মিনস্ক সম্মেলন পূর্ব ইউক্রেনে শান্তি ফেরানোর সম্ভাবনা জাগিয়েছে৷ যুদ্ধ বিরতি চুক্তিতে সাক্ষর করেছে ইউক্রেন সরকার ও বিদ্রোহীরা৷ ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার কথা৷
ছবি: Reuters/M. Lazarenko
বিজ্ঞাপন
বুধবার সন্ধ্যা থেকে আলোচনা শুরু হলেও সারা রাতেও জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ফ্রসোঁয়া ওলঁদ, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট পেট্রো পোরোশেঙ্কোর আলোচনা থেকে কোনো সমাধান-সূত্র বেরিয়ে আসার খবর পাওয়া যায়নি৷ অন্যদিকে বেলারুশের রাজধানী মিনস্কে এ বৈঠক শুরুর দিনেও যুদ্ধ চলেছে পূর্ব ইউক্রেনে৷ বুধবার রুশপন্থি বিদ্রোহীদের এক হামলায় ইউক্রেনের ১৯জন সেনাসদস্য মারা যায়৷
বৃহস্পতিবার সকালে আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল জানায়, অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে ওঠার জন্য ইউক্রেনকে তারা ৪০ বিলিয়ন ডলার দেবে৷ এর একটু পরই মিনস্কে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় ইউক্রেনে বিবদমান দুই পক্ষ৷ স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী ১৫ ফেব্রুয়ারি, অর্থাৎ আগামী শনিবার থেকে পূর্ব ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতি শুরু হবে৷ সব ভারি অস্ত্র সরিয়ে নেয়া হবে সেখান থেকে৷
শুধু যুদ্ধ নয়, ঠান্ডাও দুশমন তার
দোনেৎস্কের মানসিক হাসপাতাল৷ রাশিয়াপন্থি বিচ্ছিন্নতাবাদী এবং ইউক্রেনীয় সেনাদের মধ্যকার লড়াইয়ের ফ্রন্টলাইনে এটির অবস্থান৷ তবে শুধু যুদ্ধ নয়, শীতকালের তীব্র ঠান্ডাও কাবু করে ফেলছে হাসপতালটি৷
ছবি: Teo Butturini/TRANSTERRA Media
গোলা হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত
দোনেৎস্কের মানসিক হাসপাতালটি এমন এক জায়গায় অবস্থিত, যে জায়গাটা সেখানকার যুদ্ধরত রাশিয়াপন্থি বিচ্ছিন্নতাবাদী এবং ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর ফ্রন্টলাইনের কাছে৷ গত ডিসেম্বরে ভবনটি গোলা হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়৷
ছবি: Teo Butturini/TRANSTERRA Media
তীব্র শীত
গোলাগুলির কারণে ভবনটির অধিকাংশ জানালা ভেঙে গেছে৷ আর এখন সেখানে তাপমাত্রা মাঝেমাঝেই মাইনাস ২৫ ডিগ্রি পর্যন্ত নেমে যাচ্ছে৷ ফলে ঠান্ডা থেকে বাঁচতে আগুন ছাড়া গতি নেই হাসপাতালে অবস্থানরত রোগী, চিকিৎসক এবং অন্যান্য মানুষদের৷ আর সেই আগুনের কাঠ যোগাতে এভাবে সারাক্ষণ কাউকে না কাউকে কাঠ কাটতে হয়৷
ছবি: Teo Butturini/TRANSTERRA Media
শুধু চিকিৎসা নয়
একজন ডাক্তার একটি স্টোভের যত্ন নিচ্ছেন যেটি তাঁর ওয়ার্ড গরম রাখে৷ এখানকার চিকিৎসকরা তাদের রোগীদের শুধু মানসিক যত্ন নেন না, বরং শিত থেকে তাদের বাঁচানোর দায়িত্বও তাদের৷ প্রচণ্ড ঠান্ডার সময় তাই একটু উষ্ণ পরশের আশায় এই স্টোভ ঘিরে বসে থাকেন তারা৷
ছবি: Teo Butturini/TRANSTERRA Media
টিকে থাকার লড়াই
