পশুপাখিদের আচরণ থেকে কত কিছুই না জানার আছে৷ এক বিশাল প্রকল্পের আওতায় বিজ্ঞানীরা মহাকাশ থেকে তাদের গতিপথ ও আচরণ পর্যবেক্ষণ করে মূল্যবান তথ্য সংগ্রহের উদ্যোগ চালাচ্ছেন৷
বিজ্ঞাপন
ইকারুস প্রকল্পের লক্ষ্য
কাজাকস্তানে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে এক রকেট উৎক্ষেপণের প্রস্তুতি চলছে৷ ‘ইকারুস' নামের প্রকল্প শুরু করতে সেখানে জার্মান বিজ্ঞানীরাও উপস্থিত আছেন৷ পক্ষী বিশেষজ্ঞ মার্টিন ভিকেলক্সি-র একটি স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে৷ তিনি মনে করেন, পৃথিবী পর্যবেক্ষণের ক্ষেত্রে নতুন এক যুগের সূচনা ঘটছে, যা সত্যি অবিশ্বাস্য এক ঘটনা৷
২০১৮ সালের আগস্ট মাসে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে একটি অভিযান চলছে৷ রুশ মহাকাশচারীরা আইএসএস-এর গায়ে বিশেষ এক অ্যান্টেনা বসাচ্ছেন৷ এই ইকারুস-অ্যান্টেনা পৃথিবী থেকে অসংখ্য তথ্য গ্রহণ করবে৷ অভিনব বিষয় হলো, এক্ষেত্রে প্রাণীরা সেই সব তথ্য সংগ্রহ করছে৷ মার্টিন ভিকেলক্সি বলেন, ‘‘প্রয়োজন এমন বুদ্ধিমান সেন্সর, যা আমাদের হয়ে পৃথিবী স্ক্যান করবে৷ সেই কাজ প্রাণীদের থেকে কে বেশি ভালোভাবে করতে পারে!''
প্রাণীদের বৈশিষ্ট্য
প্রাণীরা তাদের ইন্দ্রিয় কাজে লাগিয়ে ভিন্ন মাত্রার চিত্র পায়৷ পৃথিবী সম্পর্কে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি আলাদা৷ তারা অতি দুর্গম প্রান্তেও পৌঁছে যেতে পারে৷ ভিন্ন এই ক্ষমতা কাজে লাগানোই ইকারুস প্রকল্পের লক্ষ্য৷ প্রায় ১৬ বছরের দীর্ঘ প্রস্তুতির পর তা সম্ভব হয়েছে৷ গোটা বিশ্বের বিজ্ঞানীরা ভিকেলস্কি-র টিমের সঙ্গে একযোগে প্রাণীদের গতিপথ অনুসরণ করার প্রক্রিয়া নিখুঁত করে তুলেছেন৷
সবচেয়ে লম্বা পথ পাড়ি দেয় যে দশটি প্রাণী
মানুষ দূরের যাত্রায় পাড়ি দেয় প্লেন, ট্রেন বা বাসে চড়ে৷ ছবিঘরে দেখুন এমন দশটি প্রাণী, যারা মানুষের চেয়ে ঢের লম্বা পথ পাড়ি দেয় কোনো যানবাহন ছাড়াই...
