বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে আজাদ চৌধুরী মনে করেন, ‘‘কিছুটা ছাড় দিয়ে ছাত্রদের যৌক্তিক কিছু দাবি দাওয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মেনে নিতে পারত৷''
বিজ্ঞাপন
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সাবেক চেয়ারম্যান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে আজাদ চৌধুরী মনে করেন, ‘‘পুলিশ দিয়ে, ল-এনফোর্সমেন্ট দিয়ে, মামলা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় চালানো যায় না৷ শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আরেকটু দক্ষতার সাথে হ্যান্ডেল করলে বোধ হয় এই সমস্যা হতো না৷ কিছুটা ছাড় দিয়ে ছাত্রদের যৌক্তিক কিছু দাবি দাওয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মেনে নিতে পারত৷ সেটা হলেও এতদূর গড়াতো না৷''
তার পুরো সাক্ষাৎকার এখানে৷
ডয়চে ভেলে:শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এই পরিস্থির কারণ কী?
অধ্যাপক এ কে আজাদ চৌধুরী: এখানে ছাত্রদেরও অসহিষ্ণুতা আছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনেরও অসহিষ্ণুতা আছে৷ যদি অসন্তোষ দেখা দেয়, বিশেষ করে লোকাল ইস্যু নিয়ে৷ হল ইস্যু, অ্যাডমনিস্ট্রেশন, পরীক্ষা ও ক্লাস সংক্রান্ত- এগুলো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আরেকটু দক্ষতার সাথে হ্যান্ডেল করলে বোধ হয় এই সমস্যা হতো না৷ কিছুটা ছাড় দিয়ে তাদের যৌক্তিক কিছু দাবি দাওয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মেনে নিলে এতদূর গড়াতো না৷
ছাত্রদেরও কিছু অসহিষ্ণুতা আছে৷ তাদের দাবি দাওয়ার পিছনে যদি যুক্তি থাকে তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিশ্চয়ই মেনে নেবে৷ সেটার জন্য আমি জানি না কেন তারা বিস্ফোরন্মুখ পরিস্থিতির সৃষ্টি করলো৷ ছাত্ররা সবাই রাস্তায় নামলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের হাতে তেমন কোনো ক্ষমতা থাকে না৷ সেই অবস্থায় হয়তো তারা পুলিশের সাহায্য চেয়েছে৷ এখন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি পুলিশকে ইনভাইট করে তাহলে তারা তো একশন নিতেই পারে৷ তবে এটা আরো পরে করা যেত৷ পুলিশ দিয়ে ছাত্রদের আন্দোলন যে দমন করা যাবে না তা নয়, তবে এটা কাঙ্খিত নয়৷ এটা শিক্ষকেরাই বসে মিটমাট করবেন৷
আপনি নিজেও তো উপাচার্য ছিলেন৷ কখনো এই ধরনের সমস্যা পুলিশ ডেকে সমাধান করেছেন?
না আমি এটা করিনি৷ আমি ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতৃবৃন্দকে ডেকেছি৷ প্রভোস্ট, হাউসটিউটর, শিক্ষক সমিতি, সিনেট মেম্বারদের ডেকেছি৷ সবার সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যার সমাধান করেছি৷ কখনো কখনো সিনেট, সিন্ডিকেট মিটিং ডেকে ছাত্রদের বক্তব্য দেয়ার সুযোগ দেওয়া ভালো৷ তারা অনেক সময় অনেক ভলো কথা বলে৷ যৌক্তিক কথা বলে৷ সেগুলো শোনা উচিত৷
ছাত্রদের বিরুদ্ধে এখন আবার মামলাও দেয়া হয়েছে-
এটা আবার নতুন সমস্যা তৈরি করেছে৷ এটা ওরা (পুলিশ) আবার ভালো বোঝে৷ এটা রাজনীতি, উন্নয়ন , শিক্ষা সর্বোপরি দেশের জন্য ক্ষতি৷ এটা না বাড়িয়ে কমানোর চেষ্টা করা উচিত৷
ভাইস চ্যান্সেলরের পদত্যাগ কোনো সমাধান নয়: অধ্যাপক ড. এ কে আজাদ চৌধুরী
আরো কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে নিকট অতীতে ছাত্র অসন্তোষ হয়েছে৷ কয়েকজন ভিসির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে৷ কোথাও কি কোনো সমস্যা হচ্ছে?
