জার্মান চ্যান্সেলর ও রুশ প্রেসিডেন্ট রাশিয়ার যুদ্ধবিরতি পর্যবেক্ষকদের পূর্ব ইউক্রেনে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে একমত হয়েছেন৷ কিয়েভ সরকার ডনবাস এলাকায় রুশ পর্যবেক্ষকদের কাজ ব্যাহত করছেন, বলে ক্রেমলিনের অভিযোগ৷
বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবার জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন পূর্ব ইউক্রেনের সংঘাত সম্পর্কে টেলিফোনে কথাবার্তা বলেন৷ পরে বার্লিন ও মস্কো, উভয় রাজধানী থেকেই নিশিচত করা হয় যে, দুই নেতা রুশ যুদ্ধবিরতি পর্যবেক্ষকদের সংশ্লিষ্ট এলাকায় ফিরিয়ে আনা সম্পর্কে একমত হয়েছেন৷ কিয়েভ সরকার ডনবাস এলাকায় রুশ পর্যবেক্ষকদের কাজ ব্যাহত করছেন ও তাদের রণাঙ্গণ থেকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছেন, বলে ক্রেমলিনের অভিযোগ ছিল৷
জার্মান সরকারের মুখপাত্র স্টেফেন সাইবার্ট জানান, ম্যার্কেল পূর্ব ইউক্রেনের পরিস্থিতি সমাধানে পুটিনকে সাহায্য করতে বলেন৷ ক্রেমলিনের তরফ থেকে পরে জানানো হয়, দু'পক্ষ এ বিষয়ে একমত হয়েছে যে, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা রুশ পর্যবেক্ষকদের প্রত্যাবর্তন সংক্রান্ত শর্তাবলির একটি তালিকা পেশ করবেন, যার মধ্যে ইউক্রেন সরকার ও রাশিয়াপন্থি বিদ্রোহীদের মধ্যে বন্দি বিনিময়েরও ব্যবস্থা থাকবে৷
২০১৪ সালের এপ্রিল মাসে ইউক্রেনে রাশিয়া-সমর্থিত অভ্যুত্থান শুরু হওয়া যাবৎ ১০টি ভিন্ন ভিন্ন যুদ্ধবিরতি সম্পাদিত হয়েছে, কিন্তু দু'পক্ষই তার অব্যবহিত পরে পরস্পরের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি ভঙ্গের অভিযোগ করেছে৷
ইউক্রেনীয়-রুশি প্রেমকাহিনী
ইউক্রেন আর রাশিয়ার সংঘাত দু’দেশের মানুষকে পরস্পরের কাছ থেকে দূরে ঠেলে দিচ্ছে৷ তবে দম্পতি আর প্রেমিক-প্রেমিকারা সেতুবন্ধনের কাজ করে চলেছেন ঠিক আগের মতোই৷
ছবি: Oksana Yushko
আর্টুর আর অক্সানা
‘আমি (এই ছবিঘরের স্রষ্টা) নিজে রুশি৷ আর্টুর হলো ইউক্রেনীয়৷ তিন বছর আগে একটা ফটোগ্রাফি ওয়ার্কশপ করার সময় আমাদের বন্ধুত্ব হয়৷ তারপর বিদেশে৷ সবশেষে আর্টুর মস্কোয় এসে থাকার সিদ্ধান্ত নেয়৷ আজ আমার একসঙ্গে থাকি, বিদেশে যাই, রাশিয়া কিংবা ইউক্রেনে গিয়ে পরিবারের লোকজনদের সঙ্গে দেখা করি৷’
ছবি: Oksana Yushko
অল্গা আর ভ্লাদিমির
