1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

প্যারিসের পুড়ে যাওয়া গির্জা পুনর্গঠনের কর্মযজ্ঞ

২৬ মে ২০২৩

আইফেল টাওয়ারের মতো এক ডাকে না চিনলেও নোত্র দাম গির্জা প্যারিসের অন্যতম প্রতীক৷ ২০১৯ সালের এপ্রিল মাসে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ব্যাপক ক্ষতির পর পুনর্গঠনের কাজ পুরোদমে চলছে৷ কাচের জানালা আবার আগের মহিমায় ফিরিয়ে আনা হচ্ছে৷

প্যারিসের অন্যতম প্রতীক নোত্র দাম গির্জা৷
২০১৯ সালে প্যারিসের অন্যতম প্রতীক নোত্র দাম গির্জায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড হয়েছিল৷ছবি: Getty Images/AFP/G. van der Hasselt

ফ্লাভি ভ্যাঁসঁ-প্যুতি অত্যন্ত আলতোভাবে কাজের প্রস্তুতি নিচ্ছেন৷ মাস্টার গ্লাস মেকার হিসেবে তিনি প্যারিসের নোত্র দাম গির্জার জানালার মেরামতি করছেন৷ সেইসঙ্গে অগ্নিকাণ্ডের ফলে সৃষ্টি হওয়া কালির ছোপও দূর করতে হচ্ছে৷

যত দ্রুত সম্ভব গির্জাটি আবার সাধারণ মানুষের জন্য খুলে দেওয়ার পরিকল্পনার কারণে তাঁকে বেশ চাপের মধ্যে কাজ করতে হচ্ছে৷ সে কারণে তাঁরা দুটি শিফটে কাজ করছেন৷ সকাল ছয়টা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত কাজ চলছে৷ ভ্যাঁসঁ-প্যুতি বলেন, ‘‘এই দুঃস্বপ্ন মেরামত করা সত্যি অনবদ্য অভিজ্ঞতা৷ কারণ সাধারণত আমরা আরও বেশি সময় ধরে কাজ করি৷ কিন্তু এখানে তো এক ধরনের জরুরি অবস্থা বলা চলে৷ নোত্র দামের বিশেষ এক প্রতীকী চরিত্র রয়েছে৷ সেই অবস্থা পুনরুদ্ধার করতেই হবে৷''

২০১৯ সালের এপ্রিল মাসে অগ্নিকাণ্ডের সময় প্রায় অলৌকিকভাবে গির্জার জানালাগুলি বেঁচে গিয়েছিল৷ কিন্তু নোত্র দামের প্রতীক হিসেবে পরিচিত গির্জার চূড়াটি নাটকীয়ভাবে ভেঙে পড়ে৷ বহু দূর থেকে সেটা দেখা যেত৷ ছাদও ধসে গিয়েছিল৷ গোটা গির্জাই প্রায় ভেঙে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছিল৷

অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে যাওয়া প্যারিসের গির্জা ঠিক করা হচ্ছে

04:12

This browser does not support the video element.

সেই দুর্ঘটনার পর ফ্রান্সের সরকার উচ্চাকাঙ্ক্ষী এক লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণা করেছিল৷ পাঁচ বছরের মধ্যে মেরামতির কাজ শেষ করে আরও সুন্দর এক নোত্র দামের দরজা আবার খুলে দেবার অঙ্গীকার করেছিল সরকার৷ পুনর্গঠন প্রকল্পের উপ-প্রধান ফিলিপ জস্ট বলেন, ‘‘এমন গুরুত্বপূর্ণ এক নির্মাণের সাইটে কেবল সেরা মানুষের কাজের অধিকার রয়েছে৷ টেন্ডারের ক্ষেত্রে আমরা সব কাজের জন্য সেরা মিস্ত্রীদের বেছে নিয়েছিলাম৷''

একশোরও বেশি কোম্পানি পুনর্গঠন প্রকল্পে কাজ করছে৷ এক হাজারেরও বেশি মিস্ত্রী কাজে হাত লাগাচ্ছেন৷ তবে সবাই কিন্তু মূল সাইটে সক্রিয় নন৷

ক্যাথিড্রালের জানালাগুলি গোটা ফ্রান্স জুড়ে বিভিন্ন কর্মশালায় পাঠানো হয়েছে৷ প্যারিসের দক্ষিণে ত্রোইয়ে শহরে ফ্লাভি ভ্যাঁসঁ-প্যুতি-র কর্মশালায়ও একটি জানালা এসেছে৷ তিনি মূলত ঊনবিংশ শতাব্দীর কাচের অংশগুলি নিয়ে কাজ করছেন৷ কয়েকটি এমনকি মধ্যযুগে তৈরি৷ জানালাগুলি ছাড়া ক্যাথিড্রাল খোলা সম্ভব নয়৷ ফ্লাভি ভ্যাঁসঁ-প্যুতি মনে করেন, ‘‘এই সব জানালা ছাড়া পবিত্র পরিবেশ হারিয়ে যাবে, অশুদ্ধ মনে হবে৷ জানালাগুলি ফিল্টারের মতো প্রাকৃতিক আলোকে ঐশ্বরিক আলোয় পরিণত করে৷''

ভেঙে পড়া গির্জার চূড়াও অবিকল আগের মতো করে তৈরি করার কথা৷ ফিলিপ জস্ট বলেন, ‘‘কাঠের চূড়াটি আবার প্যারিসের আকাশে কয়েক শো মিটার উঁচুতে শোভা পাবে৷ বহুকাল এমনটা দেথা যায়নি৷ সে ক্ষেত্রে আমরা ঊনবিংশ শতাব্দীর স্থপতি ভিয়োলে-ল্য-দুকের কৌশল প্রয়োগ করবো৷''

গির্জা কর্তৃপক্ষের টাকার কোনো অভাব নেই৷ মেরামতির কাজের জন্য গোটা বিশ্ব থেকে চাঁদা এসেছে৷ কিন্তু শ্রমিকদের অক্লান্ত পরিশ্রমের মূল্য শুধু অর্থ দিয়ে চোকানো হচ্ছে না৷ ফ্লাভি ভ্যাঁসঁ-প্যুতি বলেন, ‘‘আমরা সেই মধ্যযুগ থেকে চলে আসা কাচ শিল্পীদের ধারা বহন করছি৷ প্রত্যেকে এই স্থাপত্য পরবর্তী প্রজন্মের জন্য বহন করছে৷''

আগুনের কালি ও কয়েক'শো বছরের ধুলা দূর করার পর জানালাগুলি একেবারে ঝকমকে ও নতুন রূপে শোভা পাবে৷ ফলে ক্যাথিড্রালটি অগ্নিকাণ্ডের আগের তুলনায় হয়তো আরো সুন্দর হয়ে উঠবে৷

সুসানে ড্যোরহাগে/এসবি

২০১৯ সালের গ্যালারিটি দেখুন...

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