কিছু তো সমস্যা আছেই৷ আগের চেয়ে পরিস্থিতি আলাদা৷ আমরা মনে হয় এখনো বিশ্ববিদ্যায় কর্তৃপক্ষের( শাহজালাল) সুযোগ আছে৷ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যদি দুঃখ প্রকাশ করে, হল অথরিটি দুঃখ প্রকাশ করে৷ ছাত্ররাও যদি দুঃখ প্রকাশ করে৷ দুই তরফ থেকে কিছুটা নমনীয় হলে এই সমস্যার সমাধান হয়৷
আমি যতদূর জানতাম শাহজালালের ভিসি একজন গুড একাডেমিশিয়ান, রিসার্চার৷ শিক্ষক সমিতিসহ নানা বডির নেতৃত্বে ছিলেন৷ আমার তো মনে হয় এইসব বিষয় তার জানা উচিত, বোঝা উচিত৷ তবে ভাইস চ্যান্সেলরের পদত্যাগ কোনো সমাধান নয়৷ নতুন আরেকজন ভিসি আসলে তারও পদত্যাগের দাবি উঠতে পারে৷
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তো হল বন্ধ করে দিয়েছে৷ কিন্তু ছাত্ররা তো এখন ক্যাম্পাস না ছেড়ে আমরণ অনশন শুরু করেছে-বিষয়টি কীভাবে দেখেন?
আমার সময় তো এমন হয়নি৷ আমি একবার হল খালি করে বহিরাগতদের বের করে দিয়েছি৷ পরে পরিচয় পত্র দেখে ছাত্রদের হলে উঠতে দিয়েছি৷ তখন তো তারা সমস্যা করেনি৷ এখন মনে হয় প্রেক্ষাপট আলাদা৷
যৌক্তিক না হলে ছাত্ররা হয়তো সেটা মেনে নেয় না৷ তারা হয়তো মনে করছে তাদের আন্দোলন দমন করতে হল খালি করতে বলা হয়েছে৷
সেটা ঠিকই৷ ছাত্রদের তো প্রশাসনের ওপর আস্থা থাকতে হবে৷ তা না হলে তো বিশ্ববিদ্যালয় চালানো অসম্ভব৷ পুলিশ দিয়ে, ল এনফোর্সমেন্ট দিয়ে, মামলা দিয়ে তো বিশ্ববিদ্যালয় চালানো যায় না৷ এটা তো শিক্ষার জায়গা৷ এটা তো সৃষ্টির জায়গা, মানবিক মূল্যবোধ ধারণ করার জায়গা৷ ট্র্যাডিশনাল কায়দায় তো হবে না৷ ছাত্রদের সাথে বসে সমস্যার সমাধান করতে হবে৷ আমার মনে হয় পুলিশ অ্যাকশনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ছাত্রদের স্যরি বলতে পারে৷ এটা তাদের বলতে পারা উচিত৷
শামসুন্নাহার হলে পুলিশি হামলার সময় শিক্ষকেরা ছাত্রদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন৷ ওয়ান ইলেভেনের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনায় পাশে দাঁড়িয়েছিলেন৷ সেই ভূমিকা কি উল্টে গেল?
শিক্ষকদের মাঝে, আমি বলতে চাই না, আমাদের মূল্যবোধের অবক্ষয় হয়েছে৷ সমাজে যদি মূল্যবোধের অবক্ষয় হয় বিশ্ববিদ্যালয়েও তা প্রসারিত হয়৷
ইউজিসির কোনো রোল প্লে করার সুযোগ আছে কী না?
অবশ্যই সুযোগ আছে৷ তারা একটি কমিটি করে এটা দেখতে পারে৷ সেখানে ইউজিসির প্রতিনিধিরা থাকলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিরাও থাকলেন৷
এর আগে তো কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির অনিয়ম দুর্নীতি নিয়ে ইউজিসি তদন্ত করল, প্রতিবেদন দিলো৷ কোনো ফল তো হলো না৷
৫০ বছর আগে যে অবস্থান ছিলো ইউজিসির তাতে তো এই ধরনের সমস্যা ফেসই করে নাই৷ ইউজিসিকে সময়োপযোগী করার আমি একটা উদ্যোগ নিয়েছিলাম৷ আমি উচ্চশিক্ষা কমিশন করার কাজ এগিয়েছিলাম৷ কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেটা হয়নি৷ কেন হয়নি আমি বলতে পারব না৷
শাবিপ্রবি: প্রাধ্যক্ষ অপসারণের দাবি থেকে উপাচার্যবিরোধী আন্দোলন
শুরুটা প্রাধ্যক্ষ অপসারণের দাবিতে, পুলিশি হামলায় যা পরিণত হয় উপাচার্যবিরোধী আন্দোলনে৷ এক দফা দাবিতে অনড় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলছে সপ্তাহ পেরিয়ে৷ ঘটনাপ্রবাহ ছবিঘরে...
