সেরা ফুটবলারদের অনেকে সেরা মানুষও বটে৷ দানশীলতায় পিছিয়ে নেই রোনাল্ডো, মেসি বা নেইমার৷ বঞ্চিত শিশুদের পাশে বরাবরই দাঁড়িয়েছেন মানবিক দায় চুকাতে৷
বিজ্ঞাপন
খেলা কি কেবল বাণিজ্য কিংবা নিছক বিনোদন? সমাজে এর প্রভাব আর কী কী! ২০১০ সালের বিশ্বকাপ শেষে বাংলাদেশের একটি দৈনিক পত্রিকায় ‘ফিরিয়ে দাও খেলা' শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ হয়৷ সে সংবাদে উঠে আসে বিশ্বকাপের মাসটিতে ঢাকায় ইভটিজিং কমেছিল ৯০ শতাংশ৷ আর খুন-ধর্ষণ-সন্ত্রাস কমেছিল আগের মাসগুলোর তুলনায় দুই-তৃতীয়াংশ৷
ফুটবলের এই পরোক্ষ জোরটা সম্ভবত ফিফা জানে৷ আর সে কারণেই নানা সমাজসেবামূলক ক্যাম্পেইনের সাথে ফুটবলকে যুক্ত করার প্রয়াস শুরু হয়েছে৷ বিশেষ করে শিশুদের জন্য নানা ধরনের সেবামূলককাজে ফুটবলকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে তহবিল সংগ্রহের কাজ হামেশাই চলে৷ ২০০৬ সালে জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ এবং ফিফা ‘ইউনাইটেড ফর চিলড্রেন, ইউনাইটেড ফর পিস' ক্যাম্পেইন শুরু করে৷
ওই ক্যাম্পেইনে ফুটবলের সেই সময়ের তারকা টোগোর ইমানুয়েল আবিদিওর, জার্মানির ক্রিস্টফ মেডজেদা, আইভরি কোস্টের দিদিয়ের দ্রগবা, ফ্রান্সের থিয়েরি অঁরি, অ্যামেরিকার টিম হাওয়ার্ড, মেক্সিকোর রাফায়েল মারকেস, আর্জেন্টিনার লিওনেল মেসি, জাপানের হিডোটোশি নাকাতা, জি-সুং পার্ক, ইকুয়েডরের এডউইন টেনোরিও, ইটালির ফ্রান্সিসকো টোট্টি, হল্যান্ডের এডউইন ভন ডার সার, কোস্টারিকার পাওলো ওয়ানচোপে এবং ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর ডোয়াইট ইয়র্ককে যুক্ত করা হয়৷
বিশ্ব ফুটবলের সর্বকালের সেরা একাদশ
এই একাদশ বাছাই নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই৷ কয়েকবছর আগে বিশ্লেষক ও সাংবাদিকদের ভোটে নির্বাচিত এই একাদশ প্রকাশ করেছিল বিশ্বখ্যাত ফুটবল ম্যাগাজিন ওয়ার্ল্ড সকার৷ দেখুন কারা ছিলে ৪-৪-২ ফর্মেশন মাথায় রেখে গড়া সেই দলে৷
ছবি: AP
গোলরক্ষক: লেভ ইয়াসিন
ফুটবলে গোলরক্ষকের নাম নেয়া হবে আর লেভ ইয়াসিনের নাম আসবে না তা হতে পারে না৷ সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের এই গোলরক্ষক খেলেছেন ১৯৫৮, ১৯৬২ ও ১৯৬৬ বিশ্বকাপ৷ ১৯৫৬ সিডনি অলিম্পিকে জিতিয়েছিলেন দেশকে৷ ভোটে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েই একাদশে জায়গা করে নিয়েছেন তিনি৷
