ভ্রুণ হত্যা, শিশু বিবাহ, শ্লীলতাহানি, গণধর্ষণ, – এগুলো যেন লেগেই আছে ভারতে৷ তারই প্রেক্ষাপটে পথেঘাটে ইভটিজিংয়ের হাত থেকে বাঁচতে কী করণীয়, এ সংক্রান্ত এক পুলিশি নির্দেশিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মেয়েরা৷
বিজ্ঞাপন
কিছু কিছু নির্দেশ শুনলে মনে হতে পারে চিন্তাভাবনায় রক্ষণশীল কোনো কট্টরবাদী গোষ্ঠী, বা মধ্যযুগীয় ধ্যান-ধারণা মেনে চলা কোনো খাপ পঞ্চায়েতের দেওয়া ফতোয়া! কিন্তু না, পথচলতি মহিলাদের নিরাপত্তা সুরক্ষিত রাখতে এই বিধান কলকাতার সল্ট লেক বা বিধাননগরের পুলিশের৷
মোট এক ডজন নির্দেশিকা – ১৷ শোভন পোশাক পরুন, ২৷ মোবাইল ফোনে জরুরি স্পিড ডায়াল নাম্বার সেভ করে রাখুন, ৩৷ আত্মরক্ষার কৌশল (শিখুন), ৪৷ নিজের চারপাশের লোকজন সম্পর্কে সজাগ থাকুন, ৫৷ বেশি রাত পর্যন্ত বাইরে থাকা এড়িয়ে চলুন, ৬৷ পেপার স্প্রে সঙ্গে রাখুন, ৭৷ ব্যবহারে শালীনতা বজায় রাখুন, ৮৷ দল বেঁধে থাকুন, ৯৷ ভিড় বাস বা ট্রেনে যাতায়াত এড়িয়ে চলুন , ১০৷ নির্জন জায়গা এড়িয়ে চলুন, ১১৷ আলোকিত এবং জনবহুল এলাকায় থাকুন এবং ১২৷ স্ট্রিট স্মার্ট হোন৷
অ্যাসিড সন্ত্রাস!
একটা সময় বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমে প্রায়ই আসতো নারীর ওপর অ্যাসিড নিক্ষেপের খবর৷ এমন বর্বরোচিত হামলা এখনও হয় কিছু দেশে৷ কয়েকটি দেশ ঘুরে জার্মান ফটোগ্রাফার অ্যান-ক্রিস্টিন ভোর্ল-এর তোলা ছবি নিয়ে আজকের ছবিঘর৷
ছবি: DW/M. Griebeler
বাংলাদেশের ফরিদা
ফরিদার স্বামী ছিলেন ড্রাগ এবং জুয়ায় আসক্ত৷ ঋণের দায়ে একসময় বাড়িটাও বিক্রি করে দেয় নেশাগ্রস্ত লোকটি৷ রেগেমেগে ফরিদা বলেছিলেন, এমন স্বামীর সঙ্গে আর ঘর করবেন না৷ সেই রাতেই হলো সর্বনাশ৷ ঘুমন্ত ফরিদার ওপর অ্যাসিড ঢেলে দরজা বন্ধ করে দিল পাষণ্ড স্বামী৷ যন্ত্রণায় চিৎকার করছিলেন ফরিদা৷ প্রতিবেশীরা এসে দরজা ভেঙে উদ্ধার করে তাঁকে৷
ছবি: Ann-Christine Woehrl/Echo Photo Agency
মায়ের স্নেহে, বোনের আদরে...
