1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ফরহাদ মজহারের ‘নিখোঁজ রহস্য’

৫ জুলাই ২০১৭

লেখক ও বুদ্ধিজীবী ফরহাদ মজহারকে ‘অপহৃত’ হওয়ার ১৬ ঘণ্টা পর উদ্ধার করেছে র‌্যাব৷ কিন্তু তাঁর কাছ থেকে উদ্ধার করা ব্যাগ, পোশাক ও মোবাইল ফোনের চার্জার নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে৷ স্ত্রী ফরিদা আখতারের দাবি, এ ধরনের পোশাক তিনি পরেন না৷

Kolumnist und Aktivist Farhad Mazhar
ছবি: bdnews24.com

সিসি ক্যামরার ফুটেজ বলছে, ফরহাদ মজহার ঢাকার শ্যামলী রিং রোডের হক গার্ডেনের বাসা থেকে বের হয়ে যান সোমবার ভোর ৫টা ৫ মিনিটের দিকে৷ তাঁর স্ত্রী ফরিদা আখতার ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘উনি ভোর রাতে লেখালেখির কাজ করতেন৷ তখন সাধারণত কি-বোর্ডের শব্দ পেতাম৷ ভোররাত সাড়ে চারটার দিকে জেগে উঠি৷ তখন তাঁর কাজের শব্দ না পেয়ে গিয়ে দেখি উনি নাই৷ আমি উদ্বিগ্ন হয়ে পড়লাম৷ এরপর আমার মোবাইলে ফোন আসে৷ ওনার মোবাইল থেকেই৷ তিনি বলেন, ‘ওরা আমাকে নিয়ে যাচ্ছে আমাকে মেরে ফেলবে৷' এটাই আমার প্রথম তাঁর অপহরণ সম্পর্কে জানা৷''

ফরিদা অখতার বলেন, এর এক ঘণ্টা পর আবারো ফোন করেন এবং বলেন, ‘১০টা থেকে ১১টার মধ্যে যদি ৩৫ লাখ টাকা দেয়া যায় তাহলে ওরা আমাকে ছাড়বে৷' ফরিদা আখতার এরপর স্থানীয় পুলিশ স্টেশনকে বিষয়টি জানিয়ে জিডি করেন৷

১৬ ঘণ্টা পর সোমবার রাত ১১টার দিকে যশোরের নওয়াপাড়া এলাকায় একটি যাত্রীবাহী বাস থেকে ফরহাদ মজহারকে র‌্যাব ও পুলিশ উদ্ধার করে বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানায়৷ সেখান থেকে মঙ্গলবার সকালেই তাঁকে ঢাকায় আদাবর থানায় আনা হয়৷ তারপর গোয়েন্দা দপ্তরে নিয়ে তার প্রাথমিক বক্তব্য নেয়া হয়৷ বিকেলে আদালতে পাঠানো হয় জবানবন্দির জন্য৷

মাসুদুর রহমান

This browser does not support the audio element.

পুলিশের খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি দিদার আহমেদ সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘‘তাকে (ফরহাদ মজহার) সুস্থ-স্বাভাবিক অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে৷ তার সঙ্গে একটা ব্যাগ আছে৷ সেই ব্যাগে বাড়তি একটা জামা আছে৷ একটা গেঞ্জি আছে৷ কিছু টাকাপয়সা আছে৷ একটা মোবাইল আছে৷ একটা চার্জার আছে৷''

ফরহাদ মজহারের স্ত্রী বলেন,‘‘আমি টেলিভিশনে দেখেছি৷ সেখানে যে ধরনের পোশাক দেখান হয়েছে ফরহাদ মজহার ঐ ধরনের পোশাক ব্যবহার করেন না৷ উনি সাদা জামা পড়েন৷ ওনার পোশাকগুলো বিশেষভাবে বানানো হয়৷''

পুলিশ বলছে, ‘ফরহাদ মজহার একাই ভিন্ন নামে টিকেট কেটে সোমবার রাতে হানিফ পরিবহণের একটি বাসে খুলনা থেকে যশোর যাচ্ছিলেন৷ পথে নওয়াপাড়া এলকায় বাস থামিয়ে তাকে উদ্ধার করা হয়৷'