ছবি: bdnews24.com
যেখান থেকে শুরু
সূত্রপাত ১৩ জানুয়ারি, বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের বিরোধের জেরে৷ অসদাচরণের অভিযোগে তার অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভে নামেন ছাত্রীরা৷ রাত ১১টার দিকে তারা অবস্থান নেন উপাচার্যের বাসভবনের সামনে৷ উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদ দেন সমাধানের আশ্বাস৷ রাত আড়াইটায় ছাত্রীরা ফিরেন হলে৷
ছবি: bdnews24.com
তিন দফা দাবি
করোনা আক্রান্ত হওয়ার কারণ দেখিয়ে পরদিন জাফরিন আহমেদকে ছুটিতে পাঠান উপাচার্য৷ অন্য একজনকে করেন ভারপ্রাপ্ত প্রাধ্যক্ষ৷ কিন্তু পুরো কমিটির পদত্যাগ, হলের অব্যবস্থাপনা দূর, ছাত্রীবান্ধব ও দায়িত্বশীল প্রাধ্যক্ষ নিয়োগ; তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন ছাত্রীরা৷ তাদের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে উপচার্যের ঘণ্টাব্যাপী আলাপেও আসেনি সমাধান৷ শতাধিক আবাসিক ছাত্রী উপাচার্য কার্যালয় ঘেরাও করে শুরু করেন বিক্ষোভ৷
ছবি: bdnews24.com
‘ছাত্রলীগের’ হামলা
তৃতীয় দিনে আন্দোলনরত ছাত্রীদের ওপর হামলার অভিযোগ ওঠে শাবি ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে৷ ১৫ তারিখ সন্ধ্যায় প্রক্টরের উপস্থিতিতেই এই ঘটনা ঘটে বলে ছাত্রীরা জানান৷ তাদের একজন বলেন, ‘‘আন্দোলনে সংহতি জানাতে আসা ১০-১২ জন ছাত্রকে তারা বেধড়ক মারধর করে৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আলমগীর কবির এ সময় সেখানে ছিলেন৷’’ প্রক্টর ও ছাত্রলীগের এক সদস্য একে ‘হাতাহাতি’ হিসেবে অভিহিত করেন৷
ছবি: bdnews24.com
পুলিশের হামলা
ছাত্রীরা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়ে বিক্ষোভ অব্যাহত রাখেন৷ তাদের সঙ্গে একাত্ব হন সাধারণ শিক্ষার্থীরাও৷ ১৬ তারিখ আইসিটি ভবনে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করেন তারা৷ তাকে মুক্ত করতে বিকালে উপস্থিত হয় পুলিশ৷ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের তারা লাঠিপেটা, কাঁদুনে গ্যাস, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে ছত্রভঙ্গ করে৷ শিক্ষার্থী, কর্মকর্তাসহ আহত হন অর্ধশত৷
ছবি: bdnews24.com
পুলিশের মামলা
পরদিন পুলিশই অজ্ঞাত পরিচয় ২০০ থেকে ৩০০ শিক্ষার্থীকে আসামি করে মামলা করে৷ অভিযোগ শিক্ষার্থীরা গুলি বর্ষণ ও পুলিশকে হত্যার উদ্দেশ্যে মারপিট করেছে৷ তবে ঘটনা নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ৩১টি শটগানের গুলি এবং ২১টি সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে বলেও মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে৷
ছবি: bdnews24.com
বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ
রোববার সন্ধ্যায় জরুরি সিন্ডিকেটে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের ঘোষণা দেয় কর্তৃপক্ষ৷ পরদিন বারোটার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশনা দেয় তারা৷ এরমধ্যে প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদ লিজা পদত্যাগ করেছেন বলে সংবাদ মাধ্যমকে জানান উপাচার্য৷ কিন্তু শিক্ষার্থীদের দাবি, পুলিশি হামলার ঘটনার এবার উপাচার্যকেই যেতে হবে৷ ভিসির পদত্যাগের এক দফা দাবিতে রাতে বিক্ষোভ মিছিল করেন দুই হাজারের বেশি শিক্ষার্থী৷
ছবি: bdnews24.com
প্রশাসনিক ভবনে তালা
