1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘প্রকৃত সত্যগুলো প্রধানমন্ত্রীকে বলতে চেয়েও সুযোগ পাইনি’

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
৮ জানুয়ারি ২০২১

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই তিনি৷ তবে আব্দুল কাদের মির্জা এখন তুমুল আলোচিত এক পৌরসভা নির্বাচনকে ঘিরে করা কিছু মন্তব্যের কারণে৷

প্রতীকী ছবিছবি: DW/M. Mostafigur Rahman

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই তিনি৷ তবে আব্দুল কাদের মির্জা এখন তুমুল আলোচিত এক পৌরসভা নির্বাচনকে ঘিরে করা কিছু মন্তব্যের কারণে৷

আব্দুল কাদের মির্জার সরাসরি বলেছেন, " দেশে এখন অপরাজনীতি চলছে। সব কিছু বলা যায় না৷’’

ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই আবদুল কাদের মির্জা নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী৷ জেলা আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত সহ-সভাপতিও৷ আগেও তিনি দুইবার মেয়র ছিলেন৷ সম্প্রতি সুষ্ঠু নির্বাচন, দুর্নীতি, আওয়ামী লীগে অপশক্তি- এসব বিষয় নিয়ে বেশ কিছু কথা বলে তিনি হঠাৎই চলে আসেন সংবাদ শিরোনামে৷

নির্বাচনি প্রচার চালাতে গিয়ে তিনি যেসব কথা বলেছেন তার মধ্যে অন্যতম হলো:

১.নোয়াখালী এলাকায় সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগের অনেক এমপি পালাবার পথ পাবেন না

২. শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তা বেড়েছে, নেতাদের কমেছে

৩. ৫-১০ লাখ টাকা ঘুস নিয়ে যারা চাকরি দেয়, তারা নেতা হয়

৪. প্রকাশ্য দিবালোকে যারা পুড়িয়ে মানুষ হত্যা করে, তারা নেতা হয়

৫. আওয়ামী লীগে এখন অপশক্তির দাপট, তারা সুষ্ঠু নির্বাচনের পথে হুমকি

তার সর্বশেষ দাবি, তাকে হুমকি-ধামকি দেয়া হচ্ছে৷

বৃহস্পতিবার নিজের সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, তার এইসব বক্তব্য বৃহত্তর নোয়াখালী (নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুর) জেলা নিয়ে৷ নোয়াখালী জেলার আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিয়ে৷ তিনি বলেন, ‘‘আমি তিন-চার বার মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করে আমার কথাগুলো বলার চেষ্টা করেছি৷ কিন্তু সুযোগ পাইনি৷ সেখানে সুযোগসন্ধানী নেতাদের ভীড়৷ নেত্রী এগুলো যে কীভাবে সামলান! আল্লাহ তাকে অসীম ধৈর্য্য দিয়েছেন৷’’

তার অভিযোগ, তাকে অব্যহতভাবে হুমকি দেয়া হচ্ছে৷ তবে তিনি জানান, হুমকিতে ভয় পান না। আব্দুল কাদের মির্জা বলেন, ‘‘দেশে এখন অপরাজনীতি চলছে। আওয়ামী লীগে যে অপশক্তি আছে তারা আমাকে হুমকি দিচ্ছে৷’’

নিজের ভাই কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, তারপরও তিনি কেন এই পরিস্তিতিতে? এ বিষয়ে তার বড় ভাই ওবায়দুল কাদেরের অবস্থান বা ভূমিকাই বা কী? এসব প্রশ্নের উত্তরে আবদুল কাদের মির্জা বলেন,‘‘তাকে জানিয়েছি, দেখবেন বলে জানিয়েছেন৷ ভাই, সব কিছু বলা যায় না৷’’

তার মতে, ঘুস-দুর্নীতি জেঁকে বসেছে৷ চাকরিতে ঘুস লাগে, কোনো কাজ করাতে ঘুস লাগে৷ জেলা প্রশাসনের কাছেও তিনি তার অভিযোগের কথা জানিয়েছেন, কোনো কাজ হচ্ছে না৷

‘যাদের অনিয়ম-অপকর্মের বিরুদ্ধে বলেছি তারা হুমকি দিচ্ছে’

This browser does not support the audio element.

