পরিবেশ বিষয়ে শিক্ষা নথি প্রকাশ করেছে ভ্যাটিকান৷ পোপ ফ্রান্সিস উষ্ণায়নের জন্য অসম আর্থিক ব্যবস্থাকে দায়ী করে এর সমালোচনা করেছেন৷ তাঁর বক্তব্য পরিবেশবিদ, ধর্মীয় চিন্তাবিদ, রাজনীতিবিদসহ প্রায় সব মহলেই প্রশংসিত হচ্ছে৷
বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবার পরিবেশ নিয়ে প্রথম বারের মতো একটি এনসাইক্লিক্যাল প্রকাশ করেছে ভ্যাটিকান৷ সেখানে পোপ ফ্রান্সিস বিশ্বের সকল ধর্মের, সকল বর্ণের মানুষের প্রতি জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টিকে নৈতিকতাসংশ্লিষ্ট বিষয় হিসেবে ভাবা এবং দেখার আহ্বান জানিয়েছেন৷ ‘লাউডাটো সি'-নামের শিক্ষানথিতে তিনি বিশ্বের সব মানুষের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘‘আপনারা পৃথিবীর কান্না শুনুন, গরিবের কান্না শুনুন৷''
সমাজের এক শ্রেণির মানুষের বিলাসবহুল জীবনযাপন, সব কিছুতে অতি লাভের লোভ বিশ্বকে ক্রমশ আবর্জনার স্তূপে পরিণত করছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি৷ জলবায়ু পরিবর্তনের সংকট মোকাবিলায় সবাইকে তৎপর হওয়ার আহ্বান জানিয়ে পোপ বলেছেন, ‘‘আমরা গত দু'শ বছরে আমাদের আবাসস্থলকে যত আঘাত দিয়েছি, তার সঙ্গে যত দুর্ব্যবহার করেছি, তার আগে কখনো এতটা হয়নি৷ এই পৃথিবী আমাদের ঘর, যতদিন যাচ্ছেই এই ঘর দেখতে ততই আরো অতিকায় আবর্জনার স্তূপের মতো হয়ে যাচ্ছে৷''
পরিবেশবিদরা পোপ ফ্রান্সিসের বক্তব্যের অকুণ্ঠ প্রশংসা করেছেন৷ রাজনীতি বিশ্লেষকরাও মনে করছেন, ক্যাথলিক খ্রিষ্টানদের সর্বোচ্চ ধর্মগুরুর এই বক্তব্য পরিবেশের ক্ষেত্রে কাঙ্খিত পরিবর্তনকে সহজ করবে৷ তবে রক্ষণশীল ক্যাথলিক এবং যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিক দলের একটি অংশ এর সমালোচনা করেছেন৷ এক রিপাবলিকান নেতা মনে করেন, ‘‘এটা পুরোপুরি রাজনৈতিক বিষয়৷'' তাঁর মতে, পরিবেশ রক্ষা, জলবায়ু পরিবর্তন – এ সব এখন পুরোপুরি রাজনৈতিক ইস্যু হয়ে গেছে, এতে ধর্মগুরুর বক্তব্য গ্রহণযোগ্য নয়৷ বিশ্বের অনেক পরিবেশবিজ্ঞানী এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষকই অবশ্য তা মনে করেন না৷
মানুষের হাতেই পৃথিবীর ধ্বংসের উপায়
জলবায়ু পরিবর্তন বা বিশাল আকারের উল্কা পতন নয়, এমন কিছু বিষয় আছে যা মনুষ্যসৃষ্ট এবং তাতেই পৃথিবীকে ধ্বংস হয়ে যেতে পারে৷ theconversation.com কী বলছে দেখুন৷
ছবি: picture-alliance/PIXSELL/Puklavec
পারমাণবিক যুদ্ধ
পারমাণবিক যুদ্ধে আণবিক অস্ত্রের ফলে প্রাণ হারাতে পারে কোটি কোটি মানুষ৷ তবে সবচেয়ে ভয়াবহ বিষয় পরমাণু যুদ্ধের প্রভাব, যাকে বলা হচ্ছে নিউক্লিয়ার উইনটার৷ এর প্রভাবে শত শত বছর ধরে তাপমাত্রা নীচে নেমে যাবে অথবা প্রচণ্ড খরা দেখা দেবে৷ বিশ্ব জুড়ে দেখা দেবে খাদ্যের অভাব৷
ছবি: Getty Images/AFP
বায়ো টেকনোলজি বা জীব প্রযুক্তি
জীব প্রযুক্তির নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার কারণেও মানুষের জীবন এখন হুমকির মুখে৷ যেমন একট্রোমেলিয়া ভাইরাসের কথাই ধরা যাক৷ এই ভাইরাসের কারণে জলবসন্ত হয়ে থাকে৷ গবেষণাগারে এই ভাইরাসটি তৈরি করে ইঁদুরের উপর সফল পরীক্ষা চালানো হয়েছে৷ এই ভাইরাস মানুষের দেহে সংক্রমিত হলে তা ভয়াবহ আকার ধারণ করবে৷
ছবি: imago/Science Photo Library
বুদ্ধিমত্তা
যে কোনো লক্ষ্য পূরণের জন্য বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগানো জরুরি৷ কিন্তু এমন মানুষের হাতে যদি বুদ্ধিমত্তা প্রয়োগের ক্ষমতা থাকে , যারা পৃথিবীর মানুষের অনিষ্ঠ করতে চায়, তাহলে বিপর্যয় ঠেকানো খুব মুশকিল৷
ছবি: Fotolia/DOC RABE Media
ন্যানো প্রযুক্তি
এই প্রযুক্তিতে পদার্থকে অণু বা আণবিক পদার্থ তৈরি হয়৷ এটা অবশ্যই ক্ষতিকর নয় বরং কার্যকরী৷ সমস্যা হলো এ ধরনের জৈব প্রযুক্তিকে খারাপ ভাবে ব্যবহার করা হতে পারে৷ সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ বিষয় হলো যে, এর সাহায্যে খুব দ্রুত এবং অল্প খরচে অস্ত্র উৎপাদন করা যায়৷
ছবি: picture-alliance/dpa
অজানা কিছু
আর একটা সম্ভাব্য বিষয় হলো – পৃথিবীতে জীবনকে ধ্বংস করতে পারে, এমন বিধ্বংসী কিছু জানিস আছে, যার অস্তিত্ব আমাদের জানা নেই৷ কিন্তু সেটা লুকিয়ে আছে৷ অজানা কিছু ঘটার একটা আশঙ্কা থেকেই যায়৷