যুবলীগ নেতা মো. ওমর ফারুক হত্যায় অভিযুক্ত দুই রোহিঙ্গা শুক্রবার গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে৷ এ নিয়ে ফারুক হত্যায় জড়িত সন্দেহে ছয় রোহিঙ্গা গুলিতে প্রাণ হারালেন বলে জানিয়েছে এএফপি৷
প্রতীকী ছবিছবি: Reuters/M. Ponir Hossain
বিজ্ঞাপন
কক্সবাজারের পুলিশ প্রধান মাসুদ হোসেন এএফপিকে জানান, ‘‘শুক্রবার ভোরের দিকে টেকনাফে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে গুরুতর আহত হন দুই রোহিঙ্গা৷ এরপর তাদের হাসপাতালে মৃত ঘোষণা করা হয়৷''
ঐ দুই রোহিঙ্গা ডাকাতি, অপহরণ ও মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত ছিল বলেও জানান মাসুদ হোসেন৷ তাঁর হিসেবে, এ পর্যন্ত ফারুক হত্যায় জড়িত সন্দেহভাজন পাঁচ রোহিঙ্গা প্রাণ হারিয়েছেন৷ তবে কক্সবাজার পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া হিসেব সূত্রে এএফপি বলছে, নিহত রোহিঙ্গার সংখ্যা ছয়জন৷
শুক্রবার নিহত রোহিঙ্গারা হলেন, হ্নীলা নয়াপাড়া রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরের বাসিন্দা জমির আহমদের ছেলে মো. আব্দুল করিম (২৪) এবং একই শিবিরের বাসিন্দা ছৈয়দ হোসেনের ছেলে নেছার আহাম্মদ প্রকাশ ওরফে নেছার ডাকাত (২৭)৷ এই ঘটনায় পুলিশের তিন সদস্য আহত হয়েছেন বলে দাবি পুলিশের৷
২০১৭ সালের আগস্ট থেকে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৩৬ জন রোহিঙ্গা বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানা যায়৷ বিভিন্ন মানবাধিকার গ্রুপ বাংলাদেশ পুলিশের বিরুদ্ধে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ এনেছে৷
জেডএইচ/কেএম (এএফপি, ডেইলি স্টার)
ভাসান চর কি রোহিঙ্গাদের জন্য স্বর্গ?
প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ভাসান চরে রোহিঙ্গাদের জন্য বসতি গড়ে তুলেছে বাংলাদেশ৷ তবে দ্বীপটি ঘূর্ণিঝড়প্রবণ হওয়ায় তা রোহিঙ্গাদের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা৷
ছবি: DW/A. Islam
মূল ভূখন্ড থেকে দূরে
বিশ বছরেরও কম সময় আগে ভাসান চর জেগে উঠেছিল৷ বাংলাদেশের মূল ভূখন্ড থেকে এটি ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত৷ সেখানে প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গাকে নিয়ে যেতে চাইছে বাংলাদেশ৷
ছবি: DW/A. Islam
যাওয়া সহজ নয়
ভাসান চরে যেতে সাধারণ মানুষের উপযোগী কোনো বাহন নেই৷ ঐ দ্বীপের কয়েকজন দোকানি ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, বর্ষার সময় সাগর উত্তাল থাকায় সাধারণ মাছ ধরার নৌকায় করে ভাসান চরে পৌঁছানো কঠিন হয়ে যায়৷
ছবি: DW/A. Islam
তিন মিটার উঁচু বাঁধ
উঁচু ঢেউ ও বন্যার হাত থেকে ভাসান চরকে বাঁচাতে সরকার ১৩ কিলোমিটার দীর্ঘ ও তিন মিটার উঁচু বাঁধ নির্মাণ করেছে৷ এক দোকানি জানালেন, মাসে দু’বার বাঁধের বাইরের দিকে থাকা বাজার এক মিটার পর্যন্ত ডুবে যায়৷
ছবি: DW/A. Islam
একইরকম ভবন
রোহিঙ্গাদের জন্য ১,৪৪০টি একতলা ভবন নির্মাণ করা হয়েছে৷ প্রতিটি ভবনে ১৬টি ঘর রয়েছে৷ ১২x১৪ ফুটের একেকটি ঘরে একটি পরিবারের অন্তত চার জন সদস্যকে থাকতে হবে৷ ঘূর্ণিঝড়ের সময় ব্যবহারের জন্য ১২০টি চারতলা আশ্রয়কেন্দ্রও নির্মাণ করা হয়েছে৷
ছবি: DW/A. Islam
সৌরশক্তি
ভবনগুলোর জ্বালানি চাহিদা মেটাতে সেগুলোতে সোলার প্যানেল বসানো হয়েছে৷ এছাড়া প্রয়োজনের সময় ব্যবহারের জন্য দুটি ডিজেল জেনারেটর ও বিশাল এক মাঠে সোলার প্যানেল বসানো হয়েছে৷ খাবার পানির জন্য রয়েছে নলকূপ৷ আরও আছে বৃষ্টির পানি থেকে খাবার পানি পাওয়ার ব্যবস্থা৷
ছবি: DW/A. Islam
ক্ষয় রোধের ব্যবস্থা
কৃত্রিম উপগ্রহ থেকে পাওয়া ছবিতে ২০০২ সালে প্রথম এই দ্বীপের অস্তিত্বের কথা জানা যায়৷ এরপর কয়েকবার এটি স্থান পরিবর্তন করেছে৷ ভূমিক্ষয় ঠেকাতে সরকার চরটিতে তিন স্তরের প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে৷
ছবি: DW/A. Islam
দ্বীপটি কি বাসযোগ্য?
কয়েকজন বিশেষজ্ঞ বলছেন, দ্বীপটি এখনও বসবাসের উপযোগী নয়৷ তবে আন্তর্জাতিক জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক বিশেষজ্ঞ আইনুন নিশাত মনে করছেন, বাঁধের উচ্চতা যদি সাড়ে ছয় থেকে সাত মিটার করা যায় তাহলে দ্বীপটি বসবাসযোগ্য হতে পারে৷ তবে ভাসান চরে ফসল ফলানো সম্ভব নয় বলে মনে করেন তিনি৷
ছবি: DW/A. Islam
রোহিঙ্গাদের ভয়
কক্সবাজারে থাকা রোহিঙ্গারা ডয়চে ভেলেকে বলেন, তাঁদের ভাসান চরে নিয়ে যাওয়া হলে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে তাঁরা মারা যেতে পারেন৷ তবে প্রকল্পের প্রধান স্থপতি আহমেদ মুক্তা বলেন, ‘‘চরটি রোহিঙ্গাদের জন্য এক স্বর্গ৷’’
ছবি: DW/A. Islam
রোহিঙ্গারা কি ভাসান চরে যাবেন?
কয়েকটি সূত্র ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছে যে, নভেম্বরে রোহিঙ্গাদের ভাসান চরে নিয়ে যাওয়া হতে পারে৷ তবে রোহিঙ্গারা সেখানে না গেলে গৃহহীন বাংলাদেশিদের ভবিষ্যতে সেখানে নিয়ে যাওয়া হতে পারে৷