ডাক্তাররা এবার মারামারির প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন পশ্চিমবঙ্গের সরকারি হাসপাতালে৷ সরকারের বেহাল স্বাস্থ্য পরিষেবা ঢাকতে তায়কোয়ান্দো পন্থায় ভরসা রাখা নিয়ে জমে উঠেছে বিতর্ক৷
বিজ্ঞাপন
পশ্চিমবঙ্গে ইদানীং রমরমিয়ে চলছে ডাক্তার নিগ্রহ৷ রোগী মৃত্যুর প্রতিবাদে পশ্চিমবঙ্গে ভাঙচুরের পাশাপাশি ডাক্তারদের উপরে আকছার হামলা হয়৷ এমার্জেন্সি বিভাগে কর্তব্যরত জুনিয়র ডাক্তাররাই এসবের মুখে পড়েন বেশি৷ এর বিহিত করতে তাঁরা প্রায়ই ধর্মঘটে বসেন৷ বন্ধ হয়ে যায় পরিষেবা৷ আবার ইদানীং অন্য পরিস্থিতিও দেখা দিচ্ছে৷ জুনিয়র ডাক্তাররাই মারমুখো হয়ে যাচ্ছেন৷ কিন্তু এবার রোগীর পরিবারের হাত থেকে সরকারি ডাক্তারদের আত্মরক্ষার জন্য স্বাস্থ্যকর্তারা এবার সরাসরি তায়কোয়ান্দো শেখার পরামর্শ দিয়েছেন৷ সরকারি হাসপাতালে জোরকদমে প্রশিক্ষণ চলছে এই মার্শাল আর্টের৷ যেন ‘দাঁতের বদলে দাঁত' কিংবা ‘মারের বদলে মার' নীতি!
কিছুদিন আগে কলকাতা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে মৃতের পরিজনদের আলাদা করে ডেকে নিগ্রহ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে৷ অভিযোগের তীর উঠেছে জুনিয়র ডাক্তারদের বিরুদ্ধেই৷ এর ওপর তাদের তায়কোয়ান্দো প্রশিক্ষণ যে ক্ষতিকারক প্রভাব ফেলবে না, তা কে বলতে পারে! ডয়চে ভেলের সঙ্গে কথা বলে অধিকাংশ ডাক্তার এমনটাই জানালেন৷
ডা.করিম
হাসপাতালে জরুরি পরিষেবা না থাকলেও ডাক্তার নিগ্রহ চলে, আবার রোগী মৃত্যুর ঘটনা ঘটলেও ডাক্তার পেটানো হয়৷ তার সুরক্ষার্থে ডাক্তাররা শিখছেন তায়কোয়ান্দো! পুরো ব্যাপারটা খুবই হাস্যকর বলে মন্তব্য করলেন সিপিএম নেতা এবং বিশিষ্ট চিকিৎসক ফুয়াদ হালিম৷ তাঁর মতে, চিকিৎসকদের সঙ্গে রোগীর নিবিড় সম্পর্কই হিংস্র বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷ তাই এমন জুডো, ক্যারাটে শেখার বিচিত্র প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে৷ তায়কোয়ান্দো শিখিয়ে আদৌ কোনও ভালো কিছু হবে বলে মনে হয় না৷ তিনি বলেন, ‘‘প্রমাণ হচ্ছে, এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে রাষ্ট্র চিকিৎসা পরিষেবাকে বলিষ্ঠ করতে পারছে না৷ উল্টে মূল সমস্যা থেকে দূরে যেতে চাইছে৷''
ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টর্স ফোরামের তরফ থেকে ডা. রেজাউল করিম সরকারের এমন পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা করেছেন৷ কেউ এমনিই তায়কোয়ান্দো শিখতেই পারেন, কিন্তু সরকার থেকে শেখানো হবে কেন? ৩০ বছর চিকিৎসা পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত থাকা এই চিকিৎসকের মতে, হাসপাতালে পর্যাপ্ত ডাক্তার বা শয্যা নেই, চিকিৎসার খরচ বেশি৷ সাধারণ মানুষের এই ক্ষোভকে রাজনীতি উল্টোদিকে চালিত করছে৷ পাশাপাশি স্বাস্থ্যখাতে বাজেট কমে যাচ্ছে৷ এরকম পরিস্থিতিতে তায়কোয়ান্দো শেখালে হাসপাতালে যুদ্ধ পরিস্থিতি হতে চলেছে৷ সেটা সামলাতে তখন র্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স নামাতে হবে৷ তায়কোয়ান্দো না শিখিয়ে স্বাস্থ্যখাতে বাজেট বাড়ানো উচিত৷ পরিকাঠামোর উন্নতি না করে তায়কোয়ান্দো শিখিয়ে মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক বিষিয়ে দেওয়ার এই চেষ্টাকে আত্মঘাতী পদক্ষেপ বললেন এই চিকিৎসক৷
