1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
মানবাধিকারইসরায়েল

প্রতিবেদনে গাজায় দুর্ভিক্ষের চিত্র, ‘মিথ্যা’ দাবি ইসরায়েলের

২৩ আগস্ট ২০২৫

গাজায় দুর্ভিক্ষের প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে জাতিসংঘ সমর্থিত একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে৷ এর মাধ্যমে প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে সেখানে দুর্ভিক্ষ হানা দেয়ার তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে৷ তবে অস্বীকার করেছে ইসরায়েল৷

খাবারের জন্য খালি পাতিল বাড়িয়ে দেয়া অনেকগুলো হাত
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজার পাঁচ লাখেরও বেশি মানুষ ভয়াবহ গুরুতর অথবা ‘বিপর্যয়কর' পর্যায়ের খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেনছবি: AFP/Getty Images

জাতিসংঘ-সমর্থিত একটি মূল্যায়ন বলা হয়েছে, অনাহার, দারিদ্র্য এবং মৃত্যু গাজাকে গ্রাস করেছে৷ ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্লাসিফিকেশন (আইপিসি) এর সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুসারে, গাজার কিছু অংশ এখন দুর্ভিক্ষের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে৷

বলা হয়েছে, পাঁচ লাখেরও বেশি মানুষ ভয়াবহ গুরুতর অথবা ‘বিপর্যয়কর' পর্যায়ের খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন, যার মাধ্যমে প্রথমবারের মতো অঞ্চলটিতে দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়ার তথ্য নিশ্চিত করা হলো৷

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১০ লাখ বা সেখানকার জনসংখ্যার অর্ধেকের বেশি জরুরি পরিস্থিতিতে রয়েছেন৷ ৪০ হাজার মানুষ সংকটে রয়েছেন৷

আইপিসির সংজ্ঞা অনুসারে, তিনটি মানদণ্ডের ভিত্তিতে একটি অঞ্চলে দুর্ভিক্ষ চলছে কিনা তা বলা যাবে৷ সেগুলো হলো: অন্তত ২০ শতাংশ পরিবার খাদ্যের চরম অভাবে ভুগছে , অন্তত ৩০ শতাংশ শিশু তীব্র অপুষ্টিতে ভুগছে এবং সম্পূর্ণ অনাহারে থাকার কারণে প্রতি ১০ হাজার শিশুর দুইটি শিশু দৈনিক মৃত্যুবরণ করছে৷

প্রতিবেদন অনুসারে, গাজার বর্তমান পরিস্থিতি মধ্য আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ আরো নাজুক হতে পারে৷ দেইর আল-বালাহ এবং খান ইউনিসে দুর্ভিক্ষ ছড়িয়ে পড়তে পারে৷

গত মার্চে ইসরায়েল গাজায় ত্রাণ সরবরাহে ব্যাপক বাধা আরোপ করে৷ বৈশ্বিক সমালোচনার মুখে জুলাই থেকে সীমিত পর্যায়ে খাদ্য সরবরাহের অনুমতি দেয় ইসরায়েলি সেনাবাহিনী৷

গাজায় মানবিক বিপর্যয়, অনাহারে মারা যাচ্ছে শিশুরা

05:15

This browser does not support the video element.

ইসরায়েলের সরকারকে দায়ী জাতিসংঘ মানবাধিকার প্রধানের

ইউএন হাই কমিশনার ফর হিউম্যান রাইটস ফলকার টুর্ক গাজায় অনাহারের পরিস্থিতি যুদ্ধাপরাধের মধ্যে পড়তে পারে বলে উল্লেখ করেছেন৷ আইপিসি গাজার কিছু অংশে দুর্ভিক্ষ চলার যে তথ্য প্রকাশ করেছে তার প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, এটি ‘ইসরায়েলি সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের প্রত্যক্ষ ফলাফল'৷

তিনি আরও বলেন, ‘‘যুদ্ধের কৌশল হিসেবে ক্ষুধাকে ব্যবহার করা যুদ্ধাপরাধ৷''

এদিকে জাতিসংঘের ত্রাণ বিষয়ক প্রধান টম ফ্লেচার বলেছেন, সংস্থাটিকে খাদ্য সরবরাহে বাধা দেয়া না হলে এই দুর্ভিক্ষ ঠেকানো যেত৷ এখনও ইসরায়েলের বাধার কারণে সীমান্তে খাদ্য আটকা পড়ে আছে বলে অভিযোগ করেন তিনি৷

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তনিও গুতেরেস শুক্রবার গাজা উপত্যকার পরিস্থিতিকে ‘মানবসৃষ্ট বিপর্যয়' বলে অভিহিত করেছেন৷ আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে ইসরায়েল মানবিক সহায়তা সরবরাহে বাধ্য বলে মনে করিয়ে দেন তিনি৷ বলেন, ‘‘এই পরিস্থিতিকে দায়মুক্তি দিয়ে আমরা চলতে দিতে পারি না৷’’

‘ডাহা মিথ্যা’, দাবি নেতানিয়াহুর

গাজা শহর দখলে ইসরায়েলের নতুন পরিকল্পনা ঘোষণার মধ্যে নতুন এই প্রতিবেদন প্রকাশকে স্বভাবতই ভালোভাবে নেয়নি ইসরায়েল৷

শুক্রবার প্রতিবেদনটি প্রত্যাখ্যান করেছে তারা৷ ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে দাবি করেছে গাজায় কোনো দুর্ভিক্ষ নেই৷ তাদের দাবি খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে প্রতিবেদনটি ‘‘হামাসের মিথ্যাচারের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে৷''

প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে ফিলিস্তিনি বেসামরিক বিষয়ে সমন্বয় করা ইসরায়েলের সরকারের আরেক সংস্থা সিওজিএটি৷ তারা ‘ক্ষুধা নিয়ে মিথ্যা প্রচরণার' জন্য হামাসকে দায়ী করে বিবৃতি দিয়েছে৷

এতে বলা হয়েছে, ‘‘সিওজিএটি, গাজা উপত্যকায় দুর্ভিক্ষের দাবি দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করে৷ আইপিসির পূর্ববর্তী প্রতিবেদন এবং মূল্যায়ন বারবার ভুল প্রমাণিত হয়েছে এবং বাস্তবতাকে প্রতিফলিত করে না৷''

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীও প্রতিবেদনটিকে ‘ডাহা মিথ্যা' বলে দাবি করেছেন৷ সাম্প্রতিক সপ্তাহে ইসরায়েলের নেয়া মানবিক পদক্ষেপগুলোকে এতে উপেক্ষা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি৷ বিবৃতিতে নেতানিয়াহু বলেন, ‘‘ইসরায়েলের অনাহার সৃষ্টির কোনো নীতি নেই, অনাহার প্রতিরোধের নীতি রয়েছে৷''

‘মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ’ বলছে জার্মানি ও যুক্তরাজ্য

এদিকে আইপিসি এর প্রতিবেদনের পর জার্মানির উন্নয়নমন্ত্রী রিম আলাবালি রাদোফন গাজা উপত্যকায় আরও সাহায্য পৌঁছানোর আহ্বান জানিয়েছেন৷

তিনি বলেন, ‘‘আমাদের চোখের সামনে আরও মানুষ, বিশেষ করে শিশুরা অনাহারে মারা যাচ্ছে৷'' এই পরিস্থিতি চলতে দেয়া যায় না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘‘এই দুর্ভিক্ষ সম্পূর্ণরূপে মানবসৃষ্ট৷''

যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড লামি গাজায় দুর্ভিক্ষ নিশ্চিত করা প্রতিবেদনকে ‘অত্যন্ত ভয়াবহ' বলে উল্লেখ করেছেন৷

এটিকে মানবসৃষ্ট দুর্যোগ উল্লেখ করে তিনি এরজন্য ইসরায়েলের সরকারকে দায়ী করেন৷ বলেন, ‘‘গাজায় পর্যাপ্ত সাহায্য প্রবেশের অনুমতি দিতে ইসরায়েলি সরকারের অস্বীকৃতি এই মানবসৃষ্ট বিপর্যয় ডেকে এনেছে৷ এটি একটি নৈতিক অবমাননা৷’’

এফএস/আরআর (এএফপি, এপি, ডিপিএ, রয়টার্স)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