1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পেগিডার একমাত্র সমর্থক কি এএফডি?

ফল্কার ভাগেনার/এসি৬ জানুয়ারি ২০১৫

পশ্চিমি দুনিয়ায় জন্মের হার কমছে; অভিবাসন চলতে থাকলে পশ্চিমের ইসলামীকরণ ঘটার আশঙ্কা দেখছে পেগিডা৷ ইউরো-বিরোধী এএফডি দলের প্রতি সমর্থনও কি প্রচ্ছন্ন বহিরাগত-বিদ্বেষ নয়? প্রশ্ন ডিডাব্লিউ-র ফল্কার ভাগেনার-এর৷

Protest gegen Pegida in Berlin
ছবি: Reuters/H. Hanschke

ঐ আসছে জুজুবুড়ি – সে খেলা দৃশ্যত আজও বেঁচে আছে, ছোটদের মধ্যে নয়, বড়দের মধ্যে, এমনকি জার্মানিতেও৷ যে কারণে জার্মানির বিভিন্ন শহরে ‘‘প্রতীচ্যের ইসলামীকরণের বিরুদ্ধে দেশপ্রেমী ইউরোপীয়বৃন্দ'' বা এক কথায় পেগিডা আন্দোলন চলেছে৷

হাজার হাজার জার্মান বলছেন, তারা ইসলাম সম্পর্কে ভীত, এবং প্রতীকী মিছিল করে তারা সেটা জানান দিচ্ছেন৷ অপরদিকে হাজার হাজার জার্মান পেগিডার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন – এরা সমর্থন ও উৎসাহ পাচ্ছেন প্রায় সব রাজনৈতিক দলের সব রাজনৈতিক নেতাদের কাছ থেকে৷ পেগিডার বিরুদ্ধে বহিরাগত বিদ্বেষের অভিযোগ করছেন নেতারা৷

পেগিডার ফলে জার্মানির মেরুকরণ ঘটেছে৷ এখন প্রশ্ন হলো: সব পেগিডা সদস্যই কি নিন্দনীয় বা সমালোচনার পাত্র? পেগিডা এমন একটি বিকাশধারা, যার কোনো ব্যাখ্যা নেই৷ এবং বিপদটা ঠিক সেখানেই, কেননা ঘটনাবলী ঠিক এভাবেই রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে৷

ফল্কার ভাগেনারছবি: DW

ইসলামকে সমস্যা হিসেবে গণ্য করা

পেগিডা আন্দোলন বিপজ্জনক, কারণ তা ইসলাম সম্পর্কে একটি অস্পষ্ট ধারণার জন্ম দেয়৷ গোড়ায় তাদের লক্ষ্য ছিল জঙ্গি ইসলামপন্থিরা, যারা ধর্মের নামে পণবন্দিদের মুণ্ডচ্ছেদ করে চলন্ত ক্যামেরার সামনে৷ ইতিমধ্যে সোমবারের বিক্ষোভকারীদের একটা বড় অংশ স্বয়ং ইসলামকেই দোষী করে থাকে৷

সেই সঙ্গে রয়েছে রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী এবং ত্রাণসন্ধানী উদ্বাস্তুদের সমস্যা – এরা সবাই নাকি পশ্চিমি বিশ্বের পক্ষে বিপজ্জনক৷ মাঠ-ময়দানের বাগ্মীরা যখন সহজ-সরল স্লোগান দিয়ে ‘‘জার্মানিকে বাঁচানোর'', অর্থাৎ লোকের মন ভোলানোর চেষ্টা করেন, তখন ব্যাপারটা এই রকমই দাঁড়ায় বটে৷

পেগিডা দেয় এক পর্যায় সহজ সমাধান – যা মঙ্গলজনক নয়৷ কিন্তু জার্মানির তিনটি রাজ্যের রাজ্য বিধানসভায় উপস্থিত একটি রাজনৈতিক দল যখন এই সরলীকৃত দৃষ্টিভঙ্গি সমর্থন করে, তখন তার বিপদ সকলের কাছেই স্পষ্ট হওয়া উচিৎ৷

বহু জার্মান ইসলামীকরণ সম্পর্কে ভীত

অন্তত ৩০ শতাংশ জার্মানের মতে পেগিডার উদ্বেগ যুক্তিযুক্ত৷ এদের মধ্যে ‘‘জার্মানির জন্য বিকল্প'' দল এএফডি-র সমর্থকরাও আছেন৷ এএফডি জার্মানির মূল রাজনৈতিক ধারার অঙ্গ, নাকি বহিরাগত বিদ্বেষের উপর ভিত্তি করা একটি রাজনৈতিক দল – এ বিতর্কের অবসান ঘটতে চলেছে৷ নতুন দলটির বহু সদস্যই সভ্য-ভব্য নাগরিকের সাজে ‘‘ব়্যাবেল-রাউজার'', অর্থাৎ যারা লোক খেপায়, জনতাকে প্ররোচিত করে৷

জার্মানির পশ্চিমাংশে পেগিডা বিশেষ সমর্থন পায়নি৷ দৃশ্যত জার্মানির পূর্বাঞ্চলের মানুষ অ-জার্মান সব কিছুর বিরুদ্ধে অনেক বেশি প্রতিরোধ প্রবণ৷ ড্রেসডেনের রাস্তায় পেগিডা সমর্থকরা আজ যখন ধ্বনি দেন, ‘‘আমরাই এ দেশের মানুষ!'' – তখন তার অর্থ দাঁড়ায়, ‘‘তোমরা মুসলিমরা আমাদের অংশ নও, রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী বা উদ্বাস্তুরাও নয়!'' এক্ষেত্রে এএফডি পেগিডার পরামর্শদাতার ভূমিকা নিয়েছে, রাস্তার স্লোগানকে বিধানসভায় ঢুকিয়েছে৷ এই মৈত্রীর একটি ফলশ্রুতি: জার্মান সমাজ আজ চলেছে দক্ষিণমুখো, প্রজন্ম বা শিক্ষাদীক্ষার সব পার্থক্য ছেড়ে৷

‘বহুধারার সংস্কৃতি চাই না'

প্রতি সোমবার ড্রেসডেনে পেগিডার প্রতিবাদ সমাবেশে দেখা যাবে গৃহিণী, পেনশনভোগী, সন্তান সমেত তরুণ শিক্ষক-অধ্যাপক এবং পুলিশের খাতায় নাম আছে, এমন নব-নাৎসিদের৷ পেগিডা আন্দোলনের ব্যাপ্তিটাই ভীতিপ্রদ: এ যেন পশ্চিম জার্মানির বহুধারার সংস্কৃতির বিরুদ্ধে জার্মানির পূর্বাঞ্চলের সামগ্রিক প্রতিবাদ৷

ইত্যবসরে প্রতিবাদের উপলক্ষ্য বাড়ছে: নিম্ন অবসরভাতার সঙ্গে উদ্বাস্তুদের রক্ষণাবেক্ষণের ব্যয়কে যুক্ত করে প্রবীণ বয়সে নিরবলম্বন হওয়ার ভীতি ছড়ানো হচ্ছে৷ জার্মানির পুনরেকত্রীকরণের ফলে পুবের মানুষদের যে সব বাস্তবিক এবং কাল্পনিক ক্ষতি হয়েছে, সেগুলোও মাথা চাড়া দিচ্ছে৷

এই পরিস্থিতিতে বাদবাকি রাজনৈতিক দল যদি এই সন্ধিক্ষণের মুহূর্তটিকে শুধুমাত্র এবং পুরোপুরি এএফডি-র হাতে ছেড়ে দেয়, তবে তার চেয়ে বড় ভুল আর হতে পারে না৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