অবশেষে জার্মান পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে পাস হয়েছে ধর্ষণবিরোধী আইন৷ আগে আইন ছিল যৌনসম্পর্ক একমাত্র তখনই শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে গণ্য হবে যখন প্রমাণ হবে যে ধর্ষিতা বা যিনি যৌন হয়রানির শিকার, তিনি আক্রমণকারীকে বাধা দিয়েছেন৷
বিজ্ঞাপন
নতুন আইন উচ্চকক্ষে পাস হলে সেই অনুযায়ী, যে কোনো ধরণের যৌন হয়রানি শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে গণ্য হবে৷ এতদিন পর্যন্ত ধর্ষণের সময় আক্রমণকারীকে বাধা দেয়ার ঘটনা প্রমাণ করলে না গেলে অথবা প্রতিরোধের কোনো ঘটনা না ঘটলে তাকে ‘ধর্ষণ' বলে গণ্য করা হতো৷ অর্থাৎ ঘুমের মধ্যে ধর্ষণ বা অচেতন অবস্থায় কেউ ধর্ষিত হলে, তাঁর যে শ্লীলতাহানি হয়েছে তা মেনেই নিত না আদালত৷
অথচ এমন ঘটনা শুধু জার্মানিতে কেন, বিশ্বের সর্বোত্র হামেশাই ঘটছে৷ জার্মানির অপরাধ বিষয়ক আইনজীবী ক্রিস্টিনা ক্লেম ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, অনেক নারী তাঁর কাছে এমন সব ঘটনা নিয়ে এসেছেন, যেখানে আদালতে তাঁদের জেতার কোনো সম্ভাবনা নেই৷ যেমন নারীরা যখন ট্রেন-বাস-ট্রামে যৌন হয়রানির শিকার হন, ভিড়ের মধ্যে তাঁদের গায়ে যখন পুরুষরা লোলুপ হাত বাড়িয়ে দেয়, তখন প্রতিরোধের কোনো ঘটনা না ঘটলে, তার কোনো সম্ভাবনা না থাকলে, সেটা যৌন হয়রানি বলে স্বীকৃত হয় না৷
কেন এত ধর্ষণ? কী করলে কমবে এ জঘন্য অপরাধ?
নারী স্বাধীনতা, নারী আন্দোলন, নারী অধিকার নিয়ে সর্বত্র আলোচনা, সমালোচনা, বক্তৃতা, অন্যদিকে বেড়ে চলেছে ধর্ষণের সংখ্যা৷ কিন্তু কেন? এর জন্য কারা দায়ী, কী করে ধর্ষণ কমিয়ে আনা সম্ভব? বা ধর্ষিতা নারীদের কী-ই বা করা উচিত?
ছবি: Advocate Tanbir ul Islam Siddiqui
নারী নির্যাতন সম্পর্কে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্ট
নারী নির্যাতন সম্পর্কে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নতুন রিপোর্ট বলছে, বিশ্বের প্রায় এক তৃতীয়াংশ নারী যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন অহরহ৷ তার ওপর পারিবারিক নির্যাতন প্রতিরোধের যেসব পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে, সেটাও যথার্থ নয়৷ এছাড়া বিশ্বের মোট নারীর ৭ শতাংশ নাকি জীবনের যে কোনো সময় ধর্ষণের শিকার হয়েছেন৷
ছবি: Fotolia/DW
উন্নত বিশ্বের নারীরাও রেহাই পান না
ধর্ষণ শব্দটি শুনলেই মনে হয় এ ধরণের অপরাধ হয়ে থাকে শুধু অনুন্নত বা উন্নয়নশীল দেশগুলোতে৷ আসলে কিন্তু মোটেই তা নয়৷ সমীক্ষায় দেখা গেছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে ১৫ বছর বয়স হওয়ার আগেই শতকরা ৩৩ জন মেয়ে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়৷ এমনকি জার্মানির মতো উন্নত দেশের নারীরাও যৌন নিগ্রহ বা ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন প্রতিনিয়ত৷
ছবি: Fotolia/detailblick
ধর্ষিতা নারীরা জানাতে ভয় পান
জার্মানিতে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত বা ধর্ষিত নারীদের সঠিক পদ্ধতিতে ‘মেডিকেল টেস্ট’-এর ব্যবস্থা করে, এমন একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত স্ত্রী বিশেষজ্ঞ ডা. সোনিয়া পিলস বলেন, ‘‘ধর্ষণের শিকার নারী লজ্জায় এবং আতঙ্কে থাকেন৷ তিনি পুলিশের কাছে গিয়ে সে অভিজ্ঞতা বা ধর্ষক সম্পর্কে তথ্য জানাতে ভয় পান, কুণ্ঠা বোধ করেন৷ অনেকদিন লেগে যায় ধর্ষণের কথা কাউকে বলতে৷
ছবি: detailblick/Fotolia
ধর্ষককে ধরার জন্য দ্রুত ডাক্তারি পরীক্ষা
ধর্ষণের পর নারীদের কী করণীয় – এ বিষয়ে জার্মানির ধর্ষণ বিষয়ক নির্দেশিকায় কিছু পরামর্শ দেওয়া হয়েছে৷ যেমন ধর্ষণের পর একা না থেকে কারো সাথে কথা বলা৷ গোসল, খাওয়া, ধূমপান, বাথরুমে যাওয়ার আগে, অর্থাৎ ধর্ষণের চিহ্ন মুঝে না যাবার আগে ডাক্তারি পরীক্ষা করানো৷ এ পরীক্ষা করালে ধর্ষক কোনো অসুখ বা এইচআইভি-তে আক্রান্ত ছিল কিনা, তা জানা সম্ভব৷ নারীর শরীরে নখের আচড় বা খামচি থাকলে ধর্ষকের চিহ্ন সহজেই পাওয়া যায়৷
ছবি: DW/M. Ruettinger
যাঁরা ধর্ষণের শিকার, তাঁদের জন্য জরুরি বিভাগ
ধর্ষক যেসব জিনিসের সংস্পর্শে এসেছে, অর্থাৎ অন্তর্বাস, প্যাড এ সব তুলে রাখুন৷ ছবিও তুলে রাখতে পারেন৷ নিজেকে দোষী ভাববেন না, কারণ যে ধর্ষণের মতো জঘণ্যতম কাজটি করেছে – সেই অপরাধী, আপনি নন৷ জার্মানির বেশ কয়েকটি শহরের হাসপাতালে যৌন নির্যাতন বিষয়ক আলাদা জরুরি বিভাগ রয়েছে৷ তাছাড়া ধর্ষণ সংক্রান্ত নানা প্রশ্নের উত্তর জানতে রয়েছে ‘গেভাল্ট গেগেন ফ্রাউয়েন’, যেখানে ২৪ ঘণ্টাই টেলিফোন করা যায়৷
ছবি: picture-alliance/dpa
গ্রুপ থেরাপি
যৌন নিগ্রহ বা ধর্ষণের শিকার নারীদের মানসিক ও শারীরিক সমস্যা সমাধানের জন্য জার্মানিতে রয়েছে গ্রুপ থেরাপি, যার সাহায্যে নারীরা আবার সমাজে সহজভাবে মিশতে পারেন এবং তাঁদের জীবনে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনাটি সহজে ভুলে যেতে পারেন৷
ছবি: dpa
সবচেয়ে বেশি যৌন অপরাধ হয় বাড়িতেই
ভারতের কোথাও না কোথাও প্রতি ২২ মিনিটে একটি মেয়ে ধর্ষণের শিকার হচ্ছে৷ তাই আদালতের নির্দেশে ভারতের পুলিশ বিভাগ এক সমীক্ষা চালিয়েছিল দিল্লির ৪৪টি এলাকায়৷ চলতি বছরের গত আট মাসে ২,২৭৮টি ধর্ষণ, যৌন নিপীড়ন এবং যৌন অপরাধের তদন্তের ফলাফলে দেখে গেছে: ১,৩৮০টি ক্ষেত্রে অভিযুক্তরা হলেন পরিবারের লোকজন এবং পরিচিতজনেরা৷ অর্থাৎ নিজের বাড়িতেও মেয়েরা নিরাপদ নয়!
ছবি: Fotolia/Miriam Dörr
সঠিক বিচার চাই
২০১৩ সালের ১৬ই ডিসেম্বর দিল্লিতে গণধর্ষণ ঘটনার পর, ভারতে ঘটা করে বিচার বিভাগীয় কমিশন বসিয়ে ধর্ষণ, যৌন নিগ্রহ দমনে আইন-কানুন ঢেলে সাজানো হয়৷ শাস্তির বিধান আরো কঠোর করা হয়৷ কিন্তু তাতে যৌন অপরাধের সংখ্যা না কমে বরং বেড়েছে৷
ছবি: picture alliance/abaca
বাংলাদেশে ধর্ষণের শিকার
বাংলাদেশে জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশে ২০১১ সালে ৬২০ জন, ২০১২ সালে ৮৩৬ জন, ২০১৩ সালে ৭১৯ জন নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন৷ চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত, অর্থাৎ মাত্র ছ’মাসে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ৪৩১টি এবং এর মধ্যে গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৮২ জন৷ তাছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে অপহরণ করে ধর্ষণ এবং পরে হত্যার ঘটনাও অনেক বেড়েছে৷
ছবি: DW
নারীর পোশাকই কি ধর্ষণের জন্য দায়ী?
বাংলাদেশের একজন পুলিশ কর্মকর্তা একটি মার্কিন সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘‘বাংলাদেশের নারীরা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বেপরোয়াভাবে, বেপর্দায় চলাফেলার কারণে ধর্ষণের শিকার হন৷’’ পুলিশের কর্মকর্তার দাবি, ধর্ষণের দায় প্রধানত নারীদের৷ তাঁর ভাষায়, ‘‘বখাটে ছেলেরা তো ঘোরাফেরা করবেই৷’’ এ কথা শুধু পুলিশ কর্মকর্তার নয়, ভারত-বাংলাদেশের সমাজ ব্যবস্থাই এরকম৷ ধর্ষণ বন্ধ করতে এই মধ্যযুগীয় চিন্তা, চেতনার পরিবর্তন প্রয়োজন৷
ছবি: AFP/Getty Images/M. Uz Zaman
ছোট বেলা থেকে সচেতন করতে হবে
ধর্ষণ সম্পর্কে ছোটবেলা থেকে সঠিক ধারণা দিলে স্বাভাবিকভাবে ধর্ষণের সংখ্যা কমবে৷ তাছাড়া পাঠ্যপুস্তকেও বিষয়টি গুরুত্ব দেওয়া উচিত৷ ধর্ষিতা নারীকে শারীরিক ও মানসিক যন্ত্রণার শিকার হতে হয়, সে সম্পর্কেও সচেতনতা দরকার৷ অনেকে যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন৷ গোটা সমাজও নারীকেই দোষ দিয়ে থাকে৷ ডাক্তারি বা মনস্তাত্ত্বিক সাহায্য ছাড়াও প্রয়োজন পরিবার, বন্ধুবান্ধব ও সমাজের বন্ধুবৎসল আচরণ৷
ছবি: Advocate Tanbir ul Islam Siddiqui
11 ছবি1 | 11
ক্লেমের কাছে একবার এক নারী একটি মামলা নিয়ে এসেছিল৷ মেয়েটি একটি পার্টি থেকে ফেরার পথে অনেক রাত হয়ে যাওয়ায় কোনো ট্রেন পাচ্ছিল না৷ তখন সে বাধ্য হয়েই এক ছেলেবন্ধুর বাসায় যায়, যেখানে ঐ বন্ধুটি তাকে যৌন হয়রানি করে৷ মেয়েটি জানায়, পার্টিতে মদ্যপান করায় সে নেশাগ্রস্ত ছিল৷ তারপরও সে ‘না' বলেছিল৷ কিন্তু তার হাজার নিষেধ করা সত্ত্বেও বন্ধুটি তাকে যৌন হয়রানি করে যাচ্ছিল৷ মেয়েটির যোনিতে আঙুল দিচ্ছিল, বুকে হাত দিচ্ছিল৷ কিন্তু পুরুষবন্ধুটিকে একেবারে সরিয়ে দেয়ার মতো গায়ের জোর তখন মেয়েটির ছিল না৷
পরবর্তীকে মেয়ে আদালতে গেলে, মামলাটি আদালতে খারিজ হয়ে যায়৷ কেননা তখন এটা প্রমাণ হয় যে মেয়েটি তার শ্লীলতাহানির সময় কোনো প্রতিরোধ করেনি৷ বার বার আদালতে আবেদন করেও সাড়া না পেয়ে নির্যাতনের শিকার এমন অনেক নারীই মনে করেন যে, এ সব মামলায় তাঁদের জেতার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ৷ তাই অনেকেই আর আদালতের দ্বারস্থ হন না৷
জার্মানিতে এখনও পর্যন্ত যে আইন আছে, তাতে পুরুষ যদি নারীর শরীরের স্পর্শকাতর অঙ্গগুলি স্পর্শ করে, বুকে বা নিতম্বে হাত দেয় – তাহলে এগুলো কোনো অপরাধমূলক শাস্তি নয়৷ এ আইনের বিরুদ্ধে আইনজীবী ও নারী অধিকার কর্মীরা জোর প্রতিবাদ চালিয়ে যাচ্ছিলেন, এখনও যাচ্ছেন৷ এভাবে কোনো অপরাধকে সংজ্ঞায়িত করার আগে নারীদের ‘না' বলার অধিকারকে প্রতিষ্ঠা এবং বর্তমান নারীবিদ্বেষী আইনটিতে পরিবর্তন আনা উচিত বলে মনে করেন তাঁরা৷
ক্লেম জানান, এ ধরনের হয়রানির ঘটনা নারীদের জন্য ভয়াবহ একটি অভিজ্ঞতা৷ আর যখন হয়রানির শিকার নারীদের বার বার এ সব প্রশ্নের মধ্য দিয়ে যেতে হয় যে, কীভাবে তার ওপর নির্যাতন হয়েছে, ঠিক কী কী করা হয়েছে, সে তখন আদৌ কোনো প্রতিরোধ করেছিল কিনা – তখন যেন তাকে আবারো ধর্ষণ করা হয়৷ আবারো নিয়ে যাওয়া হয় যৌন নির্যাতন বা ধর্ষণের সেই অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে৷
জার্মানির বেশিরভাগ মানুষই এই আইনের পরিবর্তন চান৷ নারী অধিকার কর্মীদের কথায়, যখন কোনো নারী হঠাৎ এ ধরনের হয়রানির শিকার হন, তখন তাঁরা এতটাই আতঙ্কগ্রস্ত থাকেন যে প্রতিরোধ করার কথাও তাঁদের মাথায় আসে না৷ আবার কখনো তাঁদের মনে হয়, প্রতিরোধ করলে হয়ত এর চেয়ে ফলাফল আরো ভয়াবহ হতে পারে৷
সুখ্যাত অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ক্রিস্টিনা লুঞ্জ তাই এই আইনকে মধ্যযুগীয় একটি বর্বর আইন হিসেবে উল্লেখ করেছেন৷ আরো কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে বর্তমান আইনের বিরুদ্ধে একটি প্রচার শুরু করেছেন তিনি, যার নাম দেয়া হয়েছে ‘নো মিনস নো'৷ তাঁর কথায়, নারীদের বিরুদ্ধে যে কোনো ধরনের যৌন হয়রানিই অপরাধ৷
আসলে এ বছরের বর্ষবরণ উৎসবের সময় কোলোনে যে যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটেছিল, তাতেই নড়ে চড়ে বসেছেন জার্মানির আইনপ্রণেতারা৷ প্রত্যক্ষদর্শীদের কথা অনুযায়ী, উত্তর আফ্রিকার সংঘবদ্ধ কিছু পুরুষ বেশ কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে নারীদের যৌন হয়রানি করে৷ এর পর ধর্ষণ সংক্রান্ত জার্মানির বর্তমান আইনের যৌক্তিকতা নিয়ে আবারও প্রশ্ন ওঠে৷
গত মার্চ মাসে বিচার বিভাগীয় মন্ত্রণালয় নতুন একটি নারীবান্ধব আইনের খসড়া মন্ত্রিসভায় পাঠায়৷ বৃহস্পতিবার জার্মানির পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে এসপিডির একজন সদস্য নতুন আইনের খসড়াটি যাতে উচ্চক্ষে পাঠানো হয়, তার জন্য আবেদন জানান৷ এরপর উচ্চকক্ষে আলোচনার পর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হতে পারে৷
আইনটি পাস হলে জার্মানির জন্য একটি মাইল ফলক হবে বলে মনে করছেন নারী অধিকার কর্মীরা৷ কেননা ৯০-এর দশকের শেষ ভাগে এসে দাম্পত্য ধর্ষণকে অপরাধ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে জার্মানি৷ এর আগে এটা অপরাধ হিসেবে মনে করা হতো না৷ তাই এবার, প্রতিরোধ নয়, নিষেধ করা বা ‘না' বলার অধিকার প্রতিষ্ঠিত হলে তা হবে একটি ইতিহাস৷ আর এই আইন হলে অপরাধীকে ন্যূনতম পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে৷
পরিসংখ্যান বলছে, জার্মানিতে মাত্র শতকরা ছয় ভাগ যৌন অপরাধ মামলা হয়, কিন্তু যৌন হয়রানির ঘটনা অনেক বেশি৷ এর কারণ ভারত-বাংলাদেশের মতো এ দেশের নির্যাতিতরাও আদালতের দারস্থ হতে চান না৷ অনেকে লজ্জা পান আর অনেকে আদালতের প্রশ্নের মধ্য দিয়ে ধর্ষণ বা হয়রানির অভিজ্ঞতার পুনরাবৃত্তি চান না৷
সবার জন্য ভালো জার্মানি, নারীর জন্য সেরা ডেনমার্ক
বিশ্বের সেরা দেশের মর্যাদা এখন জার্মানির৷ তবে নারীর জন্য সবচেয়ে নিরাপদ দেশ কিন্তু জার্মানি, ক্যানাডা বা যুক্তরাষ্ট্র নয়৷ নারীদের জন্য প্রায় স্বর্গের দেশ এখন ডেনমার্ক৷
ছবি: Fotolia/Creativa
বিশ্বের সেরা দেশ জার্মানি
ওয়ার্ল্ড ইকনমিক ফোরামের বৈঠকে প্রকাশ করা বিশ্বের সেরা দেশের তালিকার সবার ওপরে এসেছে জার্মানির নাম৷ ৬০টি দেশ স্থান পেয়েছে এই তালিকায়৷ শরণার্থী সংকট নিরসনে অগ্রণী ভূমিকা রেখে অর্থনৈতিক চাপ সহ্যের পরও, বিশ্বের ৩৬টি দেশের ১৬ হাজার ২৪৮ জনের মাঝে জরিপ চালিয়ে তৈরি করা এই তালিকার শীর্ষে স্থান পেল জার্মানি৷
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Reichel
দ্বিতীয় ক্যানাডা, তৃতীয় যুক্তরাজ্য
বিশ্বের দ্বিতীয় সেরা দেশ এখন ক্যানাডা৷ তারপরই একে একে রয়েছে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, সুইডেন ও অস্ট্রেলিয়া৷
ছবি: picture alliance/All Canada Photos
সেরা দশে এশিয়ার দেশ জাপান
সেরা দশে এশিয়ার একমাত্র প্রতিনিধি জাপান৷ তারা আছে ৬ নম্বরে৷ বিশ্বের ষষ্ঠ সেরা দেশ হওয়াও কিন্তু কম কথা নয়৷ ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস, ডেনমার্কসহ অনেক উন্নত দেশের অবস্থানও কিন্তু জাপানের পেছনে৷
ছবি: picture alliance/dpa
নারীদের জন্য সেরা ডেনমার্ক
জার্মানি, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, সুইডেন, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, ফ্রান্স এবং নেদাল্যান্ডসকে ডিঙিয়ে নারীদের জন্য সবচেয়ে ভালো দেশের স্বীকৃতি পেয়েছে ডেনমার্ক৷ স্ক্যান্ডিনেভিয়ার এই দেশটি বিশ্বের সেরা দেশের তালিকাতেও আছে দশ নম্বরে৷
নারীদের জন্য সেরা দেশের তালিকায় ডেনমার্কের পর রয়েছে যথাক্রমে সুইডেন, ক্যানাডা, নেদারল্যান্ডস, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, জার্মানি, যুক্তরাজ্য, লুক্সেমবুর্গ ও অস্ট্রিয়া৷ সেরা দশে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের অনেক সমৃদ্ধ দেশই নেই৷ এশিয়ার মান রেখেছে জাপান৷ এই তালিকায় তারা আছে ১৪ নাম্বারে৷ ঠিক এক ধাপ আগে, অর্থাৎ ১৩ নম্বরে আছে যুক্তরাষ্ট্র৷