শিক্ষার্থীদের দুপুর বারোটার আগে হল ত্যাগের নির্দেশ দিলেও প্রশাসনিক কার্যক্রম চালু রাখে কর্তৃপক্ষ৷ শিক্ষার্থীরা সেই নির্দেশ অমান্য করে উল্টো উপাচার্য কার্যালয়, দুটি প্রশাসনিক ভবন ও চারটি একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন৷ এক সমাবেশ থেকে ভিসি ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে শাবিপ্রবিতে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন তারা৷
ছবি: bdnews24.com
সাবেকদের সহমর্মিতা
কর্তৃপক্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাইনিং ও ক্যান্টিন বন্ধ করায় নির্দেশ অমান্য করে ক্যাম্পাসে থেকে যাওয়া শিক্ষার্থীরা খাবার নিয়ে পড়েন বিপাকে৷ সমাধান হিসেবে হাজারো শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বরের পাশে নিজেরাই রান্না ও খাবার আয়োজন শুরু করেন৷ আন্দোলনে একাত্মতার পাশাপাশি এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীরা তাদের সহায়তায় এগিয়ে আসেন৷
ছবি: bdnews24.com
রাষ্ট্রপতির কাছে পত্র
উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে ১৮ তারিখ রাষ্ট্রপতি ও আচার্য আব্দুল হামিদের কাছে চিঠি পাঠান শিক্ষার্থীরা৷ সেখানে তারা লিখেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশ ডেকে এনে শিক্ষার্থীদের উপর এমন নৃশংস হামলা চালিয়ে শিক্ষার্থীদের মৃত্যুঝুঁকিতে ফেলায় শাবিপ্রবি উপাচার্য যেভাবে মূল কুশীলবের ভূমিকা পালন করেছেন তা সরাসরি সংবিধান বিরোধী এবং আপনার কর্তৃক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের উপর অর্পিত দায়িত্বের বরখেলাপ৷’’
ছবি: bdnews24.com
আমরণ অনশন
উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগ ও পুলিশের দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে ১৯ তারিখ থেকে আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষার্থীরা৷ উপাচার্যের বাসভবনের সামনে বিকাল ৩টায় শুরু করা এই কর্মসূচিতে অংশ নেন নয়জন ছাত্রী ও ১৫ ছাত্র৷ অনশনকারীদের ঘিরে রাখেন অন্য ছাত্র-ছাত্রীরাও৷ এর আগে উপাচার্যের পদত্যাগের জন্য বেলা ১২টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দেন তারা৷
ছবি: bdnews24.com
অসুস্থ হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা
সময় যত গড়াচ্ছে তত স্তিমিত হচ্ছেন অনশনরত শিক্ষার্থীরা৷ আমরণ অনশন করা ১১ জন শিক্ষার্থী শুক্রবার পর্যন্ত অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন৷ এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘‘অনেকেই অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে; আমরা পর্যাপ্ত মেডিকেল সাপোর্ট পাচ্ছি না৷ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকেও আমাদের কোনো মেডিকেল সাপোর্ট দিচ্ছে না৷’’ আলোচনার জন্য কোষাধ্যক্ষের নেতৃত্বে একটি দল শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দেখা করলেও উপাচার্যের কোনো সাড়া মিলছে না৷
ছবি: bdnews24.com
ফরিদ উদ্দিন আহমেদ কে
বিশ্ববিদ্যালয় ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগ থেকে অনার্স, মাস্টার্স ও অস্ট্রেলিয়ার মোনাশ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমইসি ডিগ্রিধারী৷ তার কোনো ডক্টরেট ডিগ্রি নেই৷ অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ ২০০৯ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত টানা পাঁচ মেয়াদ ঢাবির সমাজ বিজ্ঞানের ডিন ছিলেন৷ সরকারপন্থি নীল দলের রাজনীতিতে যুক্ত এই শিক্ষক নেতা ২০১৭ সাল থেকে শাবিপ্রবির ভিসি৷