পূর্ব ইউক্রেনে জোরালো প্রতিরোধের প্রশংসা করলেন জেলেনস্কি
১৩ জানুয়ারি ২০২৩গত বছরের শুরুতে গোটা ইউক্রেন দখলের মতলব নিয়ে হামলা শুরু করেছিল রাশিয়া৷ তারপর থেকে প্রবল প্রতিরোধের মুখে একের পর এক এলাকা থেকে পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে রুশ বাহিনী৷ এখন শুধু ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে সোলেদার নামের ছোট খনি শহরের উপর নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে মস্কো৷ নারী ও শিশুসহ প্রায় ৫০০ মানুষ সেখানে আটকে পড়েছে৷ বৃহস্পতিবার রাতের ভিডিও বার্তায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদোমির জেলেনস্কি সোলেদারে দুটি সামরিক ইউনিটের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন৷ তিনি বলেন, প্রবল হামলার মুখেও সৈন্যরা প্রতিরোধ চালিয়ে যাচ্ছে এবং শত্রুর ব্যাপক ক্ষতি করছে৷ আগামী দিনগুলিতে তিনি সেই অঞ্চলে আরও সৈন্য পাঠানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন৷ সোলেদার ও বাখমুতের নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করতে জেলেনস্কি সৈন্যদের সব রকম অস্ত্রে সজ্জিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন৷
রাশিয়ার ‘ভাগনার গ্রুপ’ নামের ভাড়াটে বাহিনী বাখমুত ও সোলেদার দখলের দাবি করলেও মস্কো এখনো জয়ের ঘোষণা করে নি৷ গত ছয় মাসে নতুন করে কোনো গুরুত্বপূর্ণ এলাকা দখল করতে পারে নি রাশিয়া৷ বরং দনিয়েৎস্ক অঞ্চলের উপর নিয়ন্ত্রণ আরও দুর্বল হয়ে উঠেছে৷ মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র জন কির্বি বলেন, রাশিয়া সোলেদার ও বাখমুত শহর দখল করতে পারলেও যুদ্ধের উপর কোনো কৌশলগত প্রভাব পড়বে না৷ ইউক্রেনের প্রতিরোধের গতি কমানো যাবে না বলে তিনি মনে করেন৷
হানাদার বাহিনীর সামরিক নেতৃত্বে বার বার রদবদল করে রাশিয়া মরিয়া হয়ে সামরিক সাফল্যের আশা করছে৷ এখন ভালেরি গেরাসিমভকে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’-এর নেতৃত্বে বসিয়ে রুশ নেতৃত্ব সেই উদ্যোগকে বাড়তি গুরুত্ব দিতে চাইছে৷
ইউক্রেনের প্রতিরোধ আরও জোরদার করতে পশ্চিমা বিশ্ব দ্বিধাদ্বন্দ্ব ঝেড়ে ফেলে অবশেষে ব্যাটেল ট্যাংক পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিতে পারে বলে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে৷ পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেই দুদা ইউক্রেনকে জার্মানিতে তৈরি ১৪টি লেওপার্ড ব্যাটেল ট্যাংক পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন৷ তবে তার জন্য জার্মানির অনুমোদনের প্রয়োজন৷ ব্রিটেনও ট্যাংক পাঠানোর বিষয়ে ভাবনাচিন্তা করছে৷
একাধিক দেশ এমন সিদ্ধান্ত নিলে জার্মানিও শেষ পর্যন্ত প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সহায়তা করবে, এমনটাই মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা৷ ইউক্রেনকে লেওপার্ড ব্যাটেল ট্যাংক সরবরাহের জন্য জার্মানির মধ্যেও চাপ বাড়ছে৷ কিছু সূত্র অনুযায়ী পশ্চিমা বিশ্বে এমনকি বোমারু বিমান সরবরাহের প্রস্তাব নিয়েও আলোচনা চলছে৷ ইউক্রেন সেইসঙ্গে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রও চাইছে৷ সামরিক জোট ন্যাটো সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়া এড়াতে এতকাল ‘ভারি অস্ত্র' পাঠানোর বিষয়ে সংশয় দেখিয়ে এসেছে৷ কিন্তু রাশিার লাগাতার হামলার মুখে ইউক্রেনের জয় নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সেই প্রতিরোধ দুর্বল হয়ে উঠছে৷
এসবি/এসিবি (রয়টার্স, এএফপি)