ভ্লাদিমির একজন আধুনিক শিল্পী, অল্গা ব্যালেরিনা৷ অল্গার জন্ম ইউক্রেনের কিরোভোগ্রাদস্কায়া অঞ্চলে৷ ওরা ওদের সদ্যোজাত শিশুসন্তান নিয়ে রাশিয়ার খিমকিতে থাকে৷ এক বন্ধু ফেসবুকে অক্সানার ছবি পোস্ট করার পর অল্গা আর ভ্লাদিমিরই প্রথম তাদের ছবি তুলতে দিতে রাজি হয়৷
ছবি: Oksana Yushko
ইউলিয়া আর এডিক
ইউলিয়ার জন্ম ইউক্রেনে আর এডিক-এর জন্ম রাশিয়ায়৷ দু’জনেই পূর্ব ইউক্রেনের ডনবাস এলাকা থেকে উদ্বাস্তু৷ আজ ওদের চার বছরের ছেলে দিমাকে নিয়ে ওরা থাকে মস্কোয়৷ দিমার কথা ভেবেই ওরা যুদ্ধ থেকে পালিয়েছে৷ লাইফ লিংকস রিপোর্টার এমিলি #প্রাইডঅ্যান্ডপ্রেজুডিস এপিসোডটির জন্য ওদের ছবি তোলেন ঐ মস্কোতেই৷
ছবি: Oksana Yushko
দিমা আর সাশা
দিমা হল রাশিয়ার, সাশার জন্ম ইউক্রেনে৷ সাশা ‘ফেমেন’ গোষ্ঠীর সদস্য৷ দিমা কিয়েভে এসেছিল নিউ ইয়র্ক টাইমস-এর হয়ে, ফেমেন সম্পর্কে একটা রিপোর্ট করার জন্য৷ ওদের দু’জনের তখনই দেখা – আর বন্ধুত্ব৷ কিছুদিন পরে সাশা ইউক্রেন ছেড়ে ফ্রান্সে রাজনৈতিক আশ্রয় নেয়৷ তখন থেকে দিমা আর সাশা প্যারিসে বাস করছে৷
ছবি: Oksana Yushko
দিমা আর ভ্লাদা
দিমার জন্ম রাশিয়ায়, ভ্লাদা হল কিয়েভের, মানে ইউক্রেনের মেয়ে৷ দুজনের সাক্ষাৎ হয় জর্জিয়ায়, তারপর কিছুদিন দূর থেকে প্রেম৷ শেষমেষ ওরা অ্যামেরিকায় চলে যায়৷ওখানে এক বছর আগে ওদের একটি ছেলে হয়েছে, যার নাম লেভ৷
ছবি: Oksana Yushko
মাক্সিম আর দারিয়া
দারিয়া ইউক্রেনের মেয়ে, মাক্সিম রাশিয়ার ছেলে৷ ওদের প্রেম শুরু হয় গ্রীষ্মের একটি দিনে, রাশিয়ার ভরোনেঝ-এ৷ দু’জনে একই ভাড়াগাড়িতে সাত ঘণ্ঠা কাটায় – একসঙ্গে৷ মাক্সিম নাকি প্রথম সন্দর্শনেই প্রেমে পড়ে৷ ক’দিন দেখা না হলেই ওদের প্রেম যে উথলে ওঠে, সেটা ওদের দেখলেই বোঝা যায়৷
ছবি: Oksana Yushko
ভ্যালেরি আর স্বেতা
ভ্যালেরি হলো ইউক্রেনের ওডেসা থেকে, স্বেতার জন্ম রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গে৷ স্বেতা এসেছিল ওডেসায় এক বন্ধুর কাছে – সেই অবকাশে ভ্যালেরির সঙ্গে দেখা৷ এক বছর পরেই বিয়ে৷ দু’জনেই যোগব্যায়ামের ভক্ত; বিভিন্ন দেশের সংস্কৃতি আর উদ্ভুটে ব্যাপারস্যাপারে আগ্রহী৷
ছবি: Oksana Yushko
সাশা আর লেনা
