আবু থুরাইহে ফিলিস্তিনের একটি প্রতিবাদী কণ্ঠ৷ ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বরাবরই সোচ্চার ছিলেন তিনি৷ হুইল চেয়ারে বসেই জানাতেন প্রতিবাদ৷ ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে ১৫ ডিসেম্বর প্রাণ হারান এই অ্যাকটিভিস্ট৷
বিজ্ঞাপন
‘জেরুসালেম হবে ইসরায়েলের রাজধানী' – মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাতে ১৫ই ডিসেম্বর গাজা সীমান্তে অন্য আরো অনেকের সঙ্গে বিক্ষোভে নেমেছিলেন অ্যাকটিভিস্ট আবু থুরাইহে৷ কিন্তু ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে সেদিন প্রাণ হারান তিনি৷ গাজার চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ঐ একই দিনে আরও চারজনকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে৷ আবু থুরাইহে তাঁদের মধ্যে একজন৷ গুলিতে আহত হয়েছিল অন্তত দেড়শ জন ফিলিস্তিনি৷ সেদিন গাজা সীমান্তে আড়াই হাজার ফিলিস্তিনি বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিল৷
২৯ বছর বয়সি প্রতিবন্ধী থুরাইহে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিটি বিক্ষোভেই অংশ নিতেন৷ গণমাধ্যমকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি একবার জানিয়েছিলেন, ২০০৮ সালে গাজায় ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় দু'টি পা হারান তিনি৷
থুরাইহের মৃত্যুর পর তাঁকে নিয়ে ‘মিডল ইস্ট আই'-এর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়, যেখানে তাঁকে কেবল প্রতিবাদ জানাতে দেখা গেছে৷ আর এ সব ভিডিও দেখে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক দূত জাইদ রা'দ আল-হুসেইন বলেছেন, ‘‘থুরাইহে এমন কোনো আচরণ করেননি যার কারণে তাঁকে আক্রমণাত্মক বা ঝুঁকিপূর্ণ মনে হয়েছে৷ তারঁ মাথায় খুব কাছ থেকে গুলি করেছে ইসরায়েলি বাহিনী৷ অথচ তারা একবারও ভাবেনি থুরাইহে একজন প্রতিবন্ধী৷ এটা কী পরিমাণ অমানবিক!'' তবে ইসরায়েল যথারীতি এর বিরোধিতা করে বলেছে যে তারা থুরাইহেকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়নি৷
দাড়ি-গোঁফ কেটে পালাচ্ছে আইএস
ইসলামিক স্টেট বা আইএস-এর দখল থেকে মসুল মুক্ত হয়েছে আগেই৷ এখন চলছে তাদের পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন করার অভিযান৷ তবে এখন দাড়ি-গোঁফ কেটে মানুষের সাথে মিশে পালাচ্ছে তারা৷ ফলে সাধারণ মানুষকেও পড়তে হচ্ছে ইরাকি বাহিনীর সন্দেহে৷
ছবি: Reuters/E. De Castro
মোসুল ঘেরাও
প্রতিদিনই মুক্ত হচ্ছে মোসুলের নতুন নতুন এলাকা৷ মুক্ত হচ্ছেন শহরটিতে দীর্ঘদিন আটকে থাকা সাধারণ ইরাকিরাও৷ কমান্ডাররা বলছেন, এখন হাতে গোনা দু-তিনশ’ আইএস জঙ্গি বিভিন্ন গোপন আস্তানায় আশ্রয় নিয়ে আছে৷ তারা যাতে পার্শ্ববর্তী সিরিয়ায় পালিয়ে যেতে না পারে, সেজন্য শহর ঘেরাও করা হয়েছে৷
ছবি: Reuters/A. Al-Marjani
জঙ্গি খুঁজতে ড্রোন
আগের মতো আইএসে প্রকাশ্য কোনো আস্তানা মসুলে আর নেই৷ আজ এ বাড়িতে তো কাল ঐ ভবনে, এমন করেই যুদ্ধ চালাচ্ছে অবশিষ্ট জঙ্গিরা৷ ফলে নির্দিষ্ট করে হামলা চালানো বেশ কষ্টকরই হচ্ছে ইরাকি বাহিনীর জন্য৷ এই কাজ সহজ করতে নেয়া হচ্ছে প্রযুক্তির ব্যবহার৷ ড্রোন ব্যবহার করে চিহ্নিত করা হচ্ছে জঙ্গিদের অবস্থান৷ তারপর আক্রমণ৷
ছবি: Reuters/E. De Castro
কারা জঙ্গি?
চারপাশ থেকে ঘেরাও হওয়ায় প্রাণে বাঁচতে আইএস জঙ্গিরাও আশ্রয় নিচ্ছে নতুন কৌশলের৷ ইসলামি কায়দা অনুযায়ী দাড়ি-গোঁফ রাখলেও, এখন সবাই ‘ক্লিন শেভড’৷ যতক্ষণ পারছে যুদ্ধ, হেরে যাওয়ার শঙ্কা দেখলে পোশাক পালটে সাধারণ মানুষের ভিড়ে মিশে যাচ্ছে জঙ্গিরা৷
ছবি: Reuters/A. Saad
নতুন বিপদ আত্মঘাতি নারী
অগ্রসর হতে থাকা ইরাকি বাহিনীর বিরুদ্ধে টিকতে না পেরে আরেক পদ্ধতির আশ্রয় নিয়েছে আইএস জঙ্গিরা৷ নারী জঙ্গিরা বোমা বেঁধে সাধারণ নারীদের সাথে মিশে যাচ্ছে৷ চেষ্টা চালাচ্ছে ইরাকি বাহিনীর কাছাকাছি গিয়ে হামলা চালানোর৷ গেল এক সপ্তাহে এমন বেশকটি হামলায় হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে৷
ছবি: Reuters/Stringer
সাধারণের বিপদ
দীর্ঘদিন আইএসের নির্যাতনে জরাজীর্ণ অবস্থা, তা থেকে মুক্তির পরও কমছে না সাধারণ মানুষের ঝামেলা৷ সেই কারণটাও আইএস৷ লুকিয়ে থাকা জঙ্গি খুঁজতে গিয়ে সবাইকেই সন্দেহের তালিকায় রাখছে ইরাকি বাহিনী৷ না থেমে দীর্ঘ পথ হাঁটতে হচ্ছে তাদের৷ একাধিকবার খতিয়ে দেখা হচ্ছে পরিচয়৷ মাঝে মধ্যেই করা হচ্ছে শরীর তল্লাশি৷ রেহাই পাচ্ছেন না শিশু-বুড়োরাও৷
ছবি: Reuters/A. Al-Marjani
শিশুদের জন্য সহায়তা
দীর্ঘদিন ধরে জঙ্গি অধ্যুষিত এলাকায় পৌঁছায়নি কোনো ত্রাণ৷ জরুরি ওষুধ তো দূরের কথা, একেবারেই সাধারণ ঠান্ডার ওষুধও মসুলবাসীর কাছে ছিলো আকাশের চাঁদ৷ তবে দ্রুতই পালটাচ্ছে এই অবস্থা৷ মুক্ত অঞ্চল এবং জঙ্গি এলাকা থেকে পালিয়ে আসা শিশুরা পাচ্ছে বিভিন্ন রোগের টিকা৷ সরকারি-বেসরকারি নানা সংস্থা থেকে মিলছে জরুরি ত্রাণও৷