1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পুলিশের চাকরি বাতিল, পথে গ্রুপ ডি প্রার্থীরাও

পায়েল সামন্ত কলকাতা
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩

স্কুলের পর পুলিশে নিয়োগেও প্যানেল বাতিল। অনিয়মের জেরে এমনই নির্দেশ দিয়েছে আদালত। অনেক পুলিশকর্মী চাকরি হারাতে চলেছেন।

নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় প্রতিবাদ
কলকাতায় প্রতিবাদ মিছিলছবি: Payel Samanta/DW

রাজ্য সরকার ২০১৯ সালে কনস্টেবল পদে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেয়। ২০২১ সালের ২৬ মার্চ প্যানেল বেরোয়, যা নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। ২০২২ সালে স্টেট ট্রাইব্যুনাল আদালতে মামলা দায়ের করেন অভিযোগকারীরা। চ্যালেঞ্জ করা হয় ৮ হাজার ৪১৯ জন পুলিশ কনস্টেবলের নিয়োগকে। পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া খারিজের দাবি করেন মামলাকারীরা

ট্রাইব্যুনাল নিয়োগ সংক্রান্ত গলদ সংশোধনের নির্দেশ দেয় রাজ্যের পুলিশ রিক্রুটমেন্ট বোর্ডকে। এরপর প্রকাশিত হয় দ্বিতীয় মেধা তালিকা। কিন্তু তাতে বিতর্ক থামেনি। অভিযোগ, সংরক্ষণের নিয়ম সঠিক ভাবে অনুসরণ করা হয়নি।

পুরনো তালিকার ১৩৭ জনকে বাদ দেওয়া হয় নতুন তালিকায়। এই দ্বিতীয় তালিকা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। হাইকোর্টের সাবেক প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চ নিয়োগ প্রক্রিয়ার উপর স্থগিতাদেশ দেয়।

‘সংরক্ষণ সংক্রান্ত নিয়ম না মানায় প্যানেল বাতিল হয়েছে’

This browser does not support the audio element.

তালিকা বাতিল

এবার সেই দ্বিতীয় তালিকা বাতিল করে দিল হাইকোর্ট। বুধবার প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি হিরন্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছে, রিক্রুটমেন্ট বোর্ড ২০২১ সালে যে প্রথম তালিকা প্রকাশ করেছিল, সেটি বৈধ। চলতি বছরে যে সংশোধিত তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, তা বাতিল করেছে আদালত।

অর্থাৎ যাদের নাম দ্বিতীয় তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে, তাদের চাকরিও বাতিল হতে চলেছে। সেই শূন্যস্থান পূরণ করা হবে প্রথম তালিকা থেকে বাদ যাওয়া সংরক্ষিত শ্রেণিভুক্ত চাকরিপ্রার্থীদের থেকে।

যদিও যাদের চাকরি আপাতত বাতিল হচ্ছে, তাদের জন্য আশার কথাও শুনিয়েছে আদালত। প্রথম তালিকার প্রার্থীদের নিয়োগ দেয়ার পর প্রয়োজন থাকলে বা শূন্যপদ তৈরি হলে আপাতত বাদ পড়া প্রার্থীদের নিয়োগ করা যাবে।

বিরোধীদের বক্তব্য, রাজ্য সরকার যে কোনো স্তরেই নিয়োগ করুক না কেন, সেখানে নিয়ম ভাঙা হচ্ছে। যদিও স্কুল থেকে পুরসভায় যে  দুর্নীতি বা টাকার লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে, কনস্টেবলের ক্ষেত্রে তা হয়নি।

এই মামলার আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, "অনেক সংবাদমাধ্যম এর ভুল ব্যাখ্যা করছে যে দুর্নীতির ফলে প্যানেল বাতিল হয়েছে। আসলে সংরক্ষণ সংক্রান্ত নিয়ম মানা হয়নি। সেই অভিযোগই আমরা করেছিলাম। দুর্নীতির অভিযোগ করা হয়নি।"

মন্ত্রীকে তলব

স্কুলে নিয়োগের দুর্নীতি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই সরগরম এই রাজ্য। প্রাথমিক স্তরে নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় খোদ নিম্ন আদালতের বিচারক হাইকোর্টের বিচারপতির ক্ষোভের মুখে পড়েছেন। এ জন্য বুধবার রাজ্যের আইন মন্ত্রীকে হাইকোর্টে হাজিরা দিতে হয়।

আলিপুর সিবিআই আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক অর্পণ চট্টোপাধ্যায় নিয়োগ সংক্রান্ত একটি মামলায় পুলিশকে যুক্ত করেন। কলকাতা হাইকোর্ট সিট গড়ে তদন্ত করানো সত্ত্বেও সিবিআই আদালতের নির্দেশে হাইকোর্ট ক্ষুব্ধ হয়। ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট বিচারকের বদলির নির্দেশ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু সরকারি আদেশনামা না বেরোনোয় এখনো বদলির প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়নি।

এতে ক্ষুব্ধ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বুধবার খোদ রাজ্যের আইন মন্ত্রী মলয় ঘটককে তৎক্ষণাৎ হাজিরার নির্দেশ দেন। দ্রুত বিচারপতির এজলাসে উপস্থিত হন মন্ত্রী। তিনি জানান, অসুস্থতার জন্য বদলি সংক্রান্ত ফাইলে সই করতে পারেননি। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছেন, ৬ অক্টোবরের মধ্যে বদলির প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে।

চাকরিপ্রার্থীদের মিছিল

স্বচ্ছ নিয়োগের দাবিতে কলকাতার রাস্তায় দিনের পর দিন আন্দোলন অবস্থান চলছে। মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তির নীচে ৪০০ দিন অবস্থান করছেন গ্রুপ ডি চাকরিপ্রার্থীরা। তাদের নিয়ে বুধবার মিছিল করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ছিলেন কংগ্রেস নেতা কৌস্তুভ বাগচীও।

আদালতের অনুমতি নিয়ে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দপ্তরের কাছ থেকে শুরু হয় মিছিল। বিজেপি ও কংগ্রেস নেতার তথাকথিত অরাজনৈতিক মিছিলে যোগ দেয়ার মধ্যে অনেকেই রাজনৈতিক তাৎপর্য খুঁজছেন। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, এক বছরের বেশি সময় ধরে যারা চাকরির জন্য পথে বসে আছেন, তাদের কী দাবিপূরণ হবে?

স্কুল থেকে সরকারি দপ্তর কিংবা পুরসভা, সব ক্ষেত্রের আন্দোলনকারী চাকরিপ্রার্থীদের নিয়ে নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা। একই সুর কৌস্তুভের মুখে। তাদের দাবি, কর্মসূচির দিনক্ষণ দ্রুতই ঠিক করা হবে।

লোকসভা নির্বাচনের আগে এ ধরনের আন্দোলন ঘিরে রাজনীতি আরও সরগরম হবে নিশ্চিতভাবে। কিন্তু বঞ্চিত চাকরি প্রার্থীরা কি আদৌ নিয়োগ পাবেন?

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