পশ্চিমবঙ্গের চিকিৎসা ব্যবস্থা
ভারতীয় সংবিধান অনুযায়ী জনতাকে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার ভার কেন্দ্রের নয়, রাজ্য সরকারের৷ পশ্চিমবঙ্গে সরকারি চিকিৎসার সমান্তরালে বিকল্প ব্যয়বহুল পরিষেবা থাকলেও, সিংহভাগ মানুষ সরকারি পরিষেবার ওপরই নির্ভরশীল৷
ছবি: The Week/Gunjan Sharma
মাত্র দু’টাকায় চিকিৎসা
দারিদ্র্যসীমার নীচে বসবাসকারী মানুষরা চিকিৎসার জন্য মূলত সরকারি হাসপাতালের ওপরই নির্ভরশীল৷ হাসপাতালের বহির্বিভাগে মাত্র দু’টাকার বিনিময়ে চিকিৎসার পাশাপাশি কম খরচে পেসমেকার স্থাপন, অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি, আল্ট্রাসাউন্ড বা ইসিজির মতো পরিষেবাও পাওয়া যায়৷
ছবি: DW/P. Samanta
চেতনা বাড়াতে টিভি
প্রসূতির দেখাশোনা বা নবজাতকের প্রতিপালনের নিয়ম সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে হাসপাতালের সরকারি হাসপাতালের ন্যাটাল ওয়ার্ডে এখন হাজির টিভি৷ তাতে মেগা সিরিয়ালের বদলে সচেতনামূলক অনুষ্ঠান দেখানো হয়!
ছবি: DW/P. Samanta
সর্বক্ষণের চিকিৎসক
রাতবিরেতে অসুখ-বিসুখে সরকারি হাসপাতালই ভরসা৷ এখানে আপৎকালীন পরিষেবা ছাড়াও ২৪x৭ চিকিৎসক পাওয়া যায়৷ সারা পশ্চিমবঙ্গেই বেসরকারি হাসপাতালের তুলনায় এই ক্ষেত্রে সরকারি হাসপাতাল অনেকটা এগিয়ে৷
ছবি: DW/P. Samanta
উন্নতমানের পরিষেবা
সম্প্রতি সরকারি হাসপাতালে সংকটাপন্ন রোগী ও শিশুদের বিশেষ পরিচর্যার জন্য এসএনসিইউ, সিসিইউ, এইচডিইউ চালু করা হয়েছে, যা এতদিন ছিল কেবল বেসরকারি হাসপাতাল বা নার্সিংহোমেই৷ উপকৃত হয়েছে দরিদ্র ও নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবার৷
ছবি: DW/P. Samanta
ন্যায্য মূল্যে ওষুধ
ব্র্যান্ডের থাবা থেকে ওষুধ মুক্তি পেতেই মানুষের মুখে হাসি ফুটেছে৷ চিকিৎসক জেনেরিক নামে ওষুধ লেখার ফলে ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকানে মানুষের যাতায়াত বেড়েছে৷ এ সব দোকানে ৭৭ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় মেলে৷
ছবি: DW/P. Samanta
নাগালে আধুনিক পরিষেবা
সরকারি হাসপাতালে ডিজিটাল এক্স-রে, ইউএসজি, সিটি স্ক্যানের মতো আধুনিক পরিষেবা পাওয়া যায়৷ তবে রোগীর চাপে অনেক সময়েই এসব যন্ত্রপাতি দীর্ঘদিন বিকল হয়ে পড়ে থাকে৷
ছবি: DW/P. Samanta
নানারকম প্রকল্প
পশ্চিমবঙ্গে সরকারি স্তরে স্বাস্থ্য পরিষেবায় নানা প্রকল্প নেওয়া হয়েছে৷ জননী শিশু সুরক্ষার মতো প্রকল্প এখন বেশ জনপ্রিয়৷ এর সাহায্যে মায়ের প্রসবকালীন মৃত্যুর হারও কমিয়ে ফেলা গেছে৷
