সিরিয়ার ইডলিব রাজ্যে বিদ্রোহীদের সঙ্গে লড়ছে দেশটির সরকারি নিরাপত্তা বাহিনী৷ আকাশ থেকে তাদের সহায়তা করছে রাশিয়া৷ এদিকে, বিদ্রোহীদের সহায়তা দিচ্ছে তুরস্ক৷
বিজ্ঞাপন
ইডলিবের পরিস্থিতি শান্ত করতে গত সেপ্টেম্বরে একটি চুক্তি করেছিল রাশিয়া ও তুরস্ক৷ এর প্রায় চার মাস পর আল-কায়েদার সাবেক এক সদস্যের নেতৃত্বাধীন হায়াত তাহরির আল-শাম গোষ্ঠী ইডলিবে প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ বাড়ায়৷ এছাড়া আরও কয়েকটি জিহাদি গোষ্ঠী ইডলিবে সক্রিয় রয়েছে৷
এই অবস্থায় ইডলিবের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেতে এপ্রিলের শেষ থেকে অভিযান শুরু করেছে সিরিয়ার সরকারি বাহিনী৷ এতে সহায়তা করছে রাশিয়া৷ এই অভিযানে এখন পর্যন্ত ৯২০ জন সাধারণ নাগরিক নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ‘সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস'৷ এছাড়া প্রায় চার লাখ মানুষ ঘর ছেড়ে পালিয়ে গেছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ৷
ভ্লাদিমির পুটিনের ভিন্ন রূপ
বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ব্যক্তিদের মধ্যে অন্যতম রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন৷ ছবিঘরে পুটিনের ব্যক্তিত্বের বিভিন্ন দিক ফুটে উঠেছে৷
ছবি: Reuters/A. Novosti/RIA Novosti/Kremlin
কেজিবি থেকে ক্রেমলিন
পুটিন সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের নিরাপত্তা সংস্থা কেজিবিতে যোগ দেন ১৯৭৫ সালে৷ আশির দশকে তিনি কেজিবি এজেন্ট হিসেবে জার্মানির ড্রেসডেনে কর্মরত ছিলেন৷ বার্লিন ওয়ালের পতনের পর রাশিয়ায় ফিরে গিয়ে বরিস ইয়েলৎসিনের ক্রেমলিনে প্রবেশ করেন তিনি৷ ইয়েলৎসিন তাঁর উত্তরসূরি হিসেবে পুটিনের নাম ঘোষণা করলে তাঁর প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পথ প্রশস্ত হয়৷
ছবি: picture alliance/dpa/M.Klimentyev
প্রথম প্রেসিডেন্সি
বড় পদে যাওয়ার আগ অবধি রাশিয়ার সাধারণ জনতা পুটিনকে বলতে গেলে চিনতেনই না৷ ১৯৯৯ সালের আগস্টে চেচনিয়ার একদল সশস্ত্র মানুষ রাশিয়ার দাগেস্তান দখল করে নিলে পুটিন লাইম লাইটে আসেন৷ প্রেসিডেন্ট ইয়েলৎসিন তখন তাঁকে চেচনিয়াকে কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণে আনার দায়িত্ব দেন৷ সেবার বর্ষবরণের আগের রাতে অপ্রত্যাশিতভাবে পদত্যাগ করেন ইয়েলৎসিন এবং পুটিনকে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব দেন৷
ছবি: picture alliance/AP Images
গণমাধ্যমে কঠোর পুরুষ
সোচিতে একটি প্রীতি হকি গেমে পুটিনের দল ১৮-৬ গোলে জয়লাভ করে৷ এরমধ্যে আটটি গোলই করেছেন স্বয়ং প্রেসিডেন্ট!
