1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পোলিও রোগের প্রত্যাবর্তন

গুডরুন হাইসে/আরবি১১ নভেম্বর ২০১৩

পোলিও হলে হাত ও পা অসাড় হয়ে যায় মানুষের৷ বিশেষ করে শৈশবেই দেখা দেয় রোগটি৷ বড় হতে হতে ভালোও হয়ে যায় অনেকের৷ তবে অনেক বছর পর আবার দেখা দিতে পারে অসুখটি৷ যাকে বলা হয় পোস্ট-পোলিও-সিনড্রোম৷

Ein Rollstuhlfahrer sitzt am 3. September 2009 im Transportbus der BTZ (Behinderten-Transporte Zuerich), die ihn vor seiner Haustuere abgeholt haben. Die BTZ bieten Fahrgaesten im Rollstuhl begleitete und kostenguenstige Mobilitaet. Die BTZ-Spezialfahrzeuge verkehren auf Bestellung im gesamten Raum Zuerich. Sie fahren zur vereinbarten Zeit direkt vor die Haustuer.
ছবি: Picture-Alliance/KEYSTONE

এমনকি ৩০/৪০ বছর পরেও মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে পারে রোগটি৷ পোলিও এমন একটি অসুখ, যাতে কিছু স্নায়ু ক্ষতিগস্ত হয়৷ ফলে হাত ও পায়ে অসাড়তা দেখা দেয়৷ এই অবস্থায় অন্যান্য স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত স্নায়ুর কাজটি হাতে নেয়৷ এর ফলে বেশ অনেক বছর ভালোই কাটতে পারে৷ কিন্তু কোনোও এক সময় অতিরিক্ত চাপ পড়ে যেতে পারে৷ বলেন কোবলেনৎস শহরের পোলিও সেন্টারের ড. আক্সেল রুয়েটৎস৷ তাঁর ভাষায়, ‘‘নতুন করে আবার অসাড়তা দেখা দেয়৷ ভুক্তভোগীদের মধ্যে যারা তাদের রোগটিকে অনেকটা আয়ত্তে আনতে পেরেছিলেন, তারা ৩০/৪০ বছর পর হঠাৎ লক্ষ্য করেন অসুখটি আবার ফিরে আসতে শুরু করেছে৷ যাকে পোস্ট-পোলিও-সিনড্রোম বলা হয়৷''

দায়ী পোলিও ভাইরাস

পোলিও ভাইরাসের মাধ্যমে সংক্রমিত হয় অসুখটি৷ মুখ ও নাকের মাধ্যমে বিস্তৃত হয় এটি৷ ছোট্ট এক ফোঁটা থুতুই বিস্তার লাভ করার জন্য যথেষ্ট৷ এছাড়া ছোঁয়াছুঁয়ির মাধ্যমেও সংক্রমিত হতে পারে অসুখটি৷ মুখ থেকে জীবাণুটি অন্ত্রে চলে আসে৷ পরে রক্তনালীতে ঢোকে৷ সাধারণত অসাড়তা দেখা দেয় আড়াআড়িভাবে৷ ডান পা বা দিকের বাহু৷ বা পা ডান বাহু আক্রান্ত হয়৷

বিশ্বের অনেক দেশে এখনও পোলিও থাবা বিস্তার করে চলেছেছবি: picture-alliance/dpa

পোলিও ভাইরাসে আক্রান্ত অধিকাংশ মানুষেরই তেমন কোনো লক্ষণ দেখা যায় না৷ প্রায় ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রেই এমনটি হয়ে থাকে৷ বলা যায় তাদের দেহে পোলিও ভাইরাস প্রতিরোধী শক্তি রয়েছে৷ তবে এই ভাইরাসেরও আবার নানা প্রকার রয়েছে৷ যেগুলি শক্তিশালী৷ তাই পোলিও ভাইরাসের হাত থেকে রক্ষা পাবার একমাত্র উপায় হলো টিকা দেওয়া৷ ১৯৬০ সালের প্রথম দিক থেকে বাচ্চাদের এই টিকা দেওয়া হচ্ছে৷ জার্মানি ১৯৯৮ সাল থেকে পোলিও মুক্ত৷ ইউরোপের অন্যান্য দেশেও পোলিও নির্মূল হয়েছে৷ তবে বিশ্বের অনেক দেশে এখনও পোলিও থাবা বিস্তার করে চলেছে৷ যেমন আফ্রিকা ও এশিয়ার বহু দেশে৷ এর মধ্যে পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও ভারতের নাম করা যায়৷

