পোল্যান্ডে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র, দায় নেয়নি মস্কো, তোলপাড় বিশ্ব
১৬ নভেম্বর ২০২২
পোল্যান্ডে গিয়ে রাশিয়ার তৈরি একটি ক্ষেপণাস্ত্র আছড়ে পড়ার পর তোলপাড় গোটা বিশ্ব। পোল্যান্ডের পাশে ন্যাটো।
বিজ্ঞাপন
ইউক্রেনের পর এবার কি পোল্যান্ড? নাকি ইউক্রেনে আঘাত হানতে চাওয়া ক্ষেপণাস্ত্র পোল্যান্ডে গিয়ে পড়েছে? ইউক্রেন সীমান্তে পোল্যান্ডের গ্রামে রাশিয়ায় তৈরি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায়দুইজনের মৃত্যু হওয়ার পর এই প্রশ্নগুলি উঠেছে। তবে রাশিয়া জানিয়েছে, তারা ওই ক্ষেপণাস্ত্রের বিষয়ে কিছুই জানে না। ইউক্রেনও বলেছে, তারা ক্ষেপণাস্ত্র-হামলা করেনি। এই অবস্থায় অ্যামেরিকা-সহ ইউরোপের দেশগুলি পোল্যান্ডের পাশে দাঁড়িয়েছে।
কী হয়েছে?
মঙ্গলবার বিকেলে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ইউক্রেন সীমান্তের কাছে পোল্যান্ডে গিয়ে পড়ে। ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে দুইজনের মৃত্যু হয়।
এরপরই পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জরুরি বৈঠক ডাকেন। তিনি প্রতিরক্ষা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন। সরকারি মুখপাত্র জানিয়েছেন, সংকটজনক পরিস্থিতির মোকাবিলা করার জন্য এই বৈঠক ডাকা হয়েছিল।
এরপরই পোল্যান্ডের সেনাকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে সতর্ক করে দেয়া হয়। রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতকে ডেকে পাঠিয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়।
রাশিয়ার প্রতিক্রিয়া
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, এটা মিথ্যা প্রচার। রাশিয়া ওই এলাকায় কোনো ক্ষেপণাস্ত্র-হামলা করেনি। ফলে এর দায় নেয়ার কোনো প্রশ্নই নেই। মস্কোর দাবি, এই প্রচার ইচ্ছে করে উসকানি দেয়া ছাড়া আর কিছু নয়।
পরে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেশকভ বলেন, তার কাছে এই ব্যাপারে কোনো তথ্যই নেই।
ইউক্রেনের দাবি
ইউক্রেন জানিয়েছে, তাদের কোনো ক্ষেপণাস্ত্র পোল্যান্ডে গিয়ে পড়েনি। এনিয়ে মিথ্যা রটনা চলছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেছেন, রাশিয়াই পোল্যান্ডে ক্ষেপণাস্ত্র-হামলা করেছে। তিনি জানিয়েছেন, ''আমরা দীর্ঘদিন ধরে এই আশঙ্কা করছিলাম। সন্ত্রাস কেবল আমাদের সীমানায় সীমাবদ্ধ থাকবে না। বাড়বে। রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পোল্যান্ডে আঘাত করেছে। ন্যটোর দেশে গিয়ে পড়েছে। অসম্ভব গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা।''
কিয়েভ-সহ অনেক শহরে আছড়ে পড়েছে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র। রাশিয়ার যুদ্ধবিমান থেকে বোমা ফেলা হচ্ছে। রাশিয়ার হামলার পর ইউক্রেনের একটি শহরের ছবি। আগুন জ্বলছে।
ছবি: picture alliance/dpa/Mary Ostrovska/AP
গোলার তাণ্ডব
ইউক্রেনের শহর মারিয়াপোল। রাশিয়ার কামান থেকে ছোড়া গোলার আঘাতে বাড়ি ভেঙেছে। গাড়ি নষ্ট হয়েছে। ইউক্রেনের অনেক শহরের ছবি এরকমই।
