ইউক্রেনকে আরো সামরিক সাহায্য
৬ জুন ২০২২রাশিয়ার হামলার মুখে ইউক্রেনের প্রতি সংহতির প্রশ্নে ঐক্যের অভাব না থাকলেও সে দেশকে সহায়তার ক্ষেত্রে পশ্চিমা বিশ্বের অবস্থানে স্পষ্ট পার্থক্য দেখা যাচ্ছে৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও পূর্ব ইউরোপের দেশগুলি ইউক্রেনের আত্মরক্ষার অধিকার জোরালো করতে ভারি অস্ত্র ও অন্যান্য সামরিক সহায়তা দিয়ে চলেছে৷ অন্যদিকে জার্মানি, ফ্রান্স ও ইটালির মতো দেশ এ ক্ষেত্রে কিছুটা সংযত থাকার চেষ্টা করছে৷ ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ এমনকি রাশিয়ার ‘অপমান' এড়িয়ে চলার পক্ষে সওয়াল করেছেন৷
এমনই প্রেক্ষাপটে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন রোববার আবার পশ্চিমা বিশ্বকে সতর্ক করে দিয়েছেন৷ ইউক্রেনকে দূর পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করলে রাশিয়াও নতুন লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করবে বলে তিনি হুমকি দিয়েছেন৷ কিয়েভের উপকণ্ঠে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার মাধ্যমে রাশিয়া এমন ক্ষমতা দেখিয়ে দিয়েছে বলে পুটিন দাবি করেন৷ তার মতে, এমন বাড়তি অস্ত্র সরবরাহ করে পশ্চিমা বিশ্ব এই ‘সশস্ত্র সংঘাত' দীর্ঘায়িত করাতে চাইছে৷ এর ফলে ইউক্রেনের সামরিক ক্ষমতারও কোনো পরিবর্তন দেখছেন না পুটিন৷
এমন হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও স্পেন ইউক্রেনকে জন্য আরও উন্নত ও জোরালো ভারি অস্ত্র পাঠানোর উদ্যোগ নিচ্ছে৷ ওয়াশিংটন ৭০ কোটি ডলার অংকের নিরাপত্তা সহায়তার আওতায় মাঝারি পাল্লার রকেট প্রণালী, হেলিকপ্টার, ট্যাংক বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র, রাডার ইত্যাদি অনেক সরঞ্জাম ইউক্রেনে পাঠাচ্ছে৷ সোমবার ব্রিটেনও সে দেশকে অ্যামেরিকায় তৈরি এমএলআরএস নামের ৮০ কিলোমিটার পাল্লার রকেট প্রণালী সরবরাহ করার ঘোষণা করেছে৷ স্পেনের ‘এল পাইস' সংবাদপত্রের সূত্র অনুযায়ী সে দেশ ইউক্রেনে বিমান-বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র ও লেপার্ড ব্যাটল ট্যাংক পাঠাতে চলেছে৷
নতুন অস্ত্র সরবরাহের ঘোষণা সত্ত্বেও বাস্তবে সেই সরঞ্জাম যুদ্ধক্ষেত্রে কাজে লাগাতে কয়েক সপ্তাহ সময় লাগবে৷ একাধিক সামরিক বিশেষজ্ঞের মতে, তার আগেই রাশিয়া ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চল জবরদখলের উদ্যোগে সাফল্যের আশা করছে৷ তবে কিছু অঞ্চলে ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর প্রতিরোধের মুখে রাশিয়াকে বেগ পেতে হচ্ছে৷ ব্রিটেনের মূল্যান অনুযায়ীও সেখানে রুশ বাহিনীর অগ্রগতি অত্যন্ত ধীর৷
জার্মানিসহ একাধিক দেশ ইউক্রেনকে ‘প্রতিরক্ষামূলক' সামরিক সরঞ্জাম পাঠানোর উপর জোর দিয়ে এসেছে৷ অর্থাৎ ইউক্রেনের ভূখণ্ডে রুশ হামলা প্রতিহত করতে সে সব অস্ত্রের উপযোগিতা রয়েছে৷ সীমানা অতিক্রম করে সরাসরি রাশিয়ায় হামলা চালানোর জন্য সেগুলি উপযুক্ত নয়৷ অ্যামেরিকা ও ব্রিটেনও ক্ষেপণাস্ত্রের রেঞ্জ বা পরিসর যতটা সম্ভব কম রাখার নীতি মেনে চলছে৷ অর্থাৎ এখনো ইউক্রেনকে তেমন দূরপাল্লার কোনো ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করা হচ্ছে না, যদিও পূর্বাঞ্চল থেকে কিছু রকেট অবশ্যই রাশিয়ায় আঘাত হানতে পারে৷ তবে পুটিন কোণঠাসা হয়ে পড়লে পশ্চিমা বিশ্বের এমন ‘সংযম' আদৌ গ্রাহ্য করবেন কিনা, সে বিষয়ে সংশয় রয়েছে৷
এসবি/কেএম (রয়টার্স, এপি)