ছবি: Imago/StockTrek Images
১০. স্যামন মাছ (৩,৮০০ কিলোমিটার)
জীবনের প্রথম কিছু বছর ঠাণ্ডা জলে বাস করে এই মাছটি৷ এরপর ডিম পাড়া হলে সমুদ্রের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয় তারা৷ তিন থেকে চার বছর পর আবার জীবনের শেষাংশের বছরগুলি কাটাতে ফিরে আসে ঠাণ্ডা জলের নদীতে৷
ছবি: Imago/ZUMA Press/J. Mather
৯. মোনার্ক প্রজাপতি (৪,৮০০ কিলোমিটার)
মূলত ক্যানাডা আর উত্তর অ্যামেরিকার নিবাসী এই প্রজাপতি শীতকাল আসার আগেই হাজার হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ পথ পার করে এসে পৌঁছয় মেক্সিকোতে৷ মাত্র কয়েক মাস বাঁচতে পারা এই বিশেষ প্রজাপতি পৃথিবীর চৌম্বকীয় শক্তির সাহায্যে দিক নির্ধারণ করে৷
ছবি: Getty Images/AFP/O. Torres
৮. রেইনডিয়ার (৫,০০০ কিলোমিটার)
ইউরোপ, এশিয়া আর উত্তর অ্যামেরিকার শীতল অঞ্চলে পাওয়া যায় এই রেইনডিয়ার৷ বরফ গলা শুরু হলে সবুজ ঘাসের আশায় একদিনে ৭০ কিলোমিটারেরও বেশি পথ অতিক্রম করতে পারে এই জন্তুটি৷
ছবি: picture-alliance/ dpa
৭. সেমিপালমেটেড স্যান্ডপাইপার (৫,৩০০ কিলোমিটার)
সমুদ্রের ধারে বাস করে এই পাখি৷ শীতকাল শুরু হওয়ার ঠিক আগেই মূল বাসস্থান ক্যানাডা ছেড়ে অ্যামেরিকার দক্ষিণের উদ্দেশ্যে উড়াল দেয় এই পাখি৷ ঝাঁক মেনে চলা পাখিটি একবারে গোটা আটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি দেয়ার ক্ষমতা রাখে৷
ফড়িংয়ের কিছু বিশেষ প্রজাতি চার প্রজন্ম ধরে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় উড়ে বেড়ায়৷ শীতকালে এরা দক্ষিণ এশিয়ার দিকে উড়ে আসতে শুরু করে৷ মোনার্ক প্রজাপতির মতো এরাও হাওয়া ও পৃথিবীর চৌম্বকীয় শক্তির সাহায্যে দিক নির্ধারণ করে৷
ছবি: Getty Images/AFP/J. Guez
৫. লেদারব্যাক কচ্ছপ (২০,০০০ কিলোমিটার)
সমুদ্রে বাস করা এই কচ্ছপটি প্রশান্ত মহাসাগর ও আটলান্টিক মহাসাগর অনায়াসেই পাড়ি দেয়৷ খাবারের খোঁজে এই কচ্ছপটি আটলান্টিক মহাসাগরের এক প্রান্ত থেকে ক্যালিফোর্নিয়ার পাশের প্রশান্ত মহাসাগরে এসে জেলিফিশ শিকার করে৷
ক্যালিফোর্নিয়ার অধিবাসী এই সিন্ধুঘোটক তার যাত্রা এখান থেকে শুরু করে বছর ঘুরে আবার একই স্থানে ফিরে আসে৷ গড়ে ২১,০০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেওয়া এই প্রাণীটি বছরের বেশ কিছু মাস সমুদ্রে বাস করে৷
ছবি: picture alliance/blickwinkel/McPHOTO/E. u. H. Pum
৩. হাম্পব্যাক তিমি (২৩,০০০ কিলোমিটার)
স্তন্যপায়ী এই জীবের রয়েছে সবচেয়ে দীর্ঘ অভিবাসনের রেকর্ড৷ এই প্রজাতির তিমি মাছ বিশ্বের পাঁচটি মহাসাগরকেই ছুঁয়ে যায়৷
ছবি: Imago/StockTrek Images
২. সুটি শিয়ারওয়াটার (৬৫,০০০ কিলোমিটার)
দেখতে অনেকটা পায়রার মতন এই পাখি নিউজিল্যান্ডের আশেপাশে পাওয়া যায়৷ প্রতিদিন গড়ে ৯০০ থেকে ১,০০০ কিলোমিটার দূরত্ব পাড়ি দিতে সক্ষম৷
ছবি: Imago/All Canada Photos
১. আর্কটিক টের্ন (৭১,০০০ কিলোমিটার)
মাত্র ১১৩ গ্রাম ওজনের এই পাখিটি কীভাবে বিশ্বের সব প্রাণীদের চেয়ে লম্বা পথ পাড়ি দেয়, তা বিজ্ঞানীদের কাছে এক বিস্ময়৷ আর্কটিক সার্কল থেকে তার যাত্রা শুরু করে অ্যান্টার্কটিক সার্কলে গিয়ে পৌঁছয় এই পাখিটি৷
ছবি: imago/alimdi