অ্যাসিডে ঝলসে যাওয়ার সময় ফরিদা ছিলেন ২৪ বছরের তরুণী৷ ১৭টি অস্ত্রোপচারের পর এখন কিছুটা সুস্থ৷ তবে সারা গায়ে রয়েছে দগদগে ঘায়ের চিহ্ন৷ পুড়ে যাওয়া জায়গাগুলোর ত্বক মসৃণ রাখতে প্রতিদিন মালিশ করে দেন মা৷ নিজের কোনো বাড়ি নেই বলে মায়ের সাথেই বোনের বাড়িতে থাকেন ফরিদা৷
ছবি: Ann-Christine Woehrl/Echo Photo Agency
উগান্ডার ফ্লাভিয়া
ফ্লাভিয়ার ওপর এক আগন্তুক অ্যাসিড ছুড়ে মেরেছিল ৫ বছর আগে৷ আজও ফ্লাভিয়া জানেন না, কে, কেন তাঁর ওপর হামলা চালালো৷ বিকৃত চেহারা নিয়ে অনেকদিন ঘরেই ছিলেন৷ বাইরে যেতেন না৷ এক সময় ফ্লাভিয়ার মনে হলো, ‘‘এভাবে ঘরের কোণে পড়ে থাকার মানে হয় না৷ জীবন এগিয়ে চলে৷ আমাকেও বেরোতে হবে৷’’
ছবি: Ann-Christine Woehrl/Echo Photo Agency
আনন্দময় নতুন জীবন
এখন প্রতি সপ্তাহে একবার সালসা নাচতে যায় ফ্লাভিয়া৷ আগের সেই রূপ নেই, তাতে কী, বন্ধুদের কাছে তো রূপের চেয়ে গুণের কদর বেশি! ফ্লাভিয়া খুব ভালো নাচ জানেন৷ তাই একবার শুরু করলে বিশ্রামের সুযোগই পান না৷ এভাবে পরিবার আর বন্ধুদের সহায়তায় আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন ফ্লাভিয়া৷
ছবি: Ann-Christine Woehrl/Echo Photo Agency
ভারতের নীহারি
নীহারির বয়স তখন ১৯৷ একরাতে আত্মহত্যা করার জন্য আগুন ধরিয়ে দিয়েছিলেন নিজের শরীরে৷ স্বামীর মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন থেকে মুক্তি পাওয়া জরুরি মনে হয়েছিল তখন৷
ছবি: Ann-Christine Woehrl/Echo Photo Agency
নতুন রূপ
যে ঘরটিতে বসে নীহারি তাঁর চুল ঠিক করছেন এটা ছিল বাবা-মায়ের শোবার ঘর৷ এখানেই নিজেকে শেষ করে দিতে চেয়েছিলেন৷ দেয়াশলাইয়ের বাক্সে একটা কাঠিই ছিল৷ তা দিয়েই আগুন জ্বালিয়েছিলেন শরীরে৷ তবে এখন আর দুর্বল মনের মেয়েটি নেই নীহারি৷ নিজেকে সামলে নিয়ে একটা সংস্থা গড়েছেন৷ সংস্থাটির নাম, ‘পোড়া মেয়েদের রূপ’৷
ছবি: Ann-Christine Woehrl/Echo Photo Agency
পাকিস্তানের নুসরাত
দু-দুবার অ্যাসিড ছোড়া হয়েছে নুসরাতের ওপর৷ প্রথমে স্বামী আর তারপর দেবর৷ ভাগ্যগুণে বেঁচে আছেন নুসরাত৷ ভালোই আছেন এখন৷
ছবি: Ann-Christine Woehrl/Echo Photo Agency
আশার আলো
দু-দুবার অ্যাসিড হামলার শিকার হওয়ায় মাথার অনেকটা চুলও হারিয়েছেন নুসরাত৷ ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে মাথার ক্ষতস্থান পুরোপুরি সারিয়ে চুল এবং আগের হেয়ারস্টাইল ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করছেন তিনি৷
ছবি: Ann-Christine Woehrl/Echo Photo Agency
বন্ধুদের মাঝে...
নিজের ভাবনা, যন্ত্রণার অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করতে কিংবা গল্প করতে প্রায়ই অ্যাসিড সারভাইভারস ফাউন্ডেশন (এএসএফ)-এ যান নুসরাত৷ সেখানে এমন অনেকেই আসেন যাঁদের জীবনও অ্যাসিডে ঝলসে যেতে বসেছিল৷ এখন সকলেই জানেন, তাঁরা আর একা নন৷
ছবি: Ann-Christine Woehrl/Echo Photo Agency
9 ছবি1 | 9
বিধাননগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার নবনিযুক্ত ডেপুটি কমিশনার, আইপিএস কঙ্কর বারুই, যাঁর সই ‘ইভ টিজিং এড়াতে পরামর্শ' শিরোনামের এই নির্দেশিকার নীচে ছিল, তিনি নিঃসন্দেহে মেয়েদের সতর্ক করার সদুদ্দেশেই এই পরামর্শ দিয়েছিলেন৷ পরে সংবাদমাধ্যমের সমালোচনার জবাবে তিনি সেটি সমর্থনও করেন এই বলে যে, যেখানে যেমনভাবে চলা দরকার, তিনি ঠিক সেই পরামর্শই দিয়েছেন৷ যদিও পরে জমনানসে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখে বিধাননগর পুলিশের ওয়েবসাইট থেকে নির্দেশিকাটি সরিয়ে নেওয়া হয়৷ কিন্তু তার পরেও প্রশ্ন উঠছে, যেখানে নারীদের যৌন নিগ্রহ রুখতে খোদ দেশের প্রধানমন্ত্রী তাঁর স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে মায়েদের প্রতি আবেদন রাখছেন তাঁদের ছেলেদের সুস্থ মানসিকতা গড়ে তোলার, সেখানে এক পুলিশকর্তা কীভাবে ইভটিজিংয়ের দায় চাপিয়ে দিতে পারেন মেয়েদের পোশাক বা আচার-ব্যবহারের ওপর!