ছবি: picture-alliance/empics
লেফট ব্যাক: পাওলো মালদিনি
বিশ্ব ফুটবলের সেরা ডিফেন্ডার কে? অবলীলায় এই নামটি চলে আসবে৷ ভোটেও তাই হয়েছে৷ নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীর দ্বিগুণ ভোট পেয়েছেন তিনি৷ ১৯৯০, ১৯৯৪ ও ১৯৯৮-র বিশ্বকাপে খেলেছেন এই ইটালিয়ান ডিফেন্ডার৷ ১৯৯৪-এর বিশ্বকাপে ব্রাজিলের বিপক্ষে ইটালির টাইব্রেকার হার একটুর জন্য তাঁকে শিরোপার নাগাল পেতে দেয়নি৷
ছবি: picture-alliance/AP-Photo/B. Luca
রাইট ব্যাক: কাফু
টানা তিন বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলেছেন তিনি৷ জিতেছেন ১৯৯৪ ও ২০০২ বিশ্বকাপ৷ এর মধ্যে ২০০২-এ ব্রাজিল দলের নেতৃত্বে ছিলেন৷ ভোটে ডিফেন্ডারদের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানটি ছিল কাফু’র৷
ছবি: picture-alliance/dpa
সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার: ফ্রানৎস বেকেনবাওয়ার
ফুটবলের ইতিহাসে বেকেনবাওয়ারই একমাত্র খেলোয়াড় যিনি কোচ, খেলোয়াড় বা অধিনায়ক থাকাকালে দেশকে বিশ্বকাপ জিতিয়েছেন৷ এই কিংবদন্তীর নেতৃত্বে জার্মানি বিশ্বকাপ জেতে ১৯৭৪ সালে৷ আর কোচ হিসেবে ডয়েচলান্ডকে আবারো শিরোপার স্বাদ দেন ১৯৯০-এ৷
ছবি: picture-alliance/dpa
সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার: ববি মুর
ইংল্যান্ডের একমাত্র বিশ্বকাপটি (১৯৬৬) জয়ে নেতৃত্ব দেন এই কিংবদন্তী ডিফেন্ডার৷ তাঁর পায়ের দক্ষতা আর রক্ষণভাগে দেয়াল তৈরি করে প্রতিপক্ষকে কঠিন সময় উপহার দেয়ার কৌশল তাঁকে জায়গা করে দিয়েছে একাদশে৷ তবে ভোটের মাঠে এর জন্য তাঁকে ইটালির ফ্র্যাঙ্কো বারেৎসি’র সঙ্গে কঠিন লড়াই করতে হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
মিডফিল্ডার: আলফ্রেডো ডি স্টেফানো
যে চারজন মিডফিল্ডার একাদশে জায়গা পেয়েছেন, তাঁদের মধ্যে আলফ্রেডো ডি স্টেফানো সবচেয়ে কম ভোট পেয়েছেন৷ এই প্রতিভাবান ফুটবলারের বিশেষ দিক হলো তিনি যে কোনো পজিশনে খেলতে পারতেন৷ অসম্ভব স্ট্যামিনার অধিকারী ছিলেন৷ আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে তিনি আর্জেন্টিনা ও স্পেনের হয়ে খেলেছেন৷ বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে খেললেও মূল পর্বে খেলা হয়নি তাঁর৷
ছবি: picture-alliance/dpa
মিডফিল্ডার: জিনেদিন জিদান
