1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পুবের চেয়ে পশ্চিম অ্যান্টার্কটিকায় বরফ দ্রুত গলে

১৩ মে ২০২৫

অ্যান্টার্কটিকায় জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব পড়ে না বলে অনেকদিন মনে করা হয়েছিল৷ কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলিতে দেখা যাচ্ছে, উষ্ণায়নের প্রভাব সেখানেও পড়ছে৷

অ্যান্টার্কটিকায় বরফ গলছে
গবেষকদের মতে,পশ্চিম অ্যান্টার্কটিকায় সাগরে ভাসা বরফ যদি গলা শুরু করে তাহলে এর আইস সেল্ফও গলবেছবি: JOHAN ORDONEZ/AFP/Getty Images

পূর্ব অংশের তুলনায় সেখানকার বরফ গলার গতি একটু দ্রুত বলে বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন৷

পৃথিবীর বৃহত্তম মেরু মরুভূমি কীভাবে তৈরি হয়েছিল তা নিয়ে গবেষকেরা অনেকদিন ধাঁধায় ছিলেন৷ তবে সাধারণ ঐকমত্য ছিল যে, বরফের চাদর প্রথমে আজকের অ্যান্টার্কটিকার কেন্দ্রে আকার ধারণ করেছিল এবং সেখান থেকে বাইরের দিকে ছড়িয়ে পড়েছিল৷

কিন্তু বর্তমানে নতুন এক গবেষণা ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, আসলে প্রায় ৩৪ মিলিয়ন বছর আগে মহাদেশের পূর্ব অংশে প্রথম বরফ তৈরি হয়েছিল৷ এরপর পশ্চিম অ্যান্টার্কটিকা জুড়ে তা বিস্তৃত হতে কমপক্ষে সাত মিলিয়ন বছর সময় নেয়৷ ঐ সময় পৃথিবীর অবস্থা গ্রিনহাউস থেকে বর্তমানের আইসহাউস ক্লাইমেটে রূপ নেয়৷

পশ্চিম অ্যান্টার্কটিকা থেকে প্রথমবারের মতো সংগৃহীত পলির নমুনা পরীক্ষা করে এই তথ্য জানা গেছে৷ গবেষকেরা পানির উপরিভাগ থেকে প্রায় ১০০ মিটার গভীরে সমুদ্রের তলদেশের ১০ মিটার নিচে গর্ত খনন করেছিলেন৷ এভাবে সংগৃহীত নমুনা জার্মানির ব্রেমারহাফেন শহরের ফর পোলার অ্যান্ড মেরিন রিসার্চে সংরক্ষণ করা আছে৷ এগুলো পরীক্ষা করে কোন সময় কোন জলবায়ু পরিস্থিতি বিরাজ করতো, তা জানা যেতে পারে৷

বিশেষ স্ক্যানের মাধ্যমে গবেষকরা নির্ধারণ করেছেন যে, অ্যান্টার্কটিকার পশ্চিমে ভূমির গঠন পূর্বের ভূমির গঠন থেকে উল্লেখযোগ্যভাবে আলাদা৷ বর্তমানে আইস ক্যাপ-এর পশ্চিম অংশের অনেক আইস শিট উষ্ণ সমুদ্রের জলে অবস্থিত- যা সমস্যা বয়ে আনতে পারে৷

হেলমহলৎস সেন্টারের ভূতত্ত্ববিদ ইয়োহান ক্লাগেস বলেন, ‘‘পশ্চিম অ্যান্টার্কটিকায় বরফ জমা হতে অনেক বেশি সময় লাগলেও তা পুরো অদৃশ্য হয়ে যেতে অনেক কম প্রচেষ্টা লাগবে৷ এই প্রেক্ষাপটে ‘প্রচেষ্টা'র অর্থ হলো, তাপমাত্রা এবং কার্বন ডাই-অক্সাইডে সামান্য পরিবর্তন বরফ অত্যন্ত দ্রুত অদৃশ্য হয়ে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট হবে৷

পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে এক ধরণের ডমিনো এফেক্ট দেখা দিতে পারে: পশ্চিম অ্যান্টার্কটিকায় সাগরে ভাসা বরফ যদি গলা শুরু করে তাহলে এর আইস সেল্ফও গলবে- এমনকি এর নিচে থাকা ‘স্থায়ী' বরফও দ্রুত গলতে থাকবে৷ তখন সেখানে বাস করা প্রজাতির উপর মারাত্মক প্রভাব পড়বে৷ সমুদ্রের বরফ সরে গেলে সিল ও পেঙ্গুইনরা তাদের আবাসস্থল হারাবে৷ পশ্চিম অ্যান্টার্কটিকায় থাকা থোয়াইটস হিমবাহ একদিন বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে৷

ক্লাগেস বলেন, ‘‘ধরুন আমরা যদি পশ্চিম অ্যান্টার্কটিকার বরফ সম্পূর্ণ গলে যেতে দেই, তাহলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বিশ্বব্যাপী সাড়ে তিন থেকে পাঁচ মিটার বৃদ্ধি পাবে, যা এই ঘরের উচ্চতার চেয়ে একটু বেশি৷ এবং অবশ্যই এটি বিশ্বব্যাপী উপকূলীয় অঞ্চলে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলবে৷''

গবেষকেরা আশা করছেন, তাদের গবেষণা কার্বন নির্গমন কমানোর তাড়না আরেকটু বাড়াবে৷ পৃথিবীর ইতিহাস জুড়েই নিয়মিতভাবে জলবায়ু পরিবর্তন হচ্ছে৷ কিন্তু এবার এটি আমাদের কারণে হচ্ছে৷

ক্লাগেস বলেন, ‘‘আমাদের বুঝতে হবে, এটি পৃথিবীকে ‘বাঁচানো' বা পরিবেশ বা অন্য কিছু রক্ষার বিষয় নয়৷ এটি স্পষ্টতই নিজেদের রক্ষার বিষয়, যেন আমরা এই গ্রহে যুক্তিসঙ্গতভাবে ভালোভাবে বসবাস করা চালিয়ে যেতে পারি৷''

পৃথিবীর বৃহত্তম মেরু মরুভূমি নিয়ে গবেষণা আমাদের শুধু আমাদের গ্রহের সুদূর অতীত সম্পর্কেই নয়, বরং এর সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ সম্পর্কেও অনেক কিছু জানাচ্ছে৷

পশ্চিম অ্যান্টার্কটিকার বরফ গলা রোধে গবেষণ!

03:53

This browser does not support the video element.

কাই রেমেন/জেডএইচ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