শার্লি এব্দোর পর আারো আক্রান্ত ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিস, তবে আরো ভয়াবহভাবে। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, শুক্রবারের হামলায় নিহতের সংখ্যা অন্তত ১২৯। প্রেসিডেন্ট ফ্রঁসোয়া ওলঁদ দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন।
বিজ্ঞাপন
একই রাতে শহরের বিভিন্ন এলাকায় সন্ত্রাসী হামলা ঘটেছে প্যারিসে। এলোপাথাড়ি গুলি আর একের পর এক বিস্ফোরণে আহত হয়েছেন কমপক্ষে দুই শতাধিক মানুষ। তবে এ সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে।
জার্মানি ও ফ্রান্সের মধ্যে প্রীতি ফুটবল ম্যাচ চলাকালীন স্টেডিয়ামের বাইরে প্রথম বিস্ফোরণ ঘটে। সে সময় সেখানে প্রেসিডেন্ট ফ্রঁসোয়া ওলঁদ-ও উপস্থিত ছিলেন।
এরপর একের পর এক হামলা শুরু হয় প্যারিসের বিভিন্ন প্রান্তে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় হামলাটি হয়েছে বাটাক্লঁ কনসার্ট হলে। জিহাদি স্লোগান তুলে হলে ঘুকে জঙ্গিরা গোলাগুলি শুরু করে, পণবন্দি করে নেয় দর্শকদের। গুলি করতে শুরু করে এক-একজন করে।
পুলিশ জানায়, এরপর আলাদা আলাদা আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটাতে থাকে সন্ত্রাসীরা। হামলা হয় পানশালা, কম্বোডিয়ান রেস্তোরাঁ এবং শপিং সেন্টার মিলিয়ে প্রায় ছয়টি জায়গায়।
এর কিছুক্ষণ পরেই দেশের সীমান্তগুলি বন্ধ করে দেয় ফ্রান্স, সেনা অভিযান শুরু হয়।
জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল এই ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা করেছেন। "আমরা ফ্রান্সের পাশেই আছি। কাঁদছি তোমাদের সঙ্গে", বলেছেন তিনি।
এছাড়া ইউরোপে সন্ত্রাসীদের শক্ত হাতে মোকাবিলা করতে জার্মানি যথাসাধ্য করবে বলেও জানিয়েছেন ম্যার্কেল। ফরাসী প্রেসিডেন্ট ফ্রঁসোয়া ওলঁদ এই ভয়াবহ হামলার জন্য জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট বা আইএস-কে দায়ী করেছেন।
এসবি/ডিজি (এএফপি, এপি, রয়টার্স)
প্যারিস হত্যাকাণ্ডের পর সংহতি সমাবেশে লাখো মানুষ
ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে গত সপ্তাহে সন্ত্রাসী হামলায় ১৭ ব্যক্তি নিহত হয়৷ সেই নিহতদের স্মরণে, তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সপ্তাহান্তে আয়োজিত সংহতি সমাবেশে যোগ দিয়েছেন প্রায় ত্রিশ লাখ মানুষ৷ এই নিয়ে ছবিঘর৷
ছবি: Reuters/Platiau
লাখ লাখ নির্ভীক মানুষের সমাবেশ
লাখ লাখ মানুষ প্যারিসের বিভিন্ন রাস্তাসহ, ফ্রান্স এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শহরের রাস্তায় স্বাধীনতা এবং সহনশীলতার পক্ষে জড়ো হয়েছিলেন সপ্তাহান্তে৷ গত সপ্তাহে ফ্রান্সের ব্যঙ্গাত্মক পত্রিকা শার্লি এব্দো এবং একটি সুপারমার্কেটে নিহতদের স্মরণে আয়োজন করা হয় সংহতি সমাবেশের৷
ছবি: Reuters/Platiau
ফ্রান্সের ইতিহাসে সবচয়ে বড় সমাবেশ
সংহতি সমাবেশ শুরুর কয়েকঘণ্টা আগেই জনসমুদ্রে পরিণত হয় প্যারিসের ‘প্লাস দ্য লা রিপুবলিক’৷ ফ্রান্সের সকল ইউনিয়ন এবং বড় রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিরা এতে অংশ নেন৷ ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ফ্রান্সের ইতিহাসে এটা সর্ববৃহৎ সমাবেশ৷
ছবি: REUTERS/Youssef Boudlal
সংহতির প্রতীক
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার এবং রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রঁসোয়া ওলঁদ এবং জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল রবিবারের সংহতি সমাবেশের নেতৃত্ব দেন৷ পঞ্চাশজনের মতো বিশ্বনেতা এতে অংশ নেন৷
ছবি: Reuters/Wojazer
শোকে বিহ্বল দেশ
গত বুধবার দুই ভাই প্যারিসে শার্লি এব্দোর সম্পাদকীয় কার্যালয়ে হামলা চালায় এবং ম্যাগাজিনটির প্রধান সম্পাদকসহ আরো নয় কর্মীকে হত্যা করে৷ সেসময় দুই পুলিশ সদস্যকেও হত্যা করে তারা৷ শুক্রবার অপর এক হামলায় এক সুপারমার্কেটে চার ব্যক্তিকে হত্যা করে একজন হামলাকারী৷
ছবি: Mitchell/Getty Images
সংকটকালীন বৈঠক
মার্চ শুরুর আগে ইউরোপীয় ইউনিয়নের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীরা এক বৈঠকে মিলিত হন৷ বৈঠকের পর ফরাসি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বার্না কাসনোভ জানান, ফ্রান্সে সন্ত্রাসী হামলায় সকল গণতন্ত্রের উপর প্রভাব ফেলেছে৷ সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধে ফেব্রুয়ারি মাসে বৈঠকের ঘোষণা দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Guillaume
উচ্চ সতর্কাবস্থা
শার্লি এব্দো কার্যালয়ে হত্যাকাণ্ডের পর ফ্রান্সে উচ্চ সতর্কাবস্থা জারি করা হয়৷ রবিবার সমাবেশের সময়ও নিরাপত্তা কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখা গেছে৷ আল কায়দা এবং ‘ইসলামিক স্টেট’ আরো সন্ত্রাসী হামলার হুমকি দিয়েছে৷
ছবি: Kitwood/Getty Images
ফ্রান্স জুড়ে সমাবেশ
শুধুমাত্র প্যারিসেই নয়, ফ্রান্সের অন্যান্য শহরে সংহতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে৷ ছবিটি মার্সেই শহরে অনুষ্ঠিত সমাবেশের৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Florian
আন্তর্জাতিক সংহতি
প্যারিসে সন্ত্রাসী হামলায় নিহতদের স্মরণে বন, বার্লিন, মাদ্রিদ, লন্ডন, ব্রাসেলসসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বড় শহরে সংহতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে৷ বার্লিনে ১৮ হাজারের মতো মানুষ সমাবেশে অংশ নেন৷ সমাবেশ অনেকের হাতে ছিল ‘জ্য সুই শার্লি’ বা ‘আমি শার্লি’ স্লোগান৷