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর ওই ভাষণে বলেছিলেন, মায়েদেরই খেয়াল রাখতে হবে যাতে তাঁদের ছেলেরা এমনভাবে মানুষ হয় যে, মেয়েদের খারাপ চোখে না দেখে৷ কিন্তু বিধাননগরের পুলিশ কর্তা বললেন তার ঠিক উল্টো কথা! তাছাড়া অনেক মহিলাই ওই নির্দেশিকার মধ্যে স্ববিরোধিতা খুঁজে পাচ্ছেন৷ সল্ট লেকের বাসিন্দা, পেশায় শিক্ষিকা নিনা সেনগুপ্তকে রোজই সল্ট লেকের রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে হয়৷ তাঁর অভিজ্ঞতা, অনেক সময় রাস্তায় আলো থাকে না, কখনও রিক্স বা অটোরিক্স না থাকলে ভিড় বাসেও উঠতে হয়৷ তাঁর বিস্মিত প্রশ্ন, তা হলে কি পরোক্ষে সল্ট লেকের মেয়েদের বাড়ি বসে থাকারই উপদেশ দিচ্ছেন পুলিশকর্তা, যাঁর হাতে আইনরক্ষার ভার!
কলেজছাত্রী হংসা রুংতা একটা সময় নিয়মিত সল্ট লেকে টিউশন পড়তে আসতেন৷ এই তরুণীর প্রতিক্রিয়া আরও তীব্র৷ তিনি বলছেন, পুলিস ভিড় বাসে উঠতে বারণ করছে৷ খুব ভালো কথা৷ তা হলে সমস্ত মেয়েকে একটা করে গাড়ি কিনে দেওয়া হোক, যাতে তারা নির্বিঘ্নে যাতায়াত করতে পারে! অথবা পুলিশের উদ্যোগে মেয়েদের জন্যে কার পুল চালু করা হোক৷ কারণ, মেয়েদেরও ভালো লাগে না ভিড় বাসে বা ট্রেনে উঠতে, লোকের ধাক্কা আর নোংরা স্পর্শ পেতে৷ কিন্তু আজ ট্যাক্সি ধর্মঘট, কাল অটোরিক্স স্ট্রাইক – ফলে মেয়েদের বাধ্য হয়েই ভিড় বাসে উঠতে হয়৷ আর বাস খালি পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করলে তখন আবার রাস্তাঘাট ফাঁকা হয়ে যাবে৷ পুলিশ তো ফাঁকা জায়গাতে যেতেও বারণ করেছে, কটাক্ষ হংসার৷
ভারতের নিখোঁজ শিশুরা
বছরের পর বছর ভারতে হাজারো শিশু নিখোঁজ হওয়ার খবর শোনা যায়, যাদের অনেকেরই আর কোনো খোঁজই পাওয়া যায় না৷ এদের কেউ নিজেই বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়, আবার কাউকে অপহরণ করে নানা রকম কাজ করতে বাধ্য করা হয়৷
ছবি: DW/B. Das
ভাগ্যের লিখন
ভারতে ‘শিশু বাঁচাও আন্দোলন’ সংগঠনের একটি সমীক্ষার ফলাফলে দেখা গেছে যে, ভারতে প্রতি ঘণ্টায় ১১ জন শিশু নিখোঁজ হয়ে থাকে৷ এদের মধ্যে কমপক্ষে চারজনকে আর কখনো খুঁজে পাওয়া যায় না৷
ছবি: DW/B. Das
বন্দিদশা
দিল্লির একটি মধ্যবিত্ত পরিবারের ১৬ বছর বয়সি মেয়ে পিংকিকে খুঁজে পাওয়া গেছে অপরিচিত একটি বাড়িতে৷ সেখানে ওকে জোর করে ঘরের কাজ করানো হচ্ছে এবং বলা বাহুল্য, কোনো বেতন ছাড়াই৷
ছবি: DW/B. Das
দেশব্যাপী অনুসন্ধান
ছবিটিতে এক বাবার হাতে তাঁর হারিয়ে যাওয়া ছেলের ছবি আর তাঁর অন্য হাতে একটি বাক্স৷ সে বাক্সে রয়েছে মানুষের সাহায্য করা অর্থ, যে অর্থ দিয়ে এই বাবা তাঁর ছেলেকে খুঁজে বের করতে সারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যাবেন বলে ঠিক করেছেন৷
ছবি: DW/B. Das