ছবি: DW/P. Samanta
সরকারি হাসপাতাল প্রাঙ্গণ
বেশিরভাগ সময়েই তিল ধারণের জায়গা থাকে না৷ তবুও পরিষেবার খোঁজে দৈনিক কত না মানুষের জমায়েত হয় সরকারি হাসপাতালে! তৃতীয় বিশ্বের জনবহুল দেশে এটাই দস্তুর৷
ছবি: DW/P. Samanta
অতিথি দেবঃ ভব
সরকারি হাসপাতাল আগের থেকে পরিচ্ছন্ন হয়েছে, সুলভে মিলছে পরিষেবা: কিন্তু কিছু ছবি এখনও বদলায়নি: যেমন বিভিন্ন ওয়ার্ডে চারপেয়েদের অবাধ বিচরণ৷
ছবি: DW/P. Samanta
স্বাস্থ্য যখন পণ্য
যাঁদের হাতে টাকা রয়েছে, তাঁরা সরকারি হাসপাতালে ভিড় এড়াতে বেসরকারি পরিষেবার সুযোগ নেন৷ যদিও কলকাতার এমন বেসরকারি ক্লিনিকেও এখন ভালো ভিড় নজরে পড়ে৷
ছবি: DW/P. Samanta
যেখানে বিশ্বাস
অ্যালোপ্যাথির পাশাপাশি এ রাজ্যে হৈ হৈ করে হোমিওপ্যাথি বা আয়ুর্বেদ চিকিৎসাও চলছে৷ এর খরচ কম, তাছাড়া ব্যয়সাপেক্ষ পরীক্ষার ঝামেলা থাকে না বলে অনেকেই এ সবের উপর আস্থা রাখেন৷
ছবি: DW/P. Samanta
নার্সিংহোম দিকে দিকে
এখন পশ্চিমবঙ্গে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল চালু হয়েছে৷ তবুও নার্সিংহোমের রমরমা কিন্তু কমেনি৷ সার্জারি, ডায়ালিসিস ইত্যাদির জন্য মানুষ এখনও এদের ওপর নির্ভরশীল৷
ছবি: DW/P. Samanta
বহুরূপে সম্মুখে
কলকাতা সহ সর্বত্রই রক্তসহ নানা পরীক্ষাগার বা প্যাথোলজি ল্যাব গজিয়ে উঠেছে৷ গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও দিব্যি তারা লাভজনক ব্যবসা করছে৷ উল্টোদিকে গ্রামীণ এলাকায় অনেক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কোনো ল্যাবরেটরি টেকনিশিয়ান নেই৷
ছবি: DW/P. Samanta
13 ছবি1 | 13
আত্মরক্ষার অধিকার সকলেরই আছে৷ পাশাপাশি তায়কোয়ান্দো প্রশিক্ষণ নাকি কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলাতেও দরকার৷
স্বাস্থ্যকর্তাদের এমন দাবিরবিপক্ষে ডা. করিম বলেন, ‘‘যাঁরা তায়কোয়ান্দো শেখানোর কথা বলছেন, তাঁরা গজদন্ত মিনারে বসে সুখস্বপ্ন দেখছেন৷''
মেডিক্যাল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদেরও তো খেলাধুলো বা যোগাভ্যাসের নিয়ম রয়েছে৷ কী বলছেন জুনিয়র ডাক্তাররা? ইএসআইসি মেডিকেল কলেজের ফাইনাল ইয়ারের ছাত্র ডা. অর্ণব কুমার পালের মতে, সমস্যা মেটাতে যদি তায়কোয়ান্দো শেখানো হয়, তবে তা কোনও কাজের না৷ স্বাস্থ্য পরিষেবাকে বেহাল অবস্থা থেকে তুলে না এনে তায়কোয়ান্দো শেখালে সমস্যা মিটবে না মোটেই৷ আরএসএসের ছাত্র সংগঠন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের (কলকাতা) যুগ্ম সম্পাদক অর্ণব বলেন, ‘‘গত বছর ৮১ জন ডাক্তারের ওপর আক্রমণ করা হয়েছে৷ এতে বোঝাই যাচ্ছে ডাক্তার-রোগীর সম্পর্ক আর আগের মতো নেই৷ রোগী মৃত্যুতে ডাক্তার দায়ী বলে প্রচার করা হচ্ছে৷ ডাক্তারদের সুরক্ষা না দিয়ে, এসব সমস্যার গভীরে না গিয়ে খামতির ওপর দিয়ে স্রেফ তায়কোয়ান্দোর মলম দিয়ে কী হবে?''
