1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

প্রতাপশালী পুটিনের জনপ্রিয়তায় ভাটা?

৯ আগস্ট ২০১৯

রাশিয়াকে দুই দশক ধরে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ভ্লাদিমির পুটিন৷ রাশিয়ানরা নানা সংকটে সরকারের ঘাড়ে দায় দিলেও প্রেসিডেন্ট রাখতেন প্রশ্নের ঊর্ধে৷ ঘরোয়া রাজনীতির নতুন হাওয়ায় বদলে যাচ্ছে দৃশ্যপট৷ তবে কি শেষ হতে যাচ্ছে পুটিন অধ্যায়?

Japan Osaka | G20 Gipfel | Wladimir Putin
ছবি: picture-alliance/dpa/Sputnik/I. Pitalev

১৯৯৯ সালের ৯ আগস্ট রাশিয়ার রাজনীতির মসনদে আসেন পুটিন৷ তখন তিনি নিলেন দেশটির প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব৷ বরিস ইয়েলৎসিনের এই উত্তরসূরি রাজনীতির মাঠের তখন নবাগত৷ টানা চার মেয়াদে দেশটির শীর্ষস্থান ধরে রেখে রাজনীতির মাঠে নিজেক ধরা-ছোঁয়ার বাইরে নিয়ে গেছেন পুটিন৷ জনমত অন্তত তাই বলে৷

রাশিয়ার একটি জনপ্রিয় কথা এরকম যে, রাজা ভাল, খারাপ হলো তার পরিষদ৷ এই ‘মিথ' চ্যালেঞ্জ করে ২০১৮ সালে বার্ষিক সংবাদ সম্মেলনে পুটিন বলেছেন, ‘‘কিন্তু আমি বলতে চাই কোনো কিছু ব্যর্থ হলে বা দেশে কোনো সংকট তৈরি হলে, সে দায় সবার৷''

পুটিনের বক্তব্যকে দূরদর্শী বলার সুযোগ আছে৷ কারণ সাম্প্রতিক জরিপগুলোর বলছে তিনি ধরা ছোঁয়ার বাইরে নন৷ ২০০৮ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে পুটিন রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হলে সরকারের চেয়ে তাঁর জনপ্রিয়তা ৩৫ শতাংশ বেশি ছিল। রাষ্ট্রীয় জরিপ প্রতিষ্ঠান ভিটিএসআইওএম বলছে, ব্যবধান কমে তা দাঁড়িয়েছে ২৩ শতাংশে৷ বলা হচ্ছে, পুটিনের প্রতি জনগণের আস্থাও কমেছে৷ যা ২০০৬ সালের এই প্রথম পুটিনের জনপ্রিয়তা ভাটা লেগেছে৷

‘সুপার পাওয়ার রাশিয়া'

পুটিনের জনপ্রিয়তার সঙ্গে রাশিয়ার গৌরব ফিরে পাওয়ার বিষয়টি সংযুক্ত৷ ৯০ দশকের শেষের দিকে ক্ষমতায় আসেন পুটিন৷ তখন রাশিয়ার অবস্থা কিছুটা নড়বড়ে৷ সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে গেলে আক্রান্ত হয় দেশটির অর্থনীতি আর তার প্রভাব পড়ে সমাজনীতিতেও৷ রাশিয়ানরা মনে করেছিল, তাঁরা তাঁদের জাতীয় গৌরব হারাতে বসেছে৷

ছবি: Getty Images/AFP/G. Fuentes

স্বাধীন জরিপ প্রতিষ্ঠান লেভাডা সেন্টারের পরিচালক লেভ গুডকভ বলেন, ‘‘পুটিনের লক্ষ্যই ছিল রাশিয়াকে বিশ্বের বুকে সুপারপাওয়ার হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা৷ সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর অন্তত রাশিয়ানরা যাতে তাঁদের আত্মবিশ্বাস ফিরে পেতে পারে সেদিকেই মনোযোগী ছিলেন পুটিন৷'' ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া সংযোজনের পরও পুটিনের গ্রহণযোগ্যতা ছিল ধরা ছোঁয়ার বাইরে৷

দায়িত্ব সংকোচন

ঘরোয়া রাজনীতির পরিবর্তনে শুধু পররাষ্ট্র নিয়ে পড়ে থাকার সুযোগ নেই পুটিনের৷ দেখতে হচ্ছে ঘরোয়া বিষয়গুলোও৷ গুডকভ বলেন, একটা সময়ের জন্য মনে হচ্ছিল ঘরোয়া দায়িত্ব এড়িয়ে চলার কৌশলটি কাজে এসেছে৷ কিন্তু পেনশন সংস্কার আইনে সই করে, অভ্যন্তরীণ দায়িত্বও নিয়েছেন তিনি৷ গেল বছরের সেপ্টেম্বের ডুমায় বিলটি পাশ হয়৷ অক্টোবরের শুরুতে বিলে সই করেন পুটিন৷ কিন্তু এই পদক্ষেপ সারাদেশে বিক্ষোভের জন্ম দেয়৷

বেড়েই চলেছে হতাশা?

পুটিনের জনপ্রিয়তায় ভাটার কারণ হিসেবে কয়েকটি বিষয়কে চিহ্নিত করেছেন গুডকভ৷ অর্থনৈতিক স্থবিরতা, বেতন কমানোকে প্রধান কারণ বলছেন এই গবেষক৷ আর দ্বিতীয় কারণ হিসেবে গুডকভ দায়ি করেছেন ন্যায় বিচারের অভাব আর দুর্নীতিকে৷ তাঁর মতে, দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরা হলে এবং সামাজিক নীতিতে পরিবর্তন এনে সাধারণ মানুষের চাহিদা পূরণ করা হলে পুটিন আবার ফিরে আসতে পারেন পুরনো রূপে৷

এখনও ‘নাম্বার ওয়ান পুটিন'

অর্থনীতি, স্বাস্থ্যসেবা আর বেতন নিয়েই জনগণের মাঝে অসন্তুষ্টি আছে বলে মনে করেন ভিটিএসআইওএম-এর পরিচালক ভ্যালেরি ফয়ডরভ৷ তিনি মনে করেন, পুটিনের প্রতি আস্থা কমে যাওয়াটা খুব গুরুত্বপূর্ণ কিছু না৷ কারণ সাধারণ মানুষ সবসময়ই প্রেসিডেন্ট ও সরকারের মধ্যে গুলিয়ে ফেলেন বলেই বিশ্বাস করেন তিনি৷ ফয়ডরভ বলেন, ‘‘পুটিন এক নম্বর রাজনীতিক৷ পুটিন এই দেশের জন্য দায়বদ্ধ৷ এটা সবাই জানে৷''

তিনি আরো বলেন, ‘‘পুটিনের প্রতি মানুষ কৃতজ্ঞ, তাঁরা পুটিনকে সম্মান করে, পুটিনের মধ্যে তাঁরা স্বপ্ন দেখে৷'' তাঁর যুক্তি, ‘‘আমি সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের কথা বলছি৷ কিন্তু এটাও ঠিক পুটিনের ওপর সন্তুষ্ট নয় এমন মানুষও আছে৷ তাঁরা পরিবর্তনও চায়৷ কিন্তু তাঁদের সংখ্যা খুব বড় নয়৷''

এমিলি শেরউইন/টিএম

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

বাংলাদেশ