ছবি: Sergei Grits/AP/picture alliance
বোমার আঘাতে
পূর্ব ইউক্রেনের চুগুয়েভ শহরের ছবি। বোমার আঘাতে বাড়ির একাংশ ভেঙে পড়েছে। তারপর সেখানে এসেছেন মানুষ। খুঁজছেন হারানো জিনিস। এবার কোথায় যাবেন, তা-ই ভাবছেন।
ছবি: Aris Messinis/AFP/Getty Images
বিপন্ন মানুষ
চুগুয়েভের আরেকটি দৃশ্য। বোমার আঘাতে বাড়ি ভেঙেছে। গাড়ি আর চলার অবস্থায় নেই। তার কাছেই মাথায় হাত দিয়ে বসে আছেন এক বিপন্ন ব্যক্তি।
ছবি: Aris Messinis/AFP/Getty Images
আগুন জ্বলছে
কিয়েভের কাছে রাশিয়ার হামলায় গুঁড়িয়ে গেছে বেসরকারি বাড়ি। সেখানে তখনো আগুন জ্বলছে। কিয়েভে একের পর এক রুশ ক্ষেপণাস্ত্র আছড়ে পড়েছে।
ছবি: Efrem Lukatsky/AP/picture alliance
সামরিক ঘাঁটিতে আঘাত
ইউক্রেনের একটি সামরিক ঘাঁটিতে আঘাত হেনেছে রাশিয়া। তারপর সেখান থেকে বের হওয়া কালো ধোঁয়া চারপাশ ঢেকে দিয়েছে।
ছবি: Evgeniy Maloletka/AP/picture alliance
বিমানঘাঁটি দখলের লড়াই
কিয়েভের ঠিক বাইরে একটি বিমানঘাঁটি দখল করার চেষ্টা করছে রাশিয়া। তীব্র লড়াই চলছে। তার আশপাশের এলাকায় বোমা ফেলেছে রাশিয়া। তেমনই একটি এলাকার ছবি।
ছবি: DANIEL LEAL/AFP
ধ্বংসের চেহারা
কিয়েভের বাইরে রাশিয়ার আক্রমণের পরের ছবি। চারপাশে শুধু ছড়িয়ে থাকা ধ্বংসের ছবি।
ছবি: Efrem Lukatsky/AP/picture alliance
ট্রেন ধরার জন্য
কিয়েভের মানুষ ট্রেন ধরার জন্য একটি সাবওয়েতে ছুটছেন। তারা দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে চান। রাশিয়ার হামলার মুখে অসহায় বোধ করছেন তারা।
ছবি: Emilio Morenatti/AP/dpa/picture alliance
বাসে ওঠার ভিড়
বাসে করে কিয়েভ থেকে দূরে যাওয়ার জন্য মরিয়া মানুষের ভিড়।
ছবি: Emilio Morenatti/AP/dpa/picture alliance
হামলার হাত থেকে বাঁচতে
রাশিয়ার হামলার হাত থেকে বাঁচতে সাবওয়েকে নিরাপদ মনে করছেন অনেকে। সেখানেই থাকছেন তারা।
ছবি: Emilio Morenatti/AP/dpa/picture alliance
11 ছবি1 | 11
বাইডেনের আশ্বাস
পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট ডুডা ফোনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে কথা বলেন। বাইডেন তাকে আশ্বস্ত করে বলেছেন, এই ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে পোল্যান্ড যে তদন্ত করবে, তাতে অ্যামেরিকা পূর্ণ সাহায্য করবে।
ন্যাটো প্রধান স্টলটেনবার্গের সঙ্গে বাইডেন কথা বলেছেন। বুধবার ন্যাটোর জরুরি বৈঠক হতে পারে।
ন্যাটো কী করবে?
পোল্যান্ডে রুশ ক্ষেপণাস্ত্রের খবর আসার পর জি২০ বৈঠকের ফাঁকে একবার আলোচনায় বসেছেন ন্যটো দেশগুলির রাষ্ট্রপ্রধানরা। বুধবার ন্যাটো জরুরি বৈঠকে বসতে পারে।
ন্যাটো চুক্তির পাঁচ নম্বর অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, এই গোষ্ঠীর কোনো দেশ আক্রান্ত হলে যৌথভাবে তার মোকাবিলা করা হবে। তবে ন্যাটো কোনো পদক্ষেপ নেয়ার আগে দেখা হবে, এই ক্ষেপণাস্ত্র-হামলা কি ইচ্ছাকৃত, নাকি, অনিচ্ছাকৃত দুর্ঘটনা?
ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের কেন্দ্রে অবস্থিত শেভচেঙ্কিভস্কি এলাকায় সোমবার সকালে ‘বেশ কয়েকটি’ বিস্ফোরণ হয়েছে বলে জানিয়েছেন কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিচকো৷ তিনি বলেন, এমন সব ভবনে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়েছে যেগুলো ‘জরুরি অবকাঠামোর’ অন্তর্গত৷
ছবি: Adam Schreck/AP Photo/picture alliance
অনেকদিন পর অশান্ত
ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর দিকে কিয়েভের কিছু অংশে হামলা হয়েছিল৷ এরপর পরিস্থিতি শান্ত ছিল৷ সেখানে সবশেষ হামলা হয়েছিল ২৬ জুন৷
ছবি: Valentyn Ogirenko/REUTERS
হতাহত
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কি জানান, ইউক্রেনজুড়ে হামলায় হতাহতের ঘটনা ঘটেছে৷ পুলিশ জানিয়েছে, কিয়েভে হামলায় এখন পর্যন্ত পাঁচজন নিহত ও ১২ জন আহত হয়েছেন৷
ছবি: Adam Schreck/AP Photo/picture alliance
অন্য শহরেও বিস্ফোরণ
কিয়েভ ছাড়াও লাভিভ, ট্যার্নোপিল ও দিনিপ্রো এলাকায়ও হামলা হয়েছে৷ পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকা লাভিভের গভর্নর ম্যাক্সিম কোজিতস্কি এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘‘লাভিভ এলাকার কয়েকটি জ্বালানি অবকাঠামোতে হামলা হয়েছে৷’’ ছবিটি প্রতীকী হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে৷
ছবি: Stringer/AA/picture alliance
ক্ষেপণাস্ত্র হামলা
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের উপ-প্রধান কিরিলো টিমোশঙ্কো বলেছেন, ‘‘ইউক্রেনে মিসাইল হামলা হচ্ছে৷ আমাদের দেশের অনেক শহরে হামলার তথ্য পাচ্ছি৷’’
ছবি: Valentyn Ogirenko/REUTERS
শলৎস, মাক্রোঁর সঙ্গে কথা
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেছেন, তিনি হামলা নিয়ে জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁর সঙ্গে কথা বলেছেন৷ এ বিষয়ে জি সেভেনের জরুরি বৈঠক হওয়া প্রয়োজন বলে একমত হয়েছেন শলৎস ও জেলেনস্কি৷
ছবি: Thibault Camus/AP Photo/picture alliance
পুটিনের বক্তব্য
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন রোববার ক্রাইমিয়া ব্রিজে বিস্ফোরণের জন্য ইউক্রেনকে দায়ী করেছিলেন৷ একে সন্ত্রাসী হামলা বলেও আখ্যায়িত করেন তিনি৷
ছবি: Gavriil Grigorov/AP Photo/picture alliance
7 ছবি1 | 7
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক জানিয়েছেন, তিনি ব্রিটেনের পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। আন্তর্জাতিকক্ষেত্রে সহযোগী দেশের সঙ্গেও কথা হয়েছে। তিনি এই ক্ষেপণাস্ত্র-হামলার নিন্দা করেছেন।
পাশে জার্মানি
জার্মানির চ্যান্সেলর শলৎস পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি জানিয়েছেন, জার্মানি এই সময় পোল্যান্ডের পাশে আছে এবং ক্ষেপণাস্ত্র-হামলার নিন্দা করছে।
পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর আবেদন
প্রধানমন্ত্রী সবাইকে শান্ত থাকার আবেদন জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এখন সংযত থাকতে হবে ও সতর্ক থাকতে হবে।