আজ সারা বিশ্বে পালিত হচ্ছে বিশ্ব ধরিত্রী দিবস৷ জাতিসংঘে ১৬৫ টি দেশের অংশগ্রহণে স্বাক্ষরিত হচ্ছে ‘প্যারিস জলবায়ু চুক্তি'৷ ধরিত্রী দিবস পালন এবং ‘জলবায়ু চুক্তি' স্বাক্ষরের অভিন্ন উদ্দেশ্য – পৃথিবীকে বাসযোগ্য রাখা৷
বিজ্ঞাপন
[No title]
ওয়ার্ল্ড আর্থ ডে, অর্থাৎ বিশ্ব ধরিত্রী দিবস উপলক্ষ্যে বিশ্বের প্রায় সব দেশে অসংখ্য ভাষায় চলছে সবার প্রতি পৃথিবীকে সজীব, সবুজ রাখতে উদ্যোগী হবার আহ্বান৷ শুধু ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা দেশের সাময়িক সুবিধার কথা ভেবে পরিবেশ ধ্বংস না করার এ আহ্বানে বৈচিত্রের অভাব নেই৷
এই দিনটিকে সামনে রেখে জাতিসংঘও বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করছে৷ পৃথিবীকে আরো সবুজ করার অনুরোধ নিয়ে দেশে দেশে ঘুরে বেড়াচ্ছে ভিডিও গেম জগতের জনপ্রিয় চরিত্র ‘অ্যাংরি বার্ডস'৷
বিশেষ ডুডলের মাধ্যমে গুগলও ‘আর্থ ডে' পালন করছে৷ ডুডলটিতে ইংরেজি ‘ও' অক্ষরটিকে ঘূর্ণায়মান পৃথিবীর মতো করে দেখিয়েছে গুগল৷
বিভিন্ন দেশের শিল্পীরাও নিজের অবস্থান থেকে সর্বস্তরে পরিবেশ সচেতনতা বাড়ানোর বিষয়ে ভূমিকা রাখছেন৷ ভারতের আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বালুশিল্পী সুদর্শন পট্টনায়কের নির্বাচিত বিষয়ও তাই ধরিত্রী দিবস৷
অস্কার বিজয়ী হলিউড তারকা লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও-ও ধরিত্রী দিবসে চলচ্চিত্রের বিষয় ছেড়ে পরিবেশ নিয়েই কথা বলবেন৷ নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে শুক্রবার যে প্যারিস জলবায়ু চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে সেই অনুষ্ঠানে তিনিও থাকছেন৷ ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ফ্রঁসোয়া ওলঁদ, ক্যানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরিসহ অনেক বিশ্বনেতাই থাকছেন চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে৷
প্যারিস জলবায়ু চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে গ্রিন হাউস গ্যাস নিঃসরণ হ্রাস করার সর্বাত্মক উদ্যোগ আরো কার্যকর হবে বলে আশা করা হচ্ছে৷
জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে কতটা জানেন?
সিওটু, গ্রিনহাউস গ্যাস, কার্বন নির্গমন – এই সব শব্দ সংবাদমাধ্যমের আলোচনায় বার বার উঠে আসে৷ কিন্তু এই সব শব্দের প্রেক্ষাপট আপনি কতটা বোঝেন? যাচাই করে নিন এই ছবিঘরে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
প্রশ্ন
পৃথিবী আসলে কতটা উষ্ণ হয়ে উঠেছে?
ছবি: DW
উত্তর
১৮৫০ সালে শিল্প-বিপ্লবের শুরু থেকে বিশ্বের তাপমাত্রা এক ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে গেছে৷ তাই গবেষকদের আশঙ্কা, ২১০০ সালের মধ্যে তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি কমানোর লক্ষ্যমাত্রা বিফল হবে৷ জলবায়ু গবেষণার ভিত্তিতে বড়জোর দেড় ডিগ্রির সীমা ধরে রাখার চেষ্টা করা উচিত বলে মনে করেন সমালোচকরা৷
ছবি: DW/G. Rueter
প্রশ্ন
২১০০ সাল পর্যন্ত বৈশ্বিক উষ্ণায়নের পরিণতি কী হতে পারে?
