রাশিয়ার করোনা ভাইরাস ভ্যাকসিনে অগাধ আস্থা ফিলিপাইন্সের প্রেসিডেন্ট রদরিগো দুতার্তের৷ দেশের সব নাগরিককে ভরসা দিতে ভ্যাকসিন সবার আগে নিজে নিতেও প্রস্তুত তিনি৷
বিজ্ঞাপন
রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচার করা ভাষণে ফিলিপাইন্সের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘‘ভ্যাকসিন যখন আসবে, আমি প্রকাশ্যেই তা নেবো৷ গবেষণায় অংশ নিতে সমস্যার কিছু দেখি না আমি৷ (ভ্যাকসিন) আমার শরীরে কাজ করলে সবার শরীরেই কাজ করবে৷’’
দুতার্তে বলেন, রাশিয়ার ভ্যাকসিনের কার্যকারিতার বিষয়ে তার পূ্র্ণ আস্থা রয়েছে এবং সেই আস্থার কথা তিনি পুটিনকে জানাবেন, ‘‘প্রেসিডেন্ট পুটিনকে আমি বলবো, কোভিডের বিরুদ্ধে যুদ্ধে আপনারা যে কাজ করেছেন তার প্রতি আমার অগাধ বিশ্বাস রয়েছে৷ আমি বিশ্বাস করি, আপনারা যে ভ্যাকসিন উৎপাদন করেছেন তা মানবজাতির জন্য খুব ভালো৷’’
দুতার্তের কার্যালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, রাশিয়ার তৈরি ভ্যাকসিনের ট্রায়াল, সরবরাহ এবং অন্যান্য কাজে অংশ নিতে প্রস্তুত আছে ফিলিপাইন্স৷
ডিসেম্বর থেকে বিনামূল্যে...
দুতার্তে জানান, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে ভ্যাকসিন হাতে এসে যাবে বলে আশা করেন তিনি৷ ততদিনে ফিলিপাইন্স করোনামুক্ত হবে, শান্তিপূর্ণভাবে বড়দিন উদযাপন করতে পারবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি৷ এ সময় রাশিয়ার কাছ থেকে ফিলিপাইন্স বিনামূল্যে ভ্যাকসিন পাবে এমন ইঙ্গিতও দেন দুতার্তে, ‘‘তারা (রাশিয়া) আমাদের ভ্যাকসিন দিতে চায়৷ এজন্যে তারা টাকা দিতে বলেনি৷ আমার মনে হয়, প্রেসিডেন্ট পুটিন বিনা মূল্যেই আমাদের সহায়তা করতে চান৷’’
ফিলিপাইন্সে এ পর্যন্ত এক লাখ ৩৯ লাখ ৫৩৮ জন করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন, করোনায় এ পর্যন্ত মারা গেছেন মোট দুই হাজার ৩১২ জন৷
এসিবি/কেএম (রয়টার্স, ডিপিএ)
৯ আগস্টের ছবিঘরটি দেখুন...