জিদানের পায়ের জাদু’র প্রশংসা করেন না এমন ফুটবলপ্রেমী পাওয়া মুশকিল৷ স্কিলের দিক থেকে অনেকেই তাঁকে মারাদোনা আর পেলের সঙ্গেই তুলনা করেন৷ ১৯৯৮-এর বিশ্বকাপ জয়ে ফ্রান্সের নায়ক ছিলেন তিনিই৷ এমনকি ২০০৬ বিশ্বকাপেও সম্ভাবনা জাগিয়ে তুলেছিলেন৷ তবে সেবার ইটালির মাতেরাৎসিকে মাথা দিয়ে গুঁতো মেরে অনেক সমালোচনার ভাগীদারও হন৷
ছবি: picture-alliance/DPPI
মিডফিল্ডার: ইয়োহান ক্রুইফ
হল্যান্ডের এই কীর্তিমান ফুটবলার যে একাদশে থাকবেন তা জানাই ছিল৷ টোটাল ফুটবলের একরকম জনকই তিনি৷ তাঁর কৌশলের কাছে প্রতিপক্ষরা যেন দাঁড়াতেই পারতেন না৷ তাঁর নৈপূণ্যে ১৯৭৪ বিশ্বকাপে পূর্ব জার্মানি, আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলকে হারিয়ে ফাইনালে পৌঁছায় হল্যান্ড৷ কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে পশ্চিম জার্মানির কাছে ধরাশায়ী হয়৷
ছবি: Getty Images/Keystone
মিডফিল্ডার: ডিয়েগো মারাদোনা
ফুটবলের সবচেয়ে জনপ্রিয় বিতর্ক হলো, সর্বকালের সেরা কে? পেলে, না মারাদোনা? এই ফুটবল জাদুকরের জাদু অবশ্য ১৯৮২-তেই দেখেছিল বিশ্ব৷ কিন্তু সেবার তেমন একটা সুবিধা করতে পারেননি৷ এরপর প্রায় একক নৈপূণ্যেই আর্জেন্টিনাকে জিতিয়েছিলেন ১৯৮৬-র বিশ্বকাপ৷ ১৯৯০ সালেও ফাইনালে খেলেছে তাঁর দল৷ তাঁর ‘ঈশ্বরের হাত’-এর গল্প কার না জানা৷
ছবি: picture-alliance/dpa
স্ট্রাইকার: পেলে
সর্বকালের সেরা বিতর্কের আরেক নায়ক পেলে৷ ‘কালোমানিক’ নামেও পরিচিত৷৷ ব্রাজিল ও ফুটবল উভয়কেই মহিমান্বিত করেছেন এই কিংবদন্তী৷ ১৯৬২ বিশ্বকাপে তিনি দ্বিতীয় ম্যাচে ইনজুরির শিকার হয়ে আর খেলতে পারেননি৷ তবে সেই বিশ্বকাপ জেতে ব্রাজিল৷ পরের বিশ্বকাপে ব্রাজিল অবশ্য আগেই বাদ পড়ে যায়৷ প্রচুর ফাউলের শিকার হন পেলে৷ তবে ১৯৭০-এর বিশ্বকাপে চরম নৈপূণ্য দেখিয়ে জিতে নেন শিরোপা৷
ছবি: picture-alliance/dpa
স্ট্রাইকার: লিওনেল মেসি
একাদশে এ সময়ের একমাত্র প্রতিনিধি হলেন লিওনেল মেসি৷ যদিও এখনো বিশ্বকাপে মেসির জাদুর প্রতিফলন তেমন একটা ঘটেনি, তারপরও তাঁর নৈপুণ্য তাঁকে সেরা একাদশে জায়গা করে দিয়েছে৷ শুধু তাই নয়, পেলে ও মেসির মাঝে ব্যবধান গড়েছে মাত্র ১০টি ভোট৷
ছবি: Reuters/A. Raggio
11 ছবি1 | 11
অসুস্থ বাচ্চাদের সাহায্যার্থে কাজ করা দাতব্য প্রতিষ্ঠান ‘মেক এ উইশ' ফাউন্ডেশনকে ২০১৩ সালে রোনাল্ডো এক নজিরবিহীন উপহার দেন৷ ফিফার বর্ষসেরা খেলোয়াড়ের ট্রফিটির রেপ্লিকা তিনি নিলামে তুলে দেন৷ বিক্রির ৬ লাখ ইউরোর পুরোটাই দান করেন ‘মেক এ উইশ' ফাউন্ডেশনকে৷ জানেন তো, প্রতিষ্ঠানটির কাজ কী! মৃত্যু পথযাত্রী শিশুদের ইচ্ছা পূরণ করা৷