ছবি: DW/K.Hasan
উত্তর
পৃথিবীর তাপমাত্রা আরও বেশি মাত্রায় বাড়লে উপকূলবর্তী এলাকায় প্রায় ৩০ লক্ষ মানুষ বিপদে পড়তে পারেন৷ প্রায় ২০০ কোটি মানুষ জলের অভাবে সমস্যায় পড়বেন৷ পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাওয়াতে না পেরে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ প্রজাতির প্রাণী বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে৷
ছবি: picture-alliance/AP/T. Gutierrez
প্রশ্ন
গ্রিনহাউস গ্যাসের প্রভাবের উৎস কী?
ছবি: IRNA
উত্তর
কয়লা, পেট্রোলিয়াম ও গ্যাস৷ জীবাশ্মভিত্তিক জ্বালানির সাহায্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন, ঘরবাড়ি গরম রাখা, পরিবহণ ব্যবস্থা চালানো এবং শিল্পক্ষেত্রে উৎপাদনের ফলে কার্বন-ডাই-অক্সাইড সৃষ্টি হয় এবং বায়ুমণ্ডলে ছড়িয়ে পড়ে৷ গ্রিনহাউস গ্যাসের প্রায় ৬৫ শতাংশই কার্বন-ডাই-অক্সাইড৷ এছাড়া মিথেন, লাফিং গ্যাস ও ক্লোরোফ্লুরোকার্বন এর জন্য দায়ী৷
ছবি: Imago stock&people
প্রশ্ন
আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনার কারণে কোন দেশগুলি গত বছর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে?
ছবি: Reuters
উত্তর
সার্বিয়া, আফগানিস্তান এবং বসনিয়া-হ্যারৎসোগোভিনা ২০১৫ সালে আবহাওয়া বিপর্যয়ের ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে৷ প্যারিস-ভিত্তিক পরিবেশ সংগঠন ‘জার্মানওয়াচ’ প্রকাশিত বিশ্বব্যাপী জলবায়ু সংক্রান্ত ঝুঁকির তালিকায় এই তথ্য উঠে এসেছে৷ তবে ১৯৯৫ সাল থেকে হন্ডুরাস, মিয়ানমার, হাইতি ও ফিলিপাইন্সের মতো দক্ষিণ গোলার্ধের দরিদ্র দেশগুলি বন্যা, বিধ্বংসী ঝড় ও তাপপ্রবাহের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. uz Zaman
প্রশ্ন
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সমুদ্র কেন বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখায়?
ছবি: imago/OceanPhoto
উত্তর
পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের গ্রিনহাউস গ্যাস কার্বন-ডাই-অক্সাইড সমুদ্রের পানির মধ্যে রাসায়নিক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে৷ এই প্রক্রিয়ায় জলের ‘পিএইচ ভ্যালু’ কমে যায়৷ অ্যালজির মতো ক্ষুদ্র প্রাণী ও প্রবাল প্রাচীরের উপর তার প্রভাব পড়ে৷ জলে অম্লের মাত্রা যত বাড়ে, ক্যালশিয়াম বাইকার্বোনেট তত পাতলা হয়ে যায়৷ তখন প্রবালের মৃত্যু হয়৷ ফলে সমুদ্রের গোটা ইকোসিস্টেম ক্ষতিগ্রস্ত হয়৷
ছবি: XL Catlin Seaview Survey
প্রশ্ন
বার্লিন থেকে প্যারিস যেতে হলে গাড়ি, বিমান অথবা ট্রেন – পরিবহণের কোন মাধ্যম পরিবেশের সবচেয়ে ক্ষতি করে?
ছবি: DW/K. Jäger
উত্তর
এই দূরত্ব অতিক্রম করতে এয়ারবাস এথ্রিটুজিরো বিমানে যাত্রীপিছু ২৪৮ কিলোগ্রাম কার্বন-ডাই-অক্সাইড সৃষ্টি হয়৷ ফলক্সভাগেন কোম্পানির গল্ফ মডেলের নতুন গাড়িতে চড়ে গেলে নির্গমনের পরিমাণটা দাঁড়ায় ১৭৯ কিলো৷ অন্যদিকে সবচেয়ে পরিবেশবান্ধব বাহন হলো ট্রেন৷ সে ক্ষেত্রে নির্গমনের পরিমাণ প্রায় ১১ কিলো৷