নাম বাডি মার্কারি৷ বিগল কুকুর, সাথে কিছুটা ব্যাসেট মেলানো থাকতে পারে৷ কেনেল থেকে আনা, সে হিসেবে বেওয়ারিশ৷ সেই বাডি যে এরকম উঁচুদরের একজন গায়ক ও বাদক, তা কে জানত!
বিজ্ঞাপন
মাস চারেক আগে ইউটিউবে আপলোড করার পর থেকেই বাডির ‘পারফর্ম্যান্স’ সংগীত অনুরাগীদের নজর ও কান কাড়তে শুরু করেছে৷ থাবা দিয়ে পিয়ানোর একটি করে চাবি টিপছে বাডি, যেন ওস্তাদ গাইয়ে তানপুরায় আঙুল বোলাচ্ছেন – তারপর আকাশ, মানে ছাদের দিকে মাথা তুলে বাডির সে কী সকরুণ মূর্ছনা...
মনে পড়ে যায় ওস্তাদ আবদুল করিম খাঁ সাহেবের কথা, কুমার মুখার্জির বইতে পড়া৷ খাঁ সাহেব এক রাস্তার কুকুরকে রীতিমতো গান শিখিয়েছিলেন; নাম রেখেছিলেন টিপু মিয়াঁ৷ সেই টিপু মিয়াঁকে মখমলের কোট আর মোতির মালা পরিয়ে মঞ্চে নিজের পাশে বসিয়ে দু’জনে যুগলবন্দি পর্যন্ত গেয়েছেন!
এটা ওস্তাদি ঠাট্টা কিনা জানি না – কুমার মুখার্জির না খাঁ সাহেবের, তা-ও জানা নেই৷ তবে বাডির সুরবোধ দেখে আর গলা শুনে স্বয়ং আবদুল করিম খাঁ সাহেবও যে ইমপ্রেসড হতেন, তা বলে দেওয়া যেতে পারে৷
মনে রাখবেন, বিগল কুকুর, দঙ্গল বেঁধে শিকার করে৷ ভীষণ ছটফটে; পোষা দায়৷ ব্যাসেটও তো শিকারি কুকুর৷ কিন্তু শিকারি কুকুররা আসলে খুব দরদি, কবি টাইপের হয় – বাইরে থেকে বোঝা যায় না৷ তবে সুযোগ পেলে ওদের ভেতরকার সেই ধামাচাপা আর্টিস্ট সত্তাটি বেরিয়ে এসে মনটাকে কেমন করে দেয়!
বিশ্বাস হলো না তো? তাহলে শুনে দেখুন৷
এসি/এসিবি
সবচেয়ে কুৎসিত কুকুরদের প্রতিযোগিতা ২০১৭
২০১৭ সালের কুৎসিততম কুকুরের খেতাব জিতেছে মার্থা নামের এক সুবিশাল, ষাঁড় খেদানো কুকুরি৷ ক্যালিফর্নিয়ার পেটালুমায় প্রতিবছর অনুষ্ঠিত হয় এই প্রতিযোগিতা, যার উদ্দেশ্য হলো, মানুষজনকে বেওয়ারিশ কুকুর পালতে উৎসাহিত করা৷
ছবি: Getty Images/AFP/J. Edelson
‘আমার চেয়ে খারাপ দেখতে আর কেউ নেই’
বিশ্বের সবচেয়ে কুৎসিত কুকুরদের প্রতিযোগিতার বিজয়ীরা সাধারণত আকারে ছোট আর বয়সে বুড়ো হয়৷ এবারকার বিজয়িনী মার্থা কিন্তু ৫৭ কিলোগ্রাম ওজনের এক নিয়াপোলিটান ম্যাস্টিফ, যার বয়সও বছর তিনেকের বেশি নয়৷ ক্যালিফোর্নিয়ার সোনোমা কাউন্টিতে মার্থাকে যখন উদ্ধার করা হয়, তখন সে পরিচর্যা আর চিকিৎসার অভাবে প্রায় অন্ধ৷ একাধিক অপারেশন করে মার্থার চোখ দু’টোকে বাঁচানো সম্ভব হয়৷
