ডয়চে ভেলের ফেসবুক লাইভ দেখে দর্শক ইঞ্জিনিয়ার মো.সাহাব উদ্দিনের প্রশ্ন, নারীরা কি আসলেই মানুষের মর্যাদা পেয়েছে? তিনি দুঃখ করে লিখেছেন, ‘‘টিভির অ্যাডভারটাইজমেন্টে, বিলবোর্ড, মিডিয়ায় নারীদেহের প্রদর্শনকি নারীকে আদৌ কোনো সম্মান বা স্বাধীনতা দিয়েছে? গাড়ির অ্যাডের সাথে সাজ-সজ্জায় অর্ধনগ্ন নারী, পুরুষের ব্যবহৃত পণ্যের অ্যাডেও নারী, বিশাল বিলবোর্ডে পণ্যের সাথে নারী, বাচ্চাদের চকলেট, আইসক্রিমের অ্যাডে,পুরুষের বডি স্প্রে, শেভিং ক্রিম এর অ্যাডে যৌনউদ্দীপক নারী, ফ্যাশন শো, সৌন্দর্য প্রতিযোগিতা সবখানেই কেবল নারীদেহ প্রদর্শনীর প্রতিযোগিতা৷ পণ্যের মার্কেটিং এর একমাত্র হাতিয়ার হলো নারী দেহ৷ আর এইসব বিজ্ঞাপন নিমার্তার অধিকাংশই পুরুষ, তারা পুরুষতান্ত্রিক সমাজের এন্টারটেইনের কথা বিবেচনা করেই বিজ্ঞাপন সাজায়৷ তারা জানে যে এই সমাজে নারীর প্রতি পুরুষের দৃষ্টিভঙ্গি আসলে কেমন৷ নারীকে পুরুষেরা শুধু পণ্যই ভাবে৷''
‘‘প্রত্যাশা আর প্রাপ্তির খাতায় অবদানে শীর্ষে থাকুক নারী'' এভাবেই বিশ্ব নারী দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন দর্শক রুবেল রানা৷ তিনি লিখেছেন ফেসবুক পাতায়, ‘‘শুধু নারী দিবসে নয়, এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণায় আত্মপ্রতিষ্ঠা ও আত্মউপলব্ধিতে উজ্জ্বল হোক নারীর প্রতিটি দিন৷ প্রতিদিন, প্রতি ক্ষণ, প্রতি মুহূর্তে শুভ হোক নারীর অবাধ পথ চলা, আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করছি সকল নারীর অবদান, এগিয়ে যাওয়ার আহ্বানে চলো বহুদূর!''
আন্তর্জাতিক নারী দিবসে নারীদের আরো শুভেচ্ছা জানিয়েছেন স্বপন কুমার, ফারুক হোসেনসহ অনেকে৷
নারী ও পুরুষের মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি না করে মানব বাদী হওয়া যায়না? দর্শক মোর্তুজা চৌধুরীর মন্তব্য৷ আর শহীদুল্লাহ কায়সার মনে করেন, ‘‘আমি যেমন মানুষ নারী ও তেমন তাই নারী পুরুষ সমানাধিকার দরকার৷''
নারী দিবস উপলক্ষে ফেসবুক লাইভটি খুব ভালো লেগেছে জানিয়েছেন দর্শক দীন মোহাম্মদ৷
সংকলন: নুরুননাহার সাত্তার
সম্পাদনা: খালেদ মুহীউদ্দীন
এটি একটি বহুল আলোচিত ও বিতর্কিত বিষয়৷ হেলমুট নিউটন থেকে গাই বো দ্যঁ পর্যন্ত বিখ্যাত সব ফ্যাশন ফটোগ্রাফার নারীদের কামনার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করেছেন বিজ্ঞাপনে৷ যুগে যুগে এর বিরোধিতাও হয়েছে, সমর্থনও আছে৷
ছবি: Courtesy the artistরং দিয়ে একজন নারী তাঁর শরীর ঢাকছেন৷ ফ্যাশন ব্র্যান্ড লিভাইসের একটি বিজ্ঞাপনের ছবি এটি৷ তুলেছেন ক্রিস্টোফে গিলবার্ট নামের এক ফটোগ্রাফার৷ তাঁর এই সিরিজের ছবিগুলোতে নারীকে ফ্যাশনের চেয়ে কামোদ্দীপক করে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে বলে অভিযোগ আছে৷ তবে ভিন্নমতও আছে৷
ছবি: Courtesy the artistবিজ্ঞাপনের ক্ষেত্রে একটা অভিযোগ সবসময় করা হয় যে, নারীর শরীর বা শরীরের অংশকে পণ্য হিসেবে উপস্থাপন করা হচ্ছে৷ ১৯৯৮ সালের অন্তর্বাসের এই বিজ্ঞাপনটি তেমনই একটি বিতর্কিত ছবি৷
ছবি: Courtesy the artistএকজন নারী সুন্দর লাল পোশাকে সজ্জিত, হাতে প্রদীপদান৷ জার্মান ফটোগ্রাফার এলেন ফন উনব্যর্থের এই ছবিতে ফটোগ্রাফির সমসাময়িক ধারণা নিয়ে কাজ করা হয়েছে, যেখানে মূল পণ্যের চেয়ে বরং লাইফস্টাইলকে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়৷ এই বিজ্ঞাপনটির পণ্য আসলে ভদকা, যা ছবিতে অতটা প্রাধান্য পায়নি৷
ছবি: Courtesy the artistফ্রেঞ্চ ফটোগ্রাফার গাই বো দ্যঁ বিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে জনপ্রিয় ফটোগ্রাফারদের একজন৷ তাঁর ছবি বিখ্যাত ম্যাগাজিন ভোগ-এর সম্পাদকীয় পাতায় ঠাঁই পেয়েছে৷ প্রচুর বিজ্ঞাপনে কাজ করেছেন তিনি৷ তাঁর অনেক ছবিই যৌন আবেদনময়৷ কিছু কিছু একেবারে ধাক্কা খাওয়ার মতো বলে সমালোচনা আছে৷
ছবি: The Guy Bourdin Estate 2018বাস্তবে একটি পারফিউম বোতলের সঙ্গে সমুদ্রতীরের যোগাযোগ থাকার কথা নয়৷ কিন্তু বিজ্ঞাপনের দুনিয়ায় একটি ছোট বোতলও একটি আকর্ষণীয় লাইফস্টাইলের অংশ হতে পারে, যার সঙ্গে একজন রোদে পোড়া আকর্ষণীয়ার নুয়ে পড়া শরীরেরও যোগ থাকতে পারে৷ আশির দশকে বিজ্ঞাপনের জগৎ যৌন আবেদনময়তায় ভরপুর ছিল৷ এই ছবিটি তখনকার সময়ের৷
ছবি: Courtesy the artistষাটের দশকে ভোগ ম্যাগাজিনে মনে রাখার মতো বেশ কিছু ছবি ছাপানো হয়েছিল ফটোগ্রাফার ফ্রাঙ্কো রুবার্তেল্লির৷ ১৯৬৮ সালের এই ছবিটিতে তিনি তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী ফেরুস্কা ফন লেনডর্ফকে মডেল বানিয়েছেন৷ যদিও ঔপনিবেশিক যুগের এই ছবি ‘শিকারী জীবন’-এর ‘মুক্ত আত্মা’-কে চিত্রায়িত করছে, তারপরও এর পেছনে নারীকে পণ্য হিসেবে মূর্ত করার বাসনাই প্রকাশ পেয়েছে বলে সমালোচনা আছে৷
ছবি: Courtesy Ira Stehmann Fine Art