1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

প্রতিবাদী শিল্পী আই ওয়েওয়ে

প্রতিবেদন: মাটিয়াস ব্যোলিঙার / এসি৩ এপ্রিল ২০১৪

চীনে ভিন্নমতাবলম্বীদের উপর সরকারি নিপীড়ন ও তার বিরুদ্ধে প্রতিরোধের বিশিষ্টতম প্রতিভূ সম্ভবত আই ওয়েওয়ে, বিশেষত করে জার্মানির মানুষদের কাছে৷ শিল্পীর অনুপস্থিতিতেই বার্লিনে চলেছে তাঁর সর্বাধুনিক শিল্পকলার প্রদর্শনী৷

Ai Weiwei Ausstellung in Martin-Gropius Bau Berlin 02.04.2014
ছবি: Johannes Eisele/AFP/Getty Images

আই ওয়েওয়ে-র বৃহত্তম একক প্রদর্শনীতে তাঁর নিজের উপস্থিত থাকা সম্ভব হয়নি, কেননা তাঁর পাসপোর্ট এখনও চীন সরকারের হাতে৷ বার্লিনের মার্টিন-গ্রোপিয়ুস-বাউ মিউজিয়ামের ১৮টি কক্ষ জুড়ে ‘‘আই ওয়েওয়ে – সাক্ষ্যপ্রমাণ'' নামধারী যে প্রদর্শনী চলেছে, তা শিল্পীর কনসেপচুয়াল আর্টের মাধ্যমে এক গভীরভাবে রাজনৈতিক অভিব্যক্তি৷

বার্লিনের প্রদর্শনী শুরু হয় বৃহস্পতিবার, চৌঠা এপ্রিল, ২০১৪ তারিখে৷ এর ঠিক তিন বছর আগে চীনে আই ওয়ে ওয়ে-কে গ্রেপ্তার করে ৮১ দিনের জন্য কারাগারে রাখা হয়৷ বার্লিনের প্রদর্শনীতে আই ওয়েওয়ে-র সেই সাদা সেল বা কারাকক্ষের একটি হুবহু নকল সাজানো রয়েছে, এমনকি কমোড ও হাত-মুখ ধোয়ার বেসিন পর্যন্ত বাদ পড়েনি৷ কারাকক্ষের দেওয়াল ফোম দিয়ে ঢাকা৷ সার্ভেইল্যান্স ক্যামেরা, অর্থাৎ নজরদারির ক্যামেরা ঝোলানো রয়েছে৷

কারাকক্ষের একটি হুবহু নকল সাজানো রয়েছেছবি: Johannes Eisele/AFP/Getty Images

পাসপোর্ট বস্তুত বাজেয়াপ্ত, তবুও আই ওয়ে ওয়ে প্রদর্শনীর উদ্বোধন উপলক্ষ্যে তাঁর ভিডিও-বার্তায় বলেছেন, তিনি আসলেও আসতে পারেন, যদিও আপাতত সেটা তাঁর জানা নেই৷ তাঁর আসা না আসাটাকেও শিল্পে পরিণত করেছেন আই ওয়েওয়ে: মিউজিয়াম ভবনের বাইরে একটি সাদাসিধে সাইকেল দাঁড় করানো আছে; সাইকেলের বাস্কেটে রাখা রয়েছে এক তোড়া ফুল৷ এইভাবে চীনে যেখানে তাঁর বাস, সেখানেও নাকি একটি সাইকেলের উপর ফুল রাখা আছে৷ সেই ফুলও নাকি প্রতিদিন বদলে দেওয়া হবে, যতোদিন পর্যন্ত না আই ওয়েওয়ে বার্লিনে তাঁর প্রদর্শনীতে আসতে পারেন৷

আই ওয়েওয়ে জার্মান সরকার ও জনগণের কাছ থেকে চিরকালই সমর্থন ও সাহায্য পেয়ে এসেছেন৷ ২০১১ সালে তাঁকে বার্লিনের কলা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ‘চেয়ার', অর্থাৎ অধ্যাপকের মর্যাদা প্রদান করা হয়৷ শুধু বার্লিনের প্রদর্শনীর জন্য একাধিক নতুন ইনস্টলেশন সৃষ্টি করেছেন আই ওয়েওয়ে৷ সবচেয়ে চমকপ্রদ ইনস্টলেশনটি রাখা রয়েছে মিউজিয়ামের অ্যাট্রিয়ামে: মেঝে জুড়ে ছয় হাজার কাঠের টুল, যেগুলো উত্তর চীনের বিভিন্ন গ্রাম থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে৷ সব ক'টি একই চেহারার কিন্তু বিভিন্ন রঙের এবং বিভিন্ন ধরনের নকশা করা – অর্থাৎ প্রতিটিই একক ও সবিশেষ৷ এগুলি কারখানায় তৈরি প্লাস্টিকের টুলের মতো এক নয়, এগুলি হল ইতিহাসের নীরব সাক্ষী – যা কিনা আই ওয়েওয়ে-র চূড়ান্ত বার্তা৷

মেঝে জুড়ে ছয় হাজার কাঠের টুলছবি: Johannes Eisele/AFP/Getty Images

আইওয়েওয়ে-র মধ্যে যেন কোনো ‘দাদাইস্ট' লুকিয়ে রয়েছে: নয়তো চীনের হান রাজবংশের আমলের, অর্থাৎ প্রায় দু'হাজার বছরের পুরনো ফুলদানিগুলোতে হালফ্যাশনের মার্সিডিজ কিংবা বিএমডাবলিউ গাড়ির মেটালিক পেন্ট লাগানোর কথা ভাবতে পারতেন না আর কোনো শিল্পী ৷ এগুলো কিন্তু চীনে নয়া বড়লোকদের গাড়ি কেনার ধুমের প্রতিও ইঙ্গিত, যেমন একটি পাথরের গ্যাস-মুখোশ বেইজিং-এর বায়ুদূষণের প্রতি ইঙ্গিত করছে৷ ২০০৮ সালের অলিম্পিকের জন্য বেইজিং-এর ‘পাখির বাসা' স্টেডিয়ামের নকশা তৈরিতে যেমন আই ওয়েওয়ে-র হাত ছিল, তেমনই লন্ডনের ‘‘সূর্যমুখীর বীজ'' প্রদর্শনীর জন্য দশ কোটি হাতে-রং-করা চীনেমাটির বীজ প্রদর্শন করেছিলেন আইওয়ে ওয়ে৷

শিল্পীকে আটকে রাখা যেতে পারে, কিন্তু তার শিল্পকে নয়৷ বার্লিনের প্রদর্শনী সেই কথাই আবার নতুন করে প্রমাণ করল৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