1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বাংলাদেশে নারী শ্রমিকদের ভয়াবহ চিত্র

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

বাংলাদেশের তৈরি পোশাক কারখানায় কর্মরত নারী শ্রমিকদের শতকরা প্রায় ১৩ ভাগ যৌন হয়রানীর শিকার৷ শারীরিক নির্যাতনের শিকার ২০ ভাগ৷ মানসিক নির্যাতনের শিকার ৭১ ভাগেরও বেশি৷ আর এই নির্যাতনকারীর ভূমিকায় শীর্ষে রয়েছেন সুপারভাইজারার৷

Bangladesch Industriepark Ashulia Frauen Arbeiterin
ছবি: JEWEL SAMAD/AFP/Getty Images

‘এস্টেট অব রাইটস ইমপ্লিমেন্টেশন অব ওম্যান রেডিমেড গার্মেন্টস ওয়াকার্স' শিরোনামের এক গবেষণা প্রতিবেদনে নির্যাতনের ওই তথ্যের বাইরে অনেক অনিয়মের ঘটনাও উঠে এসেছে৷ অস্ট্রেলিয়ান ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের আর্থিক সহযোগিতায় ‘কর্মজীবী নারী: নামে একটি সংগঠন ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং কেয়ারের সহায়তায় ওই গবেষণাটি করে৷ বিভিন্ন ধরনের পোশাক কারখানার ১৫০ জন নারী শ্রমিকের মধ্যে গবেষণাটি পরিচালিত হয়৷ কর্মস্থলের পরিবেশ, চাকরির শর্ত  এবং কর্মক্ষেত্রে বৈষম্য – গবেষণায় মূলত এই বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দেয়া হয়৷

তাতে দেখা যায় ৩১ দশমিক ৩ ভাগ নারী শ্রমিকের কোনো নিয়োগপত্র নেই৷ ৫৩ দশমিক ৩ ভাগের নেই সার্ভিসবুক৷ তবে ৯৮ দশমিক ৭ ভাগের হাজিরা কার্ড আছে৷

শ্রম আইনের লঙ্ঘন করে শতকরা ৫০ ভাগকে ৯ থেকে ১০ ঘণ্টা কাজ করতে বাধ্য করা হয়৷ আর ৫০ ভাগ ১০ ঘণ্টারও বেশি৷ ওভারটাইম করা বাধ্যতামূলক এবং তা দিনে দুই ঘণ্টারও বেশি৷ বিশ্রামের কোনো সুযোগ পান না ৭০ ভাগ শ্রমিক৷ ২৫ দশমিক ৩ ভাগ সাপ্তাহিক ছুটি পান না৷

নাজমা আক্তার

This browser does not support the audio element.

নারী শ্রমিকদের ৮৪ দশমিক ৭ ভাগ মৌখিক হয়রানির শিকার হন৷ ৭১ দশমিক ৩ ভাগ শিকার হন  মানসিক নির্যাতনের৷২০ ভাগ শারীরিক নির্যাতনের কথা বলেছেন৷ আর যৌন নির্যাতন বা হয়রানির শিকার হন ১২ দশমিক ৭ ভাগ৷ আর এই নির্যাতনের  শতকরা ৫২ ভাগের জন্য তাঁরা দায়ী করেছেন পোশাক কারখানার সুপারভাইজারদের৷ নির্যাতনের শিকার ৩২ ভাগই জানেন না এর বিরুদ্ধে কোথায় অভিযোগ করতে হবে৷

এছাড়া কর্মস্থলে ডে কেয়ার সেন্টার ও বিশ্রামের জায়গা না থাকা, রাতে কাজের সময় নিরাপত্তা সংকটের কথাও উঠে এসেছে৷ ৭৪ দশমিক ৭ ভাগ নারী বলেছেন, তাঁদের রাতের পালায় কাজ করতে হয়৷ উঠে এসেছে নারীদের কর্মস্থলে স্বাস্থ্য ও মেটার্নিটি সেবার অপ্রতুলতার কথা৷

বাংলাদেশ সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের প্রধান নাজমা আক্তার ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘পোশাক কারখানায় যাঁরা শ্রমিক, তাঁদের অধিকাংশই নারী৷ আর যাঁরা সিদ্ধান্ত নেয়, তাঁরা পুরুষ৷ ফলে নারী শ্রমিকরা নানা ধরনের হয়রানি ও প্রতিকূল পরিবেশের মুখে পড়ে৷ আর নারীরা পোশাক কারখানায় নেতৃত্বের দিক দিয়ে অনেক দুর্বল৷ আরেকটা বিষয় হলো, নারীকে  পোশাক কারখানায় নারী হিসেবে নয়, শস্তা শ্রমিক হিসেবে বিবেচনা করা হয়৷ আর সেই বিবেচনার কারণে নারী নানা ধরনের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়৷''

শিরিন আখতার

This browser does not support the audio element.

তিনি বলেন, ‘‘সচেতন হওয়া এবং নারী শ্রমিকদের সংগঠিত হওয়া ছাড়া বৈষম্য ও নির্যাতন অবহেলা থেকে বাঁচার কোনো উপায় নাই৷''

গবেষণাকারী ‘কর্মজীবী নারী'র শিরিন আখতার ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমরা গবেষণাটি করেছিলাম পোশাক কারখানায় নারীদের অবস্থা জানতে৷ আর তাতে আমরা যে ভয়াবহ তথ্য পেয়েছি তাতে আমরা নিজেরাই বিস্মিত হয়েছি৷''

তিনি বলেন, ‘‘এটা মালিকদের মানসিকতার কারণে সৃষ্টি হয়েছে৷ তারা  নারী শ্রমিকদের কম মজুরিতেনিয়োগ করে৷ আর তাঁদের কাছ থেকে কাজ আদায় করতে যাঁদের নিয়োগ দেয়া হয়, তাঁদের যে কোনো উপায়ে অধিক কাজ আদায় করতে বলা হয়৷ ফলে নারীরা নির্যাতন, বৈষ্যম্যের শিকার হয়৷ আর পোশাক কারখানায় কর্মরত নারীরা বিকল্প কোনো কাজ জানেন না৷ তাই নানা নির্যাতনের শিকার হলেও তা প্রকাশ করেন না৷''

তিনি আরো বলেন, ‘‘নারী সুপারভাইজার নিয়োগ দিলেও কাজ হবে না৷ কারণ, তারা তো মালিকের আদেশ বাস্তবায়ন করবে৷ প্রয়োজন মালিকদের মানসিক অবস্থার পরিবর্তন৷ আর ট্রেড ইউনিয়নকে শক্তিশালী করার কোনো বিকল্প নাই৷''

শিরিন আখতার বলেন, ‘‘আমরা ওই গবেষণার পর কিছু সুপারিশও করেছি৷ কিন্তু তা কেউ আমলে নিচ্ছে না৷'' 

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