অ্যামেরিকার পেনসিলভানিয়ায় বন্দুকবাজদের আটকাতে স্কুল শিক্ষকদেরও সঙ্গে বন্দুক রাখতে বলেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প৷ এ রাজ্যে চিকিৎসকেরাও শিখলে অসুবিধে কোথায়? এমন যাঁরা বলছেন, তাঁদের উদ্দেশ্যে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক কৌশিক দাস বললেন, ‘‘‘দুটোর পরিপ্রেক্ষিত আলাদা৷ ওদেশে বন্দুকের অপব্যবহার হচ্ছে৷ আর এ রাজ্যে আর্থসামাজিক আর রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ডাক্তারদের ভিলেন বানানোর প্রচার চলছে৷ যেটা আজ থেকে ১০ বছর আগেও ভাবা যেতো না৷ আজকে ডাক্তার নিগ্রহ বা তায়কোয়ান্দো প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে আদতে সমাজেরই ক্ষতি হচ্ছে৷ ডাক্তাররা আজ পথে নেমে আন্দোলন করছেন, এতে বোঝা যায়, সমাজ কোনদিকে যাচ্ছে৷'' তিনি প্রশ্ন তুললেন, ‘‘তায়কোয়ান্দো দিয়ে কি আত্মরক্ষা সম্ভব? একজন ডাক্তারকে দশজন ক্ষিপ্ত মানুষ ঘিরে ধরলে তিনি কি নিজের সুরক্ষা করতে পারবেন?'' বরং মানুষকে লড়াইয়ে ইন্ধন না জুগিয়ে শুভবুদ্ধিতে আইনের হাত শক্ত করে ধরা হোক, এমনটাই মনে করেন এই চিকিৎসক৷
আর ভুক্তভোগী জনতা কী বলছেন? বেলঘরিয়ার হিমাংশু গুপ্ত, গড়িয়ার ঋতু দে সহ অনেকেরই মতে, শুভবুদ্ধি সবাইকেই জাগাতে হবে৷ ডাক্তাররা রোগী দেখার ক্ষেত্রে শুধু অর্থের বিবেচনা করবেন কেন? বেশি দামের ওষুধ লিখবেন কেন? তাঁরা হাসপাতালের দুর্নীতির সহায়ক হবেন কেন? সেটাও যেমন পাল্টাতে হবে, তেমনি মারামারির ভাবনাও দূর করতে হবে৷ অনেকে আবার ডাক্তার-রোগী সম্পর্কের মধ্যে তায়কোয়ান্দো প্রশিক্ষণ শুনে প্রকাশ্যে হেসে ফেলছেন৷ দু' পক্ষের বিবাদের মধ্যেই সরকারি তরফে উন্নতি দেখানো হচ্ছে৷ অধিকর্তারা বলে চলেছেন, গত কয়েক বছরে অনেক উন্নতি হয়েছে, আগামীতেও হবে৷ উন্নতির এমন নজির হলে ভবিষ্যতে ডাক্তারি কোর্সে ও অন্তর্ভুক্ত হবে নাকি?