ছবি: picture-alliance/AP/A. Nikolsky
বাকস্বাধীনতায় লাগাম
পুটিন বিরোধীদের এক ব়্যালিতে এভাবে মুখে টেপ লাগিয়ে তার উপরে পুটিন লিখে হাজির হয়েছিলেন এক প্রতিবাদকারী৷ ২০১৩ সালে সেদেশের রাষ্ট্রীয় সংবাদসংস্থা রিয়া নোভোস্টিকে সংস্কারের ঘোষণা দেয় ক্রেমলিন এবং সেটির দায়িত্ব উগ্র পশ্চিমাবিরোধী মতের জন্য পরিচিত এক ক্রেমলিনপন্থির হাতে তুলে দেয়া হয়৷ রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্সের প্রেস ফ্রিডম সূচকে ১৭৮টি দেশের মধ্যে রাশিয়ার অবস্থান ১৪৮তম৷
ছবি: Getty Images/AFP/V.Maximov
পুটিনের ভাবমূর্তি: কাজে বিশ্বাসী এক ব্যক্তি
রাশিয়ায় অনেকে বিশ্বাস করেন পুটিন কাজে বিশ্বাসী৷ এই ভাবমূর্তি গড়তে গিয়ে গণমাধ্যমে মাঝেমাঝেই ঊর্দ্ধাঙ্গ অনাবৃত ঘৌড়সওয়ারের বেশে বা জুডোতে প্রতিপক্ষকে ধরাশায়ী করার বেশে পুটিনের ছবি প্রকাশ হয়৷ রাশিয়ায় স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে পারায় পুটিনের প্রশংসা করেন অনেকে, পাশাপাশি তাঁর বিরুদ্ধে একনায়কতন্ত্রের অভিযোগও রয়েছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/A. Nikoskyi
গণতন্ত্রের কণ্ঠরোধ
২০০৭ সালে পুটিনের দল ইউনাইটেড রাশিয়া পার্টি যখন ব্যাপক ভোটে জয়লাভ করে, তখন সমালোচকরা দাবি করেন, ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়া মুক্ত এবং গণতান্ত্রিক ছিল না৷ পুটিনের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রণের কণ্ঠরোধে অভিযোগে আয়োজিত এক বিক্ষোভ থেকে বেশ কয়েকজনকে আটক করে দাঙ্গা পুলিশ৷ সেই বিক্ষোভ ব়্যালিতে একটি পোস্টারে লেখা ছিল, ‘ধন্যবাদ, না!’
ছবি: Getty Images/AFP/Y.Kadobnov
সাজানো ঘটনা
ক্রাইমিয়ার সেভাস্টোপোলে একটি ছোট সাবমেরিনের মধ্যে দেখা যাচ্ছে পুটিনকে৷ বলা হয়ে থাকে, কৃষ্ণ সাগরের গভীরে তিনি গিয়েছিলেন এই সাবমেরিনে করে৷ এরকম ছবি মাঝে মাঝেই গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়৷ কখনো তিনি বুনো বাঘকে কাবু করেন চেতনানাশক দিয়ে কিংবা ওড়ের বিলুপ্তপ্রায় সারসের সঙ্গে৷ এভাবে এক দুঃসাহসী অভিযাত্রীর বেশে পুটিনকে উপস্থাপন করা হয়৷
ছবি: Reuters/A. Novosti/RIA Novosti/Kremlin
7 ছবি1 | 7
ইডলিবে অভিযান চালানোয় সিরিয়ার সরকারের সমালোচনা করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইয়্যিপ এর্দোয়ান৷ তিনি বলেন, ‘‘সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়ার নামে সাধারণ নাগরিক হত্যা গ্রহণযোগ্য নয়৷'' রাশিয়া সফরে গিয়ে এমন বক্তব্য দিয়েছেন এর্দোয়ান৷
মঙ্গলবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিনের সঙ্গে বৈঠকের সময় এর্দোয়ান বলেন, ইডলিবে তুর্কি সৈন্যরা ‘বিপদে আছেন'৷
এদিকে, পুটিন জানিয়েছেন, ইডলিবের পরিস্থিতি ‘স্বাভাবিক' করতে ‘যৌথ উদ্যোগ' নিতে তিনি ও এর্দোয়ান সম্মত হয়েছেন৷ এ সম্পর্কে কেউ আর বিস্তারিত জানাননি৷
ইডলিবে রাশিয়া ও তুরস্কের স্বার্থ সাংঘর্ষিক হলেও তুর্কি প্রেসিডেন্টের মস্কো সফরে নিজেদের মধ্যে ভালো সম্পর্ক দেখানোর চেষ্টা করেছেন পুটিন ও এর্দোয়ান৷ তাই তাঁরা একে অপরকে ‘প্রিয় বন্ধু' বলে সম্বোধন করেছেন৷ এছাডা পুটিন রাস্তার পাশের এক দোকান থেকে আইসক্রিম কিনে এর্দোয়ানকে খাইয়েছেন৷
এই সফরে রাশিয়ার এসইউ-৫৭ যুদ্ধবিমান কেনার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন এর্দোয়ান৷ এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের বাধা সত্ত্বেও রাশিয়া থেকে এস-৪০০ নামে একটি মিসাইল সিস্টেম কিনেছে ন্যাটো সদস্য তুরস্ক৷