টিকা আবিষ্কারের দৌড়ে কে কত এগিয়ে
করোনা ভাইরাসের কার্যকর ভ্যাকসিন আবিষ্কারে অন্তত দশটি দেশে চলছে ১৭০টিরও বেশি প্রচেষ্টা৷ তবে এর মধ্যে এখন পর্যন্ত ছয়টি পৌঁছাতে পেরেছে পরীক্ষার শেষ ধাপে৷
ছবি: Reuters/J. Akena
পৌনে দুইশ’
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভ্যাকসিন আবিষ্কারের দৌড়ে আছে ১৭০ টির বেশি উদ্যোগ৷ একেকটি ভ্যাকসিনের পরীক্ষা-পর্ব সারতেই সাধারণত বছরের পর বছর সময় লাগে৷ তবে কোভিড-১৯-এর ক্ষেত্রে তা ১২ থেকে ১৮ মাসে নামিয়ে আনার চেষ্টা করছেন বিজ্ঞানীরা৷
ছবি: Reuters/B. Guan
প্রাক ক্লিনিক্যাল পর্ব
বেশিরভাগ প্রচেষ্টাই এখনো প্রাক ক্লিনিক্যাল পর্যায়ে রয়েছে৷ এই ধাপে বিজ্ঞানীরা ভাইরাস বা তার কোনো একটি অংশ তৈরি করেন৷ সেটি অন্য প্রাণীদের উপর প্রয়োগ করে দেখেন রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা ঠিকঠাক সাড়া দিচ্ছে কিনা৷ ১৩৯ টি প্রচেষ্টা এখনো এই ধাপে আটকে আছে৷
ছবি: Imago/blickwinkel
প্রথম ধাপ
ক্লিনিক্যাল পরীক্ষার প্রথম ধাপে সীমিত সংখ্যক মানুষের মধ্যে টিকাটি প্রয়োগ করা হয়৷ দেখা হয়, প্রাক ক্লিনিক্যাল পর্বে পশুর দেহে যেভাবে প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে, মানুষের শরীরেও তা একইভাবে কাজ করছে কিনা৷ বর্তমানে ২৫টি টিকা রয়েছে এই ধাপে৷
ছবি: Getty Images/AFP/G. Gobet
দ্বিতীয় ধাপ
ক্লিনিক্যাল পরীক্ষার দ্বিতীয় ধাপে আছে ১৫টি ভ্যাকসিন৷ সম্ভাব্য টিকাটি কতটা নিরাপদ আর তা কী মাত্রায় প্রয়োগ করতে হবে, এই ধাপে মূলত সেটি দেখেন বিজ্ঞানীরা৷ এজন্য কয়েকশ’ মানুষের শরীরে টিকাটি পরীক্ষা করা হয়৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/University of Oxford
তৃতীয় ধাপ
তৃতীয় ধাপে ভ্যাকসিন পরীক্ষার আওতায় আসেন কয়েক হাজার মানুষ৷ কার্যকরীতা, শরীরে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার দিকগুলোতে এই পর্যায়ে বিজ্ঞানীরা মনযোগ দেন৷ এই ধাপটিতে এখন পর্যন্ত কোভিড-১৯-এর মাত্র সাতটি সম্ভাব্য ভ্যাকসিন পৌঁছাতে পেরেছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/P. Pochard-Casabianca
অনুমোদন
পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে ভ্যাকসিন বাজারজাতের অনুমোদন দেয় দেশগুলোর সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ৷ গত জুনে ক্যানসিনো বায়োলোজিক্স এর ভ্যাকসিন ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে চীনের সামরিক বাহিনী৷ অন্যদিকে পরীক্ষায় সফল হয়েছে দাবি করে সরকারি প্রতিষ্ঠান গামালিয়া ইন্সটিটিউটের ভ্যাকসিনের অনুমোদন করেছে রাশিয়া৷ যদিও তাদের এই ভ্যাকসিনের কার্যকারিতে নিয়ে বিতর্ক চলছে৷
ছবি: picture-alliance/Photoshot
শেষ ছয়
ক্লিনিক্যাল পরীক্ষার তৃতীয় ধাপে পৌঁছানো সাতটি ভ্যাকসিনের তিনটি চীনের৷ এর মধ্যে নিষ্ক্রিয় ভাইরাস থেকে টিকা তৈরি করেছে সাইনোভেক নামের একটি প্রতিষ্ঠান৷ জুলাইতে আরব আমিরাতে চূড়ান্ত পরীক্ষা শুরু করেছে সাইনোফার্ম নামে দেশটির আরেকটি কোম্পানি৷ শেষ ধাপের এই দৌড়ে আরো আছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি এবং অস্ট্রেলিয়ার কোম্পানিও৷
ছবি: Reuters/J. Akena
আলোচনায় অক্সফোর্ড
করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে শুরু থেকে আলোচনায় যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়৷ ব্রিটিশ-সুইডিশ কোম্পানি অ্যাস্ট্রাজেনেকার সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছে তারা৷ পৌঁছে গেছে তাদের উদ্ভাবিত টিকা পরীক্ষার শেষ ধাপে৷ দক্ষিণ আফ্রিকা আর ব্রাজিলে চলছে তার ট্রায়াল৷