1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পুরপ্রধান গ্রেফতার, চিটফান্ডের টাকা বিদেশে পাচার?

পায়েল সামন্ত কলকাতা
৩ সেপ্টেম্বর ২০২২

তৃণমূল নেতার বাড়িতে টাকার পাহাড়৷ গ্রেপ্তার হালিশহরের পুরপ্রধান রাজু সাহানি৷ সিবিআই-এর দাবি, উদ্ধার হয়েছে ৮০ লক্ষ টাকা ও বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র৷

Indien West Bengalen | Festnahme Raju Sahani Vorsitzender der Stadtverwaltung von Halisahar
ছবি: Payel Samanta/DW

দুর্নীতির অভিযোগে পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেপ্তার হওয়ার পর ফের ধাক্কা পশ্চিমবঙ্গের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের৷ এবার গ্রেপ্তার উত্তর ২৪ পরগনার হালিশহর পুরসভার চেয়ারম্যান রাজু সাহানি৷ তাঁকে শুক্রবার গ্রেপ্তার করে সিবিআই৷

কেন্দ্রীয় সংস্থার দাবি, রাজুর নিউটাউনের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয়েছে নগদ ৮০ লক্ষ টাকা৷ এর সঙ্গে পাওয়া গেছে ওয়ান শটার বন্দুক, ব্যাঙ্কের নথি, সম্পত্তির দলিল৷ দুই কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা মূল্যের সম্পত্তির নথি উদ্ধার হয়েছে বলে সূত্রের খবর৷ থাইল্যান্ডের ব্যাঙ্কে একাধিক অ্যাকাউন্ট থাকার প্রমাণ মিলেছে৷ শনিবার চেয়ারম্যানকে আসানসোল আদালতে পেশ করা হয়৷ দুর্নীতি নিয়ে নীরব রাজু শুধু বলেছেন, সময় এলেই সব বোঝা যাবে!

সারদা, রোজভ্যালির মতো আরো এক ভুয়া অর্থলগ্নি সংস্থা নিয়ে তদন্তে নেমে রাজুকে পাকড়াও করেছে সিবিআই৷

তার বিরুদ্ধে বর্ধমান সনমার্গ ওয়েলফেয়ার কো-অপারেটিভ সোসাইটি নামে একটি চিটফান্ডের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠে৷

সিবিআই সূত্রের দাবি, ছোট ছোট আমানতকারীদের টাকা সংগ্রহ করে বিদেশের অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে৷ হালিশহর ও আশপাশের এলাকায় রাজুর প্রভাবে সানমার্গ ডালপালা ছড়িয়েছিল, টাকা তুলেছিল৷ এর তদন্তে শুক্রবার হালিশহরে নদীর ধারে চেয়ারম্যানের বাগানবাড়ি হাইনেস্ট গেস্ট হাউসে অভিযান চালায় কেন্দ্রীয় সংস্থা৷ হানা দেয় রাজুর নিউটাউনের ফ্ল্যাটে৷ বিলাসবহুল আবাসনের প্রায় দুই হাজার বর্গফুটের সেই ফ্ল্যাটের আনুমানিক দাম দেড় কোটি টাকা৷ এছাড়াও রাজুর সল্টলেকে দোকান, ভিন রাজ্যে ফ্ল্যাট রয়েছে বলে সূত্রের খবর৷

দুর্নীতির তদন্ত হচ্ছে, এটাই আশার কথা: নীলাদ্রি বন্দ্যোপাধ্যায়

This browser does not support the audio element.