যাদের তিনি অপশক্তি বলছেন, তারাও তো আওয়ামী লীগেরই লোক, তাহলে এই অপশক্তি তার বিরুদ্ধে কেন? তার জবাব ,‘‘যারা অপশক্তি, যারা অপরাধী তারা আওয়ামী লীগ করলে কি তাদের কথা বলা যাবে না? যতই হুমকি ও চাপ আসুক আমি সত্য কথা বলেই যাবো৷’’

তিনি জানান, চিকিৎসার জন্য তিনি যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন তখন সিদ্ধান্ত নেন সুস্থ হলে, বেঁচে থাকলে তিনি সব সময় সত্য কথা বলবেন৷ এরপর থেকে তিনি যা সত্য মনে করেন তা-ই বলেন৷ আগে দলীয় ফোরামে, দলীয় নেতাদের বলেছেন, কোনো কাজ হয়নি৷ এখন তাই প্রকাশ্যে বলছেন৷ তার মতে, নোয়াখালী এলাকায় আওয়ামী লীগের কমিটিতে কোনো ত্যাগী নেতা নাই৷ তাদের বাদ দিয়ে অপশক্তি, বসন্তের কোকিল, টেন্ডারবাজ, চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসীদের কমিটিতে নেয়া হয়েছে৷

তবে তিনি বলেন, বসুরহাট পৌরসভা নির্বাচনে যারা তার প্রতিপক্ষ হিসেবে নির্বাচন করছেন তারা তাকে হুমকি দিচ্ছেন না৷ তিনি যাদের অনিয়ম-অপকর্মের বিরুদ্ধে কথা বলছেন তারা হুমকি দিচ্ছে৷ তিনি তার নির্বাচনি সভায় বলেছেন, ‘‘নোয়াখালী থেকে এসে সন্ত্রাসীরা আমার পোস্টার ছিঁড়ছে৷’’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও অবশেষে তার ভাইয়ের এই ‘সত্য কথা’ নিয়ে গণমাধ্যমে মুখ খুলেছেন৷ গত ৬ জানুয়ারি তার ছোট ভাইয়ের বক্তব্যের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘শেখ হাসিনা ছাড়া আর কেউ আওয়ামী লীগে অপরিহার্য নয়৷ আওয়ামী লীগে শেখ হাসিনার ঊর্ধ্বে কেউ নয়, দল করলে সবাইকে দলের শৃঙ্খলা মেনে চলতে হবে৷ কোনো বিশেষ ক্ষেত্রে কাউকে কোনো ধরনের ছাড় দেয়ার সুযোগ নেই৷’’

বড় ভাইয়ের এই কথার জবাবে শুক্রবার আবদুল কাদের মির্জা বলেন, ‘‘উনি বলতে পারেন৷ উনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি৷ আমি দলের একজন কর্মী৷ তিনি আমাকে বলেছেন কিনা জানি না৷ যদি আমাকে বলে থাকেন তাহলে বিষয়টি আমি দেখছি৷’’

বৃহত্তর নোয়াখালীতে মোট ১৩ টি সংসদীয় আসন৷ ২০০৮ সালে ওই এলাকায় আওয়ামী লীগ দুইটি আসন পায়৷ আব্দুল কাদের মির্জা বলেন, ‘‘এখন সুষ্ঠু নির্বাচন হলে ২-৪ জন আওয়ামী লীগের এমপি ছাড়া আর কেউ পাস করবেন না৷ যেটা সত্য, সেটা বলছি৷’’

স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, তিনি পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হলেও পারিবারিক টানাপোড়েনের শিকার৷ এটা আগে থেকেই চলছে৷ ফলে বড় ভাই ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগের  সাধারণ সম্পাদক হলেও ওই কারণে তিনি নোয়াখালীর আওয়ামী রাজনীতিতেও কোণঠাসা৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