10 ছবি1 | 10
অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে তা সম্ভব হচ্ছে৷ প্রাণীদের গায়ে লাগানো প্রেরক যন্ত্র শুধু তাদের অবস্থান জানাচ্ছে না, এর মাধ্যমে তাদের কার্যকলাপ ও পরিবেশ সম্পর্কেও মূল্যবান তথ্য পাচ্ছেন গবেষকরা৷ প্রত্যেক প্রজাতির প্রাণীর জন্য সেই প্রক্রিয়ায় রদবদল ঘটাতে হয়েছে৷
এই পদ্ধতিতে বিজ্ঞানীরা পৃথিবীর অসংখ্য প্রাণীর চলাফেরা সম্পর্কে চিত্র সংগ্রহ করেছেন৷ কিন্তু তাঁদের আরও স্বপ্ন রয়েছে৷ পক্ষী বিশেষজ্ঞ মার্টিন ভিকেলক্সি বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘‘এবার আমাদের হাতে সত্যি বুদ্ধিমান এক সেন্সর নেটওয়ার্ক আসছে৷ সেটি স্যাটেলাইট থেকে পাওয়া তথ্যও কাজে লাগিয়ে পৃথিবীতে প্রাণের স্পন্দন সম্পর্কে এক সার্বিক চিত্র তুলে ধরবে৷ এই ব্যবস্থা এমনকি পূর্বাভাষও দিতে পারবে৷''
রোগব্যাধির প্রসারের পূর্বাভাষ
এর মাধ্যমে রোগব্যাধির বিস্তার সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়৷ এক্ষেত্রে প্রাণীদেরও ভূমিকা থাকতে পারে৷ যেমন আফ্রিকার এক বিশেষ প্রজাতির বাদুড় সার্স বা মারবুর্গ ভাইরাসের মতো বিপজ্জনক রোগের বাহক বলে সন্দেহ করা হচ্ছে৷ কিন্তু এই প্রজাতির জীবনযাত্রা সম্পর্কে এখনো বেশি কিছু জানা যায়নি৷
গবেষকরা তাই কয়েকটি প্রাণী ধরে তাদের শরীরে সেন্সর লাগিয়ে তাদের গতিপথ পরীক্ষা করতে চেয়েছিলেন৷ তাঁদের মনে অনেক প্রশ্ন ছিল৷ যেমন ঠিক কোথায় বাদুড় বিপজ্জনক ভাইরাসের সংস্পর্শে আসে? রোগ ছড়িয়ে পড়ার ক্ষেত্রে তাদের কি আদৌ কোনো ভূমিকা থাকে?
বিনোদনের নামে পশু-পাখি নিয়ে যত পাশবিকতা
মোরগ লড়াই বা ষাঁড়ের লড়াই দেখেছেন? মানুষ আর ষাঁড়ের লড়াইও কয়েকটি দেশে খুব জনপ্রিয়৷ প্রাণীকে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে মারাও নাকি বিনোদন! দেখুন, পশু-পাখি নিয়ে বিনোদনের নামে কত রকমের নিষ্ঠুরতা চলছে সারা বিশ্বে৷
ছবি: Shah Marai/AFP/Getty Images
সার্কাসে...
খেলা দেখানোর নামে বিভিন্ন প্রাণীকে হাজির করা হয় সার্কাসে৷ এও এক ধরণের নিষ্ঠুরতা, কেননা, সব প্রাণীকেই পোষ মানাতে মায়ের কাছ থেকে খুব কম বয়সে নিয়ে আসতে হয়৷ বনের প্রাণীরও তো মাতৃস্নেহ দরকার৷
ছবি: Reuters/Andrew Innerarity
শিয়াল শিকার
ঘোড়া ছুটিয়ে কুকুর দিয়ে শিয়াল শিকার করার একটা সময় খুব চল ছিল ইংল্যান্ডে৷ পরে নিষিদ্ধ হলেও গোপনে এখনো চলে শিয়াল হত্যার এ খেলা৷
ছবি: Imago/i Images
চিড়িয়াখানায় যা হয়
চিড়িয়াখানায় পশু-পাখি দেখতে যাওয়া নিশ্চয়ই নিরীহ এবং প্রায় নির্ভেজাল বিনোনদন৷ তবে বনের প্রাণীকে খাঁচায় বন্দি করা থেকে শুরু করে চিড়িয়াখানার অনেক কিছু নিয়ে আন্তর্জাতিক চিড়িয়াখানা সংস্থার আপত্তি আছে৷ বিশ্বের অনেক দেশেই চিড়িয়াখানায় প্রাণীদের যেভাবে, যতটা যত্ন নেয়া উচিত ততটা না নেয়ার অভিযোগ আছে সংস্থাটির৷ থাইল্যান্ড, কাজাখস্থান আর শ্রীলঙ্কার মতো দেশের চিড়িয়াখানাগুলোর বিরুদ্ধেই অভিযোগটা সবচেয়ে বড়৷
ছবি: Reuters/C. Jaspersen
চলচ্চিত্রে পশু-পাখির ব্যবহার
চলচ্চিত্রে পশু-পাখির যথেচ্ছ ব্যবহার নিয়েও আন্তর্জাতিক পশু অধিকার সংরক্ষণ সংস্থা পেটা-র ঘোর আপত্তি৷ চলচ্চিত্রে যেসব প্রাণীকে ক্যামেরার সামনে নিয়ে আসা হয় তাদের অনেককেও মায়ের কাছ থেকে ছিনিয়ে আনা হয় খুব কম বয়সে৷
