘‘প্রাণীরা এই বাড়িকে ভয় পায় না৷ গ্রীষ্মে তারা এর আশেপাশেই থাকে ও ঘুমায়৷ আর শীতের সময় তারা বনে থাকে৷''
বাড়িটি নির্মাণের সময় পরিবেশের কথাও মাথায় রাখা হয়েছিল৷ যেমন, বাথরুমে এমন এক ফোম ব্যবহার করেছেন কনিয়াচনি, যা দেখতে বিশেষ কিছুর মতো দেখায়৷ তাছাড়া এই দেয়াল অনেক তাপমাত্রা ধরে রাখতে পারে৷ একেবারে সাধারণ নকশা, তবে কার্যকরী৷
আর্কিটেকচার ও ডিজাইন ম্যাগাজিন ‘ওয়ালপেপার' কনিয়াচনির বাড়িকে ২০১৭ সালের সবচেয়ে সেরা ব্যক্তিগত বাড়ি নির্বাচন করেছে৷ অবশ্য পোল্যান্ডের এই স্থপতির পুরস্কার জেতার কোনো লক্ষ্য ছিল না৷ তিনি কেবল শহরের কোলাহলমুক্ত এক পরিবেশে থাকতে চেয়েছিলেন৷ এখানে তিনি সেটা পেয়েছেন৷
বিশ্বের ১০টি রহস্যময় অরণ্য
প্রাচীন অরণ্য দেখলেই কি আপনার নিজেরও বন্য হতে ইচ্ছে করে? আপনি কি এমন একজন মানুষ, যিনি ভয়কে উপেক্ষা করে রহস্যের পেছনে ছুটতে ভালোবাসেন? তাহলে এই ছবিঘরটি আপনার জন্য৷ আপনার ভ্রমণ তালিকায় এখনই এদের নাম যুক্ত করুন৷
ছবি: AFP/Getty Images/J. Thys
ব্ল্যাক ফরেস্ট, জার্মানি
এই অরণ্যের নামেই যেন লুকিয়ে আছে রহস্য৷ কেননা একে ঘিরে রয়েছে অনেক পৌরাণিক কাহিনি ও কিংবদন্তি৷ জার্মানির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলকে রোমানরা নাম দিয়েছিল ব্ল্যাক ফরেস্ট, কারণ সে অঞ্চল একসময় ছিল অন্ধকারাচ্ছন্ন এবং অভেদ্য৷ সেখানে গেলে মনে হতে পারে ঘন অরণ্যে গাছের আড়ালে লুকিয়ে আছে ভূত প্রেত৷ একইসাথে রূপকথা এবং ভৌতিক এক শিহরণ জাগবে মনে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/P. Seeger
হ্যালারবাস, বেলজিয়াম
প্রতি বসন্তে নীলমনি লতায় ছেয়ে থাকে এই অরণ্য, মনে হয় যেন নীল ভেলভেট৷ পর্যটকদের কাছে তখন এই অরন্যকে মনে হয় রূপকথার রাজ্য৷
ছবি: AFP/Getty Images/J. Thys
গোবলিন ফরেস্ট, নিউজিল্যান্ড
গোবলিন অরণ্য আসলেই অনন্য৷ এমন অরণ্য বিশ্বের আর কোথাও দেখতে পাওয়া যায় না৷ ভূতুরে শ্যাওলা ঢাকা এই গাছগুলো বৃষ্টির পানি পুরোপুরি শুষে নিতে পারে না৷ গায়ে যে পানি জমে থাকে তাতে শ্যাওলা হয়ে এমন ভূতুরে চেহারা হয় এগুলোর৷
ছবি: picture-alliance/blickwinkel/S. Sailer
রাতা ফরেস্ট, নিউজিল্যান্ড
রাতা নিউজিল্যান্ডের এক ধরনের গাছের নাম৷ এই অরণ্যটি এন্ডারবাই দ্বীপে অবস্থিত৷ এখানে গাছগুলোর গুড়ি আর ডালপালা দেখে মনে হয় একে অপরকে শুঁড় দিয়ে জড়িয়ে ধরে রেখেছে৷ এই অরণ্যে হাইকিং খুব জনপ্রিয়৷
ছবি: picture-alliance/Arco Images G/H. Reinhard
ক্রুকেড ফরেস্ট, পোল্যান্ড
পোল্যান্ডের নোয়ে সারনোভো এলাকার উপকণ্ঠে এই অরণ্যের অবস্থান৷ এখনও পর্যন্ত কেউ জানে না এই গাছগুলোর একইরকম আকৃতির রহস্য৷ ধারণা করা হয় ১৯৩০ সালে এখানে ৪০০ ঝাউ গাছ লাগানো হয়েছিল, যাতে এর কাঠ থেকে নৌকা তৈরি করা যায়৷ কিন্তু এখন গাছগুলো এভাবেই রয়ে গেছে৷
ছবি: picture-alliance/L. Halbauer
মস সোয়াম্প, রোমানিয়া
এই ছবিটি দেখলেই বোঝা যায় এতে শেওলা কি পরিমাণ বেশি৷ রোমানিয়ায় দারুণ সব পাহাড় আর অরণ্য ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে৷
ছবি: Imago/Nature Picture Library
আওকিগাহারা, জাপান
জাপানের মাউন্ট ফুজির পাদদেশে এই অরণ্যের অবস্থান৷ এটাকে বলা হয় বৃক্ষের সমুদ্র৷ কেননা এটা এটা বিস্তৃত এবং রহস্যে ঘেরা৷ হাইকাররা প্রায়ই এখানে গিয়ে পথ হারিয়ে ফেলেন৷ সেজন্য গাছে গাছে চিহ্ন এঁকে রাখেন তাঁরা৷
ছবি: cc-by-sa/ajari
হোয়া-বাসিউ ফরেস্ট, রোমানিয়া
বিশ্বের অন্যতম ভূতুরে অরণ্য বলা হয় এটিকে৷ এমনকি ‘ট্রান্সিলভেনিয়ার বার্মুডা ট্রায়াঙ্গেল’-ও বলা হয় একে৷ এই জঙ্গলে গাছের আড়ালে অনেকেই ভূত দেখেছেন বলে দাবি করেন৷
ছবি: cc
ওতসারেতা ফরেস্ট, স্পেন
স্পেনের বাস্ক অঞ্চলে এর অবস্থান৷ গোর্বিয়া প্রাকৃতিক উদ্যানের একটি সুন্দর অংশ এটি৷ প্রাচীন বৃক্ষ, সেই সঙ্গে কুয়াশা ঢাকা পরিবেশ এখানে রহস্যের সৃষ্টি করেছে৷
ছবি: imago/Westend61
সিংগী ফরেস্ট, মাদাগাস্কার
ছুড়ির অরণ্য হিসেবে পরিচিত এই জঙ্গল৷ এতে রয়েছে ছুঁচালো চুনাপাথরের সারি৷ ভূ-পৃষ্ঠ থেকে ৭০ মিটার উপরে এদের মাথাগুলো দেখে মনে হবে যেন সত্যিই কতগুলো ছুড়ি আকাশের দিকে মুখ তুলে আছে৷ এটাকে সবচেয়ে বিপদজনক প্রাকৃতিক উদ্যান বলা হয়৷