1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
ব্যবসা-বাণিজ্য

পোশাক খাতে বিশেষ সুবিধা: সাড়া নেই সরকারের

সমীর কুমার দে ঢাকা
৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০

সবশেষ গত ৮ মাসের মধ্যে ৬ মাসই তৈরি পোশাক শিল্পের প্রবৃদ্ধি ঋণাত্মক৷ এই পরিস্থিতি থেকে সেক্টরকে বাঁচাতে চার হাজার কোটি টাকার আর্থিক সুবিধা চান গার্মেন্টস মালিকরা৷ সরকারের কাছ থেকে এখনো ইতিবাচক সাড়া মেলেনি৷

Bangladesch Textilfabrik Dhaka
ছবি: Reuters/A. Biraj

চলতি অর্থবছরে রপ্তানিতে নগদ সহায়তা বাড়ানোর পাশাপাশি আয়করও কমানো হয়েছে৷ এখন নতুন করে রপ্তানি পণ্যে স্থানীয় মূল্য সংযোজনের উপর বিনিময় হারে প্রতি ডলারে পাঁচ টাকা করে চেয়েছেন পোশাক শিল্প মালিকরা৷ এ সহায়তার পরিমাণ মোট প্রায় চার হাজার কোটি টাকা৷

গত জানুয়ারিতে পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ থেকে এমন একটি আবেদন করা হলেও এখনো ইতিবাচক সাড়া মেলেনি৷ তবে এখনো চূড়ান্ত কোন সিদ্ধান্ত হয়নি৷

বিজিএমইএ'র সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি ফারুক হোসেন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘সরকারের কাছ থেকে এখনো কোন সিদ্ধান্ত আসেনি৷ তবে অর্থমন্ত্রী ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছেন৷ আসলে আমরা প্রতি ডলারে যে ৫ টাকা করে চেয়েছি, সরকার হিডেন নানা ধরনের ট্যাক্স-ভ্যাট পেয়ে থাকে, এই টাকা তার মধ্যেই চলে যাবে৷ আমি মনে করি, এই সুবিধা যারা রপ্তানি করে তাদের সবারই পাওয়া উচিৎ৷ কারণ বিশ্ববাজারে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বেড়ে গেছে৷ আমাদের এখন টিকতে গেলে সরকারের বিশেষ সাপোর্ট দরকার৷ কারণ দেখেন এখন ‘নেগেটিভ গ্রোথ' চলছে এই অর্থবছরের ৭ মাসের মধ্যে ৫ মাসেই৷ এই অবস্থা থেকে উত্তরণের কোন পথও এই মুহুর্তে খোলা আছে বলে মনে হচ্ছে না৷''

সরকারের বিশেষ সাপোর্ট দরকার: ফারুক

This browser does not support the audio element.

গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানিকারকরা রপ্তানির বিপরীতে বিভিন্ন হারে নগদ সহায়তা পেয়ে আসছেন৷ চলতি বছর নতুন করে সব ধরনের রপ্তানিতে এক শতাংশ বিশেষ নগদ সহায়তা দেয়া শুরু করেছে সরকার৷ নগদ সহায়তার উপর উৎসে করও অর্ধেক কমিয়ে ১০ শতাংশের জায়গায় ৫ শতাংশ করা হয়েছে৷ অন্যদিকে রপ্তানিতে উৎসে কর এক শতাংশ থেকে কমিয়ে শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ (০.২৫%) কার্যকর করা হয়েছে৷ এর ফলে গার্মেন্টস খাত থেকেই সরকারের সম্ভাব্য রাজস্ব ছাড় হবে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা৷ ফলে রপ্তানিসহ বিভিন্ন খাতে ছাড় ও অব্যাহতি দেয়ায় সরকারের রাজস্বেও টান পড়েছে৷ চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এনবিআরের ঘাটতি প্রায় ৩১ হাজার কোটি টাকা৷

তবে দীর্ঘদিন ধরে একই খাতকে প্রণোদনা দিয়ে যাওয়া নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে অর্থনীতিবিদদের মধ্যে৷ অর্থনৈতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্ট্যাডিজ (বিআইডিএস) এর সিনিয়র ফেলো অর্থনীতিবিদ ড. নাজনীন আহমেদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এখন তারা বিশেষ সুবিধা পেলে, কয়েকদিন পর আরেকজন দাবি করবেন৷ ফলে রপ্তানির ক্ষেত্রে একটা ঝুঁকি তৈরী হবে৷ আসলে একচেঞ্জ রেটটা ঠিক করা দরকার৷ একটা দেশে একচেঞ্জ রেট নিয়ে বিশৃঙ্খলা থাকলে ঝুঁকি তৈরি হতেই পারে৷ সরকার যে সুবিধাই দিক, সেটা সবার জন্যই হওয়া উচিৎ৷ এতে পোশাক খাতও লাভবান হবে৷''

সুবিধা দিলে সবার জন্য হওয়া উচিৎ: নাজনীন

This browser does not support the audio element.

তিনি যোগ করেন, ‘‘আশঙ্কা হলো, আমদানিতে এর প্রভাব পড়বে৷ ভিয়েতনামের দিকে দেখেন, কাঁচামালের জন্য তাদের আমদানি নির্ভরতা ৯০ শতাংশ, যেটি আমাদের দেশে ২৫ শতাংশের মতো৷ তাই আমদানি ব্যয় বাড়ার চেয়ে আমরা যে রপ্তানিতে প্রতিযোগিতার সক্ষমতা হারাচ্ছি তার তুলনা করলে মোটের ওপর ডলারের একচেঞ্জ রেটটা পরিবর্তন করা দরকার৷’’

বিজিএমইএ'র পাঠানোর চিঠিতে ডলারের শক্তিশালী অবস্থানের ফলে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগী সক্ষমতায় পিছিয়ে পড়ার বিষয়টি তুলে ধরা হয়৷ গত সাত বছরে ডলারের বিপরীতে প্রতিযোগী দেশগুলোর মুদ্রার অবমূল্যায়নের চিত্র তুলে ধরে বলা হয়, প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ায় চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে পোশাক রপ্তানি কমেছে পৌনে আট শতাংশ৷ এ পরিস্থিতিতে তৈরি পোশাক খাতের সুরক্ষার জন্য পোশাক রপ্তানির স্থানীয় পর্যায়ে মূল্য সংযোজনের ওপর (রপ্তানি মূল্যের ২৫ শতাংশ) ডলার প্রতি বিনিময় হারে অতিরিক্ত ৫ টাকা করে দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়৷

গত কয়েক মাস ধরে গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানি কমে গেছে৷ সর্বশেষ জানুয়ারি মাসেও রপ্তানি কমেছে৷ এটি নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে৷ এর ফলে সার্বিকভাবে অর্থনীতিতেও নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে৷ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো'র (ইপিবি) হিসাবে, চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানি কমেছে পূর্বের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ১১৫ কোটি মার্কিন ডলার৷ স্থানীয় মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় ৯ হাজার ৮০০ কোটি টাকা৷ গত সপ্তাহে বানিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সী সংসদে বলেছেন, ৬৩টি গার্মেন্টস একেবারে বন্ধ হয়ে গেছে৷ এতে প্রায় ৩৩ হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছেন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