পালিয়ে যায়
যেসব শিশুরা বাড়ি থেকে নিজের ইচ্ছায় চলে যায় বা পালিয়ে যায়, ওরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পরবর্তীতে কাজের ছেলে-মেয়ে হিসেবে বা এ ধরণেরই কোনো কাজ করে থাকে৷ যেমন চায়ের দোকান, পেট্রোল পাম্প বা কার্পেট তৈরি কারখানায়৷ ভারতের রাজধানী নতুন দিল্লির একটি পেট্রোল পাম্প থেকে এমনই কিছু শিশুকে উদ্ধার করেছে পুলিশ৷
ছবি: DW/B. Das
ধৈর্য ধরে থাকা
ছেলেটির হাতে ছয় বছর আগে ওর হারিয়ে যাওয়া বোনদের ছবি৷ ওদের খুঁজে পাবে এই আশায় এখনো বুক বেধে আছে ছেলেটির পুরো পরিবার৷ নিখোঁজ বোনদের ফিরে পাওয়ার জন্য পরিবার থেকে মাঝে মাঝেই বোনদের ছবি এবং নিখোঁজ বিজ্ঞপ্তিসহ প্রচারপত্র বিলি করা হয়৷
ছবি: DW/B. Das
দীর্ঘ প্রতিক্ষা
নিখোঁজ হয়ে যাওয়া এই শিশুটিকে খুঁজে পাওয়া গেছে অবশেষে৷ শিশুটি ওর বাবা-মায়ের কাছে যাওয়ার জন্য ঠিক এ জায়গাতেই অপেক্ষা করছে গত প্রায় এক বছর যাবত৷ কবে শেষ হবে এই অপেক্ষার পালা?
ছবি: DW/B. Das
খুশির দিন ফিরে এসেছে
নিখোঁজ হয়ে যাওয়া অর্জুন আবারো মায়ের কোলে ফিরে এসে অত্যন্ত আনন্দিত, ভীষণ খুশি৷ অর্জুন ওর মাকে তার কষ্টের কথা জানিয়েছে৷ বলেছে, গত দু’বছর ওকে বেধে রাখা হয়েছিল এবং কাজ করতে বাধ্যও করা হয়েছিল৷ তবে ওর মা কিন্তু অর্জুনকে ফিরে পাবার আশা কখনো ছেড়ে দেয়নি৷
ছবি: DW/B. Das
অতিরিক্ত সাবধানতা
এই মা তাঁর কয়েকজন শিশুর মধ্যে একজনকে হারিয়েছেন৷ তাঁর কথায়, ‘‘আর কখনো আমি আমার শিশুদের চোখের আড়াল হতে দেব না৷ উল্লেখ্য, ‘শিশু বাঁচাও আন্দোলন’ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য রয়েছে www.bba.org.in ঠিকানায়৷
ছবি: DW/B. Das
8 ছবি1 | 8
তবে মহিলাদের অনেকেই গোটা বিষয়টির মধ্যে পুলিশের দায়িত্ব এড়ানোর মানসিকতা লক্ষ্য করছেন৷ ঠিক যেভাবে ‘মেয়েটি অত রাতে ওখানে কী করছিল?', বা ‘মেয়েদের অমন পোশাক পরার দরকার কী?' ধরনের মন্তব্য শোনা যায় কোনো নারী নিগ্রহের ঘটনা ঘটলেই৷ ঠিক যেভাবে নিগৃহিতা মেয়ের চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলে অপরাধকে স্বাভাবিক করে দেখানোর অপচেষ্টা হয়৷ নানা ধরনের সামাজিক কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত থাকেন দিয়া ঘোষ৷ তিনি প্রশ্ন তুললেন, পুলিশ যে বলছে শোভন পোশাক পরতে বা শালীন ব্যবহার করতে, কোনটা শোভন, কোনটা শালীন – সেটা কে ঠিক করে দেবে! নাকি এবার থেকে প্রশাসনই ঠিক করে দেবে মেয়েদের জন্যে কোনটা ঠিক আর কোনটা ভুল!
চাপে পড়ে বিতর্কিত নির্দেশিকাটি চুপচাপ সরিয়ে ফেলেছে বিধাননগর পুলিশ, কিন্তু বিতর্ক এখনও থামেনি৷ প্রশ্ন উঠছেই, সমাজ নিজেকে সংশোধন করবে না, প্রশাসন নিজের কাজ করবে না, মেয়েদের সম্মানরক্ষার দায়িত্ব নিতে হবে একা মেয়েদেরই!