ঠিক ঐখানে আলফা সেন্টরি-র অবস্থান৷ পৃথিবীর সবচেয়ে কাছের তারকাপুঞ্জ এটি৷ গবেষণার জন্য সেখানে যান পাঠাতে চান বিজ্ঞানীরা৷ জানতে চান সেখানে কোনো প্রাণের অস্তিত্ব আছে কি না৷
বিজ্ঞাপন
এমনই এক পরিকল্পনার কথা মঙ্গলবার জানালেন রাশিয়ান বিলিওনেয়ার ইউরি মিলনার৷ সঙ্গে ছিলেন ব্রিটিশ কসমোলজিস্ট স্টিফেন হকিং৷
তাঁরা দু’জন যে পরিকল্পনার কথা জানান সেটি বাস্তবায়ন সম্ভব কি না তা নিয়ে গত একবছর ধরে কাজ করছিলেন একদল বিজ্ঞানী৷ তাঁদের দলটির নাম ‘ব্রেকথ্রু স্টারশট'৷ আলফা সেন্টরিতে পাঠানোর জন্য খুবই হালকা এক ধরণের যান তৈরি করবেন এই বিজ্ঞানীরা৷ একে তাঁরা ‘ন্যানোক্র্যাফট' বলে ডাকছেন৷
এই যান প্রতি সেকেন্ডে ৬০ হাজার কিলোমিটার গতিতে মহাকাশে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যাবে৷ এই গতিতে যানটির আলফা সেন্টরিতে পৌঁছতে সময় লাগবে ২০ বছর৷ বর্তমানে যেসব যান আছে তা দিয়ে এই পথ পাড়ি দিতে সময় লাগবে ৩০ হাজার বছর৷ বেশ কয়েকটি ন্যানোক্র্যাফট তৈরি করবেন বিজ্ঞানীরা৷
মিলনার বলেন, পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজ শুরু করতে তিনি ১০০ মিলিয়ন ডলার দেবেন৷ তবে পরিকল্পনাটি পুরো বাস্তবায়নে ১০ বিলিয়ন ডলারের মতো প্রয়োজন হতে পারে৷ এক্ষেত্রে বিজ্ঞানীদের বেশি কিছু সমস্যার সমাধান করতে হবে৷
প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত হওয়ার কারণ প্রসঙ্গে হকিং বলেন, ‘‘...কারণ আমরা মানুষ এবং আমাদের স্বভাব হচ্ছে উড়ে বেড়ানো৷''
ফোর্বস ম্যাগাজিনের হিসাবে মিলনারের সম্পদের পরিমাণ ২.৯ বিলিয়ন ডলার৷ তিনি ফেসবুকের অন্যতম বিনিয়োগকারী৷ ফেসবুকের মার্ক জাকারবার্গও (বানানভেদে সাকারবার্গ) এই পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন৷
এর আগে গতবছর জুলাইতে মিলনারের আরেকটি প্রকল্পে জড়িত হয়েছিলেন হকিং৷ এর মাধ্যমে বুদ্ধিমান এক্সট্রাটেরেস্ট্রিয়াল প্রাণের সন্ধান করা হচ্ছে৷
জেডএইচ/এসিবি (এএফপি, এপি)
মহাকাশে প্রথম মানুষ থেকে প্রথম ফুল
মহাকাশে মানুষের যাওয়া একটা সময় অকল্পনীয়ই ছিল৷ কুকুর পাঠিয়ে স্বপ্নযাত্রার সোপান তৈরি হলো৷ প্রথম মানুষ হিসেবে ইউরি গ্যাগারিন গেলেন৷ তারপর প্রথম নারী, প্রথম ফুল হয়ে এবার শুরু হলো মহাকাশে প্রথম টমেটো দেখার অপেক্ষা৷
ছবি: Colourbox/M. Bell
সবার আগে ফলের মাছি
মহাকাশে প্রথম প্রাণী ফলের মাছি৷ হ্যাঁ, ১৯৪৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বিকিরণের প্রভাব পরীক্ষা করার জন্য ভি-টু রকেটে মানুষ না পাঠিয়ে এক ধরণের মাছিই পাঠিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র৷ দু’বছর পর শুরু হয় বানর পাঠানো৷ ঊনিশ শতকের পঞ্চাশের দশকে ইঁদুর এবং কুকুরও পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র৷
তখনকার সোভিয়েত ইউনিয়ন, অর্থাৎ আজকের রাশিয়াও মহাকাশে পরীক্ষামূলকভাবে প্রাণী পাঠিয়েছে বেশ কয়েকবার৷ তবে ১৯৫১ সালে প্রথম তাদের পাঠানো দু’টি কুকুর মহাকাশ থেকে জীবিত ফেরে৷ তবে কোনো প্রাণীই মহাকাশে গিয়ে অরবিট প্রদক্ষিণ করেনি৷ ১৯৫৭ সালে সেই অসম্ভবকে সম্ভব করেছিল সোভিয়েত ইউনিয়নেরই আরেক কুকুর লাইকা৷ লাইকা অরবিট থেকে ফেরায় মানুষেরও মহাকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন জাগে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
প্রথম মানুষ ইউরি গ্যাগারিন
মহাকাশ ঘুরে আসা প্রথম মানুষ ইউরি গ্যাগারিন৷ ১৯৬১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের ভস্টক নভোযানে চড়ে পৃথিবীর কক্ষপথ প্রদক্ষিণ করে আসেন তিনি৷ ছবিতে স্ত্রী এবং সন্তানের সঙ্গে আনন্দঘন মুহূর্তে ইউরি গ্যাগারিন৷
ছবি: AFP/Getty Images
মহাকাশে প্রথম নারী
মহাকাশে প্রথম নারী পাঠাতেও দেরি করেনি সোভিয়েত ইউনিয়ন৷ ১৯৬১ সালেই ৪০০ আবেদন থেকে বেছে নেয়া হয় ভ্যালেন্টিনা টেরেশকোভাকে৷ ভস্টক চালিয়ে মহাকাশে গিয়ে ভেলেন্টিনা টেরেশকোভা সুস্থ, স্বাভাবিক অবস্থাতেই ফিরেছিলেন নিজের দেশে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
প্রথম ফুল
কয়েকদিন আগেই পাওয়া গেছে মজার এক খবর৷ মহাকাশে এবার ফুল ফুটেছে৷ জিনিয়া ফুল৷ মহাকাশে মাটিই নেই৷ তারপরও সেখানে ফুল ফোটানো কিন্তু মহাবিস্ময়েরই ব্যাপার৷ নাসার নভোচারীরা এবার তা-ও সম্ভব করেছেন৷ আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্র (আইএসএস)-এর নভোচারী স্কট কেলি টুইটারে একটি জিনিয়া ফুলের ছবি পোস্ট করে জানিয়েছেন, এটা মহাকাশে প্রথম ফোটা ফুল৷
ছবি: picture-alliance/dpa/NASA
তারপর টমেটো?
নভোচারীরা ধীরে ধীরে মহাকাশে খাদ্যশস্য ফলানোর দিকে এগিয়ে যেতে চান৷ সেই লক্ষ্যের প্রথম পদক্ষেপ হিসেবেই আসলে জিনিয়া ফোটানো৷ ইতিমধ্যে খুব ছোট আঙ্গিকে লেটুস চাষের চেষ্টা শুরু হয়েছে৷ খুব শিগগির নাকি তাজা টমেটোও দেখা যাবে মহাকাশে!