কিন্তু ফরিদা আখতার বলেন, ‘‘গত দশ বছরে তিনি কোনো বাস বা পাবলিক পরিবহনে ভ্রমণ করেননি৷ বাইরে গেলে আমাদের নিজস্ব প্রাইভেট কার ব্যবহার করেন৷ তাছাড়া তিনি কখনো একা ভ্রমণ করেন না৷ কেউ একজন সঙ্গে থাকে৷''

সকালে আদাবর থানায় আনার পর তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘ব্যাগ সঙ্গে নিয়েছেন কিনা, তা তো জানি না৷ বাট উনি প্রায়ই একটা ব্যাগ সঙ্গে রাখেন, যার মধ্যে পড়ার জন্য বই ও ওষুধ থাকে৷ তবে তাঁর কাছে যেমন ব্যাগ দেখা গেছে, তেমন ব্যাগ উনি ‘ইউজ' করেন না৷ এ ব্যাগ কোথা থেকে আসলো?''

এদিকে সোমবার যখন ফরহাদ মজহার যখন বাসা থেকে বের হন, সে সময়কার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করেছে ডয়চে ভেলে৷ তাতে বের হওয়ার সময় ফরহাদ মাজহারের হাতে কোনো ব্যাগ স্পষ্ট নয়৷

ফরিদা আখতার

This browser does not support the audio element.

মঙ্গলবার সকালে ঢাকায় আনার পর ফরহাদ মজহারের সঙ্গে আদাবর থানায় তাঁর স্ত্রী ফরিদা আখতারের সঙ্গে প্রথম দেখা হয়৷ এরপর তিনি ফরহাদ মজহারের সঙ্গে আদালতেও যান৷ তবে তাঁর সঙ্গে ফরহাদ মজহারের স্বাস্থ্যগত বিষয় ছাড়া আর কোনো কথা হয়নি৷ ফরিদা আখতার বলেন, ‘‘উনি খুবই বিধ্বস্ত৷ উনি নিজেই বলেছেন, ‘আমি ট্রমাটাইজড, ভীষণ ক্লান্ত, ভীষনণ অসুস্থ লাগছে৷' এর বাইরে আমার সঙ্গে তাঁর আর কোনো কথা হয়নি৷''

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘ফরহাদ মাজহারকে কেন অপহরণ করা হলো এবং কারা করল তা ধারণা করতে পারছি না৷ কাউকে সন্দেহও করতে পারছি না৷''

এদিকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মাসুদুর রহমান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমরা ফরহাদ মজহারের সঙ্গে কথা বলেছি৷ তিনি আমাদের প্রথমিকভাবে জানিয়েছেন, ‘উনি রাত তিনটা থেকেই জেগে কাজ করছিলেন৷ চোখে কিছুটা সমস্যা থাকায় ভোর রাতে ঔষধ কিনতে বের হন৷ বের হওয়ার পর রাস্তা থেকে তাঁকে জোর করে মাইক্রোবাসে তুলে চোখ বেধে নিয়ে যাওয়া হয়৷ আমরা আর বেশি কিছু জানতে পারিনি৷ এখন তাঁর বক্তব্য ধরে তদন্ত করবো৷ এরইমধ্যে একটি অপহরণ মামলাও হয়েছে৷''

বিকেলে ফরহাদ মজহার আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন৷ জবানবন্দি নেয়ার পর আদালত তাঁকে নিজ জিম্মায় বাড়ি ফেরার অনুমতি দিয়েছে৷

কারা তাঁকে অপহরণ করলো এবং ১৬ ঘণ্টা তিনি কেথায় ছিলেন জানতে চাইলে মাসুদুর রহমান বলেন, ‘‘তাঁর জবানবন্দি ধরে আমাদের তদন্ত শেষ হলেই সব কিছু জানা যাবে৷ আমরা প্রাথমিক পর্যায়ে তাঁকে এত বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করিনি৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