ছবি: Getty Images/AFP/J. Edelson
দ্য স্পিরিট অ্যাওয়ার্ড
‘স্পিরিট’ বলতে বোঝায় প্রেরণা৷ প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় পুরস্কারটি দেওয়া হয় এই স্পিরিট-এর জন্য – অর্থাৎ যেসব কুকুর আর তাদের মালিকরা অনেক কষ্ট সহ্য করেছেন, কিংবা সমাজের বিশেষ কোনো কাজে লেগেছেন৷ এই বিভাগে এবার জিতেছে মো৷ প্রতিযোগিতার সবচেয়ে বর্ষীয়ান এই কুকুরের বয়স ১৬ বছর, ব্রাসেলস গ্রিফন আর পাগ– এই দু’টি জাতের সংমিশ্রণে সৃষ্ট এক অদ্ভুত জীব৷ মো’র কান আর চোখ, দুইই গেছে, কিন্তু নাক নাকি এখনও অসাধারণ৷
ছবি: Getty Images/J. Sullivan
বিলেত ফেরত
১৪ বছর বয়সি চেজ হলো চাইনিজ ক্রেস্টেড আর হার্কে – এই দুই জাতের কুকুরের মিশ্রণ থেকে উৎপন্ন৷ জন্ম যুক্তরাজ্যের নিথ-এ৷ সেখান থেকে প্লেনে করে চেজ গেছে সুদূর ক্যালিফর্নিয়ায় বিশ্ব অসুন্দরী প্রতিযোগিতায় অংশ নেবার জন্য৷ পেয়েছে তৃতীয় স্থান৷ হবে না-ই বা কেন – চেজ-এর চেয়ে বেশি দূর থেকে তো আর কোনো প্রতিযোগী আসেনি!
ছবি: Getty Images/J. Sullivan
সুশ্রী নয় তো কি হলো, বিশিষ্ট তো বটে
ওয়ার্ল্ডস আগলিয়েস্ট ডগ অ্যাওয়ার্ডস-এর নিয়মিত প্রতিযোগী হল এই ইকি৷ বেচারাকে ক্যালিফোর্নিয়ার বুটে কাউন্টির এক অ্যানিমেল হোর্ডারের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়৷ হোর্ডাররা অকারণে একগাদা জন্তুজানোয়ার সংগ্রহ করেন বটে, কিন্তু তাদের ঠিকমতো যত্ন নেন না৷ এ ধরনের বিষয় সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতেও সাহায্য করে এই প্রতিযোগিতা ৷ ইকি কিন্তু বিভিন্ন এইডস গালায় আবির্ভূত হয়ে এইডস চ্যারিটির জন্য দশ হাজার ডলার সংগ্রহ করেছে৷
ছবি: Getty Images/J. Sullivan
‘লাভ ইজ ব্লাইন্ড’
প্রতিযোগিতায় যে শুধু কুশ্রী হলেই পয়েন্ট দেওয়া হয়, এমন নয়৷ প্রতিযোগীদের নানা বৈশিষ্ট্য, তাদের ব্যক্তিত্ব বা দর্শকদের প্রতিক্রিয়ারও একটা ভূমিকা থাকে৷ এসব কুকুরের অধিকাংশই এসেছে শেল্টার বা রেস্কিউ হোম থেকে, বেওয়ারিশ পশুপাখিদের উদ্ধার করে যেখানে রাখা হয় ও যেখান থেকে তাদের পোষ্য নেওয়া যায়৷ ওদিকে এসব ‘কুৎসিত’ কুকুরের মালিকরা বলেন, তারা নাকি মো, ইকি কিংবা চেজ-কে একবার দেখেই তাদের প্রেমে পড়ে গিয়েছিলেন৷