পার্থ হেভিওয়েট না হলেও পুরপ্রধান পদ যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ৷ দলের জনপ্রতিনিধির বাড়ি থেকে এতো টাকা উদ্ধার হওয়ায় অস্বস্তি তৃণমূল শিবিরে৷ যদিও রাজ্যের মন্ত্রী ও জেলার বিধায়ক পার্থ ভৌমিক তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন৷

তাঁর মন্তব্য, ‘‘ব্যাগে টাকা ভরে নিয়ে গিয়ে কাউকে ফাঁসানো হচ্ছে না, এর নিশ্চয়তা কোথায়? এই তদন্ত নিয়ে আমাদের প্রশ্ন ও সংশয় আছে৷’’

যদিও সংবাদমাধ্যমে সিবিআই-এর উদ্ধার করা টাকার বান্ডিল দেখা যাচ্ছে৷ বিরোধীরা এ নিয়ে কটাক্ষ করছে তৃণমূলকে৷

বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষের মন্তব্য, ‘‘তদন্ত দ্রুত গতিতে চলছে৷ এভাবে চলতে থাকলে তৃণমূলের অর্ধেক নেতা-মন্ত্রী জেলে ঢুকে যাবেন৷’’

আর সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘চেয়ারম্যান হওয়ার জন্য দলকেই হয়তো এক কোটি টাকা দিতে হয়েছে রাজুকে৷ সেই টাকা তিনি তুলবেন না৷’’

বিজেপি শনিবার সকাল থেকে হালিশহরে পথে নেমেছে৷ পুর ভবনের সামনে বিক্ষোভে দাবি উঠেছে, চেয়ারম্যানের পদত্যাগ চাই৷

পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয় বিক্ষোভকারীদের৷ তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ক্ষেত্রে যে অবস্থান নিয়েছে, তারই প্রতিধ্বনি শোনা গিয়েছে রাজুর ক্ষেত্রেও৷

চিটফান্ডের নামে টাকা তোলা বন্ধ করা যাচ্ছে না: অভিরূপ সরকার

This browser does not support the audio element.

উত্তর ২৪ পরগনার দমদম লোকসভার সাংসদ, মুখপাত্র সৌগত রায় বলেছেন, ‘‘দল এ ব্যাপারে কিছু জানত না৷ অভিযোগ উঠলে তদন্ত হব৷’’

প্রশ্ন উঠছে, জেলাস্তরের নেতাদের উপর কি তৃণমূলের নিয়ন্ত্রণ নেই? নাকি নজরে থাকা সত্ত্বেও দুর্নীতি নিয়ে উদাসীন শীর্ষ নেতৃত্ব?

রাজনৈতিক বিশ্লেষক নীলাদ্রি বন্দ্যোপাধ্যায় ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘দল জানত কি জানত না, এটা নিয়ে সাধারণ মানুষের মাথাব্যথা নেই৷ দুর্নীতির তদন্ত হচ্ছে, এটাই আশার কথা৷ কিন্তু অভিযোগ উঠলে তৃণমূল ব্যবস্থা নিচ্ছে কি না, সেটাই দেখার৷ পার্থকে সরিয়েছে, অনুব্রতর পাশে দাঁড়িয়েছে৷ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীকে টিভিতে টাকা নিতে দেখা গিয়েছিল, তাঁকে সরিয়েছিল? একই অভিযোগে সৌগত রায়ের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে৷''

বাংলায় এর আগে একাধিক অর্থলগ্নি সংস্থার বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে৷ রাজুর ক্ষেত্রে তদন্তকারীদের অনুমান, চিটফান্ড থেকে টাকা তুলে বিদেশে পাচার করা হয়েছে৷ সারদা, রোজভ্যালির মতো বড় মাপের কেলেঙ্কারির পরও কেন এ ধরনের দুর্নীতিতে লাগাম টানা যাচ্ছে না? এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক নেতৃত্বের যোগসাজশ ও প্রভাবের কথা বার বার উঠেছে৷

কারণ ব্যাখ্যায় অর্থনীতিবিদ অভিরূপ সরকার ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমাদের দেশে ব্যাংকিংব্যবস্থা সবার কাছে পৌঁছায়নি৷ ফিনান্সিয়াল লিটারাসির কাজ গরিব মানুষের মধ্যে সেভাবে হয়নি৷ এই সংক্রান্ত নীতি গ্রহণ ও রূপায়ণের ক্ষেত্রে আমরা পিছিয়ে৷ ফলে চিটফান্ডের নামে টাকা তোলা বন্ধ করা যাচ্ছে না৷’’

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