ছবি: AP
কুকুরের দৌড়
কুকুরের দৌড়ও হয় কোনো কোনো দেশে৷ এক জায়গায় আটকে রাখা হয় কয়েকটি গ্রে-হাউন্ড কুকুর৷ নির্ধারিত সময়ে খুলে দেয়া হয় দরজা৷ কুকুরগুলো বেরিয়েই দেখে সামনে ছুটে যাচ্ছে ছোট এক খরগোশ৷ খরগোশটি আসলে নকল৷ কুকুর তা না বুঝে খরগোশ ধরে খাওয়ার জন্য ছুটতে থাকে৷ এই প্রতিযোগিতা বন্ধেরও দাবি জানিয়েছে পেটা৷
ছবি: Fotolia/Gerken & Ernst
ষাঁড়ের লড়াই
স্পেনে ষাঁড়ের লড়াই খুব জনপ্রিয়৷ লড়াইটা ষাঁড়ের সঙ্গে ষাঁড়ের নয়, ষাঁড়ের সঙ্গে মানুষের৷ সেখানে এক অর্থে ষাঁড়কে চটিয়ে এবং বোকা বানিয়ে একজন খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে মারে৷ শত শত মানুষ তা দেখে আদিম আনন্দে মেতে ওঠে৷ এমন নিষ্ঠুরতার বিরুদ্ধে পশু অধিকার সংস্থাগুলোর আপত্তি তো আছেই, স্পেনের মানুষও এ লড়াই বন্ধের দাবিতে সোচ্চার হতে শুরু করেছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/R. Salafranca
কুকুরের লড়াই
কুকুরের লড়াইয়েও বিনোদনের উপাদান খুঁজে পায় কিছু মানুষ৷ অনেকে আবার কুকুরের লড়াইয়ে কোটি টাকার বাজিও ধরেন৷ কোথাও কোথাও জুয়া খেলারও অন্যতম উপলক্ষ্য কুকুরের লড়াই৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Z. Khan
মোরগ লড়াই
পশু বা পাখির লড়াইয়ে রক্তারক্তি কাণ্ড দেখেও হাততালি দিতে পারে কিছু মানুষ৷ মোরগ লড়াই সেরকমই এক তথাকথি বিনোদন৷
ছবি: Shah Marai/AFP/Getty Images
8 ছবি1 | 8
এই সব প্রশ্নের উত্তর পেতে গবেষকরা ইকারুস প্রকল্পের সাহায্যে আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে যত বেশি সম্ভব বাদুড়ের গতিপথ পর্যবেক্ষণ করতে চান৷
বিপর্যয়ের পূর্বাভাষ
মার্টিন ভিকেলস্কি এটনা আগ্নেয়গিরির কোলে বসবাসরত ছাগল পর্যবেক্ষণ করে অন্য ধরনের এক পূর্বাভাষ আশা করছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘প্রাচীন কাল থেকে আমাদের সবসময়ে মনে হয়েছে যে, প্রাণীরা প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পূর্বাভাষ দিতে পারে৷ ইলেকট্রনিক পর্যবেক্ষণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আমরা এই প্রথম সেই সম্ভাবনা খতিয়ে দেখার সুযোগ পাচ্ছি৷ বড় আকারের প্রাকৃতিক ঘটনার আগে, ঘটনার সময় ও তার পরে এমন প্রাণী ঠিক কী করে, তা বোঝার চেষ্টা করছি৷''
এখনো এমনটা সম্ভব হয়ে ওঠেনি৷ তবে ভবিষ্যতে ইকারুস প্রকল্পের মাধ্যমে তা করা যাবে বলে বিজ্ঞানীদের মনে আশা রয়েছে৷ কক্ষপথে ওড়ার সময়ে আইএসএস অসংখ্য প্রাণীর শরীর থেকে তথ্য সংগ্রহ করবে৷
ইকারুস অ্যান্টেনা-সহ আইএসএস কোনো জায়গার কাছাকাছি এলেই প্রাণীদের শরীরে লাগানো প্রেরক যন্ত্র সক্রিয় হয়ে ওঠে ও সংগৃহিত তথ্য পাঠিয়ে দেয়৷ মহাকাশ থেকে সেই তথ্য আবার পৃথিবীর বুকে পাঠানো হয়, যাতে গবেষকরা তা বিশ্লেষণ করতে পারেন৷
এফা শুলটেস/এসবি
মানুষের আনন্দ, জীবজন্তুর আতঙ্ক
বিভিন্ন রকম আতশবাজি পুড়িয়ে গোটা বিশ্ব ইংরেজি নববর্ষকে স্বাগত জানায়৷ বাজির শব্দ মানুষের জন্য আনন্দ বয়ে আনলেও পশু-পাখির জন্য যে তা যন্ত্রণাদায়ক, সেটা ভেবে দেখেছেন কি? ভেবেছেন শব্দদূষণেরও যে কারণ ‘ফায়ারওয়ার্কস’?