আকস্মিক আক্রমণ থেকে বাঁচার ৭ উপায়
অন্ধকার বা নির্জন এলাকায় বাস, রিক্সা বা কারো জন্য অপেক্ষা করছেন৷ রাস্তায় একা কিংবা এটিএম থেকে টাকা তুলছেন৷ তখন আকস্মিকভাবে আপনাকে কেউ আক্রমণ করলো৷ এরকম পরিস্থিতিতে নিজেকে রক্ষা করার কিছু উপায় জেনে নিন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/B. Marks
প্রশিক্ষণ নেওয়া জরুরি
বর্তমান বিশ্বে বিভিন্ন কারণে ঘটছে নানা ধরণের অঘটন ও নির্যাতন, যা কম-বেশি সকলেরই জানা৷ তাই ছেলে-মেয়ে সকলেরই আত্মরক্ষা করার জন্য ‘কারাতে’ বা অন্য কোনো মার্শাল আর্টের প্রশিক্ষণ নেওয়া সকলেরই উচিৎ বলে মনে করেন আত্মরক্ষা বিশেষজ্ঞরা৷
ছবি: DW/M. Mamun
আক্রমণের শিকার প্রবীণরাও
জার্মানিতে শুধু তরুণ নয়, প্রবীণ বা মধ্যবয়সিরাও আত্মরক্ষা প্রশিক্ষণ নিয়ে থাকেন৷ কারণ, রাস্তায় একা বা গাড়ির পার্কিং প্লেসে বিভিন্ন বয়সি নারীই নানা রকমের বিব্রতকর পরিস্থিতির শিকার হয়ে থাকেন৷ আকস্মিকভাবে আক্রমণের ঘটনা সম্পর্কে প্রবীণদের জীবনের অভিজ্ঞতা বেশি বলে আক্রমণ আগে থেকেই তাঁরা কিছুটা বুঝতে পারেন৷ এবং পুলিশকেও তারা তাড়াতাড়ি জানিয়ে থাকেন৷
ছবি: Isna
সতর্ক থাকা
রাস্তায় মাথা নীচু করে হাঁটা দুর্বলতার লক্ষ্যণ৷ কাজেই হেলে-দুলে বা মাথা নীচু করে ‘না’ হাঁটার পরামর্শ জার্মানির আত্মরক্ষা বিষয়ক এক্সপার্ট অলিভার ড্রেবারের৷ মানুষের সাহস যেমনই থাকুন না কেন, ‘সাহসীভাব’ বোঝানোর জন্য সোজা হয়ে হাঁটা উচিত বলে মনে করেন তিনি৷
ছবি: picture-alliance/BBC/Everett Collection
অপ্রত্যাশিত আক্রমণ এড়িয়ে চলুন
ব্যাংক খোলা থাকা অবস্থায় টাকা তুলুন৷ সম্ভব হলে এটিএম ব্যবহার থেকে দূরে থাকুন৷ বিশেষ করে যে এটিএম বুথগুলো রাস্তার ধারে, সেগুলোতে সন্ধ্যা বা রাতে যাবেন না৷
ছবি: Reuters/H. McKay
সাবধান !
সদ্য তোলা টাকা কখনো কোট বা প্যান্টের পকেটে রাখবেন না৷ টাকা ঝটপট মানিব্যাগে রেখে সেটা বড় ব্যাগের পটেকে রেখে, চেইন লাগিয়ে দিন৷ এবং ব্যাগটি এমনভাবে কাঁধে ঝুলিয়ে রাখুন যেন চট করে কেউ টান দিয়ে নিয়ে নিতে না পারে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/B. Walton
চিৎকার করতে হবে
রাস্তায় বের হওয়ার পর যদি কেউ আপনাকে ধরেই ফেলে, তাহলে দেরি না করে পথচারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে জোরে জোরে চিৎকার করুন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Stephanie Pilick
প্রতিবাদ করতে শিখুন
কারাতে বা এরকম কোনো মার্শাল আর্ট প্রশিক্ষণ নেয়া থাকলে শত্রুর মোকাবেলা করা অনেক সহজ হয়ে যায়৷
আজকের যুগে পুরুষ কি নারী, কারো পক্ষেই ঘরে বসে থাকা সম্ভব নয়৷ কাজেই ভয় না পেয়ে প্রতিবাদ করতে শেখা উচিত৷