গোলাগুলিতে ক্ষতিগ্রস্ত হাসপাতালটি মেরামতের পয়সা কর্তৃপক্ষের নেই৷ তাই রোগীদের বিছানাপত্র হাসপাতালের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ থেকে সরিয়ে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হয়েছে৷ এমনকি চিকিৎসকের রুমে ফাইলপত্রের ফাঁকে এখন থাকতে হচ্ছে রোগীদের৷
ছবি: Teo Butturini/TRANSTERRA Media
কার্তুজ এখন ফুলদানি
এই ১০০ মিমি অ্যান্টি-ট্যাংক কার্তুজটি কিছুদিন আগে হাসপাতালের পাশে একটি মাঠে পাওয়া গেছে৷ এটা এখন ফুলদানি হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে৷
ছবি: Teo Butturini/TRANSTERRA Media
খাদ্যের সন্ধান
একজন রোগী তাঁর ওয়ার্ডে দুপুরের খাবার নিয়ে যাচ্ছেন৷ এখন অনেক রোগীকে হাসপাতালের রান্নাঘরে গিয়ে খাবার আনতে হয়৷ এই সময়টা শুধু বাইরে বের হওয়ার সুযোগ পান তাঁরা৷
ছবি: Teo Butturini/TRANSTERRA Media
খাবারের সময়
রোগীরা তাঁদের ওয়ার্ডের বড় রুমে একসঙ্গে খাবার খান৷ তবে অর্থ সংকটের কারণে তাঁদের খাদ্যের জোগান দেওয়াও হাসপাতালের জন্য কঠিন হয়ে উঠেছে৷ বর্তমানে স্থানীয় গির্জা এবং সাধারণ মানুষের সহায়তার উপর টিকে আছেন তাঁরা৷
ছবি: Teo Butturini/TRANSTERRA Media
গাদাগাদি করে থাকছেন রোগীরা
একজন চিকিৎসক এবং সেবিকা হাসপাতালের একটি রুম পরিদর্শন করছেন৷ হাসপাতালের মূল ভবন গোলাগুলির কারণে বসবাসের অনুপযোগী হয়ে গেছে৷ আর তাই রোগীদের এখন গাদাগাদি করে থাকতে হচ্ছে৷
ছবি: Teo Butturini/TRANSTERRA Media
স্বেচ্ছাসেবী নাপিত
একজন স্বেচ্ছাসেবী হাসপাতালে একজন রোগীর চুল কেটে দিচ্ছেন৷ আরেকজন চুল কাটাতে অপেক্ষা করছেন৷
ছবি: Teo Butturini/TRANSTERRA Media
ধূমপান বিরতি
একজন রোগী তাঁর ওয়ার্ডের বারান্দায় দাঁড়িয়ে ধূমপান করছেন৷ সিগারেট এবং ম্যাচ সেবিকাদের কাছে জমা থাকে৷ শুধুমাত্র নির্দিষ্ট সময়ে ধূমপানের সুযোগ পান তাঁরা৷
ছবি: Teo Butturini/TRANSTERRA Media
10 ছবি1 | 10
ইউক্রেন সরকার এবং রুশপন্থি বিদ্রোহীরা যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ায় জার্মানির চ্যান্সেলর ম্যার্কেল স্বস্তি প্রকাশ করেছেন৷ তাঁর মুখপাত্র স্টেফেন সাইবার্ট জানান, ১৭ ঘণ্টা আলোচনার পর যুদ্ধবিরতি স্বাক্ষরিত হওয়ায় শান্তির আশা জেগেছে৷ রুশ প্রেসিডেন্ট পুটিন মনে করেন, সম্মেলনে যে প্রধান ইস্যুগুলি নিয়ে মতৈক্য হয়েছে সেটা খুব আশার কথা৷
এক যৌথ বিবৃতিতে জার্মানি, ফ্রান্স এবং রাশিয়া জানিয়েছে, ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতার প্রতি তারা সম্মান দেখাবে৷ ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট পেট্রো পোরোশেঙ্কো জানান, রুশপন্থি বিদ্রোহীরা যে অবশেষে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে মিনস্ক সম্মেলনে সেটাই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি৷ তিনি বলেন, ‘‘শনিবার থেকে রবিবারের মধ্যে নিঃশর্তভাবে সাধারণ যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হবে – আমাদের জন্য এটাই সবচেয়ে বড় অর্জন৷''