আর ২০১২ সালে রোনাল্ডো তাঁর মূল গোল্ডেন বুট ট্রফিই চ্যারিটিতে দান করেন ফিলিস্তিনের শিশুদের সহায়তা করতে, যার মূল্য ছিল প্রায় দেড় মিলিয়ন ইউরো৷ ২০১৬ সালে রোনাল্ডো চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ের পর বোনাস হিসেবে পাওয়া পুরো অর্থই দান করেছিলেন চ্যারিটিতে৷
ফুটবলার রোনাল্ডো ইউনিসেফ, সেই দ্য চিলড্রেন, ওয়ার্ল্ড ভিসনসহ আরও বেশ কিছু এনজিও এবং সাহায্য সংস্থার সাথে যুক্ত আছেন৷ তাঁর নিজ গ্রাম মেদেইরার উন্নয়নেও বেশ সহযোগিতা করেছেন৷ ২০১৫ সালে তিনি বিশ্বের সবচেয়ে দানশীল ক্রীড়াবিদ ঘোষিত হয়েছিলেন৷
জার্মান ফুটবলার মেসুট ও্যজিলেরও রয়েছে একই ধরনের ইতিহাস৷ ২০১৪ সালের বিশ্বকাপ থেকে তিনি আয় করেছিলেন ২ লাখ ৩৭ হাজার পাউন্ড৷ ব্রাজিলের ২৩ জন শিশুর চিকিৎসায় ওই অর্থ ব্যয় করা হয়েছিল৷
ফুটবলারদের এই দানশীলতার তালিকায় মেসি ও নেইমারও আছেন৷ ২০১০ সালে হাইতি ভূমিকম্পের পর নিজের ব্যস্ত সূচি দূরে ঠেলে মেসি ছুটে গিয়েছিলেন সেখানে৷ তাঁর বসবাসের স্থান রোজারিও শহরের শিশুদের একটি হাসপাতাল গড়ার কাজে অনুদান দিয়েছেন ৬ লাখ ৭০ হাজার ইউরো৷ এছাড়া বারবার এগিয়ে এসেছেন বিভিন্ন দাতা সংস্থার আহ্বানে৷
ব্রাজিলের ফুটবল তারকা নেইমারও পিছিয়ে নেই৷ খেলোয়াড়দের সমাজ সেবামূলক কাজের ভিত্তিতে যে তালিকা তৈরি হয়, তাতে নেইমারের নাম ২০১৫ সালে চলে এসেছিল ৫ নম্বরে৷ নেইমার পরে বলেছিলেন, তিনি সমাজসেবামূলক কাজ করতে ভালোবাসেন, কেননা, এ ধরনের কাজ আরও বেশি গোল করার জন্য তাকে উৎসাহিত করে৷ তিনি আরও বেশি মনোযোগ দেন এবং জয়ের চেষ্টা করেন৷
গত সপ্তাহে মাস্টারকার্ড একটি বিতর্কিত ক্যাম্পেইন চালু করে৷ তারা ঘোষণা দেয়, নেইমার ও মেসির প্রতি গোলের জন্য ১০ হাজার শিশুকে খাদ্য সরবরাহ করবে৷
তীব্র সমালোচনা শুরু হয়৷ কেননা, মাস্টারকার্ডের হাতে শিশুদের দেওয়ার মতো খাবার থাকা স্বত্ত্বেও অভুক্ত শিশুদের কিনা খাবার পেতে অপেক্ষা করতে হবে দুই ফুটবলারের গোলের জন্য! এটিকে ইতিহাসের সবচেয়ে বাজে বিপণন ‘আইডিয়া' হিসেবে বর্ণনা করেছেন কেউ কেউ৷ ফলে ক্যাম্পেইনটি মাস্টারকার্ড প্রত্যাহার করে৷ তার বদলে ২০২০ সাল পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটি ১০ লাখ শিশুকে বিনামূল্যে একবেলা খাবার সরবরাহের ঘোষণা দেয়৷
