1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

শিশুর জন্য ল্যাপটপ

৭ জুলাই ২০১২

পেরুর প্রতিটি শিশুর হাতে প্রযুক্তির আশীর্বাদ পৌঁছে দেওয়ার উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে দেশটির সরকার৷ তবে প্রায় আট লাখ কমদামি ল্যাপটপ বিতরণের এই প্রকল্পের যথার্থ ফল নিয়ে বিতর্ক রয়েই গেছে৷

The small boy © Andrei Vorobiev #4357425
ছবি: Fotolia

‘শিশুপ্রতি একটি ল্যাপটপ' নামের এই প্রকল্প বাস্তবে রূপ দিতে পেরুর সরকারকে খরচ করতে হয়েছে প্রায় ২০ কোটি ডলার৷ কিন্তু প্রযুক্তি সম্প্রসারণে এমন বিশাল উদ্যোগের যথার্থ উপযোগিতা নিয়ে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব পরিলক্ষিত হচ্ছে৷

শিশুদের এই ল্যাপটপ ব্যবহার নিবিড়ভাবে শেখানোর জন্য এখনও ভালোভাবে প্রশিক্ষিত হয়ে উঠেননি গ্রামাঞ্চলের শিক্ষকরা৷ নানা সফটওয়ার চালু এবং ব্যবহারের ক্ষেত্রে জটিলতা এখনও দূর করা সম্ভব হচ্ছে না৷ এমনকি অনেকের জন্যই ল্যাপটপের সাথে ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়ার কোন সুযোগ নেই৷ প্রকল্পের নিয়মের আওতায় অনেক শিশু তাদের ল্যাপটপ নিজ বাড়িতে নিয়ে যেতে পারেনি৷ আবার অনেক বিদ্যালয়ে ল্যাপটপ ব্যবহার করার জন্য প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ সরবরাহ নেই৷

পেরুর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এই প্রকল্পের তদারককারি কর্মকর্তা সান্দ্রো মারকোনি স্বীকার করেছেন যে, প্রকৃতপক্ষে শিক্ষকদের এজন্য প্রস্তুত না করেই তাদের ল্যাপটপগুলো বিতরণের কাজ সম্পন্ন করতে হয়েছে৷

কমদামি এবং শিক্ষা কার্যক্রমের জন্য উপযোগী ল্যাপটপ বিতরণের কর্মসূচি অবশ্য পেরুতেই প্রথম নয়৷ বরং বিশ্বের বেশ কিছু দেশেই এমন কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে৷ ইন্টেল করপোরেশন জানিয়েছে, তারা আর্জেন্টিনার জন্য ৭০ লাখেরও বেশি ল্যাপটপ সরবরাহ করেছে৷ এছাড়া ভেনেজুয়েলা একটি পর্তুগিজ প্রতিষ্ঠানের তৈরি এরকম কমদামি ১৬ লাখ ল্যাপটপ বিতরণ করেছে৷

ছবি: picture-alliance/dpa

‘শিশুপ্রতি একটি ল্যাপটপ' নামের এই উদ্যোগের ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন এমআইটি মিডিয়া ল্যাব এর প্রতিষ্ঠাতা নিকোলাস নেগরোপোন্তে৷ উন্নয়নশীল দেশগুলোর শিশুদের দারিদ্র্যের করাল গ্রাস থেকে মুক্ত করতে এটি ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে উদ্যোক্তারা মনে করেন৷ এ লক্ষ্যে ২০০৭ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ৪৬টি দেশের শিশুদের মাঝে প্রায় ২৫ লাখ ল্যাপটপ বিতরণ করা হয়েছে৷ এগুলোর মধ্যে নিচের শ্রেণির শিশুদের জন্য সবুজ-সাদা মডেলের এবং বড় শিশুদের জন্য একটু বড় আকারের কি-বোর্ড-ওয়ালা নিল-সাদা মডেলের ল্যাপটপ দেওয়া হয়েছে৷

তবে পেরু যতো বেশি সংখ্যক ল্যাপটপ বিতরণ করেছে, ততো বেশি ল্যাপটপ আর কোন দেশ বিতরণ করেনি৷ ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়ুয়া সফটওয়ার প্রকৌশলী জেফ পাজের বলেন, ‘‘এটা খুবই চমৎকার উদ্যোগ৷'' ২০১০ সালে পেরুর করদিয়েরা ব্লাঙ্কা অঞ্চলের বিদ্যালয়গুলোতে ঘুরে ঘুরে ল্যাপটপ চালু ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজে সহায়তা করেছেন তিনি৷ পাজের'ও স্বীকার করেন যে, এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এমন কিছু শিক্ষক রয়েছেন যারা যথেষ্ট দক্ষ নয়৷

পেরুর গ্রামাঞ্চলের ৩১৯টি বিদ্যালয় ঘুরে এই প্রকল্পের উপযোগিতা ও কার্যকারিতার উপর একটি প্রতিবেদন তৈরি করেন ইন্টার-অ্যামেরিকান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের গবেষকরা৷ তাদের মন্তব্য, ‘‘এই কর্মসূচির দৃশ্যমান কার্যকারিতা নেই বললেই চলে৷'' এই গবেষক দলের অন্যতম সদস্য চিলির ইউজেনিও সেভেরিন বলেন, ‘‘শুধুমাত্র প্রযুক্তি অবস্থার পরিবর্তন করে দেবে কিংবা শিক্ষার উন্নতি ঘটাবে এমন ধারণাকে নাকচ করে দিয়েছে এখানকার অবস্থা ও পর্যবেক্ষণ৷''

তাঁদের গবেষণায় বলা হয়েছে, প্রতিটি শিশুকে এভাবে ল্যাপটপ দেওয়ার ফলে শিশুদের অঙ্ক কিংবা ভাষা জ্ঞান, শ্রেণিকক্ষের পড়াশোনা, বাড়ির কাজ কিংবা লেখাপড়ার অভ্যাসের ক্ষেত্রে কোন উন্নতি দেখা যায়নি৷ অবশ্য ইতিবাচক দিক হিসেবে লক্ষ্য করা গেছে যে, কম্পিউটারের সাথে শিশুদের পরিচয় ঘটেছে, যুক্তিবিন্যাস, বাক সাবলীলতা এবং তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে তাদের বেশ উন্নতি হয়েছে বলে উল্লেখ করেন সেভেরিন৷

এএইচ / জেডএইচ (এপি)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