বিক্ষোভের জেরে পদত্যাগ করল পূর্ব লিবিয়ার অন্তর্বর্তী সরকার। বেনগাজি, আল-মার্জ, সাভা সহ বেশ কয়েকটি শহরে বিক্ষোভ হচ্ছিল।
বিজ্ঞাপন
গত কয়েক দিন ধরেই বিক্ষোভ চলছিল। দুর্নীতি ও জীবনযাপনের খারাপ মানের প্রতিবাদে এই বিক্ষোভ। রোববার বেনগাজিতে বিক্ষোভকারীরা প্রশাসনিক সদরদফতরে আগুন লাগিয়ে দেয়ার পর অন্তর্বর্তী সরকার ইস্তফা দেয়ার কথা জানিয়ে দেয়।
প্রধানমন্ত্রী আবদাল্লা আল-থানি হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভের স্পিকারের কাছে তাঁর ইস্তফা দিয়েছেন। ২০১১ সালে দীর্ঘ সময়ের স্বৈরাচারী শাসক গদ্দাফির শাসন শেষ হওয়ার পর পূর্ব ও পশ্চিম লিবিয়ায়আলাদা প্রতিদ্বন্দ্বী সরকার ক্ষমতায় আসে।
বেনগাজি ছাড়াও আল-মার্জে সরকারি ভবনে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। এই এলাকা আবার খালিফা হাফতার ও তাঁর লিবিয়ান ন্যাশনাল আর্মি(এলএনএ)-র শক্ত ঘাঁটি। এ ছাড়া দক্ষিণের শহরগুলিতেও বিক্ষোভ ছড়িয়েছে।
সুপেয় পানির সংকটে লিবিয়া
খনিজ তেলে ভরপুর লিবিয়া উত্তর আফ্রিকার ধনী দেশগুলোর একটি৷ কিন্তু সে দেশে গৃহযুদ্ধ তৈরি করেছে নানামুখি সংকট৷ ধারণা করা হচ্ছে, যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ সুপেয় পানির সংকটের সম্মুখীন৷
ছবি: Reuters/H. Ahmed
সংকটে মৌলিকসেবা
স্বাস্থ্যসেবা নিয়েও ঝুঁকির মুখে আছে লিবিয়া৷ দেশটির পশ্চিমাঞ্চলে সুপেয় পানির অভাব দেখা দিয়েছে৷ যুদ্ধের দামামায় ১৪৯টি পানি সরবারহ লাইনের ১০১টি নষ্ট হয়ে গেছে৷
ছবি: Reuters/E.O. Al-Fetori
ধ্বংসের মুখে পানি সরবরাহ ব্যবস্থাপনা
শুষ্ক মরুভূমি দেশ লিবিয়া৷ পানির চাহিদা যোগানে ৮০-র দশকে ‘গ্রেট ম্যান-মেইড রিভার’ নামে প্রকল্প গ্রহণ করেন গাদ্দাফি৷ এর মধ্য দিয়ে দেশের ৭০ ভাগ মানুষের কাছে পৌঁছে যেত জল৷ কিন্তু গাদ্দাফির পতন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভেঙে পড়ে সেই পানি সরবরাহ৷
ছবি: Reuters/E.O. Al-Fetori
যুদ্ধের দামামা
২০১১ সালে গাদ্দাফির পতন হলেও শান্তি ফেরেনি লিবিয়ায়৷ উলটে সংঘাত ও সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে দেশজুড়ে৷ পশ্চিমা সমর্থিত সরকার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেলেও সাধারণ মানুষের ওপর নিয়ন্ত্রণ খাটাতে পারেনি৷ বরং জেনারেল খলিফা হাফতারের নেতৃত্বে দেশটির পূর্ব ভাগ দখল করে সেনাবাহিনী৷
ছবি: AFP/M. Turkia
পানিও যখন যুদ্ধাস্ত্র
নিজেদের স্বার্থ উদ্ধারে দেশের পানীয় জলের সরবরাহকে নষ্ট করেছে বিদ্রোহীরা৷ আর এই ফাঁকে, কিছু মানুষ নগদ অর্থের লোভে পানির পাইপ, সরঞ্জাম বিক্রি করে ফেলেছে৷ যুদ্ধাস্ত্র হিসেবে পানির ব্যবহার নিয়ে উভয় পক্ষকে সতর্ক করেছিল জাতিসংঘ৷
ছবি: Reuters/H. Ahmed
স্বাস্থ্য ঝুঁকি
ইউনিসেফ বলছে, চলমান সংকটের সমধান না এলে, চার লাখ মানুষ সুপেয় পানি থেকে বঞ্চিত হবে৷ ফলে হেপাটাইটিস-এ, কলেরা, ডায়েরিয়ার মতো রোগ মহামারি আকার নিতে পারে৷
ছবি: Reuters/E.O. Al-Fetori
দূষিত পানি
পানির সংকট তো আছেই, কিন্তু যতটুকু পানি মিলছে সেটাও দূষণে ভরা৷ ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ আর লবণ ঘনত্ব এ পানিকে করেছে ব্যবহার অনুপযোগী৷ জাতীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রধান বদর আল-দিদিন আল-নজরও বিষয়টি মেনে নিয়েছেন৷
ছবি: Reuters/E.O. Al-Fetori
6 ছবি1 | 6
গদ্দাফির পর থেকেই রাজনৈতিক, মানবিক ও অর্থনৈতিক সমস্যায় জেরবার লিবিয়া। গত বৃহস্পতিবার থেকে যে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে, তার কারণ সমানে লোডশেডিং, পেট্রোল-ডিজেলের মাত্রাছাড়া দাম এবং লোকের কাছে অর্থের অভাব।
গত ১৪ মাস ধরে পূর্ব লিবিয়ার সরকারের সঙ্গে এলএনএ-র সংঘাত চলছে। এলএনএ রাজধানী ত্রিপোলির নিয়ন্ত্রণ নেয়ারও চেষ্টা করেছে।
জানুয়ারি থেকেই লিবিয়ার আর্থিক অবস্থা খুবই খারাপ হয়েছে। লিবিয়ার সব তেল সংস্থায় এলএনএ অবরোধ করে রেখেছে। এই অবরোধ ওঠানো নিয়েও কথা চলছে।