মেসি আর রোনাল্ডো অবশ্য প্রস্তুত ছিলেন গোলের জন্য৷ কেননা, নিঃসন্দেহে তাঁরা বড় মাপের ফুটবলার, কিন্তু বড় মাপের মানুষও তো বটে! তাঁদের পায়ে রয়েছে জাদু, বুকে রয়েছে ভালোবাসা৷
বিশ্বকাপ ফুটবলে গোল্ডেন বুট জয়ীরা
বলাই বাহুল্য, ফুটবলে প্রতিপক্ষের জালে যাঁরা বল জড়ান, সাধারণভাবে দর্শকপ্রিয়তা তাঁদেরই সবচেয়ে বেশি৷ বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ গোলদাতাকে গোল্ডেন শ্যু বা বুট পুরস্কার দেয়া হয়৷ চলুন এক ঝলক দেখি সব বিশ্বকাপ আসরের সেরা গোলদাতাদের৷
ছবি: Getty Images/AFP/F. Leong
১৯৩০-১৯৭৮: কোনো আনুষ্ঠানিক পুরস্কার ছিল না
১৯৩০ থেকে ১৯৭৮ বিশ্বকাপ পর্যন্ত সর্বোচ্চ গোলদাতাদের জন্য কোনো পুরস্কার বরাদ্দ ছিল না৷ কিন্তু বিশ্বকাপের ইতিহাসের এক আসরে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড ওই সময়েরই৷ ফ্রান্সের জিস্ট ফুঁতেন ১৯৫৮ বিশ্বকাপে ১৩ গোল করেন৷ এই সময়ের এগারোটি আসরের সেরা গোলদাতাদের তালিকায় নাম আছে জার্মানির গ্যার্ড ম্যুলার, পর্তুগালের ইউসেবিও, ব্রাজিলের গারিঞ্চা, আর্জেন্টিনার মারিও কেম্পেসের মতো তারকাদের৷
ছবি: picture-alliance/dpa
১৯৮২: পাওলো রসি
হিসেবে ফুটবল বিশ্বাকাপের ইতিহাসে প্রথম গোল্ডেন শ্যু জেতা খেলোয়াড় হলেন ইটালির ফরোয়ার্ড পাওলো রসি৷ স্পেনে অনুষ্ঠিত এ আসরে ৬টি গোল করেন এই তারকা৷ ১৯৮২ থেকে ২০০৬ বিশ্বকাপ পর্যন্ত এই পুরস্কারকে গোল্ডেন শ্যু বলা হতো৷ ২০১০ থেকে এর নাম হয় গোল্ডেন বুট৷
ছবি: picture-alliance / empics
১৯৮৬: গ্যারি লিনেকার
মেক্সিকো বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে মারাদোনার আর্জেন্টিনার কাছে হেরে কোয়ার্টার ফাইনালেই বিদায় নেয় গ্যারি লিনেকারের ইংল্যান্ড৷ মজার ব্যাপার হলো, ২-১ গোলের সেই ম্যাচে গোল তিনটি করেন এই দুই তারকাই৷ বিদায় নিলেও ততক্ষণে অবশ্য ছয় গোল দিয়ে দেয়া হয়ে গেছে লিনেকারের, যা ঐ আসরে আর কেউ টপকাতে পারেননি৷
ছবি: Getty Images/AFP/STAFF
১৯৯০: সালভাতোরে স্কিলাচি
এ বিশ্বকাপে স্বাগতিক ইটালি সেমিফাইনালে টাইব্রেকে ৪-৩ গোলে হেরে যায় আর্জেন্টিনার কাছে৷ তবে তৃতীয়স্থান নির্ধারণী ম্যাচে ইংল্যান্ডকে হারায় ২-১ গোলে৷ সে ম্যাচে একটি গোল করে পুরো আসরে সর্বোচ্চ ছয় গোল করেন তারকা ফুটবলার স্কিলাচি৷
ছবি: Getty Images/AFP/Daniel Garcia
১৯৯৪: ওলিয়েগ সালিয়েঙ্কো ও রিস্টো স্টয়েচকভ