ছবি: picture-alliance/prisma/M. Ludwig
নিউ ইয়ার্স ইভ
প্রাণীদের কান যে খুবই সংবেদনশীল, তা আমরা অনেকেই জেনেছি কুকুরের আচরণ দেখে৷ আশেপাশের সামান্য শব্দেই কুকুরকে আমরা দেখেছি সতর্ক হয়ে যেতে৷ তবে শুধু কুকুর নয়, জোড়ে শব্দ হলে তা প্রায় সব প্রাণীর কানেই বিকট আওয়াজ বলে মনে হয়৷ আর তখন ওরা প্রচণ্ড ভয় পায়, হয় আতঙ্কিত৷
ছবি: picture-alliance/Mary Evans Picture Library
কুকুর এবং বেড়াল
কুকুর আর বেড়ালের কান খুবই সংবেদনশীল৷ ওদের জন্য বাসার এবং আলমারির দরজাগুলো খুলে রাখুন, যাতে প্রয়োজনে ওরা নিরাপদ আশ্রয় খুঁজে নিতে পারে৷ তবে ওদের অন্য কোথাও নিয়ে না গিয়ে বাড়িতেই রাখবেন৷ তা না হলে কুকুর এবং বেড়াল আগে থেকেই আতঙ্কে থাকবে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
পাখি বা ছোট প্রাণী
‘নিউ ইয়ার্স ইভ’ বা নতুন বছরকে বরণ করার আগেই পাখি বা ছোট প্রাণীদের জানালা বা দরজার কাছ থেকে দূরে সরিয়ে রাখুন৷ পর্দা টেনে দিন, ফেলে দিন ‘শাটার’৷ আরো ভালো হয় যদি আপনার পোষা পাখি বা প্রাণীটিকে হঠাৎ ভয় পাওয়ার হাত থেকে বাঁচাতে খাঁচার ওপর একটি তোয়ালে বা চাদর দিয়ে ঢেকে দেন৷
ছবি: Victoria Dannemann
হালকা মিউজিক
বাড়িতে স্বাভাবিক পরিবেশ বজায় রাখুন৷ প্রয়োজনে হালকা ‘মিউজিক’ বা সংগীত চালিয়ে রাখতে পারেন, যাতে বাইরের বিকট শব্দগুলো সহজে ভেতরে প্রবেশ করতে না পারে এবং পোষা প্রাণীর কাছে পরিবেশটা অন্যরকম মনে না হয়৷
ছবি: Fotolia/javier brosch
পশু ডাক্তারের পরামর্শ
এরকম পরিস্থিতিতে পোষা প্রাণীকে শান্ত রাখার জন্য অনেকেই তাদের ঘুমের ওষুধ খাওয়ান৷ এক্ষেত্রে পশু ডাক্তারের পরামর্শ, ওষুধ সেবন করানোর তিন-চারদিন আগে থেকেই আপনার প্রিয় প্রাণীটিকে অ্যামিনো অ্যাসিড দেয়া উচিত৷ এতে করে তার শরীরে ঘুমের ওষুধ ধীরে ও ভালোভাবে কাজ করতে পারবে৷