আবার ফিরে আসে রোগটি

পোলিওতে আক্রান্তদের মধ্যে যাঁরা আরোগ্য লাভ করেছেন বলে ধরে নিয়েছিলেন, বছরের পর বছর পোলিওর কোনো লক্ষণই যাঁদের মধ্যে দেখা যায়নি, তাঁদের অনেকেই হঠাৎ করে পোস্ট-পোলিও-সিনড্রোমে আক্রান্ত হন৷ যেমনটি দেখা যায় হান্স ইওয়াখিম ভ্যোবেকিং-এর ক্ষেত্রে৷ তাঁর বয়স তখন তিন৷ যখন রোগটি মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে৷ ১৯৫২ সালের ঘটনা এটি৷ সম্পূর্ণ শরীর আসাড় হয়ে পড়ে তাঁর৷ এমনকি নিঃশ্বাস প্রশ্বাসও নিতে হতো যন্ত্রের সাহায্যে৷ বছর দেড়েক পর আবার কিছুটা সুস্থ বোধ করতে শুরু করেন ইওয়াখিম৷ সাধারণ স্কুলে ভর্তি হন৷ তবে বাচ্চাদের ঠাট্টা বিদ্রুপের শিকারও হতে হয়েছে তাঁকে৷ ল্যাংড়া, খোঁড়া এসব বলা হতো তাঁর উদ্দেশ্যে৷

অতিরিক্ত চাপ অনেকাংশে দায়ী

আজ এটা জানা গেছে অতিরিক্ত চাপের ফলে পোস্ট-পোলিও-সিনড্রোম দেখা দেয়৷ ভুক্তভোগীরা নানা চড়াই-উৎরাই পার হয়ে যখন কিছুটা সুস্থ বোধ করেন, তখন রোগটি আবার ফিরে আসে৷ ইওয়াখিমের ক্ষেত্রে আক্রান্ত হয়েছিল ডান পা৷ সুস্থ বা পা-টি প্রায় দশ সেন্টিমিটার লম্বা হয়ে পড়ে৷ প্রথম দিকে অর্থপেডিক জুতা দিয়ে ভারসাম্য আনার চেষ্টা করা হয়৷ ১৯৮০ সালে অপারশন করে বা পা-টি ছোট করা হয়৷ ‘‘এই প্রথম দোকানে গিয়ে সাধারণ জুতা কেনার সুযোগ হয় আমার৷ অপূর্ব এক অনুভূতি৷'' জানান ইওয়াখিম৷ কয়লা খনির ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে অনেক বছর খনির ভেতরেও কাজ করতে হয়েছে তাঁকে৷ হাতুরি বাটালি নিয়ে কাজ করতে না হলেও পর্যবেক্ষেণের কাজ করেছেন তিনি৷ হামাগুড়ি দেওয়া, মই বেয়ে ওঠা নামা করা এসব বাদ যায়নি৷ তবে শেষ দিকে কষ্টকর হয়ে ওঠে কাজটি৷ বেশ কিছুদিন পর রোগটি শনাক্ত করা হয়৷ পোস্ট-পোলিও-সিনড্রোম৷ শ্বাসকষ্ট ও ঘুমের অসুবিধা দেখা দেয় তাঁর৷ প্রায়ই ক্লান্তি ঘিরে আসতো৷ আজ তিনি বুঝেছেন, কাজের ব্যাপারে একটু বাড়াবাড়িই করে ফেলেছেন৷ ১৯৯৫ সাল থেকে হুইল চেয়ারে আবদ্ধ এই মানুষটি৷

এমনকি ৩০/৪০ বছর পরেও মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে পারে রোগটিছবি: picture alliance/IMAGNO/Austrian Archives

একটি বিরল ব্যাধি

জার্মানিতে প্রায় ৭০০০০ মানুষ পোস্ট-পোলিও-সিনড্রোমে আক্রান্ত৷ সংখ্যাটা তেমন বেশি নয় বলে বিরল অসুখের মধ্যে পড়ে এটি৷ আর এই কারণে রোগটি নিয়ে গবেষণাও তেমন হচ্ছে না৷ বিশেষ কোনো বইপত্রও নেই অসুখটি সম্পর্কে৷ মেডিকেলের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য নেই কোনো বিশেষ লেকচারের ব্যবস্থা৷

২০০১ সালে ড. আক্সেল রুয়েটৎস কোবলেনৎস শহরে পোস্ট-পোলিও-সিনড্রোমে আক্রান্ত রোগীদের জন্য বহির্বিভাগে চিকিত্সা শুরু করেন৷ এই ধরনের ব্যবস্থা এখন পর্যন্ত এটিই একমাত্র৷ গণমাধ্যমে প্রচার হওয়ার ফলে বছরে প্রায় ৫০০ রোগী যাচ্ছেন সেখানে৷ রোগীরা বিশেষ থেরাপি সম্পর্কে জানতে চান৷ কিংবা জানতে চান শ্বাস নিতে কীভাবে সাহায্য পাওয়া যায়৷ তবে পোস্ট-পোলিও-সিনড্রোম রোগটিকে বিলম্বিত করে কিংবা থামাতে পারে এমন কোনো ওষুধ এখন পর্যন্ত বের হয়নি৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