আলেক্সান্ডার হলো রাশিয়ার ক্রাসনোদার থেকে, লেনার জন্ম ইউক্রেনের কিয়েভে৷ দু’জনের দেখা ২০১৩ সালে, গ্রিসে ছুটি কাটানোর সময়৷ এক বছরের মধ্যেই লেনা মস্কোয় গিয়ে আলেক্সান্ডার-এর সঙ্গে যোগ দেয়৷ দুই দেশের মধ্যে সমস্যা যতো বাড়ে, ততই বাড়ে ওদের প্রেম৷
ছবি: Oksana Yushko
লিনা আর ভিটিয়া
‘‘আমার মা রুশি, বাবা ইউক্রেনের মানুষ৷ ওঁদের দু’জনের সাক্ষাৎ খারকোভ স্টেট ইউনিভার্সিটিতে৷ আজ ৫০ বছর ধরে দু’জনে একসঙ্গে৷ মানুষ আর মানুষের মধ্যে বন্ধুত্বের সূত্রটি আমি পেয়েছি ওঁদের কাছ থেকেই৷’’
ছবি: Oksana Yushko
9 ছবি1 | 9
শেষ যুদ্ধবিরতিটি কার্যকরি হয় গত আগস্ট মাসে৷ ইউক্রেনের জয়েন্ট সেন্টার ফর কন্ট্রোল অ্যান্ড কোঅর্ডেনিশান বা জেসিসিসি যুদ্ধবিরতি পর্যবেক্ষণের দায়িত্বে ছিল এবং জেসিসিসি-তে রুশ কর্মকর্তারাও সামিল ছিলেন৷
কিন্তু গত সোমবার মস্কো ঘোষণা করে যে, জেসিসিসি-তে রুশ সামরিক কর্মকর্তাদের ফিরিয়ে নেওয়া হচ্ছে, কেননা জেসিসিসি-র ইউক্রেনীয় সদস্যরা রুশ সদস্যদের কাজ ব্যাহত করছেন ও তাদের রণাঙ্গণে যাওয়ার পথে বাধা সৃষ্টি করছেন৷ প্রতিক্রিয়া হিসেবে কিয়েভের কর্মকর্তারা রাশিয়ার বিরুদ্ধে শান্তি প্রক্রিয়াকে বিপন্ন করার অভিযোগ করেন৷ মস্কোর সিদ্ধান্তের ফলে পূর্ব ইউরোপে সংঘাতের তীব্রতা বাড়বে, বলে বুধবার বিভিন্ন মহল থেকে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়৷
ক্রেমলিন থেকে বৃহস্পতিবার একটি বিবৃতিতে বলা হয় যে, রুশ পর্যবেক্ষকরা কেন পশ্চাদপসারণ করেছেন, তা জানার জন্য ম্যার্কেল পুটিনকে ফোন করেন – এবং রুশ পর্যবেক্ষকরা ইউক্রেনীয় তরফ থেকে যে সব বাধা ও প্ররোচনার সম্মুখীন হয়েছেন, পুটিন ম্যার্কেলকে সে বিষয়ে অবহিত করেন৷
জার্মান সরকারি মুখপাত্র স্টেফেন সাইবার্টের ভাষ্যে: ‘‘চ্যান্সেলর বিশেষভাবে উল্লেখ করেন যে, এই কেন্দ্রের (জিসিসিসি-র) কাজ সুরক্ষিত করতে হবে৷''
উভয় নেতা ইউক্রেন সরকারের সৈন্যবাহিনী ও রাশিয়াপন্থি বিচ্ছিন্নতাবাদিদের মধ্যে পরিকল্পিতভাবে বন্দিবিনিময় ছাড়া একটি বড়দিনের যুদ্ধবিরতি সমর্থন করেন, বলে ক্রেমলিনের তরফে জানানো হয়েছে৷
এসি/ডিজি (এপি, রয়টার্স)
বিশ্বে যে ২০ জন মানুষের ক্ষমতা সবচেয়ে বেশি
এই বিশ্বে এখন প্রায় ৭৪০ কোটি মানুষের বাস৷ এত মানুষের মধ্যে সবচেয়ে ক্ষমতাবান ২০ জন মানুষ৷ ২০১৮ সালের তালিকায় কে কে আছেন, সেটা অনুমান করতে পারেন? দেখুন ফোর্বস ম্যাগাজিন কোন ২০ জনকে বেছে নিয়েছে৷