বিশ্বকাপের এই আসরটি বসে যুক্তরাষ্ট্রে৷ গ্রুপ পর্বেই বিদায় নেয় রাশিয়া৷ গ্রুপ পর্বের তিন ম্যাচে তারা করে ৭ গোল, যার ছয়টিই আসে সালিয়েঙ্কোর পা থেকে৷ ক্যামেরুনের বিপক্ষে ৬-১ গোলের জয়ে ৫টিই করেন তিনি৷ অন্যদিকে, বুলগেরিয়া পৌঁছায় শেষ চার অবধি৷ সেমিফাইনালে ইটালির কাছে ও তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে সুইডেনের কাছে পরাজিত হয়৷ আসরে স্টয়েচকভও ৬ গোল করে সালিয়েঙ্কোর সঙ্গে জিতে নেন গোল্ডেন শ্যু৷
ছবি: Getty Images/Allsport/Shaun Botterill
১৯৯৮: ডাভোর শুকার
সেমিফাইনালে শুকারের ক্রোয়েশিয়া স্বাগতিক ফ্রান্সের কাছে হারলেও তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে ডাচদের হারায়৷ পুরো আসরে শুধু আর্জেন্টিনার বিপক্ষে গ্রুপ ম্যাচে কোনো গোল পায়নি ক্রোয়েশিয়া৷ শুকারের ক্ষেত্রেও তাই ঘটেছে৷ ৬টি গোল করে তিনি আসরের সর্বোচ্চ গোলদাতা হন৷
ছবি: imago/Pixsell
২০০২: রোনাল্ডো
এশিয়ায় এ পর্যন্ত একমাত্র বিশ্বকাপ ফুটবলের আসর বসে ২০০২ সালে৷ দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান যৌথভাবে আয়োজক ছিল৷ রোনাল্ডো-রিভালডো-রোনালডিনিয়োদের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে এ বিশ্বকাপ জিতে নেয় ব্রাজিল৷ পুরো আসরে মোট আটটি গোল করেন ব্রাজিলিয়ান তারকা রোনাল্ডো৷ ফাইনালে জার্মানির বিরুদ্ধে করা দু’টি গোলই আসে তাঁর পা থেকে৷
ছবি: Getty images/L. Griffiths
২০০৬: মিরোশ্লাফ ক্লোজে
জার্মানিতে অনুষ্ঠিত এই বিশ্বকাপে স্বাগতিকরা সেমিফাইনালে আসরের চ্যাম্পিয়ন ইটালির কাছে হেরে যায় ২-০ গোলে৷ তবে পর্তুগালকে ৩-১ গোলে হারিয়ে তৃতীয় হয়৷ আসরে ৫ গোল করে গোল্ডেন শ্যু জিতে নেন জার্মান স্ট্রাইকার ক্লোজে৷
ছবি: AFP/Getty Images
২০১০: টোমাস ম্যুলার
এই আসরে গোল্ডেন শ্যুয়ের নাম পরিবর্তন করে গোল্ডেন বুট করা হয়৷ জার্মান তারকা টোমাস ম্যুলার জেতেন সেই গোল্ডেন বুট৷ এই আসরেও তৃতীয় হয় জার্মানি৷ সেমিফাইনালে হারে আসরের চ্যাম্পিয়ন স্পেনের কাছে৷ আর তৃতীয় স্থান নির্ধারণীতে হারায় উরুগুয়েকে৷ ম্যুলার করেন ৫ গোল৷
ছবি: Reuters/L. Smith
২০১৪: হামেস রদরিগেস
ব্রাজিল বিশ্বকাপে কলম্বিয়ান তারকা রদরিগেস বিশ্বকে দেখিয়েছিলেন তিনি কী করতে পারেন৷ বিশেষ করে শেষ ষোলতে উরুগুয়ের বিপক্ষে তাঁর গোলটি ছিল আসরের অন্যতম সেরা গোল৷ ছয় গোল করে সর্বশেষ গোল্ডেন বুটটি ঝুলিতে পুরেছেন তিনি৷ কলম্বিয়া সেবার ব্রাজিলের কাছে হেরে শেষ আট থেকে বিদায় নেয়৷