পূর্ব ও দক্ষিণ ইউক্রেনে রাশিয়ার সেনাকে পরাস্ত করছে ইউক্রেন, দাবি জেলেনস্কির।
বিজ্ঞাপন
মঙ্গলবার রাতের ভিডিওবার্তায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, পূর্ব ও দক্ষিণ ইউক্রেনে রাশিয়া যে সমস্ত অঞ্চল দখল করে রেখেছিল, তার বেশ কিছু জায়গা পুনর্দখল করা সম্ভব হয়েছে। ইউক্রেনের সেনার পরাক্রমের সামনে পরাস্ত হচ্ছে রাশিয়ার সেনা। অন্যদিকে রাশিয়ার অভিযোগ, পুনর্দখল অভিযান চালাতে গিয়ে ইউক্রেন রাশিয়ার বিভিন্ন শহর এবং গ্রামে আক্রমণ চালাচ্ছে। মঙ্গলবার ইউক্রেনের ড্রোন আক্রমণে এক রাশিয়ার নারীর মৃত্যু হয়েছে। চারজন বেসামরিক ব্যক্তি গুরুতর আহত। ইউক্রেন এবিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
রাশিয়ার লাগাতার মিসাইল আক্রমণ
জেলেনস্কির শহরের পর এবার ওডেসায় মিসাইল আক্রমণ রাশিয়ার। নিহত বেসামরিক মানুষ। ধ্বংস হয়েছে দোকান, বাড়ি, গুদাম।
ছবি: Oleksandr Ratushniak/REUTERS
মিসাইল আক্রমণ
যুদ্ধের কৌশল বদলেছে রাশিয়া। আগে তারা সেনা পাঠিয়ে সম্মুখ সমরে নেমেছিল। এবার তারা মিসাইল এবং ড্রোনের সাহায্যে ইউক্রেনে আক্রমণ চালাচ্ছে। একের পর এক শহর লক্ষ্য করে মিসাইল ছোঁড়া হচ্ছে।
ছবি: State Emergency Service of Ukraine/REUTERS
ধ্বংস ওডেসা
বুধবার দিনভর ইউক্রেনের বন্দর শহর ওডেসায় আক্রমণ চালানো হয়েছে। কৃষ্ণসাগরে মোতায়েন রাশিয়ার যুদ্ধজাহাজ থেকে মিসাইল হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ। অন্তত তিনজন বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন বলে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে।
ছবি: Lyashonok Nina/Ukrinform/ABACA/IMAGO
বেসামরিক কাঠামোয় হামলা
ওডেসার গুদাম, দোকান, বাড়ি এবং স্কুলে আক্রমণ চালানো হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের বক্তব্য, প্রতিটি ভবন সম্পূর্ণ ধসে পড়েছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে আরো মানুষ আটকে থাকতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে।
ওডেসার পাশাপাশি দনেৎস্ক অঞ্চলেও বুধবার লাগাতার মিসাইল আক্রমণ করেছে রাশিয়া। সেখানেও অন্তত তিনজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে।
ছবি: Oleksandr Ratushniak/REUTERS
জেলেনস্কির শহরে আক্রমণ
এর আগে মঙ্গলবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ছোটবেলার শহর ক্রিভি রিহে মিসাইল হামলা চালানো হয়।
ছবি: Oleksandr Ratushniak/REUTERS
আক্রান্ত কিয়েভ
কিয়েভেও প্রতিদিন ড্রোন এবং মিসাইলের সাহায্যে আক্রমণ চালানো হচ্ছে। তবে এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমের সাহায্যে কিয়েভে মিসাইল এবং ড্রোন আক্রমণ প্রতিহত করা সম্ভব হচ্ছে।
ছবি: AFP
বেলারুশে পরমাণু অস্ত্র
এদিকে বেলারুশে রাশিয়ার পরমাণু অস্ত্র পৌঁছে গেছে বলে জানিয়েছেন দেশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেনকো। রাশিয়ার একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে একথা জানিয়েছেন তিনি।
জেলেনস্কির ভাষায়, ''সন্ত্রাস রোখার একমাত্র রাস্তা সন্ত্রাসীকে ধ্বংস করা। তাদের এমন শিক্ষা দিতে হবে যাতে তারা আর ভুল করেও ইউক্রেনের দিকে ফিরে না তাকায়।''
গত প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে পুনর্দখল অভিযানে নেমেছে কিয়েভ। কিন্তু গোড়ার দিকে এবিষয়ে প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করছিলেন না জেলেনস্কি। সম্প্রতি এবিষয়ে তিনি মুখ খুলতে শুরু করেছেন।
এদিন দক্ষিণ এবং পূর্ব ইউক্রেনের ফ্রন্টলাইন ছাড়াও কিয়েভ নিয়ে কথা বলেছেন জেলেনস্কি। জানিয়েছেন, মঙ্গলবার লাগাতার চারঘণ্টা ধরে রাজধানীতে আক্রমণ চালিয়েছে রাশিয়া। কিন্তু অ্যান্টি মিসাইল শিল্ড দিয়ে সেই আক্রমণ প্রতিহত করা সম্ভব হয়েছে। রাশিয়া অবশ্য দাবি করেছে, কিয়েভের একটি সামরিক ঘাঁটি তারা ধ্বংস করেছে।
রাশিয়ার সাবমেরিন
এদিকে রাশিয়ার জাতীয় সংবাদসংস্থা জানিয়েছে, দেশের সামরিক বাহিনীর হাতে দুইটি পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করার মতো সাবমেরিন এসেছে। দেশের সামরিক জাহাজ তৈরির সংস্থা সাবমেরিন দুইটি সামরিক বাহিনীর হাতে তুলে দিয়েছে। তবে এই সাবমেরিন রাশিয়া এখনই যুদ্ধে নামাবে কি না, তা স্পষ্ট নয়। বস্তুত, কৃষ্ণসাগরে রাশিয়া ইতোমধ্যেই সাবমেরিন এবং যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করে রেখেছে। কৃষ্ণসাগর থেকে হামলা চালিয়ে ইউক্রেনের বন্দর শহরগুলির যথেষ্ট ক্ষতিও করেছে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী।