1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পেছানো হবে না, ১০০ নম্বরেই এইচএসসি পরীক্ষা

৮ আগস্ট ২০২৩

আগামী ১৭ আগস্ট থেকে বাংলাদেশে উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষা শুরুর কথা রয়েছে। কিন্তু পরীক্ষার মাত্র দেড় সপ্তাহ আগে পরীক্ষা পিছানোর আন্দোলন শুরু হয়েছে।

প্রতীকী ফাইল ফটো
প্রতীকী ফাইল ফটোছবি: Rashed Mortuza/DW

আন্দোলনকারী পরীক্ষার্থীদের দাবি, প্রতিটি পরীক্ষা ৫০ নাম্বারের মধ্যে হতে হবে এবং পরীক্ষা কমপক্ষে দুই মাস পিছাতে হবে।

অবশ্য বুধবার শিক্ষামন্ত্রীর সভাপতিত্বে শিক্ষা বোর্ড গুলোর চেয়ারম্যানদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে পরীক্ষা পেছানো হবে না, ১৭ আগস্টেই শুরু হবে। আইসিটি ছাড়া সব বিষয়ে ১০০ নাম্বারের পরীক্ষা হবে। আইসিটি পরীক্ষা হবে ৭৫ নাম্বারের মধ্যে প্রশ্নপত্র একই রেখে।
মঙ্গলবার ঢাকার শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য এলাকায় পরীক্ষার্থীরা তাদের দাবি নিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালনের চেষ্টা করে। কিন্তু পুলিশের বাধার মুখে তারা বিকাল পর্যন্ত সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মধ্যে অবস্থান নেয়। আন্দোলনকারীদের দাবি, তাদের সাত জনকে পুলিশ আটক করেছে।
এর আগের দিন সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান নিলে পুলিশ তাদের বিকেলের দিকে লাঠিপেটা করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। তার আগে প্রথমে তারা শাহবাগে অবস্থান নেয়। সেখান থেকে সায়েন্স ল্যাবরেটরি ও নীলক্ষেতে গিয়েও অবস্থান নেয়। সেখান থেকেও পুলিশ তাদের সরিয়ে দেয়।
শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবিগুলো হলো ৫০ নাম্বারে পরীক্ষা নেয়া, পরীক্ষা কমপক্ষে দুই মাস পিছিয়ে দেয়া, ডেঙ্গু পরিস্থিতিতে পরীক্ষা স্থগিত করা এবং আইসিটি পরীক্ষা বাদ দেওয়া।
আন্দোলনকারী ছাত্রদের একজন শামীম হাসান দাবি করেন, তারা ঢাকা বোর্ডের পরীক্ষার্থীরা দুইদিন ধরে আন্দোলন করলেও অন্যান্য বোর্ডে আগেই আন্দোলন শুরু হয়েছে। তার কথা,"আমরা পুরো দুই বছর পড়ার সুযোগ পাইনি। আর আমাদের আগের ব্যাচকে আইসিটি পরীক্ষা দিতে হয়নি। আমরা কেন দেব? আর পুরো সিলেবাস শেষ না করে আমাদের কেন ১০০ নাম্বারে পরীক্ষা দিতে হবে? আমরা এসএসসি পরীক্ষা করোনার কারণে মাত্র তিন বিষয়ে দিয়েছি। এখন এত চাপ আমরা নেব কীভাবে?”
আরেকজন পরীক্ষার্থী মেহেরীন আশা বলেন,"আমাদের পরীক্ষা না পেছালে সব পরীক্ষা ৫০ নাম্বারে নিতে হবে। প্রশ্ন একই থাকবে আমরা অর্ধেক প্রশ্নের উত্তর দিব। আর ১০০ নাম্বারে পরীক্ষা নিতে হলে দুই মাস পরীক্ষা পিছিয়ে দিতে হবে।”
জিহাদ আহমেদ নামে আরেকজন শিক্ষার্থীর কথা, "অনেক প্রতিষ্ঠানে আইসিটির শিক্ষক নেই। আমাদের আইসিটি ঠিকতম পড়ানো হয়নি। আমরা এই পরীক্ষাটি বাতিল চাই। আর এখন ডেঙ্গু মহামারি আকার ধারণ করেছে। অনেক পরীক্ষার্থী ডেঙ্গু আক্রান্ত। তাই পরীক্ষা পেছাতে হবে।”
শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলন কয়েকটি ফেসবুক গ্রুপের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। কোনো কমিটি নেই। আন্দোলনকারীরা জানান,"বড় ভাইরা আমাদের সহায়তা করছেন। তারা কয়েকটি ফেসবুক গ্রুপে কর্মসূচি দিচ্ছেন। শিক্ষার্থীরা সেভাবে হাজির হচ্ছেন। আর কোচিং ও গাইড বই প্রকাশের সঙ্গে যুক্ত কয়েকটি প্রতিষ্ঠান তাদের কর্মসূচি ধারাবাহিকভাবে তাদের ফেসবুক গ্রুপে লাইভ করছে। অ্যাসপেক্ট নামে একটি গাইডবই প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের রায়হান আহমেদ জানান,"শিক্ষার্থীরা যেহেতু আন্দোলন করছে তাই আমরা লাইভ করছি। তাদের নিয়েই যেহেতু আমাদের প্রকাশনা ব্যবসা তাই তাদের সহায়তা করছি।”
ঢাকার একজন শিক্ষক আহসানুল ইসলাম বলেন,"শুরুতে এই ব্যাচের কিছু ক্লাস আমাদের অনলাইনে নিতে হয়েছে। কারণ তখন করোনা ছিল। তবে পরে সশরীরে ক্লাস হয়। আমরা পুরো সিলেবাস শেষ করিয়েছি। পরীক্ষা পেছানো বা কম নাম্বারে পরীক্ষা নেয়ার দাবির কোনো যুক্তি আমি দেখি না।”
শিক্ষার্থীরা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছে তাদের লিখিত দাবি দিয়েছে বলে তারা জানিয়েছেন। তারা তাদের দাবি কিছুটা শিথিল করেছে। তারা এখন বলছে ১৭ আগস্টে পরীক্ষা যদি ৫০ নাম্বারের মধ্যে হয় তাহলে তারা আন্দোলন বন্ধ করবে, পরীক্ষা দেবে। ১০০ নাম্বারে নিলে দুই মাস পেছাতে হবে।”
এদিকে সচিবালয়ে মঙ্গলবার শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপুমনি সব বোর্ডের চেয়াম্যানকে নিয়ে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে ১৭ আগস্টেই পরীক্ষা শুরু হবে, পরীক্ষা পেছানো হবে না। আইসিটি ছাড়া সব বিষয়ে ১০০ নম্বরেই পরীক্ষা হবে। আইসিটি পরীক্ষা হবে ১০০ নাম্বারের পরিবর্তে ৭৫ নাম্বারের মধ্যে। রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. কামরুল ইসলাম ডয়চে ভেলেকে জানান, "আইসিটি পরীক্ষা ১০০ নাম্বারের পরিবর্তে ৭৫ নাম্বারের মধ্যে হবে। আগে বড় প্রশ্ন আটটির মধ্যে পাঁচটির উত্তর দিতে হত, এবার দিতে হবে তিনটির, ৩০ নাম্বার। আর এমসিকিউ ২৫টির পরিবর্তে ২০টি জবাব দেবে, নম্বর ২০। আর ২৫ নম্বর ব্যাবহারিক। মোট ৭৫ নম্বর।”
তিনি বলেন,"পরীক্ষা পেছানো বা ৫০ নাম্বারে পরীক্ষা নেয়ার দাবির কোনো যুক্তি নেই। তাদের কোর্স পুরো পড়ানো হয়েছে। আসলে তাদের পিছন থেকে কোনো মহল উসকে দিচ্ছে। তাদের সঙ্গে বহিরাগতরা আছে। সোমবার প্রেসক্লাবের সামনে মাইক্রোবাসে করে বহিরাগতরা গিয়ে আন্দোলনে যোগ দিয়েছে বলে রিপোর্ট আছে।”
তার কথা ,"আইসিটি পরীক্ষাও ১০০ নম্বরেই হওয়া উচিত ছিল। তারপরও মন্ত্রী মহোদয় বলেছেন আচ্ছা ওদের একটু ছাড় দিই। তাই ৭৫ নম্বরে করা হয়েছে।”
"কোনো ভাবেই পরীক্ষা পেছানো হবেনা এবং ১০০ নম্বরেই পরীক্ষা হবে” জানিয়ে তিনি সবাইকে পড়ার টেবিলে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানান।

‘পরীক্ষা পেছানো বা ৫০ নাম্বারে পরীক্ষা নেয়ার দাবি অযৌক্তিক’

This browser does not support